স্লো মোশন ভিডিও বা স্লো মো ভিডিও এখন ইন্টারনেট দুনিয়ায় তুমুল জনপ্রিয়। হালের এই ক্রেজের কারণে প্রায় সবাই এখন স্লো মো ভিডিও করতে চাচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভিডিওর প্রয়জনেই দরকার পরে স্লো মোশনের।
আধুনিক ক্যামেরার উন্নতির ধারাবাহিকতায় এখন প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ফ্রেম পার সেকেন্ড(FPS) এ ভিডিও করতে সক্ষম ক্যামেরা বাজারে পাওয়া যায়। আর এই ধরনের সুপার স্লো মোশন ক্যামেরাগুলোর কল্যাণে আমরা দেখতে পারছি এমন কিছু স্লো মোশন ভিডিও যা আগে কখনই কেউ দেখেনি, এক কথায় সুপার স্লো মোষন ক্যামেরাগুলো ভিডিও রেকর্ডিংকে নিয়ে গিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়।
আজকের টিউনের বিষয় সুপার স্লো মোশন ভিডিও। পড়তে থাকুন জানতে কিভাবে স্লো মোশন কাজ করে এবং কিভাবে আপনি বানাবেন একটি অসাধারণ স্লো মোষন ভিডিও। তো চলুন শুরু করা যাক।
স্লো মোশন ভিডিও, নামেই যার পরিচয় ধীর গতির ভিডিও বা ধীরে চলা ভিডিও। অর্থাৎ সাধারণ একটি ভিডিও থেকে অনেক বেশি ধীর এবং প্রতি সেকেন্ডে আরো বেশি ফ্রেম সমৃদ্ধ ভিডিওই হল স্লো মোশন ভিডিও। সাধারণত যখন কোন স্লো মোশনে ভিডিও রেকর্ড করা হয় তখন সেটা প্রায় ১২০-৩০০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ডে রেকর্ড করা হয় আর সুপার স্লো মোশন ভিডিওর ক্ষেত্রে ১লাখ ফ্রেম পার সেকেন্ড বা তার বেশি ফ্রেমে রেকর্ড হয়।
সুপার স্লো মোশন ব্যবহার করে বুলেটের স্লো মোশন ভিডিও বা এই ধরনের ভিডিও করা হয়। কিন্তু ভিডিওটা যখন প্লেব্যাক এ আসে তখন সেটা স্বাভাবিক ভাবে ২৪-৩০ ফ্রেম পার সেকেন্ড এ প্লে হয়। মূলত স্লো মোশনের এক সেকেন্ডের ভিডিওতে অনেক বেশি সময়ের ফুটেজ থাকে।
স্লো মোশন ভিডিওর কোয়ালিটি প্রধানত ক্যামেরার উপর। যে ক্যামেরা যত বেশি হাই কোয়ালিটি ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড(FPS) এ রেকর্ড করতে পারবে তার স্লো মোশন তত বেশি ভাল হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সাধারণ একটা SLR ক্যামেরা দিয়ে প্রায় ৬০FPS এ ভিডিও শুট করা যায়, আর স্ট্যান্ডার্ড ভিডিও FPS হল ৩০। যার মানে SLR এর সাহায্যে শুট করা ভিডিওটিকে মাত্র অর্ধেক স্লো করা যাবে কোন ফ্রেম না হারিয়ে।
এটা আমাদের প্রত্যশার ধারেকাছেও নেই। এমনকি ৩০০ FPS এর ক্যামেরা দিয়ে শুট করা ভিডিও স্লো মোশন হলেও সুপার স্লো মো এর ধারেকাছেও নেই। কিভাবে স্লো মোশন ভিডিও তৈরী করবেন?
>প্রশ্নটা যখন ভিডিও তৈরী করা নিয়ে নিঃসন্দেহে প্রথমেই আপনার লাগবে একটি ভিডিও ক্যামেরা, স্লো মো ভিডিও করার জন্য প্রয়োজন হবে এমন একটি ক্যামেরার যেটি ভিডিও কোয়ালিটি ঠিক রেখে অনেক বেশি FPS এ ভিডিও শুট করতে পারে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে শাটার স্পীডের প্রতিও। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, Nikon J2 এর কথা।
এটি প্রায় ১২০০ FPS এ ভিডিও রেকর্ড করতে পারে, স্লো মো এর জন্য যেটা ভয়ানক😓😓😓। স্লো মো ভিডিও করার জন্য ক্যামেরা কেনার আগে ইউটিউবে রিভিউ দেখে নিবেন অবশ্যই সেই সাথে আপনি যে মডেলের ক্যামেরা কিনতে চাচ্ছেন সেটা দিয়ে শুট করা কিছু স্লো মো ভিডিও দেখে নিবেন অবশ্যই।
এখন কথা হল যদি আপনার ডিএসএলআরে কমপক্ষে ৩০০ FPS এ ভিডিও শুট করা যায় তবে সেটা দিয়ে এন্ট্রি লেভেলের স্লো মো ভিডিও শুট করা সম্ভব। যে কোন ডিএসএলআর কেনার আগে অবশ্যই এর ভিডিও শুট ৭ কত তা জেনে নিবেন
৩০০ FPS এর ক্যামেরা দিয়ে যদিও স্লো মো ভিডিও শুট করা সম্ভব কিন্তু আমি বলব ভাল মানের স্লো মো ভিডিও শুট করা যদি আপনার ইচ্ছা থাকে তাহলে কমপক্ষে ৬০০ FPS এর ক্যামেরা কিনবেন।
সে সাথে অবশ্যই দেখবেন যে ক্যামেরাটি পারস্পরিক ফ্রেম রেট রুল সাপোর্ট করে কিনা (পারস্পরিক ফ্রেম রেট রুল বা Reciprocal Frame Rate Rule সাপোর্টেড ক্যামেরাতে FPS দ্বিগুণ হয়ে যায় অর্থাৎ ৬০০ FPS এর একটি ক্যামেরা দিয়ে ক্যাপচার করা ভিডিওর FPS হবে ১২০০। অর্থাৎ শাটার স্পিড হবে সেকেন্ডে ১/১২০০। শাটার স্পিড যত বেশি হবে পিকচার বা ভিডিও কোয়ালিটি তত চমৎকার হবে- লাইটিং, অবজেক্ট কালার এবং নড়াচড়া বিহীন শট এর মাঝে পরে)।
ক্যামেরা পছন্দ করতে আপনাকে সাহায্য করতে নিচে কিছু স্লো মো ভিডিও ক্যাপচার ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরার লিস্ট দেয়া হয়েছে। আবার বলছি কোন ক্যামেরা কেনার আগে অবশ্যই সেটা দিয়ে রেকর্ড করা ভিডিও দেখে পছন্দ হলে তবেই সেটা কিনবেন। সাজেশনে দেয়া ক্যামেরাগুলো কেনার আগেও অবশ্যই ফুটেজ দেখে নিবেন।
target="_blank" rel="noopener noreferrer">Fastec TS3 (720 FPS)
তো ক্যামেরা কেনার পর সেটা দিয়ে ভিডিও শুট করার পর আসে এডিটিং এর ব্যাপার। স্লো মো তে ভিডিও এডিট করা আসলে খুবই সহজ। একটু ইউটিউব ঘাটলেই অসংখ্য ভিডিও টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন। আবারো বলছি স্লো মো তে এডিট করা খুবই সহজ এডিট সম্পর্কে ধারণাহীন একজন ব্যক্তিও এটা করতে পারবেন। আপনি নিজেই পারবেন এডিট করতে, অবশ্যই।
এটা স্লো মো ভিডিওর খুবই সাধারণ রকটি উদাহরণ। এন্ট্রি লেভেলের স্লো মোশন দেখতে পাবেন এখানে। ভিডিওটি শুট করা হয়েছে Redlake N3 high-speed camera দিয়ে।
১০০০ FPS এর এই ভিডিওটি Phantom Flex4K ক্যামেরা দিয়ে শুট করা হয়েছে। এটা সুপার স্লো মো এর এন্ট্রি লেভেলের ভিডিও।
অনেক ডিটেইলড স্লো মো ভিডিওগুলির এটি একটি। GoPro HD Hero 2 দিয়ে করা এই ভিডিওটি পরবর্তীতে আরো এডিট করা হয়েছে। আর একারণেই ভিডিও কোয়ালিটি একটু কমে গিয়েছে।
Photron SA1.1 দিয়ে শুট করা ভিডিওটি ৫০০০ FPS এর।
The Slow Mo Guys এর এই ভিডিওটি Phantom v1610 এবং ম্যাক্রো লেন্স দিয়ে ৭২০ পিক্সেলে ১৮০০০ FPS এ শুট করা। সাধারণ ভিডিওর থেকে এই ভিডিওটি ৭০০ গুণ স্লো।
V1610 দিয়ে শুট করা এই ভিডিওটি স্লো মো ভিডীওগুলোর মাঝে অন্যতম সেরা একটি ভিডিও। এটি ১৮০০০ FPS এ শুট করা হলেও সেটি এডিট করে ২৭০০০ এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
৬০হাজার FPS এর এই ভিডিওটি Phantom V2010 দিয়ে শুট করা।
Phantom V1610 দিয়ে এই ভিডিওটি শুট করা হয়েছে।
Phantom V2511 দিয়ে শুট করা ভিডিওটি ৯৬ জিবির!😜😜😜
১০ লাখ এফপিএস এর এই ভিডিওটি।
Visualizing Light Rays(1Trillion FPS)
MIT এর গবেষণাগারে করা এই ভিডিওটি ১ট্রিলিয়ন এফপিএস এর!
তো স্লো মো ভিডিওর দুনিয়ায় আপনি কবে আসছেন? ক্যামেরা নিয়ে আছে কোন কথা? যে কোন সমস্যা জানাতে ভুলবেন না। জানাতে ভুলবেন না টিউনিটি কেমন লাগল। টিউনটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমি হাসিবুর ইসলাম নাসিফ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 43 টি টিউন ও 76 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
বিষাদময় পৃথিবীতে আমি আনন্দ খুঁজে নিই সবকিছু থেকে। আর স্বপ্ন দেখি মহাকাশ ভেদ করে ভালোবাসা ছড়িয়ে দেবার। স্বপ্নচারী আমার স্বপ্নগুলোই বাঁচিয়ে রেখেছে আমাকে। হাত ধরে চলো স্বপ্ন দেখি একসাথে।
Quality Post Bro