স্মার্টফোনের নাম শুনলেই আমাদের প্রথম মাথায় আসে স্যামসাঙ বা আইফোন এর কথা। কারণ এখন বাজারে এই দুইটি ব্রান্ড সবচেয়ে জনপ্রিয়। এর প্রধান কারণ দীর্ঘদিন যাবত এই দুইটি ব্রান্ড আমাদেরকে দিয়ে আসছে ফিচার সমৃদ্ধ আধুনিক স্মার্টফোন। তাই আমরা ফোন কেনার সময় সাধারণত প্রথমে এই দুইটি ব্রান্ড এর ফোন কেনার কথাই চিন্তা করি।
তবে আমাদের বাজেট যদি কম থাকে তাহলে শাওমির মত ব্রান্ড এর ফোন কিনি। কারণ স্যামসাঙ এর এখন কার ফ্লাগশিপ ফোনগুলোর দাম আকাশছোয়া। তবুই এই ফোনগুলোর নতুন নতুন ফিচার এর কারণে স্যামসাঙ স্মার্টফোনের বাজারে রাজত্ব করছে।
কিন্তু আপনাকে যদি বলি লাম্বরগিনি বাজারে নিয়ে আসছে তাদের তৈরি আন্ড্রয়েড ফোন। আপনি অবশ্যই চমকাবেন। কারণ আমরা লাম্বরগিনি কে চিনি আধুনিক গাড়ি তৈরির জন্য। তবে এবার তারাই বাজারে আনছে আন্ড্রয়েড স্মার্টফোন। এই ইটালিয়ান ব্রান্ডটি দীর্ঘদিন যাবত আকর্ষণীয় মডেলের সব গাড়ি তৈরি করে আসছে। এবার দেখার বিষয় তারা আসলেই ভাল ফোন তৈরি করে পেরেছে কিনা।
আমি আজাকে আপনাদের সাথে এই ফোন নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করব। প্রথমেই বলে রাখি এই ফোনটি তৈরি হয়েছে প্রিমিয়াম সব জিনিস দিয়ে। তাই সাধারণ সব স্মার্টফোন থেকে এর দাম বেশি। আবার যেহেতু লাম্বরগিনির মত ব্রান্ড এই ফোন তৈরি করছে তাই দাম বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক।
লাম্বরগিনি তাদের এই ফোনটিকে নাম দিয়েছে আলফা-ওয়ান(Alpha- One), এর স্পেকগুলো এক নজরে দেখে নেই,
১। ৫.৫ ইঞ্চি ২৫৬০*১৪৪০ ডিসপ্লে
২। স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ প্রসেসর
৩। আন্ড্রয়েড ৭.০
৪। ৪ জিবি র্যাম এবং ৬৪ জিবি রোম
৫। ২০ মেগাপিক্সেল ব্যাক এবং ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা
৬। ৩২৫০ এম.এ.এইচ ব্যাটারি
৭। ডুয়াল সিম সাপোর্ট
৮. ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর
এই ফোনটি তৈরি করতে ব্যাবহৃত হয়েছে লিকুইড মেটাল, ইতালিয়ান হ্যান্ডমেড লেদার। এছাড়াও এই ফোন এর সাথে একটি কাস্টম লেদার কেস দেয়া হবে। এতে আছে স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ প্রসেসর। এবং সাথে আছে ৪ জিবি র্যাম এবং ৬৪ জিবি স্টোরেজ। তাই বলাই যায় আলফা-ওয়ান বাজারের অন্য সব স্মার্টফোনের সাথে খুব ভালভাবে লড়াই করতে পারবে।
এই ফোনটিতে দেয়া হয়েছে এ ৫.৫ইঞ্চি ডিসপ্লে। এবং এই ডিসপ্লেটি এমলেড ডিসপ্লে। তাই পিকচার কোয়ালিটি হবে অনেক শার্প। এবং আপনাকে যেকোনো ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে দিবে অসাধারণ এক অনুভূতি। এছাড়াও এতে ১২৮ জিবি পর্যন্ত মেমরি কার্ড লাগানো যাবে। আর এর সব কম্পোনেন্টকে পাওয়ার দেয়ার জন্য আছে ৩২৫০ এম.এ.এইচ ব্যাটারি।
আপনি যদি স্মার্টফোন দিয়ে খুব বেশি ছবি তুলেন তাহলে আপনার জন্য সুখবর। কারণ আলফা-ওয়ানে আছে ২০ মেগাপিক্সেল ব্যাক ক্যামেরা এবং ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। এই ফোনটি এখন বাজারে আসেনি তাই এর ক্যামেরা কোয়ালিটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে আশা করা যায় লাম্বরগিনির মত বড় কোম্পানি আমাদের আশাহত করবে না।
এছাড়াও এতে আছে একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। তবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি আসলে কোথায় থাকবে তা এখনো জানা যায়নি। এবং আলফা-ওয়ানে ব্যবহার করা হয়েছে হাই-স্পিড ইউএসবি টাইপ-সি। এছাড়াও আছে ফ্রন্ট-ফায়ারিং স্টোরিও স্পিকার। এবং ছবি তোলার জন্য এর এই ফোনটির ব্যাক ক্যামেরায় আছে ইমেজ স্ট্যাবিলাইযেশন সুবিধা।
এবং সবচেয়ে বড় কথা এতে আছে একটি হেডফোন পোর্ট। হাসির কিছু নাই। কারণ ফোন কোম্পানিগুলো যেভাবে হেডফোন পোর্ট বাদ দিয়ে দিচ্ছে। তাতে লাম্বরগিনি একটি ভাল কাজ করেছে। তা বলতেই হবে।
আপনার অডিও এক্সপেরিয়েন্সকে আরো মধুর করতে এই ফোনে দেয়া আছে একটি ডেডিকেটেড DAC, তাই আপানি এই ফোন দিয়ে নিতে পারবেন মিউজিক এর আসল মজা। আর আলফা-ওয়ানে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে থাকছে আন্ড্রয়েড ৭ নওগাট। আসল জিনিসই বলা হল না। আলফা-ওয়ানের দাম। এর দাম বেশি না মাত্র ২৪৫০ ইউ.এস ডলার বা ১৯৭৭০২ টাকা। আপনি ভুল দেখেননি। লাম্বরগিনির তৈরি আলফা-ওয়ান ফোনটি কিনতে আপনাকে গুনতে হবে ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৭০২ টাকা।
সাধারণত কেউ এত দাম দিয়ে এই স্পেক এর ফোন কেনে না। কিন্তু আপনার কাছে যদি টাকা থাকে এবং আপনি লাম্বরগিনির মত ব্রান্ড এর প্রোডাক্ট কিনতে চান তাহলে চোখ বন্ধ করে কিনে ফেলুন। এই ফোনটি বাজারে এসেছে। কিন্তু আমাদের দেশে নেই। কখন আসবে কিনা তাও বলা যায় না। তবে আপনি বিদেশ থেকে নিয়ে আসতে পারেন।
আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন। এবং এই টিউনটি কেমন লাগল তা অবশ্যই জানাবেন। সবাইকে টিউনটি পরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি আশরাফুল ফিরোজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 77 টি টিউন ও 35 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।