আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার বেড়েই চলেছে।ব্যক্তিগতভাবে মোবাইল, কম্পিউটারের ব্যবহার যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে ইন্টার্নেট বাঅনলাইনের ব্যবহার। সেইসাথে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে প্রতারণা, হ্যাকিং কিংবা স্প্যামিংয়ের মতো সাইবার অপরাধ। তাই অনেক ব্যবহারকারী অনলাইনে নিজেকে অনিরাপদ মনে করেন। যখনই কোনো কম্পিউটার বা মোবাইল (ফোন প্যাড ট্যাব) অনলাইনে যুক্ত থাকে তখনই এই নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়।তবে সতর্কতা এবং বিশেষ ব্যবস্হা গ্রহণ করে এই ঝুঁকি কমানো যায়। আমার এই টিউনের মূল উদ্দেশ্য মূলত কিভাবে অনলাইনে নিরাপদ থাকা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা।
১. সাধারণ ও ইমেইল সাইটঃ
"""""""""""""""""""""""""""
ব্যবহারকারীদের অনেকেই ইয়াহু, হটমেইল বা জিমেইল মতো সাধারণ এবং বিনামূল্যের ইমেইল সেবা ব্যবহার করে থাকেন। এগুলোর প্রতিটি সাইটে একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায়না।হ্যাক হলে আমাদের অনেক প্রয়োজনীয় মেইল হারিয়ে যেতে পারে।আবার ঐ একাউন্ট ব্যবহার করে প্রতারণা বা অনুরূপ কাজ করা হতে পারে যার ব্যবহারকারীর উপর বর্তায়।
এসব ক্ষেত্রে নিন্মোক্ত সাধারণ সতর্কাগুলো মেনে চলা দরকার।
► সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করা - অনেকেই তাদের ইমেইল একাউন্টের পাসওয়ার্ড হিসেবে নিজের নাম, কীবোর্ডের সহজ বিন্যাস (যেমন qwerty, asdfg, 1234567890) ব্যবহার করে। এটি মোটেই সংগত নয়।কারণ ইমেইলের ক্ষেত্রে আপনার ইমেইল একাউন্টই আপনার ইউজারনেম, যা প্রায় সবাই জানে।যে কারণে আপনার পাসওয়ার্ডটি যদি সহজ হয় তাহলে যে কেউ মাত্র কয়েকবারের চেশ্টাতেই আপনার একাউন্ট হ্যাক করতে পারবে।এজন্য জটিল বিন্যাস ব্যবহার করা উচিত।
► নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরাবর্তন করা - কিছুদিন পরপর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা প্রয়োজন।
► সাইবার ক্যাফে বা অনেকেই ব্যবহার করে এমন কোনো কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সাইটগুলো থেকে লগ আউট করতে হবে।
► যেসব ক্ষেত্র দ্বিমুখী ভেরিফিকেশনের ব্যবস্হা রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করা। যেমন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিমেইল একাউন্টটির নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করা যায়।এজন্য 2-Step Verification অপশনটি ব্যবহার করতে হবে। যেভাবে এনাবল করবেন-
> প্রোফাইল থেকে একাউন্ট সেটিংসয়ে যান।
> 2-Step Verification অপশনে ক্লিক করুন।
> মোবাইল নাম্বার দিন এবং সেন্ড কোড বাটনে ক্লিক করুন।
> এখন জিমেইল থেকে মোবাইলে একটি সিকিউরিটি কোড পাঠানো হবে।সেটি দিয়ে ভেরিফাই অপশনে ক্লিক করুন।
> এরপর 2-Step Verification অন করুন।
এখন কেউ এই একাউন্টে অনধিকার প্রবেশ করতে চাইলে তাকে মোবাইল কোড পেতে হবে এবং ব্যবহার করতে হবে।যেহেতু কোডটি একবার মাত্র ব্যবহার করা যাবে সেহেতু কেউ আগের কোডটি জানতে পারলেও একাউন্টটি নিরাপদ থাকবে।
► এছাড়া সাধারণ ওয়েবসাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিছু বাড়তি সতর্কতা মেনে চললে নিরাপদ থাকা যায়।অনেক ওয়েবসাইটে বিশেষ ধরনের প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকে।ওয়েব ব্রাউজারে কুকিজ চালু থাকলে এসব প্রোগ্রাম ব্যবহারকারীর কম্পিউটার ও ব্রাউজারের বিভিন্ন তথ্য অন্যত্র পাচার করে।এসব ওয়েবসাইট ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকা প্রয়োজন।কোনো কোনো ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীর কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য চায়।বিশেষ প্রয়োজন না থাকলে এসব তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
২. সামাজিক যোগাযোগ সাইটঃ
""""""""""""""""""""""""""
বর্তমানে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য রেখে দেন।ব্যক্তিগত ছবিও অনেকে শেয়ার করে থাকেন।ফলে সেসকল সাইটের একাউন্টের পাসওয়ার্ড কেউ জেনে ফেললে তাতে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।বিশেষ করে মেয়েদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।এছাড়া সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহারের সময় নিম্নোক্ত সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজনঃ
► কাউকে 'বন্ধু' বানানোর আগে তার সম্পর্কে নিশ্চিত হোন, বাস্তব জগতে যে বন্ধু হওয়ার যোগ্য নয় তাকে বন্ধু না কাই উত্তম।
► ভার্চুয়াল বা বিদেশে অবস্হানকারীদের বন্ধু বানানোর সময় তার পরিচয় সম্পর্কে সম্যকভাবে নিশ্চিত হোন।এজন্য তার প্রোফাইল দেখুন, পারস্পারিক বা মিউচুয়াল বন্ধুদের মধ্যে কেউ আপনার পরিচিত পরিচিত কিনা সেসব বিষয় দেখে নিশ্চিত হোন।
► খুবই ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন।
► ফেসবুক কিংবা ইমেইল ব্যবহার করার পর প্রতিবার লগ আউট করা।
► স্কুল, সাইবার ক্যাফেতে ইন্টারনেট ব্যবহার করার পর সাইন আউট করা।
► বন্ধু বা পরিচিত কারো আইসিটি যন্ত্র ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা।
► কোনো অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো সোশিয়াল এপ্লিকেশন ব্যবহারের অনুরোধ এলে নিশ্চিত না হয়ে তাতে ক্লিক না করা।
৩.এডাল্ট সাইটঃ
"""""""""""""""""""
ওয়েবে এমন অনেক সাইট রয়েছে যা কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই সকল সাইটে বয়সোপযোগী নানান বিষয় থাকে যা সকলের জন্য উপযুক্ত নয়।এই সকল সাইট ব্যবহারের সময় অনেক তথ্য বা এপ্লিকেশন চলে আসে যা আপনার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে তাই এসব সাইট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই হচ্ছে নিরাপদ থাকার সবচেয়ে বড় কৌশল।
পরিশেষে বলব আপনি যদি এসব কৌশল হালকাভাবে নেন, তাহলে আপনি নিশ্চিত হয়ে যান যে আপনি অনলাইনে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।সর্বোপরি আত্নসচেতনতাই আপনাকে সবচেয়ে বেশী নিরাপদ রাখতে সক্ষম।
আজ এ পর্যন্তই।আপনি যদি কোনো শিক্ষা অর্জন করে এর বাস্তব প্রয়োগ করতে পারেন তবেই টিউনটির উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বলে আমি মনে করব।যাই হোক, সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।আবারও আপনাদের সামনে হাজির হবো নতুন কোনো টিউন নিয়ে।খোদা হাফেজ। যেসব ক্ষেত্র দ্বিমুখী ভেরিফিকেশনের ব্যবস্হা রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করা। যেমন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিমেইল একাউন্টটির নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করা যায়।এজন্য 2-Step Verification অপশনটি ব্যবহার করতে হবে। যেভাবে এনাবল করবেন-
আমি জুবায়ের আহমদ শাকিল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 58 টি টিউন ও 221 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।