ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা মাস। এই মাসের ইতিহাসই তৈরি করেছে আজকের বাংলাদেশ। বাংলা আমাদের প্রাণের ভাষা, আর সেই ভাষায় আমরা কথা বলতে পারি তাও এই মাসের রক্তক্ষয়ী অবদানের জন্য। এক দল তরুণ এই মাসে নিজেদের জীবন দিয়ে রক্ষা করেছেন আমাদের মায়ের মুখের এই ভাষা। ২১ শে ফেব্রুয়ারি সেই কারনেই ভাষা রক্ষার মাস এবং আন্তর্জাতিকভাবে ভাষা রক্ষার ইতিহাস বহন করে।
ভাষার জন্য এতো স্বীকৃত থাকলেও এই ভাষার অনলাইন খুব সমৃদ্ধ নয়। আমরা এই একুশ শতকে বসে সেই ভাষা শহীদদের সম্মান রক্ষায় কাজ করতে পারছি না।
টেকনোলজির উন্নয়ন ছাড়া এই শতকে দেশকে উন্নয়ন সিংহভাগ সম্ভব নয়। সেকারণে দেশের প্রত্যেকটা মানুষকে টেকনোলজি নির্ভর করা অতীব জরুরী। কিন্তু এতো বড় কঠিন কাজ আমাদের বাংলা ভাষায় ছাড়া কখনো সম্ভব নয়। গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কখনো এই দেশকে টেকনোলজি নির্ভর করা সম্ভব না। সম্মিলিতভাবে সবাইকে অবদান রাখতে হবে।
ঠিক সেই অবদানের সব থেকে বেশি ভূমিকা রাখছে আমাদের টেকটিউনস। বাংলা ভাষায় টেকনোলজিকে সমৃদ্ধ করার প্রত্যয় নিয়ে এই ভাষার মাসেই যার সৃষ্টি। ২০০৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষার প্রত্যয় নিয়ে টেকটিউনসের জন্ম। বাংলার মানুষকে টেকনোলজির কাছে আনার জন্য সবথেকে বেশি এবং অনবদ্য ভূমিকা রেখে চলেছে আমাদের টেকটিউনস।
এরই মধ্যে আজ এই টেকটিউনসের একাদশ জন্মবার্ষিকী। এখন পর্যন্ত টেকনোলজির প্রতিটা ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে এই টেকটিউনস। আজ টেকটিউনসের ৪ কোটির বেশি পাঠক নিয়মিত এই টেকটিউনসে আসছে। ভাবতেই ভালোলাগে দেশকে ছাড়িয়ে আমাদের টেকটিউনস এখন বিশ্বের দরবারে। ১৮০ এর বেশি দেশ থেকে টেকটিউনস ভিজিট করা হয় নিয়মিত।
বাংলা ভাষায় টেকনোলজির অবদান নিয়ে টেকটিউনস ভূমিকা নিয়ে বলে আসলে শেষ করতে পারবো না। শুধু এই একাদশ বার্ষিকীতে টেকটিউনসের সম্মানিত পাঠকদের কাছে বলবো, দেশ বদলাতে হাজার মানুষের দরকার হয় না, একজন মানুষের সাহসী পদক্ষেপ এগিয়ে নিতে পারে আমাদের এই ভগ্ন টেকনো ব্যবস্থাকে। আর সেই অবদানে সামিল হবে আমাদের সবার প্রাণপ্রিয় এবং অপ্রতিদন্দী টেকটিউনস, সাথে তার লাখো টেক সৈনিক এবং কোটি কোটি শুভাকাংক্ষি।
শুভ জন্মদিন টেকটিউনস। 🙂
টেকনোলজি বিশ্ব বিস্ময়ের জগত। টেকটিউনসের আজ সপ্তম জন্মবার্ষিকীর সাত টেক আশ্চর্য ঘটনা। সব ঘটনায় বিস্ময় দিয়ে হয়, পরে মানুষের কাছে তা বাস্তবতা পাই। এরকম বিস্ময়কর কিছু ঘটনা-
আপনারা যারা গুগলে সার্চ করেন তারা I’m feeling lucky শব্ধটার সাথে পরিচিত। আমরা এই ফিচারটা খুব কমই ব্যবহার করি। কিন্তু আপনি কি জানেন এই ফিচারের জন্য কতো খরচ হয় গুগলের?
গুগল $১১০ মিলিয়ন ডলার প্রতি বছর খরচ করছে এই অসাধারণ ফিচারটা প্রকাশ করার জন্য। টোটাল গুগলের ১% ভিজিটর যায় এই ফিচারে। এই ফিচার গুগলের আছে এবং থাকবে। যদিও প্রতি বছর $১১০ মিলিয়ন খরচ করছে গুগল এর পিছনে।
ইউটিউবের প্রথম ভিডিও আপলোড হয় ২৩ এপ্রিল ২০০৫। ভিডিওটি আপলোড করেন জাভেদ করিম। ভিডিওটির শিরোনাম ছিল “আমি এখন চিড়িয়াখানায়” চিড়িয়াখানাটি ছিল স্যান ডিয়াগো জুতে। আরও চমকপ্রদ ঘটনা হল এই সেই জাভেদ করিম যিনি ইউটিউব প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি একজন বাংলাদেশী।
বাঙালি জাভেদ করিমের ভিডিও এবং ইউটিউবের প্রথম ভিডিও দেখে নিন-
ইন্টারনেটে সর্বপ্রথম ছবি আপলোড করেন মিঃ বার্নাস লি। এটা ছিল একটা জোকস ব্যান্ডের মহিলা দলের চমকপ্রদ ছবি। অনেকে বিশ্বাসই করতে চাইতেন না যে এটাই ইন্টারনেটে প্রকাশ করা প্রথম ছবি।
এই চমকপ্রদ ঘটনার সাথে দেখে নিন পৃথিবীর প্রথম সেই ওয়েব সাইট।
স্টিভ জবস ছিলেন অসাধারণ ব্যক্তি যিনি সৃষ্টির জন্য মানুষ যা কল্পনা করতো না ঠিক তাই করতেন। ২০০৫ সালে এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্টিভ জবস তার অতীত জানান। সেখানে তিনি বলেন, এক সময় তিনি তার এক বন্ধুর বাসার ফ্লোরে শুয়ে রাত পার করতেন। যেখানে খাবার নিয়ে আসতে তার মিনিমাম ৭ মাইল হাঁটতে হতো। প্রতি রবিবার রাতে তিনি মিনিমাম সাত মাইল হেঁটে একটু ভালো খাবার সংগ্রহ করতেন একটি গির্জা থেকে।
এক্সাট কতো দিন তাঁকে এমনভাবে চলতে হয়েছে তা খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে কস্টের মধ্যে যে তিনি এই পজিশনে উঠে এসেছেন তা স্পষ্ট। আর তিনিই এক সময় হলেন প্রযুক্তি জগতের মহান পুরুষ।
১৯৭১ সালে প্রথম ই-মেইল পাঠান রয় টমিলসন। তিনি নিজেই নিজেকে এই মেইল করেন। কি লিখেছিলেন তার রহস্য তিনি নিজেই বের করতে পারেন না এখন।
বিশ্বের প্রথম এই মেইলের রহস্য বের করা এখনও সম্ভব হয় নি।
গুগলে প্রতিদিনের সার্চে ১৬% থেকে ২০% তথ্য আগে কখনো সার্চ হয় না। একদম ইউনিক থাকে এই সকল বিষয়। এখান থেকে ধারণা নিয়ে বলা হয় ইন্টারনেট জীবন শেষ হওয়ার নয়। আজকে যে তথ্য নতুন, কাল তা পুরাতন হলেও, কাল আবার নতুন নতুন অনেক তথ্যের জন্ম হয়।
১৯৭৫ সালে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা কালিন ইনভেস্টমেন্ট ছিল মাত্র ৬০ ডলারের কাছাকাছি। তিনি যখন এই প্রতিষ্ঠান করবেন বলে ধারণা করেন তখন তিনি বন্ধুদের দ্বারা সমালোচনার পাত্র হন। তাঁকে অনেকে পাগল অবিহিত করতেও দ্বিধা করেননি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সেই বন্ধুদের অনেকেই পরবর্তীতে তার প্রতিষ্ঠানেই জবের জন্য আসেন। তিনিই এখন বিশ্বের সেরা ধনীর খেতাব বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন এক দশকের বেশি সময় ধরে এবং বিশ্বের সেরা টেক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন কয়েক বার।
টেকটিউনসের জন্মও এই বাংলায় আরেক আশ্চর্য ঘটনা। ২০০৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে বাংল ভাষাভাষির জন্য প্রকাশ পায় অনন্য এক প্ল্যাটফরম। টেকটিউনস এমন এক সময় জন্মগ্রহণ করে যখন বাংলাদেশে ইন্টারনেট ছিল Kpbs এ সিমাবদ্ধ আর মোবাইল ইন্টারনেট কী তাতো এদেশের মানুষ জানতই না। সেই সময় বাংলাদেশে টেকটিউনস এর মত অত্যধুনিক টেকনোলজি প্ল্যাটফরম প্রকাশ পায় তাও বাংলাদেশের প্রথম ক্লাউড সার্ভারে হোস্ট করা সাইট হিসেবে। এই বাংলায় এতো দ্রুত এতো সমৃদ্ধ টেক ব্যবস্থা আসবে এটা ভাবাই যায় না।
সেই ২০০৮ এর ফেব্রুয়ারি মাসে টেকটিউনস কমিউনিটি ছিল কয়েক শ এর মত। আর টেকটিউনস কমিউনিটি পুরো বিশ্ব ছাড়িয়ে আজ ৪ কোটি ও অধিক। টেকটিউনস এর অভিনবত্য, প্রতিনিয়ত উন্নয়ন, নতুনত্ব এর প্রয়োগ, অধুনা প্রযুক্তির ব্যবহার টেকটিউনসকে করেছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা কমিউনিটি।
জয়হো টেকটিউনস।
বিস্ময়কর ৫০ টেক ঘটনা নিয়ে পরিবর্তী কোন টিউন নিয়ে আসবো আমি আবার।
বাংলা টেকনোলজি জগতের এই শুভ দিনে আশাকরি, আমরাই বাংলায় টেকনোলজি সমৃদ্ধ করবো। টেকটিউনস আমাদের পাশে থেকে সেই ভূমিকায় অবদান রাখবে।
আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...
nice