মার্চের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, গুগল শীগ্রই করোনা ভাইরাস টেস্ট এর টুল তৈরি করছে। ঘোষণাটি নিঃসন্দেহে ভাল হলেও, টুলের পেছনে নিয়োজিত কর্মীরা জানায়, গুগলের গতানুগতিক সকল কর্ম পরিবেশ থেকে একদম ভিন্ন এই টুল তৈরির প্রচেষ্টা। এখানে তাদের অমানবিক পরিশ্রম করানো হচ্ছে। একই সাথে অনেক কর্মচারী এটিকে বিষাক্ত কর্ম-পরিবেশ বলেও দাবী করেছে।
গুগল এর মুল কোম্পানি Alphabet Inc. এর অন্যতম আরেকটি রিসার্চ অর্গানাইজেশন হচ্ছে Verily Life Sciences।
চলতি এই মহামারীতে Verily Life Sciences সিদ্ধান্ত নেয় তারা করোনা ভাইরাস টেস্ট এর জন্য নতুন একটু টুল আবিষ্কার করবে। তারা এই প্রজেক্টের নাম দেয় Code Red৷ সাবেক এবং বর্তমানে অনেক কর্মীরা দাবী করছে, Code Red প্রজেক্টের নামে তাদের অমানবিক পরিশ্রম করানো হচ্ছে, দিন রাত কাজ করানো হচ্ছে, বিরতিহীন কাজ করার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে, যা একটি বিষাক্ত কর্ম পরিবেশ তৈরি করেছে।
সম্প্রতি Verily Life Sciences এর কিছু কর্মী একটি ডকুমেন্ট প্রকাশ করে। নথিটির শিরোনাম ছিল, প্রকৃতপক্ষে বিষাক্ত কর্ম-পরিবেশের জন্য অবশ্যই নেতৃত্বকে জবাবদিহি করতে হবে। ডকুমেন্ট যিনি লিখেছে তার দাবী, কর্মীরা কান্নাকাটি করছে, কেউ কেউ চলে যাচ্ছে। সহজ কথায় বলতে গেলে সত্যিই এটি বিষাক্ত জায়গা।
Verily Life Sciences এর CEO, Andrew Conrad, জানায় তাদের এই উদ্যোগটি বিশ্ব মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো।
কিন্তু কর্মীরা জানায় এর মাধ্যমে Verily Life Sciences শুধু তাদের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে।
Verily Life Sciences পরিকল্পনা করেছিল এই টুলটি প্রথমত রোগীদের লক্ষণ গুলো পর্যবেক্ষণ করবে এবং কাছাকাছি নির্দিষ্ট টেস্টিং সাইটে অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর ব্যবস্থা করবে। তখন থেকে তারা ক্যালিফোর্নিয়ার আশেপাশে বেশ কিছু জায়গায় নিজেদের টেস্টিং সাইটও স্থাপন করেছে।
Verily Life Sciences এর মুখপাত্র জানায়, তারা ইতিমধ্যে ১৫ টি রাজ্যে ৩০০ টিরও বেশি সাইট তৈরি করেছে এবং ৪৯ টি রাজ্যের ৩১, ০০০ জন লোক COVID-19 গবেষণায় নিয়োজিত আছেন।
কিন্তু কর্মীদের দাবী এই ধরনের পদক্ষেপ তাদের স্বাস্থ্যকে হুমকিতে ফেলে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির করোনা পরবর্তী অবস্থা আর পূর্ববর্তী অবস্থার মধ্যে দিন রাত পার্থক্য তৈরি হয়েছে।
Code Red প্রজেক্ট শুরু হওয়া থেকে কর্মীরা জানায় তাদের ২৪ ঘণ্টা কাজের চাপ দেওয়া হচ্ছে। সবাইকে অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। সপ্তাহে সাত দিন মাঝরাত পর্যন্ত কাজ করানো হচ্ছে অনেক কর্মীদের।
অনেকে দাবী করে Verily Life Sciences, শুধু মাত্র টুলই ডেভেলপ করছে না, এন্টিবডি গবেষণা সহ আরও একাধিক প্রজেক্ট শুরু করেছে তারা। তারা দিন রাত কাজ করার পরেও এর আরও অগ্রগতি চাচ্ছে কিন্তু অতিরিক্ত কাজ করার জন্য কোন বোনাস বা বাড়তি বেতন দিচ্ছে না।
ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে Verily Life Sciences এর মুখপাত্র একটি বিবৃতিতে বলেন, প্রথমে আমি স্বীকার করছি এর ভেতরে বিষাক্ত কর্ম-পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং এমন পরিস্থিতি আর কোথাও নেই কিন্তু আমরা এটি করতে বাধ্য হয়েছি কেবল মাত্র বর্তমান মহামারীর প্রেক্ষাপটে। আমার অনেক কর্মী সামান্য বিরতিতে দীর্ঘ সময় কাজ করছে, তারা এটি করছে কারণ তারা জানে ভয়াবহ এই বিশ্ব পরিস্থিতিতে তাদের প্রভাব কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
Verily Life Sciences থেকে অতিরিক্ত কিছু কর্মী ছাটাই সম্পর্কে তিনি জানান, "প্রতি বছরের মত এ বছরেও কিছু লোক বাদ দিয়েছি এর সাথে মাহমারীর কোন সম্পর্ক নেই"।
অভ্যন্তরীণ অনেক কর্মী এই সকল অবস্থার জন্য Andrew Conrad এর কে দায়ী করেন। তারা জানায় Andrew Conrad একজন আক্রমণাত্মক উদ্যোক্তা। তার মধ্যে কোন ইমোশনাল লিডারের বৈশিষ্ট্য নেই। কর্মীদের প্রতি তার ব্যবহার খুবই বাজে এবং অধিকাংশ কর্মীরাই তাকে ভয় পায়।
অনেকটি সূত্র থেকেও জানা যায় সে Verily Life Sciences কে পাবলিক কোম্পানিতে পরিণত করতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন সোর্স থেকে নতুন কর্মীও নিয়োগ দিতে চাচ্ছে।
-
টেকটিউনস টেকবুম - ২ আগস্ট ২০২০
আমি টেকটিউনস টেকবুম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 461 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।