আসসালামুয়ালাইকুম,
সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি।যার অসীম দয়ায় এখনও বেঁচে রয়েছি। আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালই আছেন।
আমি মোঃ শহিদুল ইসলাম রবিন। নবারুন ইন্টারন্যাশনাল এর সিইও। আমি আজকে আলোচনা করবো মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে।
মেটাল ডিটেক্টর আসলে কি?
খুব সহজভাবে যদি বলতে চাই তবে এইটি একটি যন্ত্র, যার মাধ্যমে কোথাও কোন মেটাল জাতীয় জিনিস (সোনা, রুপা, পিস্তল, ব্লেড, ছুরি, কাচি ইত্যাদি) আছে কি না তা পরীক্ষা করা হয়।
এই যন্ত্রটি মাটির উপরে এবং নিচে যে কোন ধরনের মেটাল জাতীয় জিনিস খুব সহজেই খুজে বের করতে পারে তাও আবার অতি অল্প সময়ের মধ্যে।
মেটাল ডিটেক্টর মেশিন সাধারনত এয়ারপোর্ট, মার্কেট, হোটেল, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি -বেসরকারি অফিস, ফ্যাক্টরি এবং কমার্সিয়াল বিল্ডিংয়ে নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা হয়। এই মেশিনটি তড়িৎ চুম্বকত্ব সূত্রের মাধ্যমে কাজ করে থাকে।
আবার অনেকেই আন্ডারগ্রাউন্ড মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করে মাটির নিচে থাকা সব দামী দামী মেটাল খুঁজে বের করার জন্য। ডিসকভারি চ্যানেলে আমরা মাঝে মাঝেই এই ধরনের প্রোগ্রাম দেখে থাকি।
মেটাল ডিটেক্টর কত প্রকার ও কি কি?
মেটাল ডিটেক্টর সাধারনত ৩ প্রকার।
১। হ্যান্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টর।
২। ওয়াক থ্রো মেটাল ডিটেক্টর বা আর্চয় গেট।
৩। আন্ডারগ্রাউন্ড মেটাল ডিটেক্টর।
যে মেটাল ডিটেক্টর হাত দিয়ে ব্যবহার করা হয় তাকে হ্যান্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টর বলে।
আপনারা দেখে থাকবেন, কোন মার্কেট বা অফিসের গেইটে সিকিউরিটি গার্ড হাতে একটি ছোট মেশিন নিয়ে ভিজিটরদের শরীরের চার পাশে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে চেক করছে কোন মেটাল জাতীয় জিনিস আছে নাকি।
চেক করা অবস্থায় যদি পিপ পিপ করে এলার্ম বেজে উঠে, তাহলে বুঝতে হবে যে স্থানে এলার্ম বেজেছে ঠিক সেখানেই কোন মেটাল রয়েছে। এরপর সহজেই সেখান থেকে মেটাল সরিয়ে সেই ভিজিটরকে ভেতরে যাবার অনুমতি দেওয়া হয়।
এই মেটাল ডিটেক্টরে ১ টি ৯ ভোল্টের রিচার্জেবল ব্যাটারি থাকে, যেটি মোবাইলের মত চার্জার দিয়ে চার্জ করা যায়।
হ্যান্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টর কেনার সময় ১ টি অতিরিক্ত ব্যাটারি কিনে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ, কারন ১ টি ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে গেলেও অন্য আরেকটি রিচার্জেবল ব্যাটারি দিয়ে মেশিনটি অনায়াসেই আপনি চালাতে পারবেন
এইটি মূলত একটি গেইট যার ভেতর দিয়ে মানুশ অনায়াসেই হেটে যেতে পারে। এই গেইটের ভিতর দিয়ে কেও হেটে গেলেই অটোমেটিকভাবে পা থেকে মাথা পর্যন্ত স্ক্যান করা হয়। যদি বডির কোন জায়গায় মেটাল থেকে থাকে তাহলে মেশিনটি দুইভাবে আপনাকে জানান দিবে যে গেট দিয়ে পাস হওয়া ব্যক্তিটির কাছে কোন মেটাল জাতীয় জিনিশ আছে কিনা।
ইন্ডিকেটর লাইটের মাধ্যমেঃ শরীরের যে অংশে মেটাল রয়েছে মেটাল ডিটেক্টরের সে অংশে লাল আলো জ্বলবে।বলে রাখা ভালো এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে সাউন্ড এলাউ করে না সেই সকল জায়গায় এই লাইটের মাধ্যমে অপারেট করা হয়।
এবং
সাউন্ড এর মাধ্যমেঃ শরীরের যে অংশেই মেটাল থাকুক না কেনো মেশিনটি শব্দের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে।
ওয়াক থ্রো মেটাল ডিটেক্টর বিভিন্ন জোনের হয়ে থাকে। যেমনঃ ৬ জোন মেটাল ডিটেক্টর, ৮ জোন মেটাল ডিটেক্টর, ৩৩ জোন মেটাল ডিটেক্টর ইত্যাদি।
যে মেশিনের জোন যত বেশি সেই মেশিনের ডিটেকশন ক্ষমতা তত বেশি।
ধরি একটি মেশিন ৬ জোনের। একটা লোক যখন এই মেশিনের ভেতর দিয়ে যাবে তখন টোটাল ৬ টা জোনে ভাগ করে উনাকে স্কান করা হবে। আবার যদি ৩৩ জোনের একটা আর্চয় গেটের ভেতর দিয়ে কেউ পাস করতে চায় তবে তাকে ৩৩ টি আলাদা জোনে ভাগ করে স্কান করা হবে।
একেবারে স্পেসেফিক এবং কম সময়ে স্কান রেজাল্ট পাবার জন্য ৩৩ জোন বা তার বেশী জোনের ওয়াক থ্রো মেটাল ডিটেক্টর বা আর্চয় গেট ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তাছাড়া এই মেশিনের আরেকটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো হেড কাউন্টিং যার মাধ্যমে জানতে পারবেন কত জন লোক সেই ওয়াক থ্রো মেটাল ডিটেক্টর বা আরচয় গেট দিয়ে ঢুকেছে এবং বের হয়েছে।
এই মেশিনটি চালাতে ২২০ ভোল্টের পাওয়ার লাগবে। কিছু কিছু মেশিনে পাওয়ার ব্যাকআপ দেওয়ার জন্য বাই ডিফল্ড ব্যাটারি অপশন থাকে। তাছাড়া পাওয়ার ব্যাকআপ হিসেবে আইপিএস ব্যবহার করা যায়।
মাটির নিচে যে কোন ধরনের মেটাল (বিশেষ করে সোনা, রুপা, পিতল) খোজার জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হয়। কতটুকু গভীরে মেটাল খুজতে পারে তার উপর নির্ভর করে এই মেশিনের ক্ষমতা কত।
এই মেশিনটি অনেক ধরনের অনেক রকমের হয়ে থাকে। কিছু কিছু মেশিন আছে শুধু আপনাকে ডিটেকশন ের মাধ্যমে জানান দিবে যে কিছু পাওয়া গেলো কিনা, আবার কিছু কিছু মেশিন আছে আপনাকে মিটারের সাহায্যে জানিয়ে দেবে।
এই ভিডিওটি দেখলে আপনার ধারনাই চেঞ্জ হয়ে যাবেঃ https://www.youtube.com/watch?v=1vMac1qyKPI
তাহলে আপনি বুঝবেন বর্তমানে টেকনোলজী কত এডভ্যান্স হয়ে গেছে।
সাধারনভাবে, ০ থেকে ৫ মিটার মাটির নিচ পর্যন্ত এই মেশিনটি মেটাল খুজতে পারে। এই মেশিনটি ব্যবহার করতে হলে, বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইন্সটিটিউট থেকে অনুমতি নিতে হয়।
তবে বাজারে অনেক ডুপ্লিকেট প্রোডাক্ট রয়েছে, কেনার আগে অবশ্যই প্রোডাক্টের মান এবং দাম যাচাই করে নিবেন। তাছাড়া সার্ভিস কারা ভালো দেয় সেটাও যাচাই করে নিতে হবে আপনাকে। নাহলে কেনার পর কোন সমস্যা হলে সেটা নিয়ে সমস্যা বেশী হবে।
এই লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই ফেসবুক টুইটারে শেয়ার করবেন আর পরিচিত কেউ এই ধরনের প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে আমাদেরকে জানাতে পারেন।
আমাদের সাথে কানেক্ট হতে পারেন এই ধরনের আরো প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য।
আমাদের ফেসবুক পেজঃ https://www.facebook.com/nobaruninternational
বিঃদ্রঃ এই লেখাটি সর্বপ্রথম বাংলাদেশ অটোমেশন ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিলো।
আমি মোঃশহিদুল ইসলাম রবিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 92 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
CEO ProjuktiShop.Com