আমার কোন দোষ নাই। সব দোষ টেকটিউনসের। সে টেক ফিকশান বিভাগটা খুলল কেন? তাই তো আমি গল্পটা আপনাদের বলার সুযোগ পেলাম। আসলে এই গল্পের আগামাথা কিছুই আমি জানি না। কোন আইডিয়ায় নাই। কোথাও রাফ করি নাই। সরাসরি New Post এ।হি হি...
"আমি মাখন বলছি। এলিজা তুমি কি আমার কথা বুঝতে পারছ। এলিজা...এলিজা।"
এলিজা তার খাতার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল। সে তার পরীক্ষার খাতায় কমপক্ষে ৫০ বার লিখেছে এই কথা। অথচ সে শতভাগ নিশ্চিত যে এই কথা সে লিখে নাই।
"পরীক্ষার খাতায় গল্প লিখ। বেয়াদব মেয়ে। বদমাইশি করার আর জায়গা পাও না। কালকেই আমি তোমার মায়ের সাথে কথা বলতে চায়।" খুব রাগি ভাব নিয়ে বললেন মিস. রেশমী। তিনি কোনভাবেই বুঝতে পারছেন না। তার সামনে দাঁড়ানো মেয়েটা পরীক্ষার হলে তিনজন গার্ডকে ফাকি দিয়ে এই কাজ করেছে কিভাবে। তিনি মহাবিরিক্ত গতকাল রাতে যখন প্রানিবিদ্যা খাতা কাটছিলেন তখনি খাতাটা সামনে আসে তার। এতগুলো বাজে খাতা কাটার পর একটা ভালো খাতা পাওয়ার পর খুশি হয়ে খাতাটা কাটছিলেন। মনে মনে ভাবতে লাগলেন যে মেয়েটি নিশ্চিতভাবে খুব ভালো ছাত্রী। আর তখনি খাতার উপর লেখাটি দেখলেন তিনি। একবার নয় দুবার নয়। অসংখ্য বার। পড়তে পড়তে তার মাথা গরম হয়ে গেল। তিনি ভাবলেন কঠিন প্রশ্ন করায় মেয়েটি তার বন্ধুদের পক্ষ থেকে তাকে অপমান করেছে।
ঐদিকে অপমানে এলিজার চোখে পানি চলে এসেছে। সে এখনো বুঝতে পারেনি লেখাগুলো খাতায় এল কিভাবে। অথচ তারই হাতের লেখা। ম্যডামকে কি বলবে বুঝতে না পেরে সে নিরবে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলতে লাগল।
এলিজাকে কাদতে দেখে মিস. রেশমি একটু নরম হলেন। বললেন "ঠিক আছে এখন ক্লাসে যাও।"
এলিজা ধীরে ধীরে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে ক্লাসের দিকে হাটতে লাগল। হাতে প্রানিবিদ্যার পরীক্ষার খাতা।
ক্লাসে ঢুকতেই ফেলানী দৌড়ে এল। এলিজার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু। ক্লাস র্যাংকিং এ সবসময় তারা দুজন প্রথম আর দ্বিতীয় হয়ে আসলেও মোটেও হিংসা নেই কারো মাঝে।
এলিজার হাতে পরীক্ষার খাতা তাতে ৮৭ নং দেয়া আছে। ফেলানী অবশ্য ৯৫ নম্বই পেয়েছে। ক্লাসের আর কেউই ৬০ নম্বরের বেশি পায় নাই। ফেলানী ভাবল এলিজা এত কম নম্বর পাওয়াতে হয়ত ম্যাডামের কাছে গিয়েছিল। এবং ম্যাডাম হয়ত উল্টো ঝাড়ি দিয়েছে। ফেলানী মনে মনে এজন্য ম্যাডামকে কি বলবে তা সাজাতে সাজাতে এলিজাকে বলল। "কাদিস কেন?"
এলিজা কিছু না বলে তার খাতা উল্টিয়ে দেখাল। খাতা দেখে ফেলানী হাসবে না কাদবে সেটা চিন্তা করতে লাগল। প্রথম দিকে সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া আছে। কিন্তু শেষ কয়েক পৃষ্ঠায় শুধু
"আমি মাখন বলছি। এলিজা তুমি কি আমার কথা বুঝতে পারছ। এলিজা...এলিজা।"
"কিরে তুই আবার গল্প লিখতে শুরু করলি কবে থেকে। মাখন আবার কথা বলে নাকি। এসময় ভুলেও মাখন খাস না। এমন মোটা হবি যে রাসেল ছাড়া তোকে আর কেউ বিয়ে করবে না।" রাসেল ওদের ক্লাসের সবচেয়ে মোটু আর হাদা মার্কা।
এলিজা এতক্ষনে অনেকটা সয়ে এসেছে চমকটাতে। সে প্রথমে ভাবল ফেলানীকে সব খুলে বলবে, পড়ে কি মনে করে বলল না। ব্যাপারটা এড়ানোর জন্য শুধু একটু মুচকি হাসি দিল।
এরপর ঝড়ের বেগে ওদের মাঝে জাকির এসে উপস্থিত হল। "জানিস, আমি আমার এইম ইন লাইফ ঠিক করে ফেলেছি।"
"ওয়াও।" প্রসঙ্গ পাল্টানোর সুযোগটা এলিজা লুপে নিল সাথেসাথে।
"কি হবি তুই?" ফেলানী খুব অসস্থি বোধ করতে লাগল। মনে মনে জাকিরকে সে পছন্দ করে। কিন্তু পাগলা এই ছেলেটার মাথায় কখন কি করে আসে, সে তা ভাবতেই পারে না।
জাকির উৎসাহ পেয়ে জানাল যে সে প্রোগ্রামার হবে।
"ওহ!" হতাশ হল ফেলানী।
ব্যাপারটা ধরতে পারল এলিজা। বলল "শুধু শুধু সময় নষ্ট করে লাভ কি। আমার মনে হয় না, তুই প্রোগ্রামিং এর যতটুকু জানিস ততটুকু অন্য কেউ জানে।"
"ওহ!" এবার জাকির এর মন ভেঙ্গে গেল।
"মানে আমি বলছিলাম যে তুই এখনি একজন পরিপূর্ন প্রোগ্রামার। আবার হওয়ার কি আছে।" এলিজা জাকিরকে বুঝানোর চেষ্টা করল।
"তোর মাথা..." জাকির কোন একটা যুক্তি দিতে যাচ্ছিল কিন্তু ম্যাডামকে ক্লাসে ঢুকতে দেখে ওরা যে যার জায়গায় চলে গেল।
আর এলিজার মাথায় তখনো বাজছে লাইনগুলো।
চোখের ঘুম ধরে রাখতে পারছি না। আর কেমন লাগল জানাতে পারেন। কারো ভাল লাগলে চালিয়ে যাব । মনে হয় না কারো পছন্দ হবে। 🙁 ।
টেক-ফিকশান বিভাগটা খুজে পাচ্ছি না। তাই টেক-হিউমারে পোস্ট করলাম।
আমি মাখন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 37 টি টিউন ও 961 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একটা ফাজিল। সবসময় ফাজলামো করতে ভালোবাসি। আর আমি প্রায় সবসময় হাসিখুশি থাকি। আমাদের সমাজে সবার এত বেশি দুঃখ যে কাওকে একটু হাসতে দেখলেই মনে করে তার মাথার স্ক্রু কয়েকটা পড়ে গেছে। আমি তাদের সাথে একমত, আমার শরীরের যে অংশ আমাকে হাসতে দেবে না, আমার তার দরকারও নাই।
ভালো হয়েছে।চালিয়ে যান।