যদি এমন হতো, একটি পূর্ণাঙ্গ ভাসমান বাড়ি সাথে নিয়ে আপনি ভেসে বেড়াচ্ছেন আটলান্টিক মহাসাগরে! কিংবা, আপনার ড্রইংরুমের জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে প্যারিস নগরী! অথবা, ভিয়েতনামের সুবিখ্যাত উপসাগর হা লং বেতে নিজের বারান্দায় বসে প্রিয় মানুষের হাতে হাত রেখে ভিজছেন ভিনদেশী জোৎস্নায়! কেমন লাগবে আপনার?
অনন্য মেধাবী একজন আর্কিটেকচারার সিকোস তেরেভ { Csikós Terv} ডিজাইন করেছেন এমনই একটি ভাসমান দ্বীপের।
এর স্বপ্নদৃষ্টা ছিলেন গ্যাবোর ওরসোস { Gábor Orsós} নামের এক সৃষ্টিশীল ক্ষেপাটে ভদ্রলোক।সহযোগী হিসেবে পেয়েছেন একদল কাজপাগল মানুষের সহযোগীতা।
অদূর ভবিষ্যতে যেটা হতে পারে আপনার স্বপ্নময় আবাস।প্রায় ১০.০০০ হাজার স্কয়ার ফিটের আয়তন হবে এই ইয়ট কিংবা ভাসমান শহরটির।
বারোজন অতিথি আর চারজন ক্র ধারণ ক্ষমতার এই আইসল্যান্ডটি তৈরী হবে স্টীল, অ্যালুমিনিয়াম এবং উচ্চমানের শংকর ধাতুর সমন্বয়ে।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ওরসোস দ্বীপ, নিরুদ্বেগ এবং সহজাত সৌন্দর্যর সম্মিলনে গড়া একটি এবং ব্যক্তিগত ছুটি কাটানোর বিলাসবহুল আবাসন ব্যবস্থা।
এখানে থাকবে ভূমিতে নির্মিত একটি সুবশিাল সুরম্য ফ্ল্যাটের সবধরণের সুবিধা। এই দ্বীপে থাকবে ব্যক্তিগত ব্যবহারের পাশাপাশি অতিথিদের জন্য থকবে যথার্থ আয়োজন।
দ্বীপের মেইন ডেকে থাকবে খোলা বার। রেস্টুরেন্ট। বারবিকিউর জন্য থাকবে উন্মুক্ত ব্যবস্থা।
হোম থিয়েটার, ড্যান্স ফ্লোর, কারাওকে সহ সবধরণের আয়েশ সুবিধার সার্থক বাস্তবায়ন ঘটানোর চেষ্টায় কোন ত্রুটি রাখছে না নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটি।
সুবিশাল সোলার প্যাণেল মেটাবে এই দ্বীপের এনার্জি চাহিদা।
থাকবে প্রাকৃতিক ওয়াটার পিউরীফাইয়ার সিস্টেম এবং উদ্ভিদজাত সুনির্মল অক্সিজেন সাপ্লাই প্ল্যান্ট।
আপনার সাধ্য অনুযায়ী চাইলে ভাড়া নিতে পারবেন কোম্পানীর নির্ধারিত প্যাকেজ গ্রহণের মাধ্যমে।
এই দ্বীপের অবাক করা আরামদায়ক ড্রইংরুমের পরিবেশ, বদলে দেবে জীবন সম্পর্কে আপনার ধারণা।
জীবন পৃথিবীর প্রায় বেশিরভাগ জায়গাতেই তার কঠিন রূপটি ছড়িয়ে রেখেছে। তবে, কখনো সখনো অর্থ আর বিত্তের বৈভব হার মানিয়েছে জীবনের উন্মাতাল গতিকে।
তৃতীয় বিশ্বের উন্নতশীল বলা হলেও অনুন্নত হত দরিদ্র প্রিয় এই বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জ কিংবা দরিদ্র পল্লীগুলো অথবা ঝাঁ চকচকে শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত অনুন্নত এলাকাগুলোতে এক বিকেলে হাঁটতে বেরুলেই টের পাবেন, জীবন এখানে কতোটা কঠিন।
যুদ্ধ কবলিত আফ্রিকার বিভিন্নশহরগুলোর সুড়কিউঠা রাস্তায় ছুটে বেড়ানো কঙ্কালসার চেহারার শিশুদের দেখলে সহজেই বুঝতে পারবেন, বেঁচে থাকার জন্য কতোটা সৌভাগ্যের প্রয়োজন হয়।
আমাদের দেশেই আছে রোহিঙ্গা কিংবা বিহারীদের শরনার্থী শিবির। সেখানে কখনো গেলে বুঝতে পারবেন, জীবনের পথ পরিক্রমা কতো বেশি নিষ্ঠুরতায় আকীর্ন।
তবে, অর্থ, টাকা পাল্টে দেয় আমাদের প্রতিদিনের পরিচিত সবকিছুকে। যদি আপনি অফুরন্ত টাকার মালিক হয়ে থাকেন, তাহলে হয়ে যেতে পারেন এমন একটা ভাসমান আইসল্যান্ডের গর্বিত মালিক। সেখানে জীবন আপনার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষায় থাকবে তার সবটুকু আনন্দ নিয়ে।
এই ছোট্ট ভাসমান শহরটির মালিক হতে চাইলে আপনাকে খরচ করতে হবে মাত্র $৪.৬ মিলিয়ন ডলার। যে পরিমাণ অর্থ দিয়ে আমাদের এই ইট কাঠ পাথরের ঢাকা শহরে অবহেলায় পড়ে থাকা অসংখ্য পথশিশুকে একবেলা খাওয়ানো যেতো পেটপুরে। কিংবা, ওদের জন্য করা যেতো আরো অনেক কিছু।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনে স্বস্তি নিয়ে আসে। জীবনকে সহজ আর সাবলিল করে তুলতে প্রযুক্তির ভূমিকা অনেক। তারপরও, কিছু থেকে যায় বলার।আমরা ধীরে ধীরে সুসভ্য জাতিতে পরিণত হচ্ছি। কিন্তু, আমাদের মানবিকতাবোধ একই সাথে বিদায় জানাচ্ছে আমাদের।
অপর আরেকজন মানুষের দুঃখ বিগত পঞ্চাশ বছর পূর্বে আমাদের যেভাবে ছুঁয়ে যেতো, এখন আমাদের সেভাবে স্পর্শ করে না অন্যের বেদনা। কেনো এমন হচ্ছে?
আমরা কি যন্ত্রমানুষে পরিণত হচ্ছি? আবেগ ভালোবাসা স্নেহ বোধের সুশীতল অনুভব কি হারিয়ে ফেলছি আমরা প্রতিনিয়ত? সেটা কখনোই কাম্য নয়।
বিজ্ঞান আমাদের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আনুক। কিন্তু, আমাদের মানবীয় বোধকে যেনো পাল্টে না দেয়। দরিদ্রতা কেটে গিয়ে বিজ্ঞানের আশীর্বাদে আমাদের পৃথিবীতে নেমে আসুক পর্যাপ্ত সচ্ছলতা। মানুষের জন্য মানুষের ভালোবাসা বেঁচে থাক। জীবন হোক শতভাগ সুন্দর আর উচ্ছল।
♣ ============= ♣
তথ্যসূত্র এবং ছবি সাহায্য:-
১। নিউজ ইয়াহু।
২। হু ড্যাট।
৩। টেক্কা।
৪। এলিট ডেইলি।
৫। লাউডি মাউস।
৬। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট।
আমি নীরব মাহমুদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 11 টি টিউন ও 210 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি অতি সাধারণ একাকী একজন মানুষ। প্রতিনিয়ত শিখছি একটু একটু করে। ভীষণ ছোট্ট একটা জগত আমার। প্রযুক্তির অসাধারণ অগ্রযাত্রা আর বিশ্বায়নের এই যুগে নিজের চরিত্রটাকে বড্ড বেমানান লাগে। তবুও, পথ চলি অবিরাম। নতুন কোন সুন্দর আলো ঝলমলে সোনালী প্রভাতের প্রতিক্ষায়।
“বিজ্ঞান আমাদের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আনুক। কিন্তু, আমাদের মানবীয় বোধকে যেনো পাল্টে না দেয়। দরিদ্রতা কেটে গিয়ে বিজ্ঞানের আশীর্বাদে আমাদের পৃথিবীতে নেমে আসুক পর্যাপ্ত সচ্ছলতা। মানুষের জন্য মানুষের ভালোবাসা বেঁচে থাক। জীবন হোক শতভাগ সুন্দর আর উচ্ছল।”
osomvob sundor lakha /jotota na mul bishoy tar thaky shamajik bisoi ta tuly dhoresen / tar por eo manus kintu shopno dhaky valo thakar (bachy thakar) .