ইন্টেল প্রসেসর নিয়েই সকলে মাতামাতি করি কিন্তু ইন্টেল ছাড়াও যে আরও অনেক প্রসেসর আছে এটা জানে না এমন পাবলিকও কম নয়। তার মধ্যে এ.এম.ডি প্রসেসর অন্যতম। এটা ইন্টেল এর চেয়ে কোন অংশে কম নয়। কাজে ও গুনে এর অনেক সুনাম রয়েছে। আমারা এ.এম.ডি. প্রসেসর যারা ব্যবহার করি তারাও এ.আম.ডি. সম্পর্কে তেমন জানি না। মোট কথা এ.এম.ডি. মোটামুটি আমাদের সকলের অপরিচিত একটি জিনিস। তাই AMD র প্রসেসর নিয়ে জানার আগের আসুন AMD কোম্পানি সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেই।
AMD এর Full Meaning হল Advanced Micro Devices. বিশ্বের অন্যতম খ্যাতিমান কম্পিউটার প্রসেসর নির্মাতা। AMD প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তর ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানিভেল শহরে। মাইক্রোপ্রসেসর, মাদারবোর্ড চিপসেট, পার্সোনাল কম্পিউটার, ওয়ার্কস্টেশন ও সার্ভারের জন্য এমবেডেড প্রসেসর ও গ্রাফিক্স প্রসেসর, হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস, ডিজিটাল টেলিভিশন, মোটরগাড়ি, গেম কন্ট্রোল, এবং অন্যান্য এমবেডেড সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশানের জন্যও AMD প্রসেসিং টেকনোলজি উদ্ভাবন করে থাকে। X86 architecture এর উপর ভিত্তি করে নির্মিত মাইক্রোপ্রসেসর তৈরিতে ইন্টেলের পরেই এ.এম.ডি র স্থান।
AMD র জন্ম ১৯৬৯ সালের ১ মে। ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডাক্টর (Fairchild semiconductor ) কোম্পানির একদল সেবক কর্মকর্তারা এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন – Jerry Sanders, Ed Turney, John Carey, Sven Simonsen, Jack Gifford, Frank Botte, Jim Giles, and Larry Stenger. প্রথমে কোম্পানিটি লজিক চিপ তৈরির মাধ্যমে কাজ শুরু করে, পড়ে ১৯৭৫ RAM Chip তৈরি করা শুরু করে। ঐ বছরই ইন্টেল ৮০৮০ মাইক্রোপ্রসেসরের একটি Reverse-engineered ক্লোন তৈরি করে AMD. এরপর তারা তাদের নিজেস্ব AMD 29K Processor এর মাধ্যমে RISC প্রসেসর প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। AMD র সাফল্য শুরু হয় ১৯৯১ সালে। ১৯৯১ সালে তারা S386 প্রসেসর বাজারে আনে যেটি ছিল ইন্টেল ৮০৩৮৬ এর ক্লোন। এক বছরের কম সময়ে এই প্রসেসর প্রায় ১ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়। এই থেকে AMD র প্রসেসরের খ্যাতি সম্পূর্ণ বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
AMD র সর্বপ্রথম প্রসেসর বাজারে ছাড়া হয় ১৯৯৬ সালে। যার নাম ছিল K5. কে(K) শব্দটি দারা বুঝানো হয়েছে ক্রিপটোনাইট (kryptonite)। আমরা সুপারম্যান মুভি বা কার্টুন মোটামুটি সকলেই দেখেছি। সেখানে সুপারম্যানকে ক্ষতি করতে পারে বা কাবু করতে পারে একটি সবুজ রঙের পাথরের মাধ্যমে। ওই পাথরটিই হল ক্রিপটোনাইট (kryptonite)। এই ক্রিপটোনাইট (kryptonite) বা K নাম নেবারও একটি রহস্য আছে সেটি হলঃ এখানে সুপারম্যান বলতে ইন্টেল কোম্পানিকে বুঝানো হয়েছে। এর তারা K নাম দিয়ে এটাই বুঝিয়েছে এই সুপারম্যানকে (ইন্টেল) তারই কাবু করতে পারবে। K5 এর ক্ষমতা অনেকটা ইন্টেল পেন্টিয়াম এর মত ছিল।
১৯৯৬ সালে AMD কোম্পানি NexGen নামে একটি প্রতিষ্ঠান কিনে নেয়। তখন NexGen কোম্পানির ডিজাইন টিম ও AMD মিলে ১৯৯৭ সালে তৈরি করে K6 প্রসেসর। K5 আর K6 এর মধ্যে পাথক্য খুব কম।
১৯৯৯ সালের মাজামাঝি সময়ে AMD নিয়ে আসে তাদের ৭ম প্রজন্মের X86 প্রসেসর K7 । এই K7 ব্যান্ডের নাম দেওয়া হয় Athlon. ২০০১ সালে রিলিজ করা হয় Athlon XP প্রসেসর।
Athlon 64 হল K8 প্রসেসরের নাম। এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল X86 ইনস্ট্রাকশন সেটের সঙ্গে ৬৪ বিটের আর্কিটেকচারের সমন্বয়, অনচিপ মেমরি অন্তর্ভুক্ত করা এবং “হাইপারকানেক্ট” নামে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পয়েন্ট টু পয়েন্ট ইন্টারকানেক্ট যোগ করা।
Athlon 64 এর ঠিক পরেই AMD রিলিজ করে ডেস্কটপ ভিত্তিক সর্বপ্রথম ডুয়াল কোর প্রসেসর Athlon 64 X2. ২০০৭ সালের মে মাস থেকে ডুয়াল কোর প্রসেসরের নাম থেকে “64” কথাটি বাদ দিয়ে দেয় কোম্পানি। তখন শুধু নাম হয় Athlon X2. এটি K9 সিরিজের প্রসেসর।
ইন্টেলের বহুলখ্যাত Celeron D প্রসেসরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তৈরি করা হয় Sempron প্রসেসর। Sempron শব্দটির নেওয়া হয়েছে ল্যাটিন “সেম্পার” থেকে, যার মানে “সবসময়”। .অর্থাৎ বুঝানো হচ্ছে, এ প্রসেসর সব সময় সাধারণ ব্যবহারের জন্য প্রযোজ্য।
AMD র সাম্প্রতিক মাইক্রোপ্রসেসর স্থাপত্যের নাম হচ্ছে K10. এই স্থাপত্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি সর্বপ্রথম প্রসেসর বাজারে আসে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে। এতে আছে নয়টি কোয়াড কোর থার্ড জেনারেশন অপটেরন প্রসেসর।
K10 স্থাপত্যের ওপর ভিত্তি করেই অপটেরন প্রসেসরকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করে তৈরি করা হয় Phenom প্রসেসর। বর্তমানে এই K10 স্থাপত্যের ওপর ভিত্তি তৈরি Phenom প্রসেসর প্রতি ধাপে ধাপে উন্নত করে, অনেক শক্তিশালী করে বিভিন্ন ভার্সন রিলিজ করছে AMD.
এই ছিল AMD প্রসেসরের যত ততো ইতিহাস।
বিঃদ্রঃ ইন্টেল প্রসেসর এর মত AMD প্রসেসরের গুনাগুন বা কার্যক্ষমতার ভালো কোন তথ্য পাইনি তাই গুনাগুন বা কার্যক্ষমতা দেওয়া হয় নি।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
টিউন টি ভালো লাগলে FB Like দিন।
টিউন টি সর্বপ্রথম “মৌমাছি” তে প্রকাশিত। সময় থাকলে ঘুরে আসুন জানার আছে অনেক কিছু – মৌমাছি
আমি হোসেন রাহাত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 46 টি টিউন ও 210 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রযুক্তিকে ভালোবাসি আর মানুষকে সাহায্য করতে পছন্দ করি তাই Blogging এর মাধ্যমে নিজের মনের ইচ্ছাকে পূরণ করার চেষ্টা করছি। আমাকে আরও জানতে Visit করুন -হোসেন রাহাত
আরও বিস্তারিত আশা করেছিলাম। যাই হোক এটুকুর জন্যও ধন্যবাদ