যেখানে আমাদের ওয়েবসাইট এর পেজ গুলো থাকে, সেটাই হলো ওয়েব হোস্টিং। প্রতিটা ওয়েবসাইট অসংখ্য পেজ নিয়ে তৈরি, এই পেজ গুলো থাকার স্থানই ওয়েব হোস্ট বা ওয়েব হোস্টিং নামে পরিচিত। এই স্থান গুলো হল সার্ভার এর হার্ডডিস্কের স্পেস বা স্থান। এই সার্ভার কম্পিউটার গুলোই বিশ্বের সবগুলো ওয়েবসাইট এর ডাটা সংরক্ষণ করে রাখে। এটা কোনো এক জায়গা বা একটা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করে না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন স্থানে ডাটা সেন্টার বা সার্ভার সেন্টার বসিয়ে ওয়েব হোস্টিং সেবা প্রদান করে।
সার্ভার এর অপারেটিং সিস্টেমঃ
হোস্টিং সার্ভার গুলো লিনাক্স কিমবা উইন্ডোস সার্ভার অপারেটিং সিস্টেমের হতে পারে। ওয়েবসাইট এর ফাংশনালিটি ও কনফিগারেশনের উপর হোস্ট এর অপারেটিং সিস্টেম ততটা প্রভাব ফেলে না। কিন্তু উইন্ডোস সার্ভার অপারেটিং সিস্টেমের চাইতে লিনাক্স সার্ভার অপারেটিং সিস্টেম অত্যাধিক জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত। আর তুলনামূলক সস্তাও বটে। তাই, যদি বাছাই করে হোস্টিং কিনতে হয়, তবে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম হোস্টিং সার্ভার নেয়াই ভালো।
ওয়েব হোস্টিং এর প্রকারভেদঃ
শেয়ারড, ভিপিএস, ডেডিকেটেড এই তিন রকমের হোস্টিং বেশ প্রচলিত। শেয়ারড হোস্টিং এর ক্ষেত্রে অনেকগুলো ওয়েবসাইট একটা ওয়েব সার্ভার এ বিদ্যমান থাকে। প্রতিটি ওয়েবসাইট এর জন্য সার্ভার এ একটা করে স্বতন্ত্র ফোল্ডার থাকে, যা দ্বারা প্রতিটি ওয়েবসাইট ঐ সার্ভার এ আলাদা ভাবে থাকে। সবচেয়ে কম দামে এই হোস্টিং গুলোই পাওয়া যায়। নতুন যারা হোস্টিং নিতে চান তাদের জন্য সাধারনত শেয়ারড হোস্টিং সবচেয়ে ভালো অপশন। কম ভিজিটর এর ওয়েবসাইট এর জন্য এর কোনো বিকল্প নেই। সাধারনত শেয়ারড হোস্টিং এর সার্ভার যে কোনো ওয়েবসাইট এর জন্য ৫০০০০ ভিজিটর এর চাপ স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারে। আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ এর শেয়ারড হোস্টিং সবচেয়ে বেশি ভিজিটর কে সার্ভিস দিতে পারে। এই ধরনের শেয়ারড হোস্টিং সার্ভার অনেক বেশি শক্তিশালী হয়। হোস্ট অর্থাৎ সার্ভার কনফিগারেশনের উপর ভিত্তি করেই কেবলমাত্র এটা ঠিক করা যায়। এর চাইতে বেশি ভিজিটর হলে ভার্চুয়াল সার্ভার বা ডেডিকেটেড ব্যবহার করতে হবে আপনাকে। ভার্চুয়াল সার্ভার বা ভিপিএস হল ভার্চুয়াল মেশিন। যদিও এগুলো ডেডিকেটেড অর্থাৎ ১ টা ফিজিক্যাল সার্ভার এ বিদ্যমান থাকে। মূলকথা, ডেডিকেটেড সার্ভার এর কিছু অংশ নিয়ে ভার্চুয়াল সার্ভার গুলো তৈরি হয় যেগুলো প্রায় ডেডিকেটেড সার্ভার অর্থাৎ ফিজিক্যাল সার্ভার এর মতই আচরণ করে। ওয়েবসাইট যদি অত্যন্ত ভারী আর প্রচুর ভিজিটর আসার মত সামর্থ্যবান হয়, তবে ভিপিএস বা ডেডিকেটেড সার্ভারই ভরসা।
ডিস্ক স্পেসঃ
আপনার ওয়েবসাইট এর ডাটা বা জিনিসগুলো রাখার জন্য আপনি কতটুকু স্থান পাচ্ছেন, সেটাই হল ডিস্ক স্পেস। সাধারণত ২০০ মেগাবাইট হোস্টিং হলেই ছোট একটি ওয়েবসাইট এর জন্য যথেষ্ট হয়। কিন্তু ডায়নামিক কিমবা সিএমএস বা আরো ভারী ওয়েবসাইট হলে, সেক্ষেত্রে ডিস্ক স্পেস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শেয়ারড হোস্টিং এ অনেক সময় আন লিমিটেড ডিস্ক স্পেস অফার থাকে। কিন্তু বাস্তবে সেখানে অনেক নিয়ম-কানুন বা কন্ডিশন দেওয়া থাকে। তাই আন লিমিটেড ডিস্ক স্পেস অফারের শেয়ারড হোস্টিং বর্জন করাই ভালো। তাছাড়া আন লিমিটেড ডিস্ক স্পেস অফারের শেয়ারড হোস্টিং এর সার্ভার আপটাইম ভালো হয় না। আপনার যদি মনে হয়, আপনার ওয়েবসাইট এ অনেক পেজ বা লেখা থাকবে, ওয়েবসাইট এ অনেক ডাটা থাকবে তবে ২ জিবি, ৫ জিবি বা ১০ জিবি হোস্টিং বেছে নিতে পারেন। মুভি ডাউনলোড বা বড় ফাইল ডাউনলোড ভিত্তিক ওয়েবসাইট গুলোতে সাধারণত আন লিমিটেড হোস্টিং এর প্রয়োজন হয়। এসব ক্ষেত্রে আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ থাকা বাঞ্ছনীয়।
ব্যান্ডউইথঃ
আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটরের কম্পিউটার আর ওয়েব হোস্টিং সার্ভার এর মধ্যে কতটুকু ডাটা আদান প্রদান হতে পারবে তা বোঝাতেই ব্যান্ডউইথ লিমিট ব্যবহার করা হয়। ব্যাপারটা এমন, আপনার ওয়েবসাইট এর একটা পাতার সাইজ ১০ কিলোবাইট। যখন একজন ভিজিটর ঐ পাতাটি একবার দেখেন, তখন আপনার ব্যান্ডউইথ লিমিট থেকে ১০ কিলোবাইট কাটা যায়। এটি সাধারণত মাসের হিসেবেই গননা করা হয়। শুধু পেজ দেখলেই নয়, আপনি যখন কোনো ফাইল আপলোড দিচ্ছেন, তখন আপনার ঐ ফাইল এর সাইজ এর ব্যান্ডউইথ কাটা হয়। তাই এই ব্যান্ডউইথ লিমিট এর ঝামেলা থেকে বাচার জন্য আন লিমিটেড ব্যান্ডউইথ সুবিধা আছে এমন হোস্টিং বেছে নেওয়া উচিত।
সৌজন্যেঃ গ্রীন হোস্টিং
আমি ভাস্কর বনিক বনিক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 25 টি টিউন ও 121 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি বিগত পাঁচ বছর যাবত এসইও এবং ওয়েব ডেভোলাপমেন্ট এর বিভিন্ন কাজ করেছি। টেকটিউনস একটি অসাধারন প্লাটফরম নিত্য নতুন কিছু জানার ও শিখার। আমি টেকটিউনস অনেক ভালবাসি।
Very nice article 🙂