● এবার জানুন ব্লুটুথ (Bluetooth) সর্ম্পকে কিছু তথ্য…

ব্লুটুথ হল ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতির মধ্যে সংযোগ সাধনের একটি আধুনিক পদ্ধতি।এটি তারহীন এবং স্বয়ংক্রিয়।৯০০ খ্রীস্টাব্দের পরবর্তী সময়ের ডেনমার্কের রাজা Harald Bluetooth-এর নামানুসারে এই প্রযুক্তির নামকরণ করা হয়েছে।

যখন একাধিক যন্ত্রাংশ-এর মধ্যে সংযোগ সাধনের প্রয়োজন হয় তখন উহাদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের পূর্বে বেশ কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত হতে হয়। প্রথম বিষয়টি হল বস্তুগত-যা নিশ্চিত করে যে যন্ত্রাংশ গুলো তার-এর মাধ্যমে নাকি বিনা তারে যোগাযোগ সাধন করবে।আবার তার ব্যবহৃত হলে কতগুলো প্রয়োজন তা-ও জানা প্রয়োজন। বস্তুগত ব্যাপারটি নিশ্চিত হবার পরে আরও বেশ কয়েকটি প্রশ্ন এসে হাজির হয়। সেগুলো হল-কতগুলো তথ্য একত্রে প্রেরিত হবে, অর্থাৎ ১বিট নাকি একাধিক বিট? আবার এটাও নিশ্চিত হতে হয় যে,ঠিক যেই তথ্য পাঠানো হয়েছে ঠিক সেই তথ্যই গৃহিত হল কিনা।অর্থাৎ সঠিক তথ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা প্রয়োজন। ব্লুটুথ প্রযুক্তিতে রেডিও ফ্রিকোয়ান্সির মাধ্যমে সংযোগ সাধন করা এবং সঠিক তথ্য প্রাপ্তী নিশ্চিত হয়।

ইনফ্রারেড-এর পরিবর্তে ব্লুটুথ কেন?

সংযোগ সাধনের জন্য ব্লুটুথ ছাড়াও তারবিহীন আরও প্রযুক্তি রয়েছে, যেমন-ইনফ্রারেড প্রযুক্তি।ইনফ্রারেড হল দৃশ্যমান আলোর চাইতে কম কম্পাঙ্কের আলোক যা মানুষ খালি চোখে দেখতে পায় না।বেশিরভাগ রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমে এই আলো তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ব্যাবহৃত হয়।ইহার খরচ কম হলেও ইহার প্রধান ত্রুটি হলো যে এটা "line of sight" প্রযুক্তি।তার মানে হল যে, তথ্য আদান-প্রদানের জন্য যন্ত্রদ্বয়ের মুখোমুখি অবস্থান প্রয়োজন; এদের মাঝে কোন বাধা থাকলে তথ্য আদান-প্রদানেও বাধা পড়বে। ইনফ্রারেড-এর আরেকটি ত্রুটি হল যে এটা "one to one" প্রযুক্তি।তার মানে হল যে, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে A যন্ত্রের সাথে B যন্ত্রের তথ্য আদান-প্রদান করার সময় একইসাথে C যন্ত্রের সাথে তথ্য আদান-প্রদান সম্ভব নয়। কিন্তু ব্লুটুথ প্রযক্তিতে এই দুই ত্রুটির কোনটিই নেই।অর্থাৎ যন্ত্রগুলোর মধ্যে একই দিকমুখিতার প্রয়োজন হয় না এবং একই সময়ে বহু যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ সাধন সম্ভব হয়।তাছাড়া ব্লুটুথ প্রযুক্তিতে খুবই কম বিদ্যুৎ শক্তির ব্যয় হয়। আবার এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের গতিও অত্যাধিক। Bluetooth 1.0-এর তথ্য আদান-প্রদান-এর সর্বোচ্চ গতি ছিল সেকেন্ডে ১ মেগাবিট। Bluetooth 2.0-এর সর্বোচ্চ গতি হল সেকেন্ডে ৩ মেগাবিট।

ব্লুটুথ যেভাবে কাজ করে?

ব্লুটুথ প্রযুক্তিতে কম ক্ষমতা বিশিষ্ট বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে তথ্য পাঠানো হয়। এই যোগাযোগ ব্যাবস্থায় ২.৪৫ গিগাহার্ট্Jজ (প্রকৃতপক্ষে ২.৪০২ থেকে ২.৪৮০ গিগাহার্ট্Jজ-এর মধ্যে )-এর কম্পাংক ব্যাবহৃত হয়। শিল্প, বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত যন্ত্রের জন্য উপরিউক্ত কম্পাংকের সীমাটি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।এখন প্রশ্ন হল যে ব্লুটুথ অন্যান্য তরঙ্গ নির্ভর যন্ত্রের কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করে কিনা?উত্তর হল "না"। কারণ ব্লুটুথ কর্তৃক প্রেরিত সিগন্যালের ক্ষমতা থাকে মাত্র ১ মিলিওয়াট, যেখানে সেল ফোন ৩ ওয়াট পর্যন্ত সিগন্যাল প্রেরণ করে।অর্থাৎ ব্লুটুথের নিম্ন ক্ষমতার সিগন্যাল উচ্চ ক্ষমতার সিগন্যালে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে না।

ব্লুটুথ একসাথে ৮টি যন্ত্রের মধ্যে যোগাযোগ সাধন করতে পারে।তবে প্রত্যেকটি যন্ত্রকে ১০ মিটার ব্যাসার্ধের একই বৃত্তের মধ্যে অবস্থিত হতে হয়, কারণ ব্লুটুথ প্রযুক্তি চারিদিকে সর্বোচ্চ ১০ মিটার পর্যন্ত ক্রিয়াশীল থাকে।এখন প্রশ্ন যে, A যন্ত্রের সাথে B যন্ত্রের যোগাযোগের সময় কাছাকাছি অবস্থিত অপর দুটি যন্ত্র C ও D-এর মধ্যের ব্লুটুথ যোগাযোগ ব্যাবস্থা বাধাগ্রস্থ হয় কিনা?(কেননা দুই যন্ত্রযুগলই একই কম্পাঙ্কের ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যাবহার করছে)উত্তর হল "না"। কারণ এই সমস্যা সমাধানের জন্য ব্লুটুথ একটি পদ্ধতি ব্যাবহার করে যা কিনা "spread-spectrum frequency hopping" নামে পরিচিত।এই পদ্ধতিতে একই সময়ে একাধিক যন্ত্রযুগল একই কম্পাঙ্ক ব্যাবহার করে না।ফলে একে অপরের যোগাযোগ ব্যাবস্থাতে বাধার সৃষ্টি করে না।এ পদ্ধতিতে কোন একটা যন্ত্র নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অবস্থিত কম্পাঙ্ক হতে ৭৯ টি পৃথক পৃথক কম্পাঙ্ক randomly গ্রহণ করে ও একের পর এক পরিবর্তন করে। ব্লুটুথের ক্ষেত্রে, ট্রান্সমিটার প্রতি সেকেন্ডে ১৬০০ বার কম্পাঙ্ক পরিবর্তন করে।ফলে একাধিক ভিন্ন ভিন্ন যন্ত্রযুগলের মধ্যে একই সময়ে একই কম্পাঙ্ক-এর তথ্য প্রেরণ অসম্ভব বললেই চলে।

ব্লুটুথের নিরাপত্তা ব্যাবস্থাঃ

এই প্রযুক্তিতে তথ্য প্রেরণ করতে কোন অনুমতির প্রয়োজন হয় না। তাই যে কেউ তথ্য প্রেরণ করতে পারে।তবে আগত কোন তথ্য গ্রহণকারীর অনুমতি সাপেক্ষে গৃহীত হয়।ফলে গ্রহণকারীর সিদ্ধান্তের উপর নিরাপত্তা নির্ভর করে। তাই গ্রহণকারীকে সাবধান থাকতে হবে। কেননা আগত তথ্য কোন ভাইরাসও হতে পারে।এছাড়াও "Bluejacking", "Bluebugging" and "Car Whisperer" প্রভৃতি সমস্যাও ব্লুটুথের নিরাপত্তা ব্যাবস্থাকে অনিশ্চিত করে।এসব সমস্যা হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিয়মিত ব্লুটুথ সম্বলিত যন্ত্রের ফার্মওয়্যার আপগ্রেড করা উচিত, কেননা ফার্মওয়্যার-এর নতুন নতুন সংস্করণ সদ্য আবিষ্কৃত নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকির সমাধান দেয়।

সূত্র :- উইকিপিডিয়া

Level 0

আমি নাবিল আমিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 119 টি টিউন ও 738 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ব্লুটুথের সিকিউরিটি সমস্যা একটি বড় বাধা স্বল্প দূরত্বের তার বিহীন যোগাযোগের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে সেসন হাইজাকিং।
ধন্যবাদ।

    হুমমম 🙁 আপনাকেও ধন্যবাদ ইয়াকুব ভাই।

Level 0

নাবিল আমিন ভাল টিউন,কিন্তু বিস্তারিত হলে আর ভাল হত । যেমন ব্লুটুথ ইনটারনেট সেটিং ব্লুটুথ সেটাপ দেয়াইত্যাদি ,ইত্যাদি,
আপনাকে ধ্যনবাদ ।

    এসব নিয়ে পরবর্তীতে টিউন করার ইচ্ছে আছে… স্পেশালি আপনার জন্য 😆

দারুন টিউন করেছেন নাবিল ভাই। ধন্যবাদ চমতকার টিউনের জন্য।

    শাকিল ভাই, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

ব্লুটুথ প্রযুক্তি আমি খুবই পছন্দ করি। আমি প্রায় ২ বছরের ও বেশী সময় ধরে ব্লুটুথ এর মধ্যে মাধ্যমে নোকিয়া ৬৩০০সি মডেলের সেট দ্বারা ইন্টারনেট ইউজ করছি।
নাবিল আমিন ভাই আপনার সাহায্য চাইছি আমার ইউন্ডোজ ৭ এ আমি এটা (IVT CORPORATION BlueSoleil ৩.২.২.৮) দ্বারা নেট ইউজ করতে পারতেছি না। আমি আপডেট ক্রাক ভার্সন খুজছিলাম আপনার কাছে থাকলে বড় উপকার হয়। আর এটি উবুন্টুতে ও কোন সমস্যা হয় না, খুব সুন্দর ভাবেই চলে। আপনার কাছে যদি BlueSoleil 6.4.305.0 ক্রাক থাকে তাহলে বড়ই উপকার হয়।

    আপনি (http://www.filestube.com/search.html?q=BlueSoleil&select=All) এখানে দেখতে পারেন।
    সফটয়্যারটির অনেকগুলো লিঙ্ক পাবেন আপডেট ভার্শন সহ। আর আমার কাছে আপাতত এই সফটয়্যারের ক্র্যাক নেই তবে আমার পুরোন টিউনে দেখতে পারেন… সিরিয়াল কী নিয়ে সেখানে ক্রাক, সিরিয়াল কী, প্যাচ ইত্যাদি পাওয়া যায় এমন ১০টি ওয়েব সাইটের লিঙ্ক দেয়া আছে।

    যাক শেষ পর্যন্ত IVT-BlueSoleil-6.4.249.0 এক্টিভেট করতে পারলাম। ব্লুটুথ দিয়ে কম্পিউটারে হেডফোন ইউজ করা মজার একটি বিষয়। এক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড ০০০০ দিলেই চলে। ধন্যবাদ নাবিল আমিন ভাইকে।

HI, VALO LAGLO.BLUTHOOT THEKE KIVABE MOBILE AR GAN COMPUTER A BAJANO JAI JANABEN KI

HI, VALO LAGLO.BLUTHOOT THEKE KIVABE MOBILE AR GAN COMPUTER A BAJANO JAI JANABEN KI

ধারুন লিখেছেন ভাইয়া

    ধন্যবাদ ভাইয়া তোমাকেও

অনেক কিছু জানলাম,কিন্তু আমারতো আর জানতে ইচ্ছে করে।
অনেক ……. ( আমি ধন্যবাদ এর সমার্থক শব্দ খুজতেচি, জানলে আমাকে জানাইয়েন )

অবাক ব্যাপার, আমার নামের আরেকটা ID আসলো কোথা থেকে? টেকটিউনস এ একই নামে একাধিক ID খোলা সম্ভব নাকি?

    হা সম্ভব, মনে নাই fake id খুলে ফাগুন rainকে কি জালানিটা জালাইচিলো !!!

ব্লুটুথ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে …… তথ্যগুলো কাজে দিবে।

ভাল হয়েছে 🙂

Level 0

vi onek pore comment korsi…….r english a likhsi. Tai kisu mone koiren na……akhane bluetooth version er goti somporke janlam.thnx
Vi amar nokia5800 te bluetooth on korle bole ”unable to perform bluetooth operation” ki korbo vi???