এবার একটু সাহিত্য কপচাই। অনেক তো হলো ফিজিক্স আর কমিউনিকেশন নিয়ে। আজকে একটা লোকের কথা বলি।
নাম ওয়ারেন বাফেট! তিনি নাকি কিছুদিন আগেও পৃথিবীর দ্বিতীয় ধনী ছিলেন।আমি অবশ্য বড়লোকের নাম বলতে হাতে গোনা কয়েকজন যেমন বিল গেটস (সবার আগেই), তারপর তারেক জিয়া, তারপর ফালু মিয়াদের নামই জানি।
তা কোথাকার কোন ওয়ারেন বাফেট নাকি এখন শুনি দুনিয়ার শীর্ষস্হানীয় বড়লোকদের একজন। খুব ইন্টারেস্ট সহকারে পড়া শুরু করলাম লোকটা করে কি? খায় কি?
পড়তে গিয়ে একটা হোচট খেলাম। ইদানিং উনি নাকি কোন চ্যারিটিতে ৩১ বিলিয়ন ডলার দান করেছেন। টাকার অংকটা দেখে মনে হলো আসলেই বড় লোক।
তা উনি সিএনবিসি কে দেয়া একটা অনুষ্ঠানে একটা সাক্ষাতকারও দিয়েছেন সেই সুবাদে। তাই তুলে ধরি!
- ভদ্রলোক প্রথম শেয়ার বাজার থেকে শেয়ার কিনেছিলেন ১১ বছর বয়সে আর এখন উনার জীবনের অন্যতম আফসোস হচ্ছে উনি বোধ হয় একটু দেরীতে শেয়ার কিনে ফেলেছেন।
- ঊনি যখন ১৪ তে পা দেন তখন খবরের কাগজ বিক্রির জমানো টাকা দিয়ে ছোট্ট একটা ফার্ম কিনে ফেলেন।
- উনার ৫০ বছরের বিবাহজীবনের শুরুর দিকে একটি বাসা কিনেছিলেন বেশ সাদামাটা।ওমাহার মতো মফস্বল এলাকায় ৩ বেডরুমের ছোট্ট একটা বাসা যার কোনো ওয়াল বা বেড়া নেই, এবং উনি এখনও সে বাড়িতেই আছেন। উনার মতে তার যা দরকার এ বাড়ীতে সবই আছে! আমি অবশ্য ও বাড়ী দেখার সুযোগ পাইনি কারন আমি দাওয়াতও পাইনি। কিজন্য পাইনি সেটা আমি পরে বলি!
- সে নিজের গাড়ী নিজেই চালান এবং এর জন্য কোনো ড্রাইভার পুষেন না, এমনকি উনার কোনো সিকিউরিটি গার্ডও নেই।
- উনি কখনো ভ্রমন জন্য কোনো প্রাইভেট জেট বা বিমানে এ চড়েন না। অথচ উনার নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাইভেট জেট কোম্পানী আছে।
- তার কোম্পানীর নাম Berkshire Hathaway যেটা ৬৩টি কোম্পানীর মালিক।সে প্রতিবছর তার এসব কোম্পানীর সিইওদের একটা চিঠি দেন যাতে লেখা থাকে তাদের এ বছরের লক্ষ্যটা কি এসব কোম্পানী এগিয়ে নেবার জন্য!
উনি এসব সিইওদের প্রতিনিয়ত মিটিং বা কলের উপর রাখেন না, শুধু এদেরকে দুটো নিয়মে বেধে দিয়েছেন। নিয়ম দুটো হলো:
পয়লা নিয়ম: নিজের শেয়ার হোল্ডারদের একটা টাকাও যেনো লস না হয়।
দ্বিতীয় নিয়ম: পয়লা নিয়মের এদিক ওদিক যেনো না হয়! - সে হাই সোসাইটির লোকদের সাথে খুব একটা সামাজিকতা রক্ষা করেন না, বরংচ সে তার চেয়ে বাসায় এসে হাতে একটা পপকর্নের গামলা নিয়ে টিভির সামনে এলিয়ে দেন।
- কয়েকবছর আগের শীর্ষ ধনী বিল গেটসের তার সাথে জীবনে প্রথম মোলাকাত করেছেন মাত্র ৫-৬ বছর আগে।বিল গেটস কখনোই মনে করেননি তাদের মধ্যে মিলে যায় এমন কিছু আছে তাই একটা আধা ঘন্টার মিটিং সেট করেছিলেন।কিন্তু যখন মিটিং শুরু হয় মোটামুটি ঘন্টা দশেক মিটিং চলে। বেচারা সেদিন টিভি আর পপকর্ন না খেতে পারলেও বিল গেটস এর মতো একটা ভক্ত পেয়ে যান।
- এই ভদ্রলোকের নিজের কোনো হ্যান্ডসেট মানে মোবাইল ফোন নেই এবং ডেস্কে কোনো কম্পিউটারও নেই। আমার মনে হয় গ্রামীন ফোন বা বাংলা লিংক তার সাথে যোগাযোগ করতে পারে!
উনি অবশ্য ফ্রীতে কিছু উপদেশ দিয়ে গেছেন যুবসমাজের জন্য:
ক্রেডীট কার্ড থেকে ১০০০ হাত দূরে থাকো আর নিজের মধ্যে বিনিয়োগ করো! আর মনে রেখো:
- টাকা মানুষ বানায় না, বরংচ মানুষই হচ্ছে টাকার স্রস্টা।
- ব্রান্ড নেমের পিছনে ছুটো না, যা পড়ে আরামবোধ করো সেগুলোই পরিধান করো। (আপনকা চয়েজকা মামলা হ্যা!)
- কে কি বললো তাই না করে সেটাই করো যেটাতে তোমার মনে হবে এটা ভালো!
- অপ্রয়োজনীয় জিনিসের পিছনে টাকা পয়সা না উড়িয়ে যাদের সত্যিকারার্থে টাকার দরকার তাদের পিছনে টাকা লাগাও! (ঐ দেখা যায় হাজী মোহাম্মদ মহসিন!)
- মোদ্দা কথা এটা তোমার জীবন তাহলে কেনো অন্য কাউকে এর উপর রাজত্ব করতে দেবে!
কিন্তু এসব কথার সম্পূর্ন বিপরীত পথেই আমি চলছি, আরে ধুরু একটাই জীবন, কোথাকার কোন বুড়ো কি বললো, আমি তা শুনবো কেন! হয়তো এজন্যই তার বাসায় আমি দাওয়াত পাইনি!
হা হা ! তবে রিন ভাইয়া, তার উপদেশ গুলো কিন্তু খারাপ ছিল না।