করোনা ভাইরাসের লক্ষ্মণ, চিকিৎসা ও সুরক্ষার উপায় কী, কতটা মারাত্মক, কোথা থেকে এলো, কোন প্রাণী থেকে ছড়ালো, চীনে কেন?

আশাকরি সবাই ভালো আছেন, আর ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন এটাই আমাদের কাম্য। তো আজকে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি তা হলো করোনা ভাইরাস, যার পোশাকি নাম কোভিড-১৯, সেই রোগটিকে এখন বিশ্ব মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই ভাইরাস- যা পূর্বে বিজ্ঞানীদের অজানা ছিল- এর মধ্যেই চীনে অনেক মানুষের ফুসফুসের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করেছে এবং বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তাছাড়া বর্তমান বিশ্বের এক আতঙ্কের নামই হলো CoronaVirus বা Covid-19 তো করোনাভাইরাসের লক্ষ্মণ, চিকিৎসা ও সুরক্ষার উপায় কী, কতটা মারাত্মক, কোথা থেকে এলো, কোন প্রাণী থেকে ছড়ালো, চীনে কেন? এসব নিয়েই আজকের টিউন।

করোনা ভাইরাসটা কী?

করোনাভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস - যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে ছড়ায়নি। সারাবিশ্বে এরই মধ্যে ১৫০ টির বেশি দেশে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস, বিশ্বব্যাপী প্রাণহানি হয়েছে প্রায় ৭ হাজারের বেশি মানুষের। ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯ - এনসিওভি বা নভেল করোনাভাইরাস। এটি এক ধরনের করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি প্রজাতি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। তবে নতুন ধরনের ভাইরাসের কারণে সেই সংখ্যা এখন থেকে হবে সাতটি।
২০০২ সাল থেকে চীনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্স (পুরো নাম সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামে যে ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৭৭৪জনের মৃত্যু হয়েছিল আর ৮০৯৮জন সংক্রমিত হয়েছিল। সেটিও ছিল এক ধরনের করোনাভাইরাস। নতুন এই রোগটিকে প্রথমদিকে নানা নামে ডাকা হচ্ছিল, যেমন: 'চায়না ভাইরাস', 'করোনাভাইরাস', '২০১৯ এনকভ', 'নতুন ভাইরাস', 'রহস্য ভাইরাস' ইত্যাদি। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় কোভিড-১৯ যা 'করোনাভাইরাস ডিজিজ ২০১৯'-এর সংক্ষিপ্ত রূপ।

আরো বিস্তারিত দেখতে ভিডিওটি দেখুন

করোনা ভাইরাসের লক্ষ্মণ কী:

  • রেসপিরেটরি লক্ষণ ছাড়াও জ্বর, কাশি, শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাই মূলত প্রধান লক্ষণ।
  • এটি ফুসফুসে আক্রমণ করে।
  • সাধারণত শুষ্ক কাশি ও জ্বরের মাধ্যমেই শুরু হয় উপসর্গ দেখা দেয়, পরে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়।
  • সাধারণত রোগের উপসর্গগুলো প্রকাশ পেতে গড়ে পাঁচদিন সময় নেয়।
  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভাইরাসটির ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। তবে কিছু কিছু গবেষকের মতে এর স্থায়িত্ব ২৪দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।

মানুষের মধ্যে যখন ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেবে তখন বেশি মানুষকে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকবে তাদের। তবে এমন ধারণাও করা হচ্ছে যে নিজেরা অসুস্থ না থাকার সময়ও সুস্থ মানুষের দেহে ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে মানুষ।

করোনা ভাইরাস যেভাবে ছড়ায়

  • আক্রান্ত ব্যক্তির হাচি কাশির মাধ্যমে
  • আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে
  • পশু, পাখি বা গবাদিপশুর মাধ্যমেও ছড়ায়।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় 

  • ব্যক্তিগত সচেতনতাই পারে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি দিতে
  • ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ হাত ধুতে হবে
  • অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা যাবে না;
  • ইতিমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে;
  • কাশি শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে (হাঁচি/কাশির সময় টিস্যু/কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে);
  • অসুস্থ পশুপাখির সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে;
  • মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে;
  • অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে হবে
  • জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত বিদেশে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং প্রয়োজন ব্যতীত এ সময়ে বাংলাদেশ
  • ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করতে হবে; প্রবাসী আত্মীয়স্বজনকে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করতে হবে;
  • প্রয়োজন ছাড়া যেকোনো জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে;
  • অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

রোগীর ক্ষেত্রে করণীয় 

  • অসুস্থ রোগীকে ঘরে থাকতে বলুন;
  • মারাত্মক অসুস্থ রোগীকে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে যেতে বলুন;
  • রোগীকে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন; |

 

করোনা ফুসফুসে পৌছানোর আগে করোনা ভাইরাসটি প্রায় চার দিনের জন্য গলায় থাকে, এবং এই সময়ে ব্যক্তি কাশি শুরু করে, এবং গলায় ব্যথা শুরু হয়, যদি এ সময় আক্রান্ত ব্যক্তি প্রচুর পরিমাণে পানি পান করেন এবং লবন বা ভিনেগার মিশ্রিত হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করে কুলি করেন তবে তার ভাইরাস দূর হয়।

সচেতন হোন, নিরাপদ থাকুন

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Level 3

আমি জুয়েল আহমদ লিটন। Mid Level, Pro Bangla, Moulvibazar। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 63 টি টিউন ও 16 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি জুয়েল আপনাদের উৎসাহ আর উদ্দীপনা পেলে টেকনোলজি সম্পর্কে নতুন কিছু শেয়ার করার চেষ্টা করব।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস