বর্তমানে আমরা সিডি অনেক কাজে ব্যবহার করি। কিন্তু পূর্বে সিডি শুধু গান শুনার কাজে ব্যবহার করা হতো। অনেক আগে গান শুনার জন্য প্রধান মাধ্যম ছিল গ্রামোফোন বা কলের গান(vinyl record)। সেই বড় আকারের থালার মত ক্যাসেট কে কিভাবে আরও উন্নত করে আকারে ছোট করবে তা নিয়ে গবেষণা করতো অনেক গবেষকরা। সেই চেষ্টায় আজকের এই সিডি বা কমপ্যাক্ট ডিস্ক(Compact Disk)। আসুন জেনে নেই এই সিডি র জন্ম ইতিহাস ও পথচলার গল্প।
১৯৭০ সালে ফিলিপস কোম্পানি ALP (Audio Long Play) অডিও ডিস্ক সিস্টেম নিয়ে কাজ শুরু করে। এই প্রোজেক্ট এর মূল উদ্দেশ্য ছিল লেজার টেকনোলজি ব্যবহার করে ভিনাইল রেকর্ডের (vinyl record) প্রতিদ্বন্দ্বী কিছু উদ্ভাবন করা।
ফিলিপসের অডিও ডিভিশনের পরিচালক লু অটেন্স সর্বপ্রথম পরামর্শ দেন, এক ঘণ্টার মিউজিক সম্বলিত ALP ডিস্ক হবে প্রচলিত ভিনাইল রেকর্ডের চেয়ে ছোট।
প্রথমে ভাবা হয়েছিল এই নতুন ফরম্যাটটির ব্যাসার্ধ হবে ১০ সেন্টিমিটার। ১৯৭৭ সালে ফিলিপস নতুন অডিও ফরম্যাট নিয়ে জোরেশোরে কাজ শুরু করে। অবশেষে ১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচিত হয় সিডি বা কমপ্যাক্ট ডিস্ক(Compact Disk) । ঠিক এর এক সপ্তাহ পর এই নতুন ফরম্যাট কে কিভাবে আরও উন্নত করা যায় সেই লক্ষ্যে জাপানের সনি কর্পোরেশনের সাথে চুক্তি করে ফিলিপস।
প্রথমে এক ধন্টার অডিও ধারনক্ষমতা সম্পন্ন ডিস্ক তৈরির কথা থাকলেও পরবর্তীতে তা ৭৪ মিনিটে উন্নত করা সম্ভব হয়। ১৯৮০ সালে ফিলিপস এবং সনি যৌথ ভাবে তৈরি করে “রেড বুক” নামের কমপ্যাক্ট ডিস্ক।
১৯৮২ সালে ফিলিপস প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভাবে সিডি প্লেয়ার বাজারে ছাড়ে। এর মূল্য ছিল প্রায় ১০০০ ইউরো। প্রথমদিকে শুধুমাত্র ক্লাসিক্যাল মিউজিক এর অ্যালবামই সিডি আকারে বাজারে ছাড়া হয়। সিডি আকারে প্রথম অডিও অ্যালবাম The Visitors বাজারে ছাড়ে বিখ্যাত ব্যান্ড ABBA .
Download করুন – The Visitors
১৯৮৫ সালে বাজারে আসে Dire Strait এর বিখ্যাত অ্যালবাম Brother In Arms . মূলত এই অ্যালবামটিই সিডি কে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়। এই অ্যালবামটি বিক্রি হয় ১ মিলিয়নের চেয়ে বেশি। এমন কি বিক্রির দিক থেকে এ যাবৎকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিডি অ্যালবাম এর নামও Brother In Arms.
Download করুন - Brother In Arms
২০০০ সালে সারাবিশ্বে সিডির বিক্রির পরিমাণ ছিল প্রায় ১.৪৫৫ বিলিয়ন।
২০০৭ সালে সারাবিশ্বে সিডির বিক্রির পরিমাণ ছিল প্রায় ১.৭৫৫ বিলিয়ন।
২০০৮ সালে সারাবিশ্বে সিডির বিক্রির পরিমাণ ছিল প্রায় ২০০ বিলিয়নের বেশি।
তবে অনলাইনে ডাউনলোডের সুবিধা বেড়ে যাওয়াতে সিডি বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে ব্যাপক হারে।
প্রকৃতিতে যেমন বিবর্তন ঘটছে ঠিক তেমন বিবর্তন ঘটছে প্রযুক্তি বিশ্বেও। এক সময় ফ্লপি ডিস্ক এর খুব প্রচলন ছিল। এখন ফ্লপির যুগ শেষ। ঠিক তেমনি সিডি র পর এলো ডিভিডি। এখন ডিভিডি র পরে আসল ব্লু-রে ডিস্ক। হয়তোবা একদিন প্রযুক্তির ছোয়াতে একদিন সিডি হারিয়ে যাবে। এর পরিবর্তে নতুন কিছু দিয়ে কাজ করবে মানুষ।
এই ছিল সিডি বা কমপ্যাক্ট ডিস্ক এর প্রায় ৩২ বছরের এক পলক।
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------
টিউন টি ভালো লাগলে FB Like দিন।
টিউন টি সর্বপ্রথম “মৌমাছি” তে প্রকাশিত। সময় থাকলে ঘুরে আসুন জানার আছে অনেক কিছু – মৌমাছি
আমি হোসেন রাহাত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 46 টি টিউন ও 210 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রযুক্তিকে ভালোবাসি আর মানুষকে সাহায্য করতে পছন্দ করি তাই Blogging এর মাধ্যমে নিজের মনের ইচ্ছাকে পূরণ করার চেষ্টা করছি। আমাকে আরও জানতে Visit করুন -হোসেন রাহাত
আপনার টিউনগুলো অনেক ভাল হচ্ছে। 😀