হলোগ্রাপিক মেমরি! (সায়েন্স ফিকশনঃ২য় পর্ব)

যারা প্রথম পর্ব পড়েননি, তারা: ক্লিক করুন এখানে!

(পর্ব দুইঃ)

গুড নিউজ কথাটা শুনে তুসিন নিজেই কিছুটা চমকে গেলো। কি হতে পারে সেই নিউজ?

“হোয়াট ইস দ্যা নিউজ?”-বলল তুসিন।

“ইটস এ সিক্রেট! বাট আই কেন এন্সিউর ইউ দ্যাট, ইটস অল এবাউট ইউর রিসার্চ!”

তুসিন ব্যপারটা কিছুটা বুঝতে পারলো। সৃষ্টিকর্তা তার সিক্সথ সেন্সকে যে শক্তিশালী করে বানিয়েছেন, এটা তুসিন ভালোভাবেই জানে। কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অহংকার নেই, নেই কাউকে জানানোর ইচ্ছাও। নিজের মাঝে সে গুটিয়ে থাকে বলে অন্য কেউ এ ব্যপারে খুব একটা জানেও না। এ ক্ষেত্রে তুসিনের ধারনা তার পাঠানো কোনো একটি সিগ্নাল হয়ত, ইউ এস রিসার্চ সেন্টারের কেউ ধরতে পেরেছে বা তাদেরকে প্রব্লেমে ফেলেছে। তাই তাকে এই খবর পাঠানো। তুসিন বুঝতে পারলো তাকে তাদের সাথে যেতে হবে। তবে এই যাওয়া কি আসামীর মত না সেলিব্রেটির মত তা এখনও তার কাছে পরিষ্কার নয়।

একজন লোক তখন বলে উঠলো, “স্যার, ইউ হেভ টু গো উইথ আস। টাইম ইজ শর্ট!”

তুসিন বলল, “আই নিড টু থিংস টু ডু। গেটিং পারমিশন ফ্রম মাই মাদার এন্ড গোয়িং টু মাই রুম ফর এ হোয়াইল!”

“নো প্রব্লেম স্যার। বাট উই টকড টু ইউর মম, শি গেভ আস পারমিশন টু টেক ইউ উইথ আস!”

( ভদ্র লোক মিষ্টি করে হাসার চেষ্টা করলেন।)

তুসিন নিজের রুমে গেল। তার কম্পিউটারের সামনে বসে কিছুক্ষন ভাবল। এর পর একটা পেন ড্রাইভে কিছু ডাটা ভরে নিলো। তারপর একটা গোলাপি রঙের কাগজের মধ্যে একটা প্রোগ্রাম লিখলো। ইতি মধ্যেই তার মনে একটা অনিশ্চিত চিন্তা ভর করেছে। তুসিন তার নার্ভাস সিস্টেমকে বুঝানোর চেষ্টা করছিলো, এটা কোনো ব্যপারই না। কিন্তু তবুও নিজেকে হাল্কা করতে পারছে না। কিন্তু কিছুক্ষনের মাঝে সব কিছু হাল্কা হয়ে যাবে অর্থাৎ তার ব্রেইন এটা মেনে নিবে। ফ্রেস হয়ে এল তুসিন। যাওয়ার জন্য প্রস্তুত সে। মায়ের রুমের দিকে গেল।

সারাদিন ক্লাস করে নীতু ক্লান্ত হয়ে বাসায় ঢুকল। বাবা মা দুজনেই চাকরি নিয়ে ব্যস্ত, তাই বাসায় তাকে একা থাকতে হয়। সন্ধায় দুই জনেই ফিরে। পড়াশুনায় ভালো বলে, তাকে নিয়ে মা বাবার খুব একটা চিন্তা নেই। নিতু সবকিছু ভালোই চলছিলো। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে ওর চোখে বেশ প্রব্লেম করছে। ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলো। ডাক্তারের কাছে গেলে যা হয় তাই হলো, একটা চশ্মা ধরিয়ে দিল। হঠাত করে নীতুর মনে পড়লো আজ তার চশ্মা ডেলিভারি আনার কথা দোকান থেকে। কিন্তু বিষয়টা সে পুরোপুরি ভুলে গেছে। বাবা মা এসে যদি দেখে সে চশ্মা আনে নি, তাহলে খুব রাগ করবে। কি আর করা আবার বেরিয়ে পড়তে হবে। গেটাপ চেঞ্জ করেই নীতু বেরিয়ে পড়লো। কিছুটা বিরক্তিতে তার কপালের রেখা ভাঁজ হয়ে আছে।

আজকের বাতাসটা জানি কেমন। মনে হচ্ছে চোখে খুব লাগছে। নীতু তাই রিকশার হুডটা তুলে দিয়ে নিজেকে একটু স্বস্তি দিতে চাইলো। ততক্ষনে চশ্মার দোকান চলে এসেছে। নীতু রিকশা থেকে নামতেই, ছোট একটা ছেলে এসে তাকে একটা গোলাপি রঙের কাগজ সাধছে। ছেলেটার বয়স ৯-১০ বছর হবে।

নীতু বলল, “কে তুমি, এটা কি?”

ছেলেটা কি যেন বলার চেষ্টা করলো। কিন্তু বলতে পারলো না। নিতু ওর হাত থেকে কাগজটা নিলো। ততক্ষনে ছেলেটা সজোরে হেঁটে চলে গেল। ছেলেটা যে কথা বলতে পারে না, তেমনটাই মনে হচ্ছে নীতুর।

কাগজটা খুলে নিতু দেখলো, তাতে লেখা;

[

#include<stdio.h>

#include<conio.h>

int main(void)

{

int i,j,k;

for(i=0,k=11;i<=90;i+=10,k+=10)

{

printf("\t\t\t\t");

for(j=i;j<k;j++)

if((j>=22&&j<=24)||(j>=26&&j<=28)||(j>=31&& j<=39)||(j>=41&&j<=49)||(j>=52&&j<=58)||(j>=63&&j<=67)||(j>=74&&j<=76)||(j==85))

printf("O");

else

printf("*");

printf("\n");

}

printf("\n\n\t In the world of Tusin, Nitu is the only Moon!!\n");

getch();

}

]

নীতু এ পিঠ, ও পিঠ দেখে কিছুই বুঝলো না। ভালো করে চারদিকে তাকিয়ে কাউকেই দেখতে পেল না সে। তবে দূরে কালো একটা গাড়ির মত কি যেন দেখতে পেল। গোলাপী কাগজটা সে হাতের মধ্যে রেখে দিলো। গুটি গুটি পায়ে হেঁটে যাচ্ছে দোকানের ভিতরে।

তুসিনের হার্ট বিট কিছুটা কমলো। কিন্তু সে বুঝতে পারলো না কি হয়ে গেলো। সাদা চামড়ার বিদেশী লোক দুটো তার দিকে তাকিয়ে মুছকি হাসছে! তুসিনের গা জ্বলে গেল এইটা দেখে। এ.সি. গাড়িতে বসেও সে ঘামছে। এই দেখে বিদেশি দুইটা এবার আর হাসি থামিয়ে রাখতে পারলনা।

একজনতো বলেই উঠলো, “আই হেভ নেভার সিন সাছ কাইন্ড অফ প্রোপোজ!! প্রোপোজ বাই প্রোগ্রামিং!!!”

এবার তুসিন কিছুটা লজ্জাই পেল। মুখটা নিচে নামিয়ে নিলো।

গাড়িটা দুরন্ত গতিতে ছুটে চলছে এম্বাসির দিকে। এখন তার একটু ভালো লাগছে। এলেন রোচ, আরভাইন বারগ লোক দুটোর সাথে তার ভালোই জমে উঠেছে।

আপাতত তুসিন ব্রেনের যে অংশে নিতু আছে তা ইনেক্টিভ করার চেষ্টা করলো। নিজের কাজের অংশ অন করল। এ ক্ষেত্রে ‘টেনশন’  কিছুটা হেল্প করলো। তুসিন বেশ কয়েক মাস ধরে একটা প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করছিলো। গাড়ি চলার সময় ওইটা নিয়ে কিছুক্ষন ভাবা যাক তথা ভাবার উত্তম সময়। বিষয়টা আসলে খুব জটিল ধরনের। গত পরশু তুসিন নিজের ট্রান্সমিটারে এই নিয়ে দুইটা পৃথক ফ্রিকুয়েন্সিতে দুইটা সিগ্নাল পাঠিয়েছিলো। এই ফ্রিকুন্সিগুলো ছিলো ‘রেডিও ওয়েব’ থেকে কিছুটা উপরের। এগুলুর একটা ছিলো ১১২ মেগা হার্জ এবং অন্যটা ছিলো ১১৮ মেগা হার্জের। ১০৮ মেগা হার্জের এর নিচে পাঠালে তা রেডিও ওয়েবের সাথে মিশে যেতে পারে বলে তার চেয়ে উপরে পাঠানো। এইটা তুসিনের নবম প্রোজেক্ট। এই সিগ্নালের কারনেই হয়ত তাকে আজ ঢেকে পাঠানো হয়েছে। তবে তার সবচেয়ে প্রিয় প্রোজেক্ট হচ্ছে এর আগেরটা। বছর খানেক আগে তুসিন ঐ প্রজেক্টটা শুরু করেছিলো, কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারনে তা বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেনি। প্রোজেক্টটা হচ্ছে “হলোগ্রাপিক মেমরি।” তবে তুসিনের যখন অনেক পরিমান বাজেট করতে পারবে তার এই প্রোজেক্টের জন্য এটা তখন শুরু করবে। “হলোগ্রাপিক মেমরি” প্রোজেক্টটা যদি তুসিন কোনোদিন সফল করতে পারে, তা হবে মানব জাতির জন্য একটা মাইলফলক হবে বলে তার আশা। কেননা এর দ্বারা নতুন এক অধরা অস্তিত্ব জন্ম নিবে বলে তুসিনের ধারনা।

কিছুক্ষন পর তাদের গাড়ি একটা লাল রঙের বিশাল ভবনে ঢুকল। সি.সি.টিভি ক্যমেরা দিয়ে ভবনটার পুরো মোড়ানো। এছাড়া আর অনেক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে যা ভাবাই যায় না! কিন্তু সে সবে মাথা ঘামাচ্ছে না তুসিন। তার মাথায় এখন ঘুরছে শুধু, “হলোগ্রাপিক মেমরি” প্রোজেক্ট!

(......চলবে)

(---যারা আমার নাম নিয়ে আপত্তি করেছিলেন, তাদের জন্য বলছি। কিছু ব্যক্তিগত কারনে এই নাম নেয়া। তবে খুব দ্রুত আমার নিজের নামে ফিরে আসবো, কথা দিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন। নিজের যত্ন নিবেন!)

Level 0

আমি Rubel Oron। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 229 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

______''সুডো ব্লগ''_এ আপনাকে স্বাগতম!' ________'প্রোগ্রামারের পৃথিবী''_তে আপনাকে স্বাগতম! _______''Rubel Orion on Facebook! :D


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Propose by Program টা আমার খুব ভালো লাগছে। কাউকে দিতে পারি কিনা দেখি 🙂 ।
আর গল্প একটানে না পড়তে পারলে মজা নেই 🙁 । তাই দয়া করে পুরো গল্প টা দিবেন পরের পর্বে।

    ধন্যবাদ জাকির ভাই।
    প্রোগ্রাম গড়ে দিতে পারে আপনার জীবন। কাউকে দিয়েই দেন। কি আছে জীবনে? 😉
    ‘লোভ’ তথা ‘মজা না পাওয়া’কে নিয়ন্ত্রন করতে পারলে আপনার ধৈর্য বাড়বে। সবাই আপনাকে পছন্দ করবে। তখন প্রোপজান প্রগ্রামটা কাজে লাগাতে পারবেন।
    😛

আপনাকে বলতে ভুলে গেছি। আগের পর্ব লোভ সামলাতে না পেরে পড়ে ফেলেছিলাম। তাই এইটাও…

“আই হেভ নেভার সিন সাছ কাইন্ড অফ প্রোপোজ!! প্রোপোজ বাই প্রোগ্রামিং!!!” 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀 😀

ধারাবাহিকে অস্থিরতা বাড়ে, এককে মনে শান্তি আনে।

    অস্থিরতা নিয়ন্ত্রন করতে পারলে আপনি আপনার দুনিয়া নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন। হয়ে যান লিডার। 😛
    সবুরে পুরো গল্প মিলে। 😛

    নিয়ন্ত্রণ করবো দুনিয়া, মনেরও পরে
    করিতে চাই মন শক্তিশালী দুনিয়ার তরে।

    সেই প্রত্যাশাই করি আপনার তরে,
    দেশের সন্তান দেশের মান বাড়াবে, বুক উঠবে ভরে।
    হবে সে প্রিয়, হবে না অতিরিক্ত একজন,
    তার মহিমায় হাসবে পৃথিবী, হাসবে কুজন, সুজন।
    🙂

    ভালোবাসায় ভাসিয়ো না মোরে…
    ভয় হয়,
    যদি ফিরে যায় সব স্বপ্নের ঘরে।

    স্বপ্ন গড়ে দিবে, এ জাতির আগামী,
    ভালোবাসা না থাকলে হয়না স্বপ্ন, জানেন অন্তর যামি।
    বেঁছে রবে তুমি ভালবাসার বাতাসে,
    ভয় কি? শুধু যদি স্বপ্ন যদি আসে?

ভালো হচ্ছে সায়েন্স ফিকশনটি, জাকির ভাই এবং আদনান ভাইয়ের মতই আমার প্রোপোজ বায় প্রোগ্র্যামিং টাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো, তবে কোডগুলো না বুঝলেও নিতুর “In the world of Tusin, Nitu is the only Moon!!” এই বাক্যটা বোঝা উচিৎ ছিল… 😉
চালিয়ে যান।

    কোড বুঝবেন না কেন?
    কম্পাইল করে ফেলুন তাড়াতাড়ি!! 😛
    ”একটা লাভ চিহ্ন দেওয়ার চেষ্টা করেছি।” 😉

    আমি বুঝিনি কে বললো 😉 ? আমিতো বললাম নিতু কোড বুঝেনি তাতে সমস্যা নেই কিন্তু কোডের মাঝে “In the world of Tusin, Nitu is the only Moon!!” এই বাক্যটা বোঝা উচিৎ ছিল… 😉

    অহহহ…. ভুল করে ফেললাম!! 🙁
    ব্যপার না। নীতুকে বলে দিবো, সে যেন বুঝে নেয়… 😉

    Level 0

    amar to mone hocce apni-e ” Tusin “

    ফয়সাল ভাই দেখেননা কি হয়…
    শেষ পর্যন্ত যদি বলতে পারেন, আমি তুসিন, তাহলে মেনে নিবো… **এটা কিন্তু সায়েন্স ফিকশন!!

Level 0

সুন্দর হয়েছে ।

রুবেল ভাই আপনার হলোগ্রাপিক মেমরি! (সায়েন্স ফিকশন) এর সব পর্বগুলো একসাথে একটাই টিউনে PDF হিসেবে দিলে ভালো হয়। তাছাড়া সায়েন্স ফিকশন টা সুন্দর হবে মনে হচ্ছে। তাই একবারে পড়তে না পারলে অনেকের হয়ত বিরক্ত লাগতে পারে।আপনাকে MANY MANY Scientific thanks!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

ফিকশন টা জটিল লাগছে। তবে কোড টা কি কম্পাইল করছেন? আমি কম্পাইল করতে গেলে বলতাসে
for(j=i;j<k;j++)
error: conio.h: No such file or directory

কারন টা ঠিক বুজলাম না।

    আমি ৭/৮ বার কম্পাইল করে দেখে দিয়েছি!!
    আমারতো কোনো সমস্যা হয় না। 😛
    আপনার কম্পাইলারের সমস্যা হলেও হতে পারে।
    অন্য কম্পাইলারে দেখতে পারেন। শুভ কামনা রইলো!!

হুমম। সমস্যা আমার ই ছিল; তবে রিটার্ন ভ্যালু বোধয় দেয়া নেই। একটু দেখেনতো।

না গো……….নাই……….

এই রকম প্রোপোজ করলে আমাকে ঝাটা নিয়ে দৌড়াবে। তখন আনডু কেমনে করব সেইটা বলেন। 😉
আমার কেন যেন মনে হচ্ছে, সবার আগে মন্তব্য আমিই করেছিলাম। ঘটনা কি? আমার মেমরি হলোগ্রাফিক না তো। ব্যাপার না। আবার করলাম।

    আনডু করার দরকার কি? মাখনকে ঝাটা নিয়ে দৌড়ানোর প্রশ্নই আসে না!!
    (কেন তা বললাম না!)
    হলোগ্রাপিক মেমরি??
    ব্যাপারটা কমপ্লেক্স! কমেন্ট লিখে হয়তো সাবমিট করতেই…………… 😉

পুরাই চরমজজজজজজজজজজজজজজ 😀 আই হেভ নেভার সিন সাছ কাইন্ড অফ প্রোপোজ!! প্রোপোজ বাই প্রোগ্রামিং!!!” 😉