পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ভাসমান সোলার এনার্জি প্রজেক্ট উদ্বোধন হলো সিঙ্গাপুরে

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভাসমান সোলার এনার্জি বা সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন হলো সিঙ্গাপুরে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ৪৫ টি ফুটবল মাঠের সমপরিমাণ জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে। সিঙ্গাপুর, ভাসমান এই সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পটিকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ এর গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে উল্লেখ করেছে। কিছুদিন আগে যার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

সারি সারি সৌর বিদ্যুৎ প্যানেলে এখন ঢাকা পড়েছে সিঙ্গাপুরের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত প্রাকৃতিক জলাধারটি। ১ লক্ষ ২২ হাজার সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল, জলাধারের ৪৫ হেক্টর জায়গা জুড়ে বসানো হয়েছে। যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সিঙ্গাপুরের পাঁচটি পানি পরিশোধনাগার এসব সৌর প্যানেলের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে চালানো যাবে।

এই ভাসমান সৌর প্যানেল প্রজেক্টটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম সোলার প্লান্ট। এটি তেরি করার সময় বেশকিছু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিক বিবেচনা করা হয়। মূলত প্যানেল গুলো এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন তা পানিতে সঠিক ভাবে মুভ করতে পারে ও ভেসে থাকতে পারে এবং সময়ের সাথে সাথে প্যানেল গুলো পানিতে তার অবস্থান ধরে রাখতে পারে। এটি ডিজাইন করার সময় প্যানেলগুলির গুণমান নিশ্চিত করা হয়েছে। পানিতে ভেসে থাকার জন্য প্যানেলের ক্যাবল গুলো খুবই কেয়ারফুলি ডিজাইন করা হয়েছে।

সিম্বকর্প ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, এই ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তৈরি করেছে। তাদের দাবি, ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্যানেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫ থেকে ১৫ ভাগ বেশি ভবনের ছাদে অবস্থিত সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল এর চেয়ে। কেননা এখানে অন্য কোন ভবনের ছায়ায় সূর্যরশ্মিকে বাধাগ্রস্ত হয় না আবার পানির প্রভাবে প্যানেল গুলো ঠান্ডা থাকে।

৫ ডিগ্রি তাপমাত্রাতে এই সোলার প্যানেলগুলো ফিল্টার করা হয়। যা বিশ্বের সবচেয়ে Optimum Generation এর পাওয়ার ফিল্টার। আসলে, এই প্যানেলগুলো যেন বেস্ট তাপমাত্রায় থাকে এবং সঠিক ভাবে বায়ু নিয়ন্ত্রিত থাকে তার জন্য প্যানেলগুলি বায়ুর দিকে মুখ করে রাখা। বেস্ট তাপমাত্রা এবং সঠিক ভাবে বায়ু নিয়ন্ত্রিত থাকায় এটি সিস্টেমের দক্ষতাকে দারুন ভাবে বৃদ্ধি করে।

মূলত সিঙ্গাপুর সরকার ভাসমান এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র টি গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয় পরিবেশবান্ধব জ্বালানির উৎস হিসেবে। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ওয়াটার এজেন্সী হিসেবে বছরে ৩২ কিলো টন কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে। যা ২০২৫ সাল নাগাদ সিঙ্গাপুরের জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।

Green Energy এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সোর্স হচ্ছে সৌর শক্তি। সিঙ্গাপুরের সরকার মনে করে সৌর শক্তি এমন একটি এলিমেন্ট যা সিঙ্গাপুরের সবুজ উদ্ভিদের (Green Plant) সুবিধার জন্য বেশি পরিমানে স্থাপন করা প্রয়োজন এবং এই স্থাপনা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তবে তা স্থাপন করার জন্য চ্যালেঞ্জগুলো হল খারাপ আবহাওয়া ও তীব্র বাতাসের বেগ। খারাপ আবহাওয়া ও তীব্র বাতাসের বেগের ফলে সৌর প্যানেলগুলো Effected হয়। তবে ইতোমধ্যে এসব সমস্যা সামাধানের জন্য প্রয়োজনীয় Solution তারা বের করছে। আশা করা আগামী এক থেকে দুই তিন বছরে এটি বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর হবে।

কমপক্ষে ২৫ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে এমনভাবে নকশা করা হয়েছে এই ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এমন আরও ৪টি ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে সিঙ্গাপুরে।

-

টেকটিউনস টেকবুম - ২৩ জুলাই ২০১২

Level 2

আমি টেকটিউনস টেকবুম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 470 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস