গত মঙ্গলবার ফেসবুক ঘোষণা দিয়েছে, রাশিয়ার Internet Research Agency এর সাথে যুক্ত সকল পেজকে ডিলিট করে দেবে। ইলভিগারি প্রিগোজিনের নেতৃত্বে একটি রাশিয়ান সংস্থা পরিচালিত ট্রল ফার্ম হচ্ছে Internet Research Agency।

আমেরিকা সিনেটের গোয়েন্দা বিষয়ক বাছাই কমিটির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে Internet Research Agency, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে ছিল। যাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নির্বাচিত করা।

২০২০ সালেও এটি একই কাজ করছে। তারা Peace Data নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে যা যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য থেকে প্রগতিশীল লেখক নিয়োগের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে এবং প্রতি আর্টিকেলের জন্য ২০০ ডলার অফার করছে। যেখানে লেখকদের QAnon এবং Belarus এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখতে হয়।

এখানে কিছু কন্টেন্ট সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও পরিচালিত হচ্ছে। Global Research এর মত বিভিন্ন কন্সপাইরেসি থিউরি ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হচ্ছে বিভিন্ন তথ্য, যার রাশিয়ার বিদেশনীতি প্রচারের দীর্ঘ ইতিহাস ছিল।

এ দিকে রাশিয়ার অপপ্রচারের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে Peace Data এবং তাদের একটি বিবৃতিতে বিষয়টি হতবাক করার মত বলে উল্লেখ করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন লেখক Business Insider এর একটি সাক্ষাৎকারে কিছু প্রশ্নের জবাব দেন এবং জানান কিভাবে তাকে Peace Data খুঁজে পেয়েছে এবং তাকে নিজেদের কাজে ব্যবহার করেছে।

যখন তাকে প্রশ্ন করা হল আপনি কেন এই কাজটি করছে, সে উত্তরে জানায়, "আমি যখন মার্চে আমার চাকরি হারাই তখন, যেকোনো ভাবে উপার্জনের জন্য মরিয়া ছিলাম। ঠিক এই সময় একজন সম্পাদক আমাকে টুইটারে মেসেজ পাঠায় এবং একটি আর্টিকেল লেখার বিনিময়ে ২০০ ডলার অফার করে। এতে আমি অনেক খুশি হই এবং কাজ করতে রাজী হয়ে যাই"।

লেখক জানান প্রথম অবস্থায় সে মনে করেছিল তাকে দিয়ে কোন বৈশ্বিক সংবাদ লেখানো হবে কিন্তু আগের আর্টিকেল গুলো দেখার পর তার এই ভুল ভাঙ্গে।

আসলেই কি প্রতি আর্টিকেলের জন্য ২০০ ডলার দেয়া হয়েছিল এই প্রশ্নের উত্তরে সেই লেখক বলেন, প্রথমে আমাকে প্রতি আর্টকেলের জন্য ২০০-২৫০ ডলার অফার করা হলেও পরবর্তীতে আমাকে ১০০ ডলার পেইড করা হয়েছিল।

লেখক আরও জানায় তাকে এই পর্যন্ত তিনটি আর্টিকেল লেখার জন্য ৩০০ ডলার দেয়া হয়েছে এবং তাকে Paypal এর মাধ্যমে পেমেন্ট করা হতো।

Peace Data, তাকে কিভাবে খুঁজে পায়? এমন প্রশ্নে সে বলে, আমার আগে Twitter এ একটি আর্টিকেল ছিল, হয়তো এটি দেখেই তারা আমার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

Business Insider এর সাথে আরও আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে নিজের কাজ ভুল বলে স্বীকার করে সেই লেখক এবং সে নিজের কাজের এখন জন্য অনুতপ্ত বলেও জানায়। সে আরও জানায় পরবর্তীতে সে এ বিষয়ে আর কোন আর্টিকেল লেখবে না।

-
টেকটিউনস টেকবুম - ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০