বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আসসালামুআলাইকুম । সবাইকে আমার আন্তরিক প্রীতি, সম্মান, শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জ্ঞাপন করছি। আশাকরি আল্লাহ্র অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন।
কিছু কিছু ব্যাপারে বিজ্ঞান নিশ্চুপ। এসব বিষয়ে বিজ্ঞান না পারে তথ্য প্রমাণের সাহায্যে সত্য ও পরীক্ষিত বলে প্রমাণ দিতে না পারে অস্বীকার করতে। তেমনই একটি বিষয় নিয়ে আজ আলোচনা করতে যাচ্ছি। মনে রাখবেন প্রাকটিস ও ধর্য্য ছাড়া অন্যসব বিষয়ের মতো এ ধরনের বিষয় রপ্ত করা অসম্ভব। একটু দীর্ঘ হবার কারণে দুটি পর্বে বিভক্ত করে পোস্টটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরছি।
একটি কৃস্টালের তৈরী বল জোগাড় করুন। কৃস্টালের বলটি অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে। কৃস্টালের বল না পাওয়া গেলে দাগ বা খুঁত বিহীন কাঁচের গোলক হলেও চলবে। গোলক পাওয়া সম্ভব না হলে ঝকঝকে কাঁচের পানি পূর্ণ পেয়ালা সিল্কি কাপড়ের উপর রেখেও শুরু করতে পারেন।
এবার একটি বদ্ধ ঘরে পদ্মাসনে বসে পড়ুন। পদ্মাসনে বসতে অসুবিধা হলেও আপত্তি নেই। বসার পরে খেয়াল রাখুন মাংস পেশি বা রগে যেন টান না পড়ে কারণ এগুলো আপনার মনযোগের বিঘ্ন ঘটাতে পারে। মনে রাখবেন ঘরটি হতে হবে নীরব, হৈ চৈ বিহীন কোনো প্রকার কোলাহলমুক্ত। ঘরটি অন্ধকারাছন্ন হতে হবে। ঘরে মৃদু আলো থাকতে পারে তবে লক্ষ্য রাখুন লাইটের আলো যেনো কৃস্টাল বলটিতে সরাসরি প্রতিফলিত না হয়।
এবার কৃস্টাল বলটি দু’হাতের তালুর মধ্যে রাখুন। কৃস্টাল বলটির দিকে মনযোগ দিয়ে তাকিয়ে থাকুন। শুধু বলের উপর নয় বলের ভিতর তাকিয়ে থাকুন। আপনার মন থেকে সমস্ত চিন্তা ভাবনা ঝেরে ফেলুন। একদম কিছুই ভাববেন না। দৃষ্টি রাখুন বলটির কেন্দ্রস্থলে। ধীরে ধীরে আপনি প্রবেশ করতে যাচ্ছেন অতিন্দ্রীয়র জগতে। আপনার তখন মনে হতে পারে কৃস্টাল বলের আয়তন বাড়ছে। আপনি যেনো শুন্যে হারিয়ে যেতে বসেছেন। আর সেই মূহুর্তে একটি ঝাটকা লাগতে পারে।
এমন অবস্থা নিয়ে তিব্বতিয় সাধন লামা লবসাঙ “ডক্টর ফ্রম” গ্রন্থে লিখেছেন- “আমি কৃস্টাল বলে দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত করলাম। মন তখন একদম হাল্কা। হঠাৎ অনুভব করলাম, আমার হাতের তালুর কৃস্টাল বলের আয়তন বাড়ছে। আমার মনে হলো, আমি এর ভিতর পড়ে যাবো। লাফিয়ে উঠলাম। সমস্ত অনুভূতি বিলীন হয়ে গেলো। দেখলাম হাতে একটা সচ্ছ কৃস্টাল বল ছাড়া কিছুই নেই”
শুধু রহস্যময় তিব্বতীয় সাধকরা কৃস্টাল বল ব্যবহার করতেন না। অতীন্দ্রীয় সাধকরা কোন না কোন ভাবে এ পদ্ধতির প্রয়োগ করতেন। ব্যাবিলনের উজ্জ্বল ধাতব পেয়ালায় পানি ভরে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে সাধকরা পৌঁছতে পারতেন অতিন্দ্রীয় উপলব্ধীর জগতে। জেনেসিসে উল্লেখ করা হয়েছে হজরত ইউসুফ (আঃ) রূপার পেয়ালায় পানি ভরে তা ধ্যান করার সময় ব্যবহার করতেন। গ্রীকরাও যে ধাতব পেয়ালায় পানি নিয়ে এর চর্চা করতেন তার প্রমান মেলে। পীথাগোরাস কৃস্টাল বলের পরিবর্তে ব্যবহার করতেন আয়না। গ্রীক অকাল্টবিদরা অনেক সময় স্বচ্ছ ঝর্ণার পানিতে আয়না দিয়ে রোগীর রোগের অবস্থা জানাতেন।
প্রাচীন মিশরীয় অকাল্ট সাধকরা দিব্যদৃষ্টির জন্য ব্যবহার করতেন আয়না। আরব সাধকরা আয়নার সাথে ব্যবহার করতেন রূপার পেয়ালা। ভারত, চীন ও আফ্রিকায়ও প্রাচীন সাধকরা রূপা বা কাঁসার পাত্রে পানি ব্যবহার করতেন। অতীন্দ্রিয় সাধকদের মধ্যে আমিরিকার মায়া সভ্যতায়ই প্রথম মসৃণ কৃস্টাল ব্যবহৃত হতো। অষ্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরাও মসৃণ কোয়ার্জ খন্ড ব্যবহার করতেন। বিখ্যাত জ্যোর্তিবিদ নস্ট্রাডামাস ব্যবহার করতেন কালো আয়না। নস্ট্রাডামাস একদিন ফ্রান্সের তৎকালীন রাণীকে তার কালো আয়নায় ভবিষ্যত রাজার মুখ দেখান। রাণী প্রথম এলিজাবেথের ব্যাক্তিগত এস্ট্রলজার ড. জন ডি এর কৃস্টাল বলই প্রথম ইতিহাসে খ্যাতি লাভ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকান ভবিষ্যত দ্রষ্টা জীন ডিক্সনের কৃস্টালের কথা চরম আলোচনায় আসে।
যাই হোক, প্রসংগে আসি, আপনি প্রথম বৈঠকে যদি কৃস্টাল বলের শুণ্যতায় নিমজ্জিত হতে গিয়ে ঝাঁকুনি খেয়ে বাস্তবে ফিরে এসেছেন। যদি এমন ঘটে থাকে তাহলে আপনি সত্যিই ভাগ্যবান। তাহলে আপনার অতীন্দ্রীয় উপলব্ধির ক্ষমতা অসাধারণ। আর যদি ব্যতিক্রম ঘটে যে আপনি কোনো উপলব্ধি করতে সক্ষম হচ্ছেন না তাহলে দয়া করে ধৈর্যহীন হবেন না। হতাশ হবেন না। বার বার প্রাকটিস করুন। কৃস্টাল বলের প্রভাবে আপনি অতীন্দ্রিয় জগতে প্রবেশ করবেনই।
এরপরও কোনো ফল না পেলে আর একটু ধীরে ধীরে অগ্রসর হন। এক সপ্তাহ সাস্থের প্রতি নজর দিন। দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলুন। কারো উপর রাগ করবেন না। কাউকে বকবেন না। নিরামিষ খাদ্য খাবেন। প্রচুর ফলমূল ও দুধ খাবেন। কৃস্টাল বলটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করুন। তাতে কিছু দেখতে চেষ্টা করবেন না। শুধু নাড়াচাড়া করবেন। এভাবে নাড়াচাড়া করলে আপনার চুম্বক শক্তির একটা প্রভাব পরবে কৃস্টালে। কৃস্টাল অনুভবের সাথে আপনার একাত্ব হতে সুবিধা হবে। রাতে ঘুমুবার সময় কৃস্টালটা আপনার বালিশের নীচে রাখুন। তবে যখন আপনি কৃস্টাল বলটি নাড়াচারা করছেন না তখন অবশ্যই কৃস্টাল বলটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন আর কোনো ভাবেই যেনো কৃস্টালে সরাসরি সুর্যের আলোক রশ্মি না পড়ে। কৃস্টালকে নিরাপদ যায়গায় রাখবেন যাতে অন্যকেউ তা স্পর্শ করতে না পারে।
এক সপ্তাহ পরে আপনি আবার আগের নীয়মে কৃস্টাল বলটি নিয়ে বসুন। কিছুক্ষণ আল্লাহর কথা ভাবুন। ভাবুন গ্রহ, গ্রহ, তারা, চন্দ্র খচিত আকাশের নীলিমার গভীরতা ও বিশালতার কথা। এ ভাবনা অল্পসময়ের মধ্যে শেষ করুন। এবার আস্তে করে কৃস্টাল বলটি কয়েক সেকেন্ডের জন্য কপালের মাঝখানে ঠেকান। আস্তে আস্তে কৃস্টাল বলটি সহ হাত নামিয়ে নিন। তালুতে কৃস্টাল বলটি রেখে আরাম করে বসুন।
এবার কৃস্টাল বলটির উপর দৃষ্টি বুলান। দৃষ্টিকে গভীরভাবে নিমগ্ন করুন। ভাবুন আপনি এক অস্তিত্বহীন শুন্যের দিকে তাকিয়ে আছেন। মনকে চিন্তা-ভাবনা শুন্য করে ফেলুন। কোনো কিছু দেখতে বা উপলব্ধি করতে চেষ্টা করবেন না। কোনো গভীর আবেগ অনুভূতির প্রশ্রয় দিবেন না।
প্রথম রাতের জন্য ৭ থেকে ১০ মিনিটই যথেষ্ট। আস্তে আস্তে কৃস্টালের কেন্দ্রে গভীরভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ করার সময় বাড়ান। এমন ভাবে সিডিউল করুন যাতে আপনি সপ্তাহের শেষ দিনে ৩০ মিনিট পর্যন্ত দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে পারেন।
পরবর্তি সপ্তাহে বসার সাথে সাথে মনকে চিন্তাশুন্য করে ফেলুন। কৃস্টালের মধ্যে অন্তহীন শূণ্যতার কল্পনা করে একাগ্রচিত্তে দৃষ্টি রাখুন। ধীরে ধীরে মনে হবে কৃস্টালের উপরিভাগ ঢেউয়ের মত দুলছে। কৃস্টালের বলটি বড় হতে হতে বিশাল আকার ধারণ করেছে। মনে হবে আপনি যেন গোলকের শূণ্যতার মধ্যে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন বা বিশাল শুণ্যতার মাঝে হারিয়ে যাচ্ছেন। এমনই হবে। বিস্মিত হবেন না। ভয় পাবেন না। আপনার বিস্ময় বা ভয় সব কিছুকে মূহুর্তেই বিলীন করে দিতে পারে। ঐ রাতে আপনি কিছুই দেখতে পাবেন না। যদি আপনি ভয়ে কেঁপে ওঠেন বা তন্দ্রামগ্ন মানুষের মতো ঝাঁকি খেয়ে ওঠেন তাহলে বিশ্রাম নিন। সে দিন আর কৃস্টালের বল নিয়ে কাজ নেই।
পরেরদিন আবার আগের মতো কৃস্টালের বল নিয়ে বসুন। এভাবে অভ্যাস গড়ে তুলুন। দেখবেন বসার পর মন চিন্তাশূণ্য করার সাথে সাথে মনে হবে কৃস্টালের বল আয়তনে বেড়ে যাচ্ছে। মনে হবে তাতে প্রাণ এসেছে।
এভাবে ৪০ দিন করার পর দেখতে পাবেন কৃস্টালে ভুবনে যেনো সাদা ধোঁয়া আসছে। আপনি ভয় না পেলে সাদা ধোঁয়া সরে যাবে। আপনি গোলকের শূণ্যতায় দেখতে পাবেন হয়তো নিজের জীবনের কোনো ঘটনা। প্রথমদিকে সাধারণত অতীতের ঘটনাই ভেসে উঠবে। এ অবস্থায় আপনি তখন প্রবেশাধীকার পেলেন অকাল্টের সীমানায়। আপনার চর্চা অব্যাহত রাখুন। প্রতিদিন একের পর এক নিজের বিষয় দেখতে থাকুন। দেখেতে দেখতে ও অবিরত চর্চার মাধ্যমে আপনি অভ্যস্থ হয়ে পড়বেন।
এখন আপনি আপনার ইচ্ছে অনূসারেই নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন দৃশ্যবলি। দৃঢ়তা ও বিশ্বাসের সাথে নিজে নিজে বলুন “আজকে আমি এই জিনিস দেখবো।” বিশ্বাস করুন তখন আপনি যা দেখতে চাইবেন তাই দেখতে পাবেন। আপনার দেখতে চাওয়ার ইচ্ছেই হবে শেষ কথা। ভবিষ্যৎ সর্ম্পকে দেখতে চাইলে সম্ভব্য বিষয়ের সকল তথ্য সংগ্রহ করুন। দৃঢ়তার সাথে মনে মনে বলুন “আমি এই বিষয়টি জানতে চাই”।
কৃস্টালের প্রতি আপনার একটি কমান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এবার আপনি কি অন্যকারও সম্পর্কে কিছু জানতে চান?
কৃস্টালের বলের সাহায্যে অপরের সম্পর্কে জানার কৌশল আমি পরবর্তি পর্বে দেবো। মনে রাখবেন এগুলোর জন্য দরকার বিশ্বাস, প্রাকটিস ও ধর্য্য।
আপনাদের ভালবাসায় সিক্ত ও পরিতৃপ্ত। আপনাদের ব্যাপক সাড়া আমার নিত্যদিনের প্রেরণা।
আমি মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 1147 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মা ও বাংলা ভাষার কাঙ্গাল
tune ta pore khub valo laglo..kokhono jodi somoy ta manage korte pari……obossoi ami eta kore dekhbo…thanks for your nice tune..waiting for second part