আশাকরি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আপনাদের দোয়ায় আমিও ভাল আছি। তবে খুবই ব্যস্ত সময় পার করতেছি। কয়েকটা ওয়েবসাইটের কাজ এক সাথে। অনেকেই ফেসবুকে happy friendship day লিখে মেসেজ দিয়েছেন। অনেককেই রিপ্লাই দিতে পারি নি। তাই তাদেরকে এবং এই টেক দুনিয়ার সকল ভিজিটর কে জানাই happy friendship day এর শুভেচ্ছা।
যখন সোস্যাল মিডিয়া ছিল না তখন অনেক নাম করা ব্র্যান্ড ই ছিল আমাদের অপরিচিত। আর যখন টুইটার, ফেসবুক এবং লিঙ্কডইন এর মত বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া আসলো আর মার্কেটার রা তাদের প্রোডাক্ট সেখানে শেয়ার করতে শুরু করলো তখন থেকেই অনেক অপরিচিত ব্রান্ডের সাথে আমরা পরিচয় হতে পেরেছি। অনেক সময় দেখা যায় একটা বাজে প্রোডাক্ট ও অনেক পরিচিত হয়ে যায়ই।
আমি যে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ খুব এক্সপার্ট তা কিন্তু নয়। তবে আপনারা জানেন আমি যতটুকুই জানি ততটুকুই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। তাই আজও আমি সেটাই করার চেষ্টা করতেছি। বেশ কিছু ভুল আমার চোখে পড়ে যারা সোস্যাল মার্কেটিং এ কাজ করে থাকে। তো সেগুলোর মধ্যেই আজকে আপনাদের সাথে ৭টি বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করতেছি।
তো চলুন দেখি আমরা কি ধরনের ভুল সাধারণত আমরা করে থাকি।
১। আমরা কথার মাধ্যমেই সব বুঝিয়ে দিতে চাইঃ
আমরা এতটাই বাঁচাল হয়ে গেছি যে, মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও অডিয়েন্সদেরকে কথার মাধ্যমেই সব বুঝাতে চেষ্টা করি। সব কিছু লিখে একেবারে ইতিহাস রচনা করে ফেলি। কিন্তু মূল কাজের খবর নেই। সোস্যাল মিডিয়া কন্টেন্টের ক্ষেত্রে অডিয়েন্সদেরকে আকৃষ্ট করার মূল হাতিয়ার হচ্ছে দেখানো, কথা বলা নয়। তবে টেক্সট এর যে দরকার নেই তা কিন্তু আমি বলতেছি না। টেক্সট অবশ্যই দিতে হবে। অডিয়্যান্স রা মূলত পছন্দ করে ভিজুয়্যাল জিনিস এবং টেক্সট।
যেন দেখা মাত্রই বুঝতে পারে। আপনি কি জানেন টুইটারে ইমেইজ এর সাথে লিংক তাতে লিখার সাথে লিংক দেয়ার থেকে ২০০% বেশি অডিয়েন্স এঙ্গেজ হয়। লাইনের পরে লাইন লিখলে সেটাকে গদ্য বলা হয়, সেটা কখনো বাইয়ারদেরকে সহজে আকৃষ্ট করতে পারে না।
আমরা যদি Oreo ব্র্যান্ডের মত ইমোলেট করে ও ইলোস্ট্রেটর দিয়ে সুন্দর ছবি একে, কৌশলতার সাথে ভিডিও তৈরি করে কিংবা ওয়াটার ইফেক্ট ছবি তৈরি করে তার মাধ্যমে মার্কেটিং করি তাহলে সেটা অডিয়েন্সদের বেশি আকৃষ্ট করবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া আমরা খুবই সৌভাগ্যবান যে, আমরা চাইলে canva থেকে অনলাইনেই বিভিন্ন আকর্ষণীয় ব্যানার তৈরি করতে পারি যা অডিয়্যান্সদেরকে আকৃষ্ট করবে।
সামাজিকভাবে এডভারটাইজ করা একটা বড় ভুল। কারণ সেখানে আপনি বেশি লোকের কাছে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে বলতে পারবেন না। কিন্তু সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং খুবই দক্ষ একটি পদ্ধতি কেননা প্রচুর মানুষ এখানে প্রতিনিয়ত তাদের মনের কথা শেয়ার করে আর মিডিয়া এবং মেসেঞ্জিং করে থাকে। তবে প্রায়শই দেখা যায় আপনি কোনো ভাল ফিড এ টিউন করলেন আপনার টিউন টি ডিলিট করে দিল। অথবা unfollow করে দিল। এতে আপনার মন খারাপ করার কিছু নেই। উনার কাছে জিনিসটা হয়ত ভাল লাগে নি। তাই এই কাজ করেছে। কিন্তু অন্যদের কাছে তো ভাল লাগতেও পারে। তাই কখনো এরকম কারণে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং থেকে পিছিয়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ হয়ত একটা কন্টেন্ট একজনের কাছে ভাল না ও লাগতে পারে। কিন্তু আপনার কাজ হচ্ছে ধর্য্য নিয়ে অন্য কোনো জায়গায় নিয়মিত ফিড করে যাওয়া।
আজকাল ট্রেডিং এ টিকে থাকা খুব সহজ ব্যাপার নয়। ট্রেডিং বিষয়টি দিন দিন খবই জনপ্রিয় হয়ে উঠতেছে। নিউজ জ্যাকিং এর মাধ্যমে ভনভনের পরিবর্তে অডিয়্যান্সদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা, তাদের প্রডাক্ট এর পিংব্যাক দিয়েছে এমন পরিচিত ব্যক্তির কথা হেডলাইণে প্রকার করে তার এই কন্টেন্ট খুব দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে দিতে পারেন।
গত বছর, AT&T খুবই গুরুগাম্ভীর ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন সোসাল মিডিয়া থেকে তাদের রাজস্ব প্রদানের ব্যর্থতার জন্য। এরপর হারিকেন সেন্ডির টুইটারে যখন ডিস্কাউন্ট প্রচার করে তখন তারা এই গ্যাপটুকু পূরণ করতে সক্ষম হয়। এটা সত্যি যে বর্তমানে মার্কেটিং খুবই সংবেদনশীল সময়। যদি আপনি দেরি করেন তাহলে এই গেমসে আপনি হেরে যেতে পারেন।
আমাদের সামাজিক কৌশলের দিক দিয়ে অনেক ঘাটতি দেখা যায়। আমরা অনেকেই সব সামাজিক প্লাটফর্ম কে এক ভাবি। যার কারণে আমরা সঠিক বাইয়ারের সন্ধান পাই না। যারা b2b বাইয়ার তারা তাদের অধিকাংশ সময় লিঙ্কডইন এ ব্যয় করে। যেখানে B2c বাইয়ারদেরকে ফেসবুকে দেখা যায়।
তাই আপনি আগে দেখুন আপনার অডিয়্যান্স কোন প্লাটফর্ম বেশি পছন্দ করে এরপর আপনি বিষয় বস্তুর ধরন নির্বাচন করে আকর্ষনীয় স্টাইলে কন্টেন্ট লিখে সেটা সেই প্লাটফর্মে পাবলিশ করুন। দেখবেন অনেক ভাল ফল পাবেন। আর সকল চ্যানেল বা প্লাটফর্মে একই কন্টেন্ট পাবলিশ না করে আলাদা আলাদা ধরনের কন্টেন্ট লিখে একই জিনিস পাবলিশ করতে পারেন।
আপনার কাস্টমার আপনার কাছ থেকে একটা জিনিস নিল। নিয়ে কোনো বিষয়ে আপনাদের কাছে কমপ্লেইন করলো আর আপনারা তার কোনো রিপ্লাই দিলেন না। এ ধরনের কাজ করলে আপনার কাষ্টমার আপনার এই প্রডাক্টের কথা ফ্যামিলি, ফ্রেন্ডস কে তো জানাবেই সাথে সাথে আপনার পেইজে গিয়ে নেগেটিভ রিভিঊ দিয়ে দিবে। কারণ সব সোসাল সাইটেই রিভিউ অপশন আছে। এটা আপনারা জানেন।
এটা আশ্চর্যজনক কিছু নয় যে, যেসব যারা এক ঘন্টার মধ্যে রিপ্লাই দিতে ব্যর্থ হয় ৭২% কাস্টমার সেই ব্র্যান্ডের নামে কমপ্লেইন বা খারাপ রিভিউ দিয়ে থাকে। কারণ তাদের সেই প্রডাক্ট সম্পর্কে খারাপ ধারণার সৃষ্টী হয়। যেমন, ম্যাক ডোনাল্ড একটী কোম্পানির একটা খাদ্য সম্পর্কে নিন্দা জানিয়ে টিউমেন্ট করেছিলেন ঐ কোম্পানির একটি টিউনে। আর এম সি ডোনাল্ড এর ফ্যান হচ্ছে প্রায় ৩১মিলিয়ন। তাহলে বুঝুন ঐ কোম্পানির ঐ প্রোডাক্টগুলোর পরবর্তী অবস্থা কি হয়েছিল?
আমরা এখন এমন যুগে আছি যেখানে অনেক মানুষই ধোঁকাবাজি করে। এমন কি আমরা যে মানুশ জাতি এটাও আমরা অনেক সময় ভুলে যাই। আমরা অনেক সময়ই পন্যের যে ছবি প্রকাশ করি কম দামে সেখানে যেরকম পন্য দেখাই কিন্তু কাস্টমার কিনে নিয়ে দেখে সেটা ভিন্ন পন্য।
আবার অন্যদিকে রিয়েল রিপ্লাই দেয়ার সময় পায় না বলে অটো রিপ্লাই দিয়ে রাখে। কাস্টমার হয়ত প্রশ্ন করে একটা আর উত্তর পায় আরেকটা। আরে ভাই আপনি একজনের কাছে একটা জিনিস বিক্রি করতেছেন সে যদি আপনার সাথে কথাই বলতে না পারে তাহলে আপনার ব্র্যান্ড কখনই পপুলার হবে না। কমিউনিটি বিল্ড আপ ছাড়া আজ পর্যন্ত কেউ মিডিয়া মার্কেটিং এ এগিয়ে যেতে পারে নি।
আজকের মত এ পর্যন্তই। আমি জানি আমি মার্কেটিং এক্সপার্ট না। শুধু আপনাদের জন্য কিছু কথা বলার চেষ্টা করলাম। যদি কিছু ভুল করে থাকি তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত এই পর্যন্তই। দেখা হবে ইনশাআল্লাহ পরের টিউনে।
আল্লাহ হাফিজ।
আমি মোঃ আশিকুর রহমান সরল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 83 টি টিউন ও 102 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একজন প্রযুক্তি প্রেমী।কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করছি।পৃথিবীকে নতুন কিছু করে দেখাতে চাই। My Website