হ্যালো টেকটিউনস জনগণ, কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশাকরি সবাই ভাল আছেন। এখন থেকে নিয়মিত আবার নতুন টিউন নিয়ে আমরা হাজির হলাম আপনাদের কাছে। আর টেকটিউনসের নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিস নিয়ে ভালো না থেকে আর উপায় আছে? আর এই নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিসের ধারা বজায় রাখার নিমিত্তে, আজকে আমি আপনাদের সাথে একদম নতুন একটি টপিক নিয়ে হাজির হলাম। আর আপনারা এই টিউনের মাধ্যমে জানতে পারবেন অনেক নতুন নতুন সব তথ্য।
পুরানো বা অব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স ডিভাইল হল আধুনিক জীবনের জন্য অপ্রয়োজনীয় একটা জিনিসে পরিনত হয়েছে। আর পুরানো হলেও এমন অনেক গ্যাজেট রয়েছে যা আমরা আমাদের স্টোর রুমের কোন এক কোনায় ফেলে রেখেছি বা তা কোন কাজেই আসছে না। আর আপনার কাছে যদি পুরাতন মডেলের মনিটর স্টোর রুমে পড়ে থাকে তাহলে এই টিউনে আমি আপনাদের সাথে বেশ কয়েকটি টেকনিক শেয়ার করবো যার মাধ্যমে আপনি আপনার পুরানো মনিটরকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
তাছাড়া আপনার পুরানো মনিটরটি যদি নষ্টও হয় তাতেও কোন সমস্যা নেই। কেননা, মনিটরটি যদিও নষ্ট হয় তাহল্ব আপনি তার বিভিন্ন পার্টস দিয়ে নতুন অনেক দুর্দান্ত গ্যাজেট তৈরি করতে পারবেন। আপনি পুরানো মনিটরকে সুপার ডুপার স্মল কম্পিউটার বা ড্যাশবোর্ডে পরিণত করা ছাড়াও স্মার্ট আয়না, অথবা ডুয়াল আয়না হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন, অনায়াসে।
Raspberry Pi 4 হচ্ছে অবিশ্বাস্য একটি ডিভাইস। যদিও এই ডিভাইসের বিস্তৃত ব্যবহার ক্রয়েছে, আর এটি একটি ছোট এবং সাশ্রয়ী ব্যয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি কম্পিউটার। আর তাই বলতেই পারি, আপনি আপনার পুরানো মনিটরকে $60 প্রায় ৫ হাজার টাকার কম্পিউটারে পরিণত করতে পারবেন।
তাছাড়া পুরানো ফ্ল্যাট স্ক্রিনের মনিটর দিয়ে DAKboard বানানোই হলো সবচেয়ে ভাল বুদ্ধি। আর DAKboard হচ্ছে এমন একটি স্ক্রিন যেখানে বর্তমান সময়, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, ক্যালেন্দার ইভেন্ট, ফিটনেস ডেটা এবং সংবাদ শিরোনাম দেখায়। আর অনেকগুলো ইমেজ এর স্ল্যাইড শো করে তার উপরেই দেখানো হবে এই সব তথ্য, যেমনটা উপরে দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু আপনি চাইলে DAKboard কিনতেও পারবেন, তবে DAKboard নির্মাতারা নিজেরাই দেখিয়েছেন Raspberry Pi ব্যবহার করে কিভাবে আপনার পুরাতন মনিটরকে DAKboard এ রুপান্তর করবেন। যেহেতু আপনার আগে থেকেই একটি মনিটর রয়েছেই তাই DAKboard বানাতে আপনার বেশি খরচ করতে হবে না, আর নতুন কিছু বানানোর মজা তো আছেই - আজই বানিয়ে ফেলুনি নিজের হাতের DAKboard।
এছাড়াও আপনার পুরানো মনিটরে Pi এর সাথে কানেক্ট করুন এবং এটি আপনার রান্নাঘরে স্থাপন করুন - এটাকে আপনার গৃহকর্তী রেসিপি দেখার সাথে সাথে অন্যান্য ভিডিও দেখার কাজের ব্যবহার করতে পারবেন। আর আপনার পুরাতন মনিটরকে রেট্রো ভিডিও গেমসের কনসোল বানিয়ে বাচ্চাদেরকে উপহার করতে পারেন।
আপনার পুরাতন মনিটর কে বানিয়ে ফেলুন শুধু আপনার জন্য, আসলে আমি বলতে চাচ্ছি আপনি আপনার পুরাতন মনিটরকে এমন একটি মনিটরে রুপান্তর করবেন যেটা কিনা আপনি ছাড়া অন্য কেউ দেখতে পারবে না। কি মজার না ব্যাপারটা, বিশ্বাস না হলে উপরের ভিডিওটি দেখে নিন।
আপনি ছাড়া অন্য যেকেউই মনিটরের দিকে তাকালেই সাদা স্ক্রিন দেখতে পাবে, আর তাই তারা আপনাকে পাগলও মনে করতে পারে 😁। আপনি বিশেষ একটি চশমা পরার কারনেই স্ক্রিনের সমস্ত কিছুই দেখতে পাবেন। এটা আসলেই ম্যাজিক মনে হচ্ছে, তবে পুরাতন মনিটরকে আপনিই শুধু দেখতে পারবেন এমন মনিটরে রুপান্তর করার সময় সতর্কতার সাথে করবেন অন্যথায় মনিটরটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মূলত, চশমাটির বিশেষত্ব হচ্ছে আপনার পুরাতন মনিটরের উপরে থাকা polarizing ফিল্ম উঠানোর পরে তা চশমার কাচের সাইজে কেটে তা চশমাতে লাগাবেন। এখন আপনার পুরাতন মনিটরটিকে সাদা মনে হচ্ছে তবে চশমার সাহায্যে দেখুন, দেখবেন ম্যাজিকের মত শুধু আপনিই দেখতে পাচ্ছেন।
আর এই পদ্ধতি প্রয়োগ করবেন আপনার পুরাতন মনিটরেই কেননা আপনি যদি কোন প্রসেস-এ ভুল করে বসেন তাহলে কিন্তু মনিটরটি একদম নষ্ট হয়ে যাবে। আর এজন্য প্রথমে আপনাকে আপনার পুরাতন মনিটরটিকে খুলে ফেলতে হবে তারপরে এর LCD তে থাকে anti-glare এবং polarizing ফিল্ম কে তুলে ফেলতে হবে অতঃপর আবার মনিটরটিকে লাগিয়ে ফেলতে হবে। মূল কথা হচ্ছে আপনাকে polarizing ফিল্ম থেকে anti-glare ফিল্ম থেকে আলাদা করতে হবে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আপনার মনিটরের পর্দায় কি রয়েছে তা অন্যরা দেখতে পাবে না তবে আপনি আগের মতই সবই দেখতে পাবেন।
আপনার যদি ভাঙা পুরাতন LCD মনিটর থাকে তাহলে সেটিকে ব্যবহারযোগ্য আয়নাতে রুপান্তর করতে পারেন, তাছাড়া যদি আপনার কাছে থাকা পুরাতন মনিটরটি ভাল হয়ে থাকে তাহলে তাতে Raspberry Pi কানেক্ট করে একটি স্মার্ট ম্যাজিক আয়নাতে রুপান্তর করতে পারবেন সহজেই।
Raspberry Pi এর অনেকগুলো স্মার্ট ম্যাজিক আয়নার প্রজেক্ট রয়েছে সেখান থেকে আপনার পছন্দ মত একটি সিলেক্ট করতে পারেন, তবে আমদের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য MagicMirror² নির্ধিধায় পছন্দ করতে পারি। তাছাড়া এটি হচ্ছে অরিজিনাল, সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সম্ভবত এখন পর্যন্ত স্মার্ট আয়না তৈরির এটিই সবচেয়ে সহজ উপায়। আর এই স্মার্ট আয়নাতে আপনি সময়, ক্যালেন্ডার, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং লেটেস্ট সংবাদ দেখতে পাবেন।
আর প্রথমবার DIY প্রজেক্টের জন্য আপনার কাছে যদি খুবই কম বাজেট থাকে তাহলে $100 বা প্রায় ৮, ৫০০ টাকার মত খরচ করেই আপনি স্মার্ট আয়না বানিয়ে ফেলতে পারবেন। তবে আপনার পুরাতন LCD মনিটরকে স্মার্ট আয়নাতে রুপান্তর করার জন্য এটি সেরা উপায় না, কিন্তু আপনি অল্প কিছু টাকা খরচ করেই বেসিক ফিচারের একটি স্মার্ট আয়না বানিয়ে ফেলতে পারবেন অনায়াসেই।
আপনার কম্পিউটার টেবিলে যদি এখনও অনেক জায়গা অতিরিক্ত থেকে থাকে তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে ভাল হয়, পুরাতন মনিটরটিকে ডুয়াল মনিটর হিসেবে ব্যবহার করা, ফলে আপনার প্রোডাক্টিভিটি অনেকংশে বেড়ে যাবে। ডুয়াল মনিটর ব্যবহার করার অনেকগুলো কারন রয়েছে, যেমনঃ অনেক বেশি স্ক্রিন স্পেস, আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার বা অন্য কাজের জন্য একটি মনিটর ব্যবহার করবেন আর অন্য মনিটরটি ডেডিকেটেড ভিডিও কনফারেন্সিং হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।
ডেক্সটপ কম্পিউটারের সব অপারেটিং সিস্টেমই ডুয়াল মনিটর সাপোর্ট করে থাকে। তাছাড়া উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে ডুয়াল মনিটর সেটআপ করা খুবই সহজ এবং কিভাবে এই দুটি মনিটর ব্যবহার করবেন তার সেটিংস ও কাস্টমাইজ করতে পারবেন। ডুয়াল মনিটর পিসির সাথে কানেক্ট করার জন্য আপনার পিসিতে একাধিক HDMI, VGA বা গ্রাফিক্স কার্ডের অতিরিক্ত পোর্ট ব্যবহার করতে পারেন।
উপরের দেখানো কোন পদ্ধতি যদি আপনার কাছে পছন্দ না হয়, তাহলে মন খারাপের কিছুই আপনি আপনার পুরাতন মনিটর দিয়ে আরও কিছু করতে পারবেন। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলঃ
অন্যসব গ্যাজেটের মতো, মনিটরের ও লিমিটেড লাইফ সাইকেল রয়েছে। আপনি আপনার পুরাতন মনিটর বদলে নতুন মনিটরে আপগ্রেড হতে চাইছেন তাহলে আপনার পুরাতন মনিটরটি কি করবেন, সে সম্পর্কে আপনার কাছে এখন বেশ কয়েকটি ধারণা রয়েছে। তাছাড়া আপনার কাছে থাকা অন্যান্য গ্যাজেট বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস কিভাবে পুনরায় ব্যবহার করবেন তা নিয়ে একটু চিন্তা করুন এবং ইন্টারনেটে রিসার্চ করুন।
আমি এরকম নিত্যনতুন কাজের সফটওয়্যার নিয়ে টেকটিউনসে হাজির হবো নিয়মিত। তবে সে জন্য আপনার যা করতে হবে তা হলো আমার টেকটিউনস প্রোফাইলে আমাকে ফলো করার জন্য 'Follow' বাটনে ক্লিক করুন। আর তা না হলে আমার নতুন নতুন টিউন গুলো আপনার টিউন স্ক্রিনে পৌঁছাবে না।
আমার টিউন গুলো জোসস করুন, তাহলে আমি টিউন করার আরও অনুপ্রেরণা পাবো এবং ফলে ভবিষ্যতে আরও মান সম্মত টিউন উপহার দিতে পারবো।
আমার টিউন গুলো শেয়ার বাটনে ক্লিক করে সকল সৌশল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। নিজে প্রযুক্তি শিখুন ও অন্য প্রযুক্তি সম্বন্ধে জানান টেকটিউনসের মাধ্যমে।
আমি রায়হান ফেরদৌস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 182 টি টিউন ও 131 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 73 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।