আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের ব্লগিং করে থাকেন। কেউ করেন ভালোবাসার টানে, কেউ করে আয় করার উদ্দেশ্যে। কেউ কেউ আবার বিভিন্ন বিভিন্ন ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক কাজে ব্লগিং করে থাকেন। যে যেই উদ্দেশ্যেই করুন না কেন, সবা্রই একটা বিষয়ে মূল লক্ষ থাকে আর তা হল ব্লগিং এর পাশাপাশি যদি কিছু আয় রোজগার হয় তাহলে মন্দ কি!
কিন্তু অনেকের মতেই ব্লগিং থেকে আয় করার শুধুমাত্র ও একমাত্র উপায় হচ্ছে গুগল অ্যাডসেন্স। সাধারনত আমাদের বাংলাদেশি দেশী ব্লগাররা এমনটাই ভেবে থাকেন। কিন্তু আপনি কি জানেন বাহিরের দেশের ব্লগাররা তাদের ব্লগিং করে ইনকাম করার ১ম তালিকায় ভুলেও অ্যাডসেন্স কে রাখেন না। তারা অন্যান্য বিভিন্ন আয়ের পদ্ধতিকে ১ম তালিকায় রাখেন। তারপর অ্যাডসেন্সটিকে তারা Side Income হিসেবে রাখেন।
তো চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সমস্ত পদ্ধতি সম্পর্কে.
Sponsored Contecnt
আমার মতে বর্তমান সময়ে যারা প্রফেশনাল মানের ব্লগিং করতে পারেন তাদের জন্য এটি একটি অত্যন্ত ভালোমানের ইনকাম সোর্স। আপনি যদি ভালো মানের ব্লগিং করতে পারেন এবং আপনার ব্লগে যদি প্রতি মাসে একটা বেশ ভালো পরিমানে ভিজিটর থাকে তাহলে দেখবেন এমনিই আপনি আপনার ব্লগের Contact Form এ অনেক Sponsored Ad এর ইমেইল পাবেন।
সেখান থেকে আপনি আপনার জন্য খুবই ভালো মানের একটি ইনকাম সোর্স তৈরি করে নিতে পারেন। তেমন কোনো কিছুই না। শুধু আপনি কোনো একটি কোম্পানীর হয়ে একটু সাফাই গাইবেন আপনার কোনো একটি টিউনে বা সম্পূর্ণ টিউনে; এই আরকি!
জিজ্ঞেস করতে পারেন, এখান থেকে কত টাকা আয় করা সম্ভব? এটা আসলে নির্ভর করবে আপনার ওয়েবসাইটের উপর। আপনার সাইটের অথোরিটি কেমন, প্রতি মাসে কি পরিমান ভিজিটর পান ইত্যাদি বিষয়ের উপর নির্ভর করব।
Banner Advertising
আমাদের দেশের মধ্যে অনেকে আছেন যারা Sponsored Ad আর Banner Ad এর মধ্যে পার্থক্য জানেন না। তারা দু’টোকেই মূলত একই রকম ভাবেন।
হ্যা, দুইটা মোটামুটি একই রকম হলেও। এদের মধ্যে সামান্য একটু পার্থক্য আছে। আর তা হচ্ছে একটি সাধারনত টিউনে আকারে প্রকাশিত হয়ে থাকে (Sponsored Ad) আর আরেকটি সাধারনত Sidebar বা Top Bar এ প্রর্দশিত হয়ে থাকে (Banner Ad)।
অনেকেই হয়ত বিশ্বাস করতে চাইবেন না কিন্তু অবিশ্বাস হলেও সত্য যে অনেকে আছেন যারা তাদের ব্লগিং সাইটের সাইডবারে একটা ব্যনার এডের মাধ্যমেও মাস গেলে বেশ ভালো পরিমান অথ্যই আয় করে থাকে।
কি বিশ্বাস হচ্ছে না!
উপরে ছবিতে লক্ষ করুন। টিউনের Title এর উপরে একটি বিজ্ঞাপণ প্রর্দশন হচ্ছে, সাইটের Top Bar এ। এটি একটি ব্যানার এড। যেখান থেকে হয়ত মাস গেলে এই সাইটের ওয়েবমাস্টার (ওয়েবসাইটের মালিক) মাস গেলে বেশ কিছু ডলার গুনেন।
তাই সে পারলে আপনিও পারবেন।
Freelance Writing
বর্তমান সময়ে ইউটিউবের বেশ কিছু বাংলা ইউটিবারের কল্যানে আমাদের মধ্যে অনেকেই আজকাল কনটেন্ট রাইটার হওয়ার জন্য বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে ঘোরাঘুরি করছেন। কিন্তু আপনি কি জানেন আমাদের মাতৃভাষা বাংলাতেও অনেকে কনটেন্ট রাইটার খুঁজেঁন (অবশ্য ইংরেজী হলে Demand বেশি)। আপনারা কিন্তু চাইলে নিজের ওয়েবসাইটকেই আপনাদের মার্কেটপ্লেস ভাবতে পারেন।
কেননা কে জানে, হয়ত আপনার টিউন পড়ে উপকৃত হয়ে কেউ ভাবল যে আপনাকে দিয়ে তার সাইটের জন্য সে কিছু আর্টিকেল লিখিয়ে নিবে। মাঝখান দিযে আপনার পকেটে কিছু টাকা চলে আসল।
বিষযটা আপনার কাছে হয়ত অবাক লাগতে পারে। কিন্তু বিশ্বাস করুন আর নাই করুন অনেকেই এভাবে আয় রোজগার করছেন।
Photo Editing or Photography
অনেকে বলতে পারেন কথা বলছিলাম ব্লগিং নিয়ে, এর মধ্যে আবার ফটোগ্রাফি এল কোথা থেকে? কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি জানেন. অনেকেই আছেন যারা খুব ভালো ফটোগ্রাফি করতে পারেন আর সেটা নিয়েই তারা তৈরি করেন তাদের ব্লগ। সেখানে তারা এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করে থাকে। যেখান থেকে হয়ত সে তার ভিজিটরকে কাস্টমারে পরিনত করতে পারেন।
বিষয়টা একটু সহজভাবে বুঝিয়ে বলি। আমি সাধারনত টেকনোলজি নিয়ে কাজ করি। বিশেষ করে ওয়েব ডিজাইনিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং। আর ব্লগিং টা হচ্ছে আমার নেশা। শখের বশে আমি ব্লগিং করি। কিন্তু বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, আমাকে অনেকে বিভিন্ন কাজের জন্য নক করে, কাজ করে দেওয়ার পরে কিছুদিন পর যখন তার সাথে একটি ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায় তখন যদি তাকে আমি জিজ্ঞেস করি, ‘ভাই, আপনি আমার কথা কার কাছ থেকে শুনলেন?’ সে আমাকে উত্তর দেয়, ‘কেন? আপনি না অমুক ব্লগে একটা আর্টিকেল পাবলিশ করেছিলেন। সেটা পরে আমার অনেক ভালো লেগেছে। তাই ভাবলাম আপনাকে দিয়েই কাজটা করাই। ’
অনেকটা Freelance Writing এর মতোই। আশা করি আমার উদাহরনটি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
Proofreading and Editing
অনেক প্রফেশনাল বড় বড় ব্লগার আছেন যারা তাদের ওয়েবসাইটে আশাকরিয়ে নিবে না। বিনিময়ে খুব ভালো মানের একটি পারিশ্রমিকও তারা আপনাকে দিবে।
আজকে ব্লগ থেকে ইনকাম করার ৫টি পদ্ধতি নিয়ে কথা বললাম। এছাড়াও ব্লগিং থেকে ইনকামের আরো কিছু উপায় রয়েছে। যদি সময় করতে পারি তাহলে অন্য কোনো দিন হয়ত আলোচনা করব। তবে হ্যা, একটা বিষয় ভালো করে মনে রাখবেন, আপনি যদি বাংলা আর্টিকেল রাইটার হন তাহলে আপনার যে পরিমান ইনকাম হবে, তার চেয়ে আপনি যদি ইংরেজী রাইটার হন তাহলে তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি টাকা কামাতে পারবেন।
এখন বলতে পারেন যে আমি নিজে বাঙালী হয়ে কিভাবে এতো ভালো ইংরেজী কনটেন্ট লিখব? আসলে সত্যি কথা বলতে গেলে সেটি কোনোদিনও আপনার ত্বারা সম্ভব না। একজন ইংরেজ এর ইংরেজী আর্টিকেল আর আপনার ইংরেজী আর্টিকেল এর মধ্যে রাতদিন তফাৎ থাকবে। সেটা আসলে কিছু করার নেই।
সেক্ষেত্রে হয়ত আপনি একজন ইংরেজ ইংরেজী আর্টিকেল রাইটারের সমান আয় করতে পারবেন না। কিন্তু আপনি চাইলে তো অন্তত পরিশ্রম, অধ্যবসায় এর দ্বারা একজন বাংলা ইংরেজী আর্টিকেল এর তুলনায় ভালো মানের ইংরেজী আর্টিকেল লিখতেই পারেন।
প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে ক্লায়েন্ট ইংরেজী রাইটারকে হায়ার না করে আমাকে কেন করবে? কারন তার বাজেট হয়ত কম। সে হয়ত তাকে দিযে এতো ভালো মানের কনটেন্ট লিখাতে পারবে না, তাই আপনাকে তার দরকার। কেননা আপনি অন্তত তার (ইংরেজী আর্টিকেল রাইটার) তুলনায় কম টাকায় কাজটি করে দিবেন।
আর তাছাড়া বাংলাতে আর্টিকেল লিখেও কিন্তু বেশ ভালো ইনকাম করা যায়। আমাদের বাংলাদেশি অনেক ওয়েবসাইটই আছে এমন।
আশা করছি, পুরো বিষয়টি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। আজ এ পর্যন্তই। অনলাইন থেকে ইনকামের আরো এরকম উপায় জানতে ভিজিটর করতে পারেন আমার নিজের ব্লগ - TECH BAYA।
ধন্যবাদ।
আমি সোয়েব শান্ত। CEO & Founder, TECH BAYA, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
নিজের সম্পর্কে বলার মতো আসলে কিছুই নাই। খুবই সাধারন একটি ছেলে। ভালোবাসি প্রযুক্তিকে। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করি ওয়েব ডিজাইনিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে। প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন বিষয়াবলি শিখতে ও জানতে ভালো লাগে। ভালোবাসি নিজের জানা ও শেখা বিষয়কে অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে। আপনাদের ভালো লাগা ও ভালোবাসা পেলেই...