বিদেশে ডাক্তারী পড়ার ভাল এবং খারাপ দিক সমূহ।

আস্-সালামু আলাইকুম। সবাই কে জানাই আন্তরিক প্রীতি ও অভিনন্দন। টেকটিউনস এ এইটা আমার প্রথম টিউন। হয়তো আমি এটাকে সুন্দর ভাবে প্রকাশ করতে পারিনি। তারপর ও যদি  ইনফরমেশন গুলো  কারোর কাজে লাগে তাই শেয়ার করলাম।

 

বাংলাদেশ থেকে ইদানিং অনেক স্টুডেন্ট ডাক্তারি পড়তে বিদেশে যাচ্ছে। তার মধ্যে বেশির ভাগই চায়না তে যাচ্ছে। তাই আমি চায়না তে ডাক্তারি পড়াশোনার সকল দিক আলোচনা করবো।

চায়নাতে মোটামুটি ৪৫ টি বিশ্ববিদ্যালয় কে  বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) অনুমোদন দিয়েছে।  নিচে সব গুলো বিশ্ববিদ্যালয় এর নাম দেয়া হলো। এখন আসুন চায়নাতে ডাক্তারী পড়ার ভাল এবং খারাপ দিক গুলো দেখে নেই। প্রথমেই আমি ভাল দিক গুলো নিয়ে আলোচনা করবো ...।।

চায়নার এসব মেডিকেল কলেজ গুলো WHO কর্তৃক স্বীকৃত। এগুলো তে পড়ালেখাও হয় আন্তর্জাতিক মানের। সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্র্যাক্টিকেল নলেজ এর উপর বেশি গুরুত্ব দেয়। মেডিকেল পড়াশনা করার জন্য পর্যাপ্ত ল্যাব এর ব্যবস্থা আছে। ফার্স্ট ইয়ার থেকেই এনাটমি শিক্ষার জন্য স্টুডেন্টদের কে ডেড বডি সরবরাহ করা হয়, যা বাংলাদেশের বেশির ভাগ বেসরকারী কলেজে  দেয়া হয় লাস্ট ইয়ারে।  আর ল্যাব গুলো তে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত হিউম্যান স্কেলেটন এর ব্যবস্থা ও রয়েছে। অনুবীক্ষন যন্ত্র সহ আধুনিক মেডিকেল শিক্ষার জন্য যা কিছু দরকার সব কিছুই পাওয়া যায়। প্রতি বছরে দুটি সেমিস্টার হয়ে থাকে। আর এখানে কোন সাবজেক্ট এ অকৃতকার্য হলে এক মাস পর পুনরায় পরীক্ষা নেয়া হয়।   কিন্তু সেমিস্টার লস হয় না। পাস নম্বর বাংলাদেশ এর মতই ৬০ পেতে হবে।

চাইনিজরা খুব বন্ধুসূলভ  এবং হেল্পফুল। এখানে শুধু বাংলাদেশীরাই নয়, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান সহ আরো অনেক দেশের স্টুডেন্ট পড়াশোনা করে। আমার ইউনিভার্সিটি তে ৫০ জনের ও বেশী বাংলাদেশী আছে বর্তমানে। এইরকম সব ইউনিভার্সিটি তে কম বেশি বাঙ্গালী আছে।

চাইনিজ ফুড সারা বিশ্বে পরিচিত। তবে আমাদের দেশের চাইনিজ ফুড গুলো এদের থেকে ভিন্ন স্বাদের হয়, কারণ চাইনিজ রা তাদের নিজস্ব মসলা  ইউজ করে। আর বাংলাদেশে যেসব শাক সবজি আছে, সব ধরনের খাবার ই চায়নাতে পাওয়া যায়।

 

এবার আসুন খারাপ দিক গুলো জেনে নেই। চাইনিজদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা একেবারেই কম। শুধু যারা ইউনিভার্সিটি তে লেকচার দেয়, তারাই ইংরেজি জানে। তাই যারা নতুন নতুন চায়নায় আসে, তারা একটু বিপদে পড়ে। কারণ কিছু কিছু কিনতে গেলে বা বাইরে কোথাও ঘুরতে গেলে হালকা চাইনিজ ভাষা জানতে হবে। কারণ, কলেজের টিচার ছাড়া আর  কেউ ইংরেজি বোঝেনা।তবে ইউনিভার্সিটি তে ফ্রীতে চাইনিজ ভাষা শিখায়।  আর একটা সমস্যা হচ্ছে, চায়নাতে মানুষ ধর্মে বিশ্বাস করে না। এখানে অল্প কিছু মুসলিম আর কিছু বৌদ্দ পাওয়া যায়। কিছু কিছু মুসলিম সিটি আছে যেমন, সিনজিয়াং। এই রকম কিছু সিটি আছে যেখানে মুসলিম পাওয়া যায়। বিধর্মী দেশ বিধায়, এখানে ছেলে-মেয়েদের অবাধ মেলামেশা এবং অ্যালকোহল জাতীয় পন্য অনেক সহজলভ্য। তবে হা, এখানে অনেক মুসলিম ভাই আছে যারা এসব নেশা থেকে দূরে থাকে। আর একটা সমস্যা হলো, এখান থেকে পাশ করার পর বাংলাদেশে গিয়ে আবার পরীক্ষা দিতে হয়। তাহলেই আপনি ডাক্তারী রেজিষ্ট্রেশন পাবেন।

আমি আপনাদের কে ভাল আর খারাপ দুইটা দিকই বললাম। আপনারা যারা চায়নাতে আসতে ইচ্ছুক, তারা এই কথা গুলো মনে রাখবেন। আপনারা চাইলে আমি চায়না তে আসার প্রসেস গুলো আরেকদিন আলোচনা করবো। আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে গুগল মামার হেল্প নিতে পারেন অথবা আমাকে নক করতে পারেন।

আজকে এই পর্যন্তই। আল্লাহ হাফেজ।

Level 0

আমি skipper। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 18 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

need to talk to u. tnx

টিউনটা পড়লাম। চাইনিজ মেডিকেল সম্পর্কে লিখেছেন ভালো কথা, কিন্তু আমাদের দেশের মেডিকেল সম্পর্কে বানোয়াট তথ্য না দিলেই নয়?
প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে শিক্ষার্থীদের এনাটমি পড়তে হয় এবং এজন্য যে প্রয়োজনীয় ডেডবডি এবং স্কেলেটন লাগে যা পুরোটাই সরবরাহ করা হয় – ডেডবডি কলেজ থেকে আর স্কেলেটন শিক্ষার্থীরা কিনে নেয় বা কলেজ থেকে দেয়। লাস্ট ইয়ারে ডেডবডি দেয় এই অবাস্তব মিথ্যা কথা বলার আগে মেডিকেলের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে পুরো জানা উচিত ছিল আপনার। লাস্ট ইয়ারে হাসপাতালে রোগী নিয়ে শিক্ষা দেয়া হয় এখানে এনাটমির ডেডবডির শিক্ষা সেই প্রথম, দ্বিতীয় বর্ষে শেষ করেই সবাই লাস্ট ইয়ারে আসে। লাস্ট ইয়ারে এনাটমি নতুন করে শেখানো হয় না।

আর মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় সেমিস্টারের কোন ব্যবস্থা নাই, ইয়ার বা বর্ষ ভিত্তিক।

অবাস্তব তথ্য দেয়ার চেয়ে তথ্য যাচাই করে তথ্য দেবেন।

— ডা. তানভীর ইসলাম

Level 0

তানভীর ভাই, আমি যাচাই করেই লিখেছি। আমার ছোট ভাই ও বাংলাদেশে পড়াশোনা করে। আর সেমিস্টার সিস্টেম বাংলাদেশে চলে না কিন্তু অন্য দেশে চলে। প্লিজ খোজ নিয়ে তারপর কমেন্ট করেন। ধন্যবাদ

Level 0

আর বাংলাদেশে সরকারী মেডিকেল কলেজ গুলো অনেক ভালো। কিন্তু সেই তুলনার বেশির ভাগ বেসরকারী মেডিকেল কলেজে গেলে জানতে পারবেন কিভাবে পড়ানো হয়।বেসরকারী এক মেডিকেলে আমার ছোট ভাইয়ের দ্বিতীয় বর্ষ শেষের পথে কিন্তু এখনো ডেড বডি ডিসেকশন এর সু্যোগ হয় নি।

বেসরকারি মেডিকেলগুলোর কোনটার কথা বলছেন জানি না। কিন্তু ভালো মানের সব কলেজেই সব কিছু পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। রোগীর পরিমাণের সাথে সরকারির সাথে বেসরকারি তুলনা চলে না। আর ডেডবডি কখনই লাস্ট ইয়ারে কাটায় না। আর আপনার রিলেটিভ পড়াশোনা করে, আর আমি নিজেই এখানকার সরকারি মেডিকেলের ডাক্তার। শোনা কথার চেয়ে প্রাক্টিকাল জ্ঞানটা এব্যাপারে আমার বেশি 🙂

আর একটা কথা…চায়না মেডিকেল থেকে অনেকেই আমাদের দেশে ইন্টার্নশীপ বা অনারারি করতে আসছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে শুরু করে দূর দূরান্তের মেডিকেল কলেজে এদের নামে প্রচুর কমপ্লেইন আসে কারণ এদের তাত্ত্বিক জ্ঞান ভালো কিন্তু ব্যবহারিক জ্ঞান নিম্নমানের। এরকম স্টুডেন্ট আমাদের সাথেও আছে অনেক। সুতরাং যতই বলুন না কেন, ব্যবহারিক জ্ঞান ছাড়া এদেশে কোন ডাক্তারি বিদ্যা কাজে আসবে না

Level 0

তানভীর ভাই, আজকে নিউজ দেখলে দেখতে পাবেন, তিনটা বেসরকারী কলেজ কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যদি সারাদেশে এই রকম তদারকি করা হয়, তাহলে আরো ২০-২৫ টা কলেজ নিষিদ্ধ হবে।