প্রিয় টিউনার বন্ধুরা আশা করি ভালো আছেন। দীর্ঘ প্রায় ৩ বছর পর আমি আবার কিছু স্যাটেলাইট টিভি বিষয়ক টিউন নিয়ে ফিরে আসলাম।
গত ৩ বছরে বাংলাদেশে স্যাটেলাইট টিভি সার্ভিসের অনেক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৪ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্যাটেলাইট টিভি সার্ভিস দেয়া হয়।
১. অ্যানালগ ক্যবল
২. ডিজিটাল ক্যবল
৩. স্যাটেলাইট ডি টি এইচ (ডাইরেক্ট টু হোম)
৪. আই পি টিভি (IP TV)
আমি এই টিউন এবং আমার পরবর্তী ধারাবাহিক টিউনে শেষের ৩ টি সার্ভিস নিয়ে আলোচনা করব।
ডিজিটাল ক্যবলঃ
এই পদ্ধতিতে টিভি দেখার জন্য ডিজিটাল ক্যবল সংযোগ এবং ক্যবল সেট টপ বক্স দরকার হয়। ডিজিটাল ক্যবল সিস্টেমে DVB-C টেকনলজি ব্যবহার করা হয়। সেট টপ বক্স টি DVB-C কম্পাটেবল হয়।
ডিজিটাল ক্যবল সার্ভিসের প্রাথমিক গঠন সাধারন এ্যনালগ ক্যবল এর মতোই, তবে এ ক্ষেত্রে কন্ট্রোল রুমে বিশেষ ধরনের ডিজিটাল চ্যানেল মাল্টিপ্লেক্সার, বিলিং সফ্টঅয়্যার, এনক্রেপশন মডিউল ব্যবহার করা হয়। কন্ট্রোল রুম থেকে সাধারন ক্যবলের মাধ্যমে বাড়ি পর্যন্ত সংযোগ আসে। এরপর বাড়িতে একটি সেট টপ বক্স এ সেই সংযোগ দেয়া হয় এবং সেট টপ বক্সের মাধ্যমে চ্যনেল গুলো ডিক্রিপ্ট হয়ে টিভিতে AV Cable বা HDMI Cable এর মাধ্যমে যায়।
এই ডিজিটাল ক্যবলের মাধ্যমে SD(480p), Sub HD (720p/i), Full HD (1080p/i) তে চ্যানেল বিতরন করা যায়।
তবে আমাদের দেশের ডিজিটাল ক্যবল প্রোভাইডর গুলো সাধারন চ্যানেল SD (রেজুলেশন 480p) এবং HD চ্যানেল Sub HD (রেজুলশন 720i) ফরমেটে সম্প্রচার করে। কিন্তু তাদের দেয়া সেট টপ বক্স এর হার্ডঅয়্যার রেজুলেশন Full HD (1080i) হওয়ায় টিভি তে রেজুলেশন Full HD (1080i) দেখায়। তাই সবাই ভাবে যে ডিজিটাল ক্যবলে সব চ্যানেল Full HD। বাস্তবে চ্যানেল গুলোর রেজুলেশন তাই থাকে যা ডিজিটাল ক্যবল প্রোভাইডর গুলো দেয়।
ডিজিটাল ক্যবলের সুবিধাঃ
১. ছবির মান সাধারন ক্যবল/ডিশ লাইনের থেকে ২ গুন ভালো।
২. চ্যানেলের সংখ্যা ২০০+ পর্যন্ত হতে পারে।
৩. চ্যানেল প্যাকেজের সুবিধা থাকায় টাকার অপচয় কম হয়।
ডিজিটাল ক্যবলের অসুবিধাঃ
১. ঝড় বৃষ্টির কারনে তার ছিড়ে গেলে সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়।
২. ব্যবহৃত তারের মান খারাপ হলে বা লুজ কানেকশন থাকলে ছবি আটকে আটকে যায়।
৩. বাংলাদেশের ডিজিটাল ক্যবল প্রোভাইডাররা যেহেতু সাধারন চ্যানেল SD (রেজুলেশন 480p) এবং HD চ্যানেল Sub HD (রেজুলশন 720i) ফরমেটে সম্প্রচার করে তাই ৩২ ইঞ্চির থেকে বড় টিভিতে ছবির মান খারাপ আসে।
৪. ভালো সার্ভিসের দোহাই দিয়ে প্রোভাইডাররা অনেক বেশি বিল নেয়।
৫. যেহেতু এই সার্ভিসের প্রোভাইডাররা আসলে ডিশ অপারেটর সুতরাং সাধারন ডিশ লাইন অপারেটরদের ঝামেলা এখানেও পোহাতে হবে।
৬. কাভারেজ এলাকা অনেক কম হয়।
৭. অনেক দাম দিয়ে বাজে কোয়ালিটির রিসভার কিনতে হয়। যা বারবার হ্যাং হয়।
৮. কাভারেজ এলাকার বাইরে বাড়ি পরিবর্তন করলে পুনরায় নতুন সেট টপ বক্স কিনতে হয়।
বাংলাদেশের কিছু ডিজিটাল ক্যবল অপারেটরের তথ্যঃ
Bengal Digital- SD (রেজুলেশন 480p) চ্যানেলের সংখ্যা ১৩৪, তবে ঢাকার কিছু অংশে ৮৫ এবং HD চ্যানেলের (রেজুলশন 720i) সংখ্যা ১৫। মাসিক বিল ৬০০টাকা।
Digi21- SD (রেজুলেশন 480p) চ্যানেলের সংখ্যা ১৩০ এবং HD চ্যানেলের (রেজুলশন 720i) সংখ্যা ১২। মাসিক বিল ৬০০টাকা।
Bumblebee- SD (রেজুলেশন 480p) চ্যানেলের সংখ্যা ১০৫। মাসিক বিল ৩৪৫ টাকা।
পরবর্তী পার্টে স্যাটেলাইট ডি টি এইচ (ডাইরেক্ট টু হোম) সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
বি. দ্র. টিউনে যতটা সম্ভব বিস্তারিত তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। তবু যদি কোন তথ্য জানতে চান তাহলে আমাকে কল করবেন ০১৭১৭০১৩১২৬ নম্বরে।
আমি Shawan। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 27 টি টিউন ও 107 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।