বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সকলেই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। Ram বা Random Access Memory; যেকোনো একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস সেটি হতে পারে ল্যাপটপ, কম্পিউটার কিংবা আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন এসব কিছুর গুরুত্বপূর্ণ পার্টস হচ্ছে র্যাম। যেটির ওপরে একটি ডিভাইসের অনেকটাই পারফরম্যান্স নির্ভর করে। আর র্যামের কথা চলে আসলে আপনারা এখানে অনেক ধরনের কথাই শুনতে পারবেন।
র্যামের কথা বলতে গেলে যেখানে রয়েছে DDR Ram, LPDDR Ram, GDDR Ram, SD Ram, DDR1, DDR2, DDR3 এবং DDR4 র্যাম। তো বন্ধুরা, আপনি যদি এখনো না জেনে থাকেন যে এসব র্যাম কি, তবে আজকের টিউনটি সম্পূর্ণ দেখতে থাকুন। কেননা আমি এই টিউনে র্যাম সম্পর্কিত এসব তথ্য গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলেছি। আর সেইসঙ্গে বলে নিচ্ছি, আপনি যদি আমাকে এখনো ফলো করেন না রেখে থাকেন তবে উপরের ফলো বাটন টি তে ক্লিক করে আমাকে ফলো করে রাখবেন। চলুন তবে টিউনটির মূল আলোচনায় চলে যাওয়া যাক।
প্রথমেই বলে নিচ্ছি যে র্যাম দুই ধরনের হয়। একটি হচ্ছে Static RAM বা SRAM, অন্যটি হচ্ছে DRAM বা Dynamic Ram। তো, Static RAM কে আমরা ক্যাশ মেমোরি হিসেবে চিনি। আপনি যদি এখনো না জেনে থাকেন যে ক্যাশ মেমোরি কি তবে এ নিয়ে আমার পূর্বের একটি টিউন রয়েছে। যেখানে আমি বিস্তারিত ক্যাশ মেমোরি সম্বন্ধে আলোচনা করেছি। আপনি যদি সেই টিউনটি দেখতে চান তবে এই লিংকে ক্লিক করে দেখতে পারেন। তবে চলুন এবার টিউনের বিষয়ে আসা যাক।
আজকের এই টিউনে আমরা যে র্যাম টি নিয়ে কথা বলবো সেটি হচ্ছে Dynamic Ram। সবার প্রথমে আমরা যে র্যাম টি ব্যবহার করতাম সেটি হচ্ছে, Asynchronous DRAM। এই র্যামটির সঙ্গে সমস্যা এটা ছিল যে, এই র্যাম টিকে সিপিইউ এর ক্লকের সঙ্গে Synchronous করা ছিল না। Asynchronous DRAM এ ঠিক কখন ডাটা আসে সিপিইউ এটা নিখুঁতভাবে বুঝতে পারে না, আর এই কারণে তার পারফরমেন্স এর উপর প্রভাব ফেলে। যে কারণে প্রসেসিং-এ আমরা একটু লেটেন্সি দেখতে পেতাম।
এই সমস্যাটির সমাধান করে দেওয়া হয় পরের জেনারেশনের র্যামে যেটি হল Synchronous DRAM বা সংক্ষেপে SDRAM বলা হয়। এ র্যাম কে সিপিইউ এর কোন ক্লক এর সঙ্গে Synchronous করা হয়, যার কারণে সিপিইউ বুঝতে পারে আসলে কখন র্যাম এর ডেটা কখন ইনপুট-আউটপুট হবে। যার কারণে সিপিইউ আরো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে এবং প্রসেসিং-এ আমরা কোন লেটেন্সি দেখতে পাই না। এর পরবর্তীতে র্যাম টেকনোলজিতে একটি পরিবর্তন চলে আসে, যেটিকে বলা হয় DDR SDRAM বা Double Data Rate-Synchronise Dynamic Random Access Memory। এই টেকনোলজিতে আমরা একই ক্লক স্পিডে দ্বিগুন ডাটা ট্রান্সফার করতে পারি। তো, এটি কিভাবে?
তো, ধরে নিন নিচের এটি একটি ডিজিটাল ফ্রিকোয়েন্সি।
যেখানে SDRAM-এ কি হতো, এখানে যে উপরের অবস্থানটি রয়েছে সেখানে শুধুমাত্র ডেটা থাকতো এবং এভাবেই ডেটাকে টান্সফার করা হতো। কিন্তু DDR র্যামের ক্ষেত্রে এখানে যে নিম্ন অবস্থান রয়েছে এটিতেও ডেটা ট্রান্সফার করা হয়। যার ফলে আমরা একই ক্লক স্পিড দ্বিগুন ডেটাকে ট্রান্সফার করতে পারছি, আর এ কারনেই এই টেকনোলজির নাম Double Data Rate। যেখানে আমরা SDRAM এর চাইতে দ্বিগুণ গতিতে ডেটা সেন্ড এবং রিসিভ করতে পারছি যদিও এখানে একই ক্লক স্পিড রয়েছে।
সবার প্রথমে যে DDR1 র্যাম। এরপরে এগুলোর জেনারেশন পরিবর্তন হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে এসেছে DDR2, DDR3 এবং DDR4 র্যাম। বর্তমানে যেসব ল্যাপটপ কম্পিউটার রয়েছে সেগুলোতে DDR3, DDR4 কিংবা DDR এর অন্য কোন র্যাম ব্যবহার করা হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আপনি DDR3 কিংবা DDR4 এর র্যাম দেখতে পাবেন। এই DDR র্যাম গুলোর যতই জেনারেশন পরিবর্তন হয়েছে এগুলো ততই বেশি ফাস্ট হয়েছে এবং ততোই কম পাওয়ার সাশ্রয়ী হয়েছে। এখান থেকে আপনি হয়তো বা বুঝতেই পারছেন যে, আপনি যত বেশি সর্বশেষ জেনারেশনের র্যাম গুলো ব্যবহার করবেন ততই বেশি এগুলো ফাস্ট হবে এবং একই সঙ্গে কম পাওয়ার খরচ করবে।
তো, DDR4 র্যাম DDR3 এর চাইতে ভালো এবং DDR2 এর চাইতে DDR3 র্যাম ভালো। একটি নির্দিষ্ট জেনারেশন এর র্যাম কিন্তু একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করতে পারে। এখানে সেটি অনেক high-frequency তেও কাজ করতে পারে এবং অনেক কম ফ্রিকোয়েন্সিতে ও কাজ করতে পারে। আর আপনি এটি সবসময় মনে রাখুন যে, একটি র্যাম যদি DDR3 হয় এবং এটি সর্বোচ্চ ফ্রিকুয়েন্সি দিয়ে কাজ করে তবে DDR4 সেখানে সর্বনিম্ন ফ্রিকুয়েন্সিতে কাজ করবে। অর্থাৎ, DDR3 এর যেটি সর্বোচ্চ ক্লক স্পিড হতে পারবে সেখানে DDR4 এর সেটি হবে সর্বনিম্ন ক্লক স্পিড বা তারও বেশি।
তো, আপনি যদি কোন ল্যাপটপ কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোন কিনতে যান তবে সব সময় চেষ্টা করবেন DDR4 এর র্যাম কে নিতে। কেননা এটি হচ্ছে এখনকার সময়ে সবচাইতে সর্বশেষ টেকনোলজি, তবে ভবিষ্যতে এর চাইতেও উন্নত হতে পারে বা হবে এটিই স্বাভাবিক।
এটি তো হয়ে গেল DDR র্যাম। এখানে আপনারা আরও একটি বিষয় শুনতে পাবেন, আর সেটি হচ্ছে LPDDR RAM। তো এই LPDDR এর অর্থ হচ্ছে Low Power Double Data Rate। আর এই র্যাম গুলোকে সাধারণত স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়। কেননা স্মার্টফোনের ব্যাটারি অনেকটাই ছোট এবং একটি স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ থাকে; যে কারণে এই র্যাম গুলোকে একটু নিচু পাওয়ার করে দেওয়া হয়েছে।
এগুলো কম পাওয়ার খরচ করার কারণে এটিকে স্মার্টফোনে ব্যবহার করা যায় এবং ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ আপনাকে দিতে পারে। যেখানে একটি স্মার্টফোনের র্যাম অনেক লো পাওয়ারের থাকে এবং এজন্য আপনি কখনোই একটি স্মার্টফোনের র্যামকে কখনোই তুলনা করতে পারবেন না একটি ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারের র্যামের সাথে। সাধারণত Mid-range এবং বাজেট ফোন গুলোতে LPDDR3 র্যাম ব্যবহার করা হয়। আর যে সমস্ত ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন বা প্রিমিয়াম স্মার্টফোন গুলো রয়েছে সেগুলো তো আপনি LPDDR4 র্যাম দেখতে পারবেন।
এখানে আরো একটি বিষয় চলে আসে তা হচ্ছে, GDDR RAM বা Graphics Double Data Rate র্যাম। এটিকে গ্রাফিক্স কার্ডে ব্যবহার করা হয়। আপনি বিভিন্ন গ্রাফিক্স কার্ডের স্পেসিফিকেশনে দেখতে পাবেন যেমন, 2GB Graphics card, 3GB কিংবা 6GB কার্ডে। এটিকে গ্রাফিক্স কার্ডের যে র্যাম রয়েছে সেটিকে বোঝানো হয়। আর এসব র্যাম গুলো মূলত GDDR হয়ে থাকে।
তো GDDR র্যাম অনেকটা আলাদা ভাবে কাজ করে আমাদের সাধারন র্যাম এর তুলনায়। এখানে আপনি হয়তোবা ইতিমধ্যেই DDR র্যাম সম্বন্ধে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। যদি কোনদিন সময় হয় তবে GDDR RAM সম্বন্ধে আগামীতে কোনোদিন টিউন করা যাবে ইনশাআল্লাহ। আর সেসময়ের টিউনটি যদি আপনি আপনার হোমপেজে দেখতে চান তবে আমাকে অবশ্যই ফলো করে রাখবেন। আর এতে করে আমিও উৎসাহ পাবো আপনাদের জন্যও নতুন নতুন সব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভিত্তিক টিউন নিয়ে আসতে।
তো বন্ধুরা আমি আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে DDR র্যাম কি, SDDR র্যাম কি অথবা LPDDR র্যাম কি। যদি টিউনটি আপনাদের কাছে ভাল লেগে থাকে তবে জোসস করতে একদমই ভুলবেন না। এছাড়া আপনার কোন অভিজ্ঞতা কিংবা কোনো মতামত জানাতে নিচে টিউমেন্ট করবেন। এই টিউনটি তবে এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে তবে আগামীর কোন টিউনে আরো নতুন আঙ্গিকে ইনশাআল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)