রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুতে নজরুলের স্বকন্ঠের একটি আবৃত্তি :: শুনুন ও সংগ্রহে রাখুন!!!

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আসসালামুআলাইকুম । সবাইকে আমার আন্তরিক প্রীতি, সম্মান, শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জ্ঞাপন করছি। আশাকরি আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন।

কাজী নজরুল ইসলামের বয়স তখন ২১বছর। সৈয়দা খাতুনের (নজরুল যার নাম দিয়েছিলেন “নার্গিস”) সাথে বিয়ের রাতেই অভিমান করে কুমিল্লা থেকে পায়ে হেটে চলে এসেছিলেন। বিয়ে করলেন আশালতা সেনগুপ্তা কে (নজরুল যার নাম দিয়েছিলেন “প্রমীলা”) । কোলকাতা এসে কবি লিখলেন তার বিখ্যাত কবিতা “বিদ্রহী”।

“বল বীর

বল উন্নত মম শির

শির নেহরী আমারি নত শির ঐ খিশর হিমাদ্রীর”

বিদ্রহী কবিতার মাধ্যমে সারা ভারতবর্ষে সাড়া পড়ে গেলো। একেক জন একেক ভাবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন। আব্দুর কাদির “বিদ্রহী” কবিতার প্যারোডিতে লিখলেন-

“ওহে বীর

সংযত করো তোমার নত শীর”

আজ আব্দুর কাদিরের প্যারোডি কবিতাটি কত জন মানুষ মনে রেখেছে? বরং আব্দুর কাদিরের বড় পরিচয় তিনি নজরুলের জীবনী লিখেছেন। তিনি নজরুলের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন এবং বেশ কিছু ইসলামী গান লিখেছেন।

আর নার্গীস? যে কিনা দুরন্ত, দূর্বার ও উচাটন একজনকে স্বামী হিসেবে পেতে মানুষিক ভাবে কম্প্লিকেটেড ছিলেন তার পরবর্তিতে বিয়ে হলো আজিজুল হাকিম নামের একজন সাধারণ গোছের কবির সাথে। ১৪ বছর পর নার্গিস নজরুলকে একটি পত্র লিখেছিলেন। নজরুল তখন এইচ,এম,ভি রেকর্ড রুমে তার সাথে বসা কমল দাস গুপ্তের (মাইলসের শাফিন, হামিমের বাবা ও ফিরোজা বেগমের স্বামী) মত কিংবদন্তি। চিঠি পাওয়ার সাথে সাথে নজরুল অঝোরে কেঁদে দিলেন। পরক্ষনেই একটি গান ও একটি পত্র লিখলেন। চিঠিটি নজরুলের পত্র সমগ্রতে পাবেন আর গানের দ্বিতীয় অন্তরা ও স্থায়ী টি হল-

“আমি ফিরি পথে তাহে কার ক্ষতি,

তুমি সদাই কেনো সাজাও মিনতী।

আমি ভুলেও কোনদিন এসে দাঁড়ায়েছি তব দ্বারে।।

ভুলে যাও মোরে ভুলে যাও একেবারে।

যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পারো নাই,

কেন মনে রাখ তারে।।”

এই কথাগুলোর উদ্দেশ্য আব্দুর কাদির কিংবা নার্গীস কে ছোট করা নয়। তারাও বিখ্যাত কারণ নজরুলের পরশ তাদের লেগেছিলো।

ভারতের জাতির পিতা মহত্মা গান্ধীকে যিনি মেরে ছিলেন। মহত্মা গান্ধী তাকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এই না হলে মহত্মা গান্ধী!!!

ছোটবেলায় হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সঃ) ও তার পথে কাঁটা দেয়া বুড়ির গল্প আমরা পড়েছি। আমাদের মহান নবী তার জীবন থেকে আমাদের দেখিয়েছেন ধৈর্য্য দ্বারা সবকিছু জয় করা সম্ভব। ভাই আমি  মুসলিম। আমি চাই না আমার দ্বারা কেউ দুঃখ পাক।

আব্রাহাম লিংকন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়ে প্রথম যেদিন সংসদে গেলেন। এক সম্ভ্রান্ত সিনেটর তাকে উদ্দ্যেশ্য করে বললেন-

“আমাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট, যিনি একজন মূচির সন্তান। এই প্রেসিডেন্টের বাবার তৈরী জুতো আমার পায়ে। সুতারং তিনি যাতে এমন কোনো কথা বা কাজ না করেন যাতে আমাদের মতো সম্ভ্রান্ত ও বনেদী মানুষদের অসুবিধে হয়।”

এর উত্তরে আব্রাহাম লিংকন বলেছিলেন-

“ধন্যবাদ সেই পিতাকে যিনি একজন প্রেসিডেন্টের জন্ম দিতে পেরেছিলেন। এখানের অন্য কারও পিতা তা পারে নি। আবারও ধন্যবাদ জানাই পিতাকে যিনি এমন কিছু জুতো তৈরী করেছিলেন যা পায় দিয়ে আজও কোনো সম্ভ্রান্ত ব্যাক্তির ভাল জায়গায় আসতে হয়। ”

এরকম শত শত গল্প আমি আপনাদের উপহার দিতে পরি এবং এই মূহুর্তে। কিন্তু আমার মনে আছে টেকটিউনস টেকনোলজির কথা জানানোর প্রয়াসের ওয়েবসাইট।

আমার প্রাণপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি আপনাদের নিশ্চই বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না এই গল্প গুলো আমি কেনো করলাম। আমার দ্বারা আর যাই হোক কারও সাথে খারাপ ব্যবহার করা সম্ভব না। কারণ এটা আমার নীতির সাথে সাংর্ঘষিক।

আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা আপনাদের এই মুহূর্তে শেয়ার করতে চাচ্ছি না। জানেন (!!!) আমার সব দুঃখ কষ্ট ম্লান হয়ে যায় আপনাদের ভালোবাসার সামনে। আমাকে নাম না জানা অনেক ওয়েবসাইট পেইড ব্লোগার হিসেবে পেতে চাচ্ছে। আমি রাজি হই নি। আমি আপনাদের দিতে চাচ্ছি। সংগত কারণেই ৫-৬দিন আগে আমার টিটির প্রোফাইলে দেয়া আমার মোবাইল নম্বর আজ তুলে নিচ্ছি। যদি আমার ভক্তবৃন্দের কারও প্রয়োজন হয় ই-মেইলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ রইলো।

আজকের টিউনটি হমায়ূন আহমেদ কে উৎসর্গ করা হল। তার সাথে প্রথম দেখা হয়েছে আমি তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি। হুমায়ূন আহমেদ স্যার এসেছিলেন কামিনী রায়ের বড়ী দেখতে। সেখানে তাকে দেখি। কামিনী রায়ের একটি কবিতার লাইন শুনুন-

"কুকুরের কাজ কুকুর করেছে কামড় দিয়েছে পায়,

তাই বলে কি কুকুরকে কামড়ানো মানুষের শোভা পায়।"

হুমায়ুন আহমেদকে গতকাল সমাহিত করা হল। খুব খারাপ লাগছে।

রবীন্দ্রনাথের দেহত্যাগের খবর শুনে নজরুল দলবল সহ হারমোনিয়াম কাঁধে রাস্তায় নেমে পড়লেন আর অশ্রু শিক্ত নয়নে গাইলেন-

“ঘুমাইতে দাও শান্ত রবীরে....................”

আর বরীন্দ্র স্মরণে একটি কবিতা  লিখলেন ও নিজকন্ঠে আবৃত্তি করলেন। সেই নজরুলের স্বকন্ঠের কবিতাটি আপনাদের উদ্দ্যেশে দিলাম। একটু মন দিয়ে শুনুন। দেখবেন আজও কতটা যুগোপযুগী।

নজরুলের স্বকন্ঠের আবৃত্তি শুনতে এখানে ক্লিক করুন। 

কষ্ট করে আমার এই টিউনটি দেখার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি আপনাদের ভালবাসায় সিক্ত ও পরিতৃপ্ত। আপনাদের ব্যাপক সাড়া আমার নিত্যদিনের প্রেরণা।

Level 2

আমি মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 1147 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

মা ও বাংলা ভাষার কাঙ্গাল


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

আপনাকে না আমার একটু ছুয়ে দেখার খুব ইচ্ছা হচ্ছে,আপনি খুব ভাগ্যবান এমন একজন মানুষকে কাছ থেকে দেখেছেন।আপনাকে ঈর্ষা হচ্ছে খুব

    @একটু অচেনা: দু’বার দেখেছি। একবার ২১শে বই মেলায়। বলেছিলাম- “স্যার একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দিন না”। অনেক ভির ছিলো। তাত বুলিয়ে দেন নি। তবে চশমার মধ্যের চোখটি এমন ভাবে জ্বল জ্বল করে উঠেছিলো। তাতেই পাওয়া হয়ে গেছে। তার প্রায় সব বই আমি পড়েছি। যদি পারেন “নিজেকে আমি খুঁজিয়া বেড়াই” বই টি পড়বেন।

      @মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্: পড়েছি বইটি,স্যার প্রায় সব বই আমারও পড়া।পড়ার বই পড়ি না পড়ি স্যারের বই পড়তাম।

        @Ochena Balok: কোথায় পেলেন? এই বইটা তো আউট অফ মার্কেট। আমি সেই স্কুল জীবনে পড়েছি। স্কুল লাইফে তাঁর ১৭৪টা বই পড়েছিলাম। হুমায়ুন আহমেদের শুণ্য,ইমা ইত্যাদি সায়েন্স ফিকশনের মধ্যে সতন্ত্রতা আছে। আর যারা বাংলা ভাষায় সায়েন্স ফিকশনে বিখ্যাত তাদের বেশীর ভাগের উপরেই আইজ্যাক অসিমভের ছায়া। জুলভার্ন, অসিমভের সব বই পড়েছি। ইংঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ার সময়। বইয়ের সাথে আমার ভালো একটা ভাব ছিলো।

          @মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্: আমার সৌভাগ্য আমার পরিবারে কিছু হুমায়ুন স্যারের ভক্ত আছেন তাদেরই কালেকশন ছিল তবে মনে হয় পুরনোটা কিনা ছিল।জুলভার্ন ভালো লেগেছে তবে অসিমভের সব গল্প পছন্দ হয় নি এটা অনুবাদের দোষ হতে পারে।অপেক্ষা,দেবী-নিশীথিনী,মধ্যাহ্ন ১,২ বলার মত বই।আর একটা বই ছিল অটিস্টিক একটা বাচ্চার গল্প নিয়ে নামটা এখন মনে নেই।বই পেলে এখনও অন্য সব কিছু ভুলে যাই।সমরেশ,সুনীল আর শীর্ষেন্দুর বইও পড়ি।আর ভালো লাগে কাজী আনোয়ার হোসেনের “মাসুদ রানা”

Level 0

সেহরী ,রোজা,ইফতার x ৩০ = ঈদ

Level 0

আপনি খুব ভাগ্যবান এমন একজন মানুষকে কাছ থেকে দেখেছেন।আপনাকে ঈর্ষা হচ্ছে খুব

ভাই, আপনি যে কি!!! কি আর বলি, একাই একশ।

    @Rakib Uddin: আমি একা ১০০ হলে। তার ৯৯ই হল আপনাদের সাথে পাওয়া। আপনাদের ভালবাসা ছাড়া আমি মূল্যহীন। ধন্যবাদ!!!

আপনার টিউনটি পড়তে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে

    @সৌমিত্র বিশ্বাস: “যে নাম লয়ে কাঁদে রাই রসমই। কুরুক্ষেত্রে যে নমে হল পন্ডব জয়ী।। গুলকের নারায়ন ভুলকের রাধা শ্যাম।। গাহো নাম অবিরাম কৃষ্ণ নাম কৃষ্ণ নাম” (নজরুল গীতি) ধন্যবাদ!!!

ভাই গানটা ডাউনলোড করতে পারলামনা?

Level 0

অনেক সুন্দর টিউন। প্রিয়তে রাখলাম।

”আমরা দুজন একই গায়ে থাকি, এই আমাদের একটি মাত্র সুখ”
আমরা পরস্পর টেকটিউনে আসি, থাকি এটাই আমদের সুখ। খুব সুন্দর হয়েছে।

    @স্বার্থপর: অনেকদিন পর আপনাকে দেখে ভালোলাগছে।
    “আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর,
    থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর”
    কার লেখা জানেন?
    বন্দে আলী মিয়া
    বন্দে আলী মিয়ার জীবনী পড়লাম। তিনি এক বার মশারী গায়ে হাটে গিয়েছিলেন। চাদর ভেবে। কতটা আনমোনা। এই না হলে কবি।
    ধন্যবাদ!!!