পিসি স্লো? কাজ করার সময়, মুভি দেখার সময় কিংবা গেম খেলার সময় পিসি স্লো স্লো মনে হয়? তাহলে হয়তো এখনি আপনার সময় আপনার পিসিকে আপগ্রেড করে নেওয়ার। তবে যারা পিসিতে নরমাল কাজ করেন যেমন টাইপ করা, মুভি দেখা, নেট ব্রাউজিং, প্রিন্ট ইত্যাদি তাদের কাছে পেন্টিয়াম ৩/৪ পিসিও স্লো মনে হবে না। কিন্তু যারা পিসিতে গ্রাফিক্স, এনিমেশন কিংবা হেভি গেমস খেলেন তাদের জন্য চাই লেটেস্ট আপগ্রেড! কিন্তু আপনার পিসিতে কি কি আপগ্রেড করবেন সেটা কি ঠিক করেছেন? নাকি সব কিছুই দোকানদারদের হাতে ছেড়ে দিবেন? টাকা নিয়ে দোকানে যাবেন আর বলবেন, “ভাই আমার পিসি এই, আর আমার বাজেট, এই বাজেটের মধ্যে পিসি আপগ্রেড করতে চাই। “ তারপর দোকানদার তার ইচ্ছেমত পার্টসপাতি লাগিয়ে দিয়ে বলবেন ভাই হয়ে গেছে!
এভাবে অন্ধ হয়ে আপগ্রেড না করাই শ্রেয়। তাই আমি আজ টেকটিউনসে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি পিসি আপগ্রেড এর জন্য প্রয়োজনীয় পার্টসপাতির সংক্ষিপ আলোচনা, যাতে এই টিউনটি পড়ে আপনারা বুঝতে পারেন যে পিসির কোন পার্টসটির আপগ্রেড আপনার প্রয়োজন এবং কোনটির নয়। ব্যাপারটা আমাদের শরীলের মতো, ধরুণ আপনার জ্বর হয়েছে, জ্বরের ঔষুধ কিনতে হবে, কিন্তু ফার্মেসির কাছে গিয়ে যদি বলতেই না পারেন যে আপনার জ্বর হয়েছে বরং টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন আমাকে ঔষুধ দিন! তাহলে কি হবে? ঠিক তেমনি পিসি আপগ্রেডের আগে আপনাকেই আগে ঠিক করে নিতে হবে যে পিসির কোন পার্টসটির আপগ্রেড আপনার সবথেকে বেশি প্রয়োজন। ধরুণ আপনি গ্রাফিক্সের কাজ করেন, আপনার দরকার বেশি র্যাম এবং উন্নতমানের গ্রাফিক্স কার্ড, কিন্তু আপনি কিনে নিয়ে আসলেন ৪০ ইঞ্চির মনিটর! এতে কাজের কাজ কিছুই হবে না!
অন্যদিকে আমাদের অনেকেই পিসি স্লো থেকে মুক্তির জন্য এবং পিসির পারফরমেন্স বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। এতে অনেকেই বিশ্বাস করেন নাকি এতে তাদের পিসি নাকি ফার্স্ট হবে! আসলে ব্যাপারটা ভুল। ধরুণ আপনার পিসির গতি হলো ৫০, সময়ের বিবর্তনে পিসির গতি ৩৩ এ নেমে গিয়েছে। এখন ওই জাতীয় সফটওয়্যারগুলো আপনাকে ৫০ গতিতে আবারো ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারে কিন্তু আপনি কখনোই ৫০ গতির পিসিতে ৭০ কিংবা ৮০ এর মতো পারফরমেন্স পাবেন না হার্ডওয়্যার আপগ্রেড না করে। কিন্তু এমন টা কেন হয়? স্লো পিসিতে কয়েকদিন কাজ করার পর হঠাৎ পিসি কিংচিৎ ফাস্ট হলেও আমাদের কাছে মনে হয় পিসি ফার্স্ট হয়েছে এবং সফটওয়্যারটি আসলেই কাজে দিয়েছে!
তবে আমাদের সব দোকানদারা ও এক নয়, কিছু কিছু বুদ্ধিমান এবং স্মার্ট দোকানদার আপনাকে পিসি আপগ্রেড করার আগে কোন জিনিসটি আপনার আপগ্রেড করার বেশি প্রয়োজন সেটা আপনার কাছ থেকে জেনে নেবে কিংবা আপনাকে ভালো মতো বুঝিয়ে দেবে। এ জন্যই বলা হয় পিসি কেনার আগে কিংবা আপগ্রেড করার সময় অভিঞ্জ কারো সাহায্য নিতে কিংবা ব্রান্ডের কোনো শপ থেকে নতুন পিসি কিনতে কিংবা পিসি আপগ্রেড করিয়ে নেতে। তো চলুন আর ভূমিকায় কথা না বাড়িয়ে সরাসরি টিউনের মূল বিষয়বস্তুতে চলে যাই:
র্যামকে বলা হয় কম্পিউটারের মেমোরি। আর পিসি আপগ্রেডের ক্ষেত্রে সবার আগে নাম আসে এই র্যামের। কারণ পিসির অনান্য যাবতীয় আপগ্রেড পাটর্সপাতির তুলনায় র্যামের দাম বাজারে তুলনামূলকভাবে কম এবং র্যাম আপগ্রেড করাটাও অনেক সহজ এবং র্যাম যুক্ত করে আপনি পিসির গতি বৃদ্ধি করতে পারবেন। আর আপনার পিসিতে আগের র্যামের সাথে আপনি সহজেই নতুন র্যাম যোগ করে নিতে পারেন। অনান্য ক্ষেত্রে আপনি এ সুবিধাটি পাবেন না, যেমন একই পিসিতে দুটি গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করতে হলে ক্রসফায়ার ফিচারটি মাদারবোর্ডে থাকতে হয়। আবার একই পিসিতে একাধিক হার্ডডিক্স ব্যবহার করতে হলে সবগুলো হার্ডডিক্সের স্পিড একই হতে হয় না হলে পড়ে সমস্যা দেখা দেয় আর এক পিসিতে একাধিক প্রসেসর ব্যবহার করা যায় না!
আর পিসি আপগ্রেডের সবথেকে সহজ এবং সস্তা উপায় হলো এই র্যাম যুক্ত করা। ডেক্সটপের পাশাপাশি আপনি ল্যাপটপ এর র্যাম বাড়িয়ে নিয়ে ল্যাপটপও আপগ্রেড করতে পারেন। আপনি যদি পিসির কেইস খুলে থাকেন এবং আগে র্যাম খুলে থাকেন বা লাগিয়ে থাকেন তাহলেই আপনি নিজে নিজেই বাজার থেকে র্যাম কিনে নিয়ে নিজে নিজেই বাসায় নতুন র্যাম পিসিতে সংযোজন করে নিতে পারবেন।
স্লো পিসিতে নতুন র্যাম লাগিয়ে আপনি ইন্সট্যান্ট পারফরমেন্স বুস্ট পাবেন, যারা গ্রাফিক্সের কাজ করেন, ভিডিও এডিটিং কিংবা গেমাররা তাদের পিসিতে যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে ততটুকু র্যাম লাগিয়ে নেন। কারণ যত বেশি র্যাম, পিসির কাজ করার ক্ষমতাও ততটুকু বাড়বে। কাজ করার ক্ষমতা বলতে মাল্টিটাস্কিংকে বুঝানো হয়েছে। মানে বেশি বেশি র্যাম লাগিয়ে আপনি একই সাথে একাধিক কাজ করতে পারবেন, পিসি স্লো হবে না।
বর্তমান যুগে ৪ গিগাবাইট র্যামকে স্ট্যান্ডার্ড বেইস লাইন হিসেবে ধরা হয়। আপনার পিসিতে যদি ৪ গিগাবাইট র্যাম না থাকে তাহলে প্রথমে আপনার পিসিতে ৪ গিগাবাইট র্যাম লাগানোর ব্যবস্থা করে নিন। ৮ গিগাবাইট র্যাম দিয়ে মোটামুটি সকল কাজ কর্ম সম্পাদন করা সম্ভব তবে ১৬ গিগাবাইট র্যাম হলো বেস্ট। ৩২ গিগাবাইট র্যামও বাজারে রয়েছে তবে এই পরিমাণ র্যাম আসলে কাজে লাগে না যতই গেম বা গ্রাফিক্স বা ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ করে থাকেন না কেন। তাই ১৬ গিগাবাইট র্যাম পারফেক্ট তবে সামর্থ্য থাকলে বা পিসি সার্পোট করলে আপনি ৩২ গিগাবাইটে চলে যেতে পারেন, এতে ভবিষ্যতের জন্যেও আপনি চিন্তামুক্ত থাকতে পারবেন।
র্যামকে প্রজন্মের ভিক্তিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। এটি DDR SDRAM বা Double Data Rate Synchronous Dynamic Random Access Memory বা সংক্ষেপে DDR হিসেবে পরিচিত। বাজারে বর্তমানে DDR4 এবং DDR3 র্যাম আপনি দেখতে পাবেন। DDR2 র্যামও রয়েছে তবে এটি আউটডেটেড এবং পুরোনো আর DDR5 র্যাম এখনো বাংলাদেশে তেমন ব্যবহার হচ্ছে না। DDR3/ DDR4 কোন র্যাম ব্যবহার করবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার মাদারবোর্ড এর উপর। মাদারবোর্ড সাপোর্ট করলে আপনি DDR3 এবং DDR4 র্যামগুলো একসাথে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে সার্পোট না করলে আপনাকে মাদারবোর্ড পরিবর্তন করতে হবে। স্বভাবতই DDR5 হচ্ছে গতি এবং দামের দিক থেকে সব থেকে এগিয়ে। তবে মাদারবোর্ড পরিবর্তন করা আর নতুন পিসি কেনা একই কথা। তাই আপনার মাদারবোর্ড কোন জেনারেশনের র্যাম সার্পোট করে সেটা আগে জেনে নিয়ে তারপর র্যাম আপগ্রেড করা উচিত।
আমাদের লিস্টের ২য় স্থানে রয়েছে গ্রাফিক্স কার্ড। তবে আপনি যদি সিরিয়াস গেমার কিংবা গ্রাফিক্সের কাজ করে থাকেন তাহলে গ্রাফিক্স কার্ডকে আপনাকে নাম্বার ১ হিসেবে গ্রহন করতে হবে। তবে মজার ব্যাপার হলো আপনি সিরিয়াস গেমার, থ্রিডি গ্রাফিক্সের কাজ, থ্রিডি ভিডিও এডিটিং কিংবা এনিমেশনের কাজ না করে থাকেন তাহলে আপনাকে হয়তো গ্রাফিক্স কার্ডেরই প্রয়োজন হবে না, আপগ্রেড তো পরের কথা!
পিসিতে গ্রাফিক্স কার্ড না লাগালে সেটা আপনাকে অনেক টাকা সেভ করতে সাহায্য করবে কিন্তু গ্রাফিক্স কার্ডের মাধ্যমে আপনি HUGE পারফরমেন্স বুস্ট পাবেন। এজন্য পিসি ম্যানুফেকচার এবং প্রসেসর নির্মাতারা বিল্ট ইন গ্রাফিক্সের ব্যবহার করে থাকেন। বিল্ট ইন গ্রাফিক্স দিয়ে আপনি আপনার রেগুলার কাজকর্ম সাড়িয়ে নিতে পারবেন।
বিল্ট ইন গ্রাফিক্স বা Integrated গ্রাফিক্স এর তুলনায় ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স কার্ডের পারফরমেন্স বেশ এগিয়ে রয়েছে এবং এদের দামও Integrated গ্রাফিক্সের তুলনায় বেশি। আমাদের দেশে ১ গিগাবাইট গ্রাফিক্সের দাম ৩৫০০ টাকা থেকে শুরু হয়েছে আর ৩৫০০ টাকা দিয়ে আপনি ৪ গিগাবাইট র্যাম পাবেন কিন্তু এখানে আপনি ৪ গিগাবাইটের র্যামের তুলনায় অনেক বেশি পারফরমেন্স বুস্ট পাবেন ১ গিগাবাইট গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে।
গ্রাফিক্স কার্ড কেনার আগে বা আপগ্রেডের আগে আপনার বাজেট অনুযায়ী সঠিক কার্ডটি পছন্দ করে নিন। কারণ র্যামের মতো একাধিক গ্রাফিক্স কার্ড এক পিসিতে ব্যবহার করা যায় না তাই আপগ্রেড করার আগে হয়তো আপনাকে আগের গ্রাফিক্স কার্ডটিকে বেঁচে দিতে হবে। আর দুটি গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করার জন্য মাদারবোর্ডের সার্পোট করার প্রয়োজন হয় এবং দুটি একই স্পিডের একই মডেলের ক্রসফায়ার ফিচারযুক্ত গ্রাফিক্স কার্ড কিনতে হয়।
বর্তমান যুগে ১ গিগাবাইট গ্রাফিক্স কার্ডকে স্ট্যার্ন্ডাড হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। তাই আপনি প্রথম বারের জন্য ১ গিগাবাইট গ্রাফিক্সে চলে যেতে পারেন। বাজারে ১ থেকে ৮ গিগাবাইটের গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন গ্রাফিক্স কার্ডের জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণের PSU বা পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিটও কিনে নিতে হতে পারে কারণ এসকল গ্রাফিক্স কার্ড চালানোর জন্য আপনার এক্সট্রা পাওয়ারের প্রয়োজন হতে পারে।
গ্রাফিক্স কার্ড আপগ্রেড বা কেনার আগে অবশ্যই একজন ভালো অভিজ্ঞ লোকের সাথে পরামর্শ করে নিন। কারণ ১ গিগাবাইট গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে ৩৫০০ টাকায়ও পাওয়া যায় এবং একই কোয়ালিটির ১ গিগাবাইট গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে আপনি বিশ হাজার টাকায়ও পাবেন।
র্যামের মতোই গ্রাফিক্স কার্ডগুলোকে DRR দিয়ে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। বর্তমানে DDR5 গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে চলছে। আর গ্রাফিক্সের DDR গুলোও মাদারবোর্ডের সার্পোটের উপর নির্ভর করে থাকে। তাই পিসি কেনার সময় মাদারবোর্ড সিলেক্ট এর দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত।
ডাটা ড্রাইভ বা হার্ডডিক্স আপগ্রেড করার প্রয়োজন হয় দুটি ক্ষেত্রে: ১. আপনার পিসিতে জায়গা কম এবং ২. আপনি ফাস্ট পারফরমেন্স চান। এজন্যই আপনার পিসির হার্ডডিক্সের টোটাল স্পেসের নুন্যতম ২০% জায়গা খালি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর নির্দিষ্ট সময় পর পর পিসির ডিফ্রাগমেন্টেশন এবং অপ্রয়োজনীয় ফাইলসগুলো মুছে দিতে হয় হার্ডডিক্সের জায়গা ফাঁকা করার জন্য। বিশেষ করে C Drive বা যে ড্রাইভে আপনার উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমটি ইন্সটল করা রয়েছে সেটার ৩০% জায়গা বা নুন্যতম ১০ গিগাবাইট জায়গা আপনার ফাঁকা রাখা উচিত। আর উন্নত মানের পারফরমেন্স পাবার জন্য আপনি বড় সাইজের হার্ডডিক্স কিনে নিতে পারেন। বড় সাইজ বলতে আকারে বড় নয় স্টোরেজ ক্যাপাসিটির কথা বুঝানো হয়েছে। বর্তমানে ৫১২ গিগাবাইট হার্ডডিক্সকে স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ধরা হলেও আপনি ১ টেরাবাইট হার্ডডিক্সের দিকে চলে যেতে পারেন। কারণ এগুলোর দাম ততটা বেশি হয় না। মোটামুটি ভালো ব্রান্ডের ১ টেরাবাইট হার্ডডিক্সের দাম ৩৮০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে থাকে।
হার্ডডিক্স আপগ্রেডের ক্ষেত্রে শুধু বড় জায়গায় দেখলেই হবে না আপনাকে ফিজিক্যাল স্পিডের দিকেও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। আপনার বর্তমান হার্ডডিক্সের স্পিড যদি 5400RPM হয়ে থাকে তাহলে 7200RPM হার্ডডিক্সে আপগ্রেড করলে আপনি পারফরমেন্স বুস্টে পরিবর্তন দেখতে পারবেন। তবে একই পিসিতে একাধিক হার্ডডিক্স ব্যবহার করার সময় সকল হার্ডডিক্সের RPM স্পিড একই হলে ভালো হয়। এতে স্পিড ম্যালফাংশনের ঝুঁকি থাকে না।
তবে হার্ডডিক্স আপগ্রেডের ক্ষেত্রে আপনি সরাসরি Solid State Drive বা SSD তে চলে যেতে পারেন। সলিড স্টেট ড্রাইভগুলো নরমাল হার্ডডিক্সের ঘুর্ণয়মান ডিক্স এর জায়গায় ফ্ল্যাশ মেমোরি ব্যবহার করে থাকে যার কারণে এদের স্পিড অনেক বেশি এবং এগুলো টেকশইও বেশি। একটি 7200RMP হার্ডডিক্স দিয়ে আপনি গড়ে 150MBps স্পিড পেতে পারেন আর অন্যদিকে SSD ড্রাইভ দিয়ে আপনি অনায়েসেই 500MBps এর উপরে স্পিড পেতে পারেন। সলিড স্টেট ড্রাইভের নতুন সংস্করণগুলোতে আপনি আরো বেশি স্পিড পাবেন। তবে এই SSD এর অসুবিধা হলো নরমাল হার্ডডিক্সের চেয়ে এরা ক্যাপাসিটিতে অনেক কম হয়ে থাকে এবং এদের দামও তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। একটি দ্রুততর ডাটা ড্রাইভের মাধ্যমে আপনি দ্রুততর বুট টাইমস, দ্রুততর প্রোগ্রাম লোডিং টাইম, দ্রুততর গেমিং বুট টাইম এবং বড়সড় ফাইল ব্যবহারকারী প্রোগ্রামগুলোকে আপনি আরো দ্রুততর গতিতে একসেস করতে পারবেন।
তবে SSD এর কম ক্যাপাসিটি যদি আপনার ভালো না লাগে তাহলে আপনি হাইব্রিড ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারবেন। এতে হার্ডডিক্স এবং SSD দুটোরই সংমিশ্রন রয়েছে। এতে রয়েছে ফ্ল্যাশ মেমোরি যেটায় আপনার পিসির একসেস গতি বৃদ্ধি করবে এবং হার্ডডিক্স এর ডিক্সও রয়েছে যেটার মাধ্যমে আপনি বড়বড় সাইজের ক্যাপাসিটি পাবেন।
পিসি আপগ্রেডের ক্ষেত্রে প্রসেসর এর কথা আসে সবার শেষে কারণ প্রসেসর আপগ্রেডিং হলো খুবই এডভান্স একটি কাজ। কারণ একই পিসিতে দুটি প্রসেসর আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না, কিন্তু উন্নত মানের প্রসেসর ব্যবহার করলে আপনার পিসির টোটাল পারফরমেন্স বৃদ্ধি পাবে। আর উন্নত প্রসেসর আপগ্রেড যেমন ব্যায়বহুল কাজ ঠিক তেমনটি প্রসেসর আপগ্রেড করতে হলে পিসি এক্সপার্ট মেকানিকের প্রয়োজন পড়ে কারণ প্রসেসর ইন্সটল দেওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ এবং ঝামেলাবহুল একটি কাজ।
তাই প্রসেসর আপগ্রেডের আগে কয়েকবার ভেবে নেওয়া উচিত। কারণ প্রথমত প্রসেসর আপগ্রেডের আগে আপনার তুলনা করে নেওয়া উচিত যে নতুন প্রসেসরের যে এক্সট্রা স্পিডটি আপনি পাচ্ছেন সেটা নতুন র্যাম বা গ্রাফিক্স কার্ডের মাধ্যমেও পাওয়া যায় কিনা। আর মাদারবোর্ডের সার্পোটেরও একটি কথা এখানে থাকে। যেমন ডুয়েল কোর থেকে শুরু করে কোয়াড কোর পর্যন্ত প্রসেসরগুলোর জন্য এক ধরনের মাদারবোর্ড প্রয়োজন হয় আর বর্তমান যুগের Core i3/ i5/ i7 এর জন্য আলাদা প্রজন্মের মাদারবোর্ডের প্রয়োজন পড়ে। আর সর্বশেষ লেটেস্ট Core i9 প্রসেসর যেটায় প্রায় ১৮টি কোর রয়েছে যেটার জন্য আলাদা একটি নতুন মডেলের মাদারবোর্ডের প্রয়োজন পড়ে। তাই প্রসেসর আপগ্রেডের আগে এক্সপার্ট কারো সাথে পরামর্শ করে নিতে হয়।
আপনার পিসির যাবতীয় সফটওয়্যারগুলোকে অটো আপগ্রেড সেটিংস করে নিলে ভালো হয়। কারণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনি আপনার পিসির সফটওয়্যারগুলোকে পিসির পারফরমেন্সের উপর প্রভাব ফেলে। আপগ্রেডেড সফটওয়্যারগুলো আপনার পিসির পারফরমেন্সের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে পারবে।
বেশির ভাগ সফটওয়্যারগুলোর সংস্করণ দেখেই এগুলো বুঝা যায়। যেমন একটি সফটওয়্যারকে 0.0.0 তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। নতুন আপগ্রেডটি যদি 0.0.1 হয় তাহলে এটি হবে Bug Fix আপগ্রেড। যেমন মজিলা ফায়ারফক্সের সচারচর আপগ্রেড সমূহ। আর নতুন আপগ্রেডটি যদি হয় 0.1.0 বা 1.0.0 তাহলে এটি হবে নতুন অপটিমাইজেশন এবং নতুন ফিচার। যেমন ফারয়ারফক্স ৫৭তে নতুন অনেকগুলো ফিচার রয়েছে যেগুলো ফায়ারফক্স ৫৬তে নেই।
পিসি আপগ্রেড এর ক্ষেত্রে আপনার পারফরমেন্সকে গুরত্ব দেই বেশি। কিন্তু পারফরমেন্স ছাড়াও বিলাসবহুল আপগ্রেড রয়েছে। এগুলো পারফরমেন্স বৃদ্ধিতে কোনো ভূমিকা রাখে না। যেমন বড় সাইজের মনিটর নিলে আপনি পারফরমেন্সে কোনো পার্থক্য পাবেন না। আবার ওয়্যারলেস মাউস, কিবোর্ড, উন্নত কোয়ালিটির স্পিকার সিস্টেম ব্যবহার করলেও আপনি পারফরমেন্সের উন্নতি পাবেন না। আবার পিসিতে দামি কেসিং ব্যবহার করলেও আপনি পিসির পারফরমেন্স উন্নত করতে পারবেন না। তাই এ জাতীয় আপগ্রেডগুলোকে আমি পারফরমেন্স ব্যাতিত আপগ্রেড সেক্টরে রেখেছি।
তো এই ছিল আজকের টিউন। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে মূলত র্যাম আর গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে আমরা পিসির পারফরমেন্স আপগ্রেড করতে পারি। তবে মাদারবোর্ড আপগ্রেড বিষয়টি আজকের টিউনে রাখলাম না কারণ এটি অনেক জটিল একটি প্রক্রিয়া, আর মাদারবোর্ড পরিবর্তন করা আর নতুন পিসি কেনা প্রায় একই কথা।
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!
nice tune