ক্ষেপণাস্ত্রের নাম শয়তান

অবশেষে বিশ্বের অত্যাধুনিক ও সবচেয়ে ভয়াবহ আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শয়তান উন্মোচন করলো রাশিয়া। গণমাধ্যম বলছে রাশিয়া তাদের হেভি ওয়েট আইসিভিএমের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে যেটিকে এরই মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে আখ্যা দেওয় হয়ছে। এর আগে ইউক্রেন রাশিয়র যুদ্ধ শুরুর পরপরই আরেক শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে মস্কো। পুতিন তখন বলেছিলেন এই ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণের পরে তার শত্রুরা রাশিয়ায় হামলা চালানোর বিষয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতে বাধ্য হবে মূলত সার্মাদের আপডেট ভার্সন হলো রাশিয়ার উন্মোচিত নতুন আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপন অস্ত্র আর থার্টি সিক্স এম টু ক্ষেপণাস্ত্র আর থার্টি-সিক্স এম টু ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্তারিত নিয়ে আজকের লেখা। প্রথমবারের মতো রাশিয়ার গণমাধ্যমগুলো আট থার্টি সিক্স এম টু আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ছবি প্রকাশ করেছে।

কেন ক্ষেপণাস্ত্রের নাম শয়তান?

এতে ক্ষেপণাস্ত্রের পারমাণবিক ওয়ার হেড রয়েছে বলে জানায় গণমাধ্যম। এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে পশ্চিমারা এসএস এইটটিন এমওডি ফাইভ শতান বা শয়তান নামে উল্লেখ করেছে। এতে আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য বানানো একটি ভারী পেলোট রয়েছে অর্থাৎ যেটি বহন করে থাকে। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক ক্ষেপণাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একটি বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বিভিন্ন লক্ষ্য বস্তুতে একাধিক ওয়ার্ডহেড সরবরাহ করার প্রক্রিয়াটিকে মাল্টিপল সিস্টেম বলে। ইন্ডিপেন্ডেন্টলি টার্গেটেবল রিএনটি ভিহেকেল, বা এমআইআরভি বলা হয়। আর থার্টি সিক্স এম টু পেলোট বাসের বিস্তারিত সহ ছবিগুলো প্রথম টুইটারে শেয়ার করেন রাশিয়া।

ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে পুতিনের বক্তব্য

সামরিক বিশ্লেষক বিমিতি কর্নের রাশিয়ার বানানো আর এক আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আর এস টোয়েন্টি এইট সারমত উৎক্ষেপণের পর যে ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল তার সঙ্গে তুলনা করলে বোঝা যায় আর থার্টি-এক্স এম টু বা শয়তান ক্ষেপণাস্ত্রটির পেলোর বাসে রাখার কত বড় চলতি বছরের এপ্রিলে সারমাত আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে কড়া হুঁশিয়ারি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ব্লাডিমির পুতিন তিনি তখন বলেন এই অস্ত্র, অনন্য এবং রাশিয়ার অস্ত্র সম্ভারে এটি এক অভিনব সংযোজন। অত্যাধুনিক অ্যান্টিমিসাইল ডিফেন্সও এই ক্ষেপণাস্ত্রের নাগাল পাবে না বলেও জানান পুতিন। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবেও দাবী করা হয় তখন। তবে সার্মাতের আপডেট ভার্সন আরো শক্তিশালী বলে দাবি রাশিয়ার। একটি বাসে দুই সারিতে সাতটি করে মোট চোদ্দটি পারমাণবিক অনায়াসে স্থাপন করা যায় বলে জানা গেছে। কর্নেভের দাবি এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রত্যেকটি সাধারণত দশটি ওয়ার্ল্ড হেড বহন করে। আর বাকি চারটি স্লট মূলত প্রতিরক্ষা বিষয়ক অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে পূর্ণ করা থাকে। যেন শত্রুদের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র। ঠেকানো যায় আগের সার্মাত ক্ষেপন অস্ত্র নিক্ষেপের পর রাশিয়া জানায় এটি ছয় হাজার কিলোমিটার দূরত্বে গিয়ে নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানে ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্ফোরণ ক্ষমতা অনেক বেশি হলেও সমর বিদ্যের মধ্যেই এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে।

ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা ও বৈশিষ্ট্য

বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে ওয়ারহেড গুলোর বিস্ফোরণ ক্ষমতা। সাড়ে পাঁচশো থেকে সাড়ে সাতশো কিলোমিটারের মধ্যে। অন্যদিকে আবার কারো কারো দাবী এগুলো সাড়ে সাতশো কিলোমিটার থেকে এক মেগা টন বা আরো মারাত্মক হতে পারে। কর্ণক বাসের সামনে বেশ কিছু বস্তুর ছবিও টিউন করেছেন। যেগুলো দিয়ে মূলত শত্রু পক্ষকে বোকা বানানো হয়। বাসটির পেছনে চারটি আলাদা রকেট মোটর রয়েছে। যা এটিকে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করতে পারে। এবং পর একটি পূর্ব নির্ধারিত পথ ধরে অসংখ্য লক্ষ্য বস্তুতে ওয়ারহেড ছুড়ে মারে। উনিশশো আশি সালের গোড়ার দিকে তৎকালীন সোভিয়াত ইউনিয়ন আর থার্টি সিক্স এম ক্ষেপণাস্ত্রের আরো কার্যকর প্রতিস্থাপন হিসেবে আর থার্টি সিক্স এম টু নিয়ে কাজ শুরু করে। আল থার্টি সিক্স এম নিয়ে প্রথম কাজ শুরু করে সোভিয়াত ইউনিয়নের ইউজ নয় এর ডিজাইন বুরো। ফেডারেশন অফ আমেরিকান সাইন্টিস্ট এফএস অনুসারে আর থার্টি-সিক্স এম টু মূলত হেভি ওয়েট বা খুবই শক্তিশালী আন্তঃ মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। বিশালাকার এই ক্ষেপণাস্ত্রটির ব্যাস প্রায় দশ ফুট বা তিন মিটার। জ্বালানি সহ এর মোট ওজন দাঁড়ায় দুশো এগারো টন তুলনামূলকভাবে মার্কিন বিমানবাহিনীর এলজিএম থার্টির যেও এটি শক্তিশালী ঠিক কেন রাশিয়া এই মুহূর্তে আর থার্টি সিক্স এম টু জনসমক্ষে প্রদর্শন করছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। মূলত আরএস টোয়েন্টি এইট সার্মাস যেটি আবার এসএস এক্স থার্টি সাতান টু নামেও পরিচিত। এই ক্ষেপণাস্ত্রের আপডেট ভার্সন বলা যায়। আর থার্টি এক্স এম টু আন্ত মহাদেশীয় ব্যালেস্ট্রিক ক্ষেপণাস্ত্রটিকে তবে সাতান টু ঠিক কখন তার কার্যক্রম শুরু করবে তা এখনো জানা যায়নি।

যে সকল দেশকে আক্রমণীয় সংকেত দেয়া হয়েছে

ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের জেরে এমনিতেই আলোচনায় পরমাণু যুদ্ধ। তার উপর নতুন করে এই পারমাণবিক ওয়ার হেড বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচনের মধ্য দিয়ে নতুন করে আশঙ্কার ছায়া বিশ্লেষকদের মধ্যে। এর আগেও পুতিন পরমাণু হামলার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি ইউক্রেনে হামলার পরই পুতিনকে বলতে শোনা যায় যেসব দেশ রাশিয়ার পথ আগলে দাঁড়াবে তারা যেন প্রতিশোধের বিষয়েও সচেতন থাকে। বলেন শত্রুদের এমন জবাব দেওয়া হবে যার মুখোমুখি এর আগে তারা কখনোই হয়নি আর থার্টি-সিক্স এম ক্ষেপণাস্ত্রের বিশাল আকার এবং শক্তির কারণে ভার হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। সারমা টু বা সাতান টু ক্ষেপণাস্ত্রের বর্ধিত পরিসরে পশ্চিমারা। বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের সংখ্যা রাশিয়া এটিকে যেকোনো মুহূর্তে আক্রমণের জন্য ব্যবহার করতে পারে যা যুক্তরাষ্ট্রের মিনিট থ্রির বিপরীত শীতল জায়গা থেকে উৎক্ষেপণের বিশেষ এই সুবিধা ও ক্ষমতার কারণে ক্ষেপণাস্ত্রটি যেখান থেকে নিক্ষেপ করা হয় তা খুব বেশি একটা ক্ষতি না করেই তা মোতায়েন করা যায় অন্যদিকে মার্কিন মিসাইল শুকনো জাইগা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। উৎক্ষেপনের পর জাইগাটিকে অকেজু করে ফেলে। এ কারনে রাশিয়া অনেক এগিয়ে আছে তাদের সকল মিশনে এবং তাদের পিছনে ফেলতে হলে আরও বেশি প্রযুক্তিগত উন্নতি করতে হবে আমেরিকা ও অন্যন্য প্রতিযোগী দেশগুলিকে।

Level 1

আমি রায়হান বাদশাহ। Asst. Manager, Palmal Group, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস