ডিজিটাল বাংলাদেশ ও আমার একটি ভাবনা..

“ডিজিটাল বাংলাদেশ”- শব্দ দুটি পুরানো হলেও বর্তমানে এর অধিক ব্যবহার ও প্রচারনার কারনে আমারা অনেকেই নতুন ভাবে এ নিয়ে চিন্তা করছি। অনেকেই আবার “ডিজিটাল বাংলাদেশ” শব্দের অর্থ বোঝার চেষ্টা করছি, অনেকেই এর সংজ্ঞা খুজছি। কখনো কখনো আবার বুঝে উঠতে পারছিনা যে, “ডিজিটাল বাংলাদেশ”- বলতে সরকার কি বোঝাতে চেয়েছে আর আমরা কি বুঝছি। সে যাই হোক “ডিজিটাল বাংলাদেশ”- বলতে খুব সহজ ভাষায় আমি যা বুঝি তা হলো- বাংলাদেশে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ও ব্যবহার।

digital_bangladesh.jpg

এবার আমার ভাবনার কথায় আসি..

আমারা অনেকেই ভারতের অনেক জনপ্রিয় “নায়ক”  সিনেমাটি (মুভিটি) দেখেছি। এই সিনেমাটির এক পর্যায়ে দেখানো হয় যে- সিনেমার নায়ক একদিনের জন্যে তার দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান এবং কঠোর ব্যবস্থা নেন। তারই অংশ হিসেবে অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে বিভিন্ন শহরে বসানো হয় অভিযোগ বাক্স। যেখানে যে কেউ তার অভিযোগ জানাতে পারবে। সিনেমায় আরো দেখানো হয় যে, প্রাপ্ত অভিযোগ গুলোর মধ্যে যেগুলো বেশি গুরতর সেগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং নিজেই সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।

এতো গেল সিনেমার কথা।

এবার বাস্তবে আসি..

আমার ভাবনাটির উৎপত্তি এই সিনেমা থেকেই। আর সেই ভাবনাটি হলো এই রকম একটি ব্যবস্থা বাংলাদেশে চালু করা। তবে হুবুহু সিনেমার মতো নয় একটু পরিবর্তিত। কারন সিনেমার মত করতে গেলে সেটা হবে অনেক ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ।

আমার ভাবনাটি হলো অভিযোগ বাক্সের পরিবর্তে ইমেইল অ্যাড্রেস এর ব্যবহার। সম্পূর্ন ব্যাপারটি খুলে বলি..
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলছি- আমাদের দেশে সরকারের সাথে সাধারন জনগনের দুরত্ব অনেক। যার ফলে সাধারন জনগনের সমস্যা ও দুঃখ দুর্দশার কথা সরকার পর্যন্ত পৌছাতে অনেকটা সময় লেগে যায়।

আবার সরকার ও জনগনের মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের কাজটি করে থাকে মিডিয়া। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই মিডিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। যার কারনে অনেক সময় সাধারন জনগন ও সরকারের মধ্যে বিভ্রান্তি বা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।

এসব কারনেই সাধারন জনগনের সমস্যা, অভিযোগ জানার জন্যে সরকারের পক্ষ থেকে ইমেইল ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। যেখানে সারা বাংলাদেশের জন্যে একটি অথবা ৬৪টি জেলার নামে ৬৪টি (ব্যতিক্রমও হতে পারে) ইমেইল অ্যাড্রেস থাকবে, যা ব্যবহার করে আমরা সাধারন জনগন যেকোন সমস্যা, অনিয়ম, দুর্নীতি ইত্যাদি সম্পর্কে সরাসরি সরকারকে অবহিত করতে পারব।

প্রাপ্ত ইমেইল গুলো নিয়মিত ভাবে পরীক্ষা/যাচাই (Check) করে দেখার জন্যে একটি সম্পূর্ন নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান থাকবে। এছাড়া সম্পূর্ন ব্যবস্থাটির নিরপেক্ষতা, সুষ্ঠু পরিচালনা, সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্যে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রন  প্রধানমন্ত্রী নিজে তার হাতে রাখতে পারেন এবং সর্বোপরি যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হলো সংশ্লিষ্ট সকলের সততা, সদ্বিচ্ছা ও আন্তরিকতা।

কেন এই চিন্তা আমার মাথায় এলো?

অভিযোগ করার জন্যে অনেক উপায় বর্তমানে প্রচলিত আছে। কিন্তু এর ব্যবহার ও প্রয়োগ খুবই সীমিত। অনেক সময় অভিযোগ করা হলেও সেই অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়া হয়না বা অভিযোগের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়না। অনেক ক্ষেত্রে আবার ভীতির কারনে অভিযোগ করা হয়না। যেমন- অনেক এলাকায় অনেক প্রভাবশালী নেতা, সন্ত্রাসী, চাদাঁবাজ বেশ দাপটের সাথেই তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ প্রানভয়ে এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। ইমেইলে অভিযোগ করার ব্যবস্থা চালু হলে এই সমস্যা সহ আরো অনেক সমস্যা দূরীভূত হবে বলে আমি মনে করি।

কিছু নেতিবাচক দিক-

এই লেখাটি পড়ে সাথে সাথে অনেকেই বলে উঠবেন আমাদের দেশে অনেক অল্প সংখ্যক মানুষ ইন্টানেট ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা কতটুকু কার্যকরী? আমার নিজের কাছেও আমি এই প্রশ্নটি করেছি, এবং উত্তরে আমি আশার আলো দেখতে পেয়েছি। কিভাবে???
বলছি……….

  • ১) বাংলাদেশে যখন প্রথম মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু হয়েছিল তখন মোবাইল ফোন ছিল শৌখিন ও শুধুমাত্র উচ্চবিত্তদের ব্যবহারের একটি বস্তু। কিন্তু দিনে দিনে যখন মানুষ মোবাইল ফোনের সুফল পেতে শুরু করলো তখন আস্তে আস্তে আমরা এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে লাগলাম। যার ফল আজকে মোবাইল ফোনের এই ব্যপক ব্যবহার। যেটা হয়তো এক সময় আমরা ভাবতেও পারিনি।
  • ২) বর্তমানে এই মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর আশির্বাদে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে। আমার নিজ গ্রামে যেখানে গত কয়েক বছর আগে একটা কম্পিউটারের সন্ধান পাওয়া ছিল খুবই দুর্লভ ব্যপার সেখানে আজ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। বছর দুয়েক বিরতির পর গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে যখন প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহারের সেই চিত্র দেখেছিলাম তখন একটু অবাক হয়েছিলাম, কিন্তু যতটা না অবাক হয়েছিলাম তার চেয়ে বেশি আশাবাদী হয়েছিলাম।

আশা করি আপনারাও এখন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন।

তাই বলছি, এই ইমেইল অভিযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে যদি সকলেই এর সুফল পেতে শুরু করে তাহলে এটি অবশ্যই একদিন কার্যকরী ও জনপ্রিয় একটি ব্যবস্থায় পরিনত হবে।

[বিঃ দ্রঃ আমি এ লেখায় শুধুমাত্র মূল ভাবনাটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, সময় স্বল্পতার কারনে অনেক কিছুই আরো বিস্তারিত ভাবে লেখা হয়নি]

Level 0

আমি তারেকবিডি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 85 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

হুম …………………..

সত্যি কথা বলতে পুরো টিউন টা আমি পড়িনি তাই কোন মন্তব্য না করে শুধু ধন্যবাদ দিচ্ছি (হা হা হা হাঃ-)) যদিও আপনি সংক্ষেপে লিখেছেন। সমস্যা নেই সময় পেলে পড়ে নিবো।

Level 0

Joss. Vai jan apnar shopno sofhol hok! Ai kamona kori. Ar mobile thekhe cmnt korchi. Tai bangla cmnt korte pari nai. Sry

yes i am agree with you Digital Bangladesh is impossible without internet but i think at first we need democracy. there is no result of today’s issue’s like (BDR & JONGI). so how people can trust or relay on his govt. that he will get justice.

মুন্না’র সাথে একমত হতে পারলাম না।

Level 0

COOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOOL.CENIMA BANAIFELEN

Level 0

Hmm….
Apner vabna ta mondo na.

Nothing to say

অনেকটাই আজাইরা চিন্তা। আরে ভাই কয়জন মানুষ ইন্টারনেট ইউজ করে ??

@ব্যাড বয়, ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্যে। আপনি প্রশ্ন করেছেন -“আরে ভাই কয়জন মানুষ ইন্টারনেট ইউজ করে ??”। কয়জন মানুষ ইন্টারনেট ইউজ করে সেটা আপনি খুব ভাল করেই জানেন। আর যে কয়জন মানুষ ইন্টারনেট ইউজ করে তার মধ্যে আপনি একজন, আমি একজন। একটা সময় ছিল যখন আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চাইলেও পারতেন না। কারন ইন্টারনেট আপনার হাতের নাগালে ছিলনা। আজ করেন কারন প্রযুক্তির প্রসার…………..
আর এমন করেই আস্তে আস্তে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ মোবাইল ব্যবহারের মতো করেই ইন্টারনেট ব্যবহার করবে।
আর সেদিন হয়তো এই আজাইরা চিন্তাই একটি চিন্তা করার মতো বিষয় হয়ে দাড়াতে পারে।
ধন্যবাদ আপনাকে।

বুদ্ধিটা খারাপ না,কিন্তু যেখানে অভিযোগ বক্সের অভিযোগগুলোই ঠিক মত যাচাই-বাছাই করা হয় না যেখানে ই-মেইলের অভিযোগগুলো কতই বা আমলে আনা হবে চিন্তার বিষয়।

অযথা এসব। বাংলাদেশের কয়জনমানুষ নেট ইউজ করে। আর বাংলাদেশের ইন্টারনেটের যে বিল তাতে অফিসে গিয়ে অভিযোগ দেওয়া ভাল। অন্য কোন চিন্তা থাকলে বলেন।

আমিও একটা আর্টিকেল লিখতে বসছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে। এবং যথারীতি কারেন্ট চলে গেল ….. যেই দেশে বিদ্যুৎ সমস্যাকে গ্রাহ্য করা হয়না সেই দেশ হবে ডিজিটাল! অবশ্য কয়েকদিন আগে দেখলাম লোডশেডিংয়ের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস চালু হয়েছে!! নির্দিষ্ট কিছু নাম্বারে ফোন করে আপনি আপনার এলাকার লোডশেডিংয়ের সময়সূচি জেনে নিতে পারবেন। এটাই মনে হয় ডিজিটালকরনের প্রথম পদক্ষেপ। ২০২১ এ হয়তো সারাদেশে এই সার্ভিস দেয়া হবে। হয়তো আপনি ইমেইলের মাধ্যমেও সার্ভিস পাবেন। 🙂