ইন্টারনেট জগতে SEO(এসইও) এক অতি পরিচিত শব্দ। বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে নিজের প্রতিষ্ঠানের অনলাইন পরিচিতি প্রকাশের অন্যতম সেরা মাধ্যম এটি। ইউজার কে সঠিক এবং প্রাসঙ্গিক সার্চ রেজাল্ট দিতে গুগল সহ প্রায় প্রিতিটি সার্চ ইঞ্জিন প্রতিনিয়ত নিয়ে চলেছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। কিছুদিন পর পরেই আপডেট হচ্ছে তাদের এলগরিদম, বদলে যাচ্ছে সার্চ রেজাল্টের ধরন। এরই মধ্যে গুগলের সার্চ রেজাল্টে দেখা যাচ্ছে নতুন সব চমক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- Structured Search, যার ফলে আমরা সহজেই পেয়ে যাচ্ছি আমাদের কাঙ্খিত তথ্য। যাই হোক, যেহেতু গুগল আমাদের কারোই পৈতৃক সম্পত্তি নয়, তাই একদম সঠিক ভাবে কখনোই বলা সম্ভব নয় এটা কিভাবে কাজ করে বা ভবিষ্যতে করবে। এরপরেও বিভিন্ন তথ্য এবং ডাটার সাপেক্ষে ২০১৬ সালে SEO তে যে সকল বিষয় গুলো প্রাধান্য পেতে পারে তার কিছু তালিকা তৈরি করার চেস্টা করলাম।
১. সোশ্যাল মিডিয়াঃ
সোশ্যাল মিডিয়া গুলো দিন দিন প্রচুর জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফেসবুক সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গুলো হয়ে উঠছে মানুষদের নিত্য দিনের সঙ্গী। এখানে মানুষ তাদের ভাল লাগার বিষয়গুলো শেয়ার করে। আর যেহেতু এখানে মানুষ শুধুমাত্র সেগুলই শেয়ার করে যেগুলো সে পছন্দ করে এই জন্য সোশ্যাল শেয়ার গুলো SEO তে প্রাধান্য পাওয়ার সম্ভাবনা রাখে। কারন গুগল সব সময়ই চায় এমন কন্টেন্টকে প্রথমে রাখতে মানুষ যেটা খুজছে, যেটা তার পছন্দ হবে। আর এই ক্ষেত্রে সোশ্যালি যে লিঙ্ক গুলো বেশি লাইক এবং শেয়ার হয় সেগুলো স্বাভাবিকভাবে বেশি গুরুত্ব পেতে পারে। তাই, আপানার সাইটের সোশ্যাল এক্টিভিটি ২০১৬ এর এসইও তে ইফেক্টিভ ভুমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
২. মোবাইল ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইটঃ
অনেক দিন আগেই গুগলে ঘটা করে ওয়েবসাইট গুলোকে মোবাইল রেস্পন্সিভ করার নির্দেশ দেয়। কারন, দিন দিন মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা তুমুল হারে বেড়ে চলেছে, আর এই জন্য ব্যবহারকারীকে কন্টেন্ট গুলো সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারনা দিতে ওয়েবসাইট গুলোকে মোবাইল রেস্পন্সিভ করা আবশ্যক। গুগল এটাকে বলে থাকে- Mobilegeddon আপনার বা আপনার ক্লাইন্টের ওয়েবসাইট যদি মোবাইল এবং স্মার্ট ডিভাইসের জন্য অপ্টিমাইজ না করা থাকে তাহলে অবশ্যই করে নিতে হবে। ২০১৬ তে এটার বিশাল ইফেক্ট পরবে বলে আশা করা যায়।
৩. ভিডিও কন্টেন্টঃ
ছোট বেলার আলিফ লায়লা দেখেছেন কে কে? মনে পড়ে তাক জীন, তবাক জীনের কথা? হয়ত মনে পড়ে গেছে, কিন্তু কিভাবে? ছোট বেলার বইয়ে পড়া কোন প্রশ্নের উত্তর তো আপনার ওই ভাবে মনে নেই যতটা না মনে আছে আলিফ লায়লার চরিত্র? কেন এমন? কারণ, একটা আর্টিকেল ১ ঘণ্টা লাগিয়ে পড়ে আপনি যতটুকু না শিখতে পারবেন তার থেকে বেশি শিখতে পারবেন ৫ মিনিটের একটা ভিডিও দেখে। কারণ একবার একটা জিনিস চোখ দিয়ে দেখা ১০০ বার বইয়ের পাতায় পড়ার থেকে উত্তম। আর এই জন্যই ইন্টারনেট ব্যবস্থা দিন দিন ভিডিও মুখী হয়ে যাচ্ছে। আর এই জিনিসের প্রভাব SEO তেও পরবে। গুগল ইতিমধ্যেই ভিডিও গুলো সার্চ রেজাল্টে শো করার ব্যবস্থা করেছে। আর তাই আপানার কনেটেন্টের পাশাপাশি জোড় দিতে হবে ভিডিও এর দিকেও।
৪. Schema হবে আরও শক্তিশালী মাধ্যমঃ
এটা হয়ত আপনাদের মধ্যে নতুন একটি টপিক মনে হতে পারে, কিন্তু অনেক আগে থেকেই গুগল এটা নিয়ে কাজ করছে। এর আসল সাইট হচ্ছে- https://schema.org/ অনেক সময় গুগলে কোন প্রোডাক্ট এর নাম লিখে সার্চ করলে সরাসরি সার্চ পেইজেই দেখবেন সেটার নাম, মূল্য ইত্যাদি চলে আসে, আবার এর সাথে রেটিং ও দেখা যায়।
যেমন ধরুন- আপনি যদি গুগলে tiramisu recipe লিখে সার্চ করেন তাহলে নিচের ছবির মত দেখতে পাবেন। দেখবেন এখানে রেটিং, রিভিউ, সময় ইত্যাদি তথ্য দেয়া আছে।
Schema মূলত এই কাজটাই করে থাকে যার মাধ্যমে আপনার আপনার ওয়েবসাইটে থাকা কোন প্রোডাক্ট বা কোন কিছুর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুগলের কাছে অত্যন্ত সাজানো গোছানো উপায়ে দিতে পারবেন।
এই ধরনের Structured Content গুলো দিন দিন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সুতরাং এটার প্রতিও বিশেষ যত্নশীল হতে হবে।
৫. ডিপ লিঙ্ক এবং টেকনিক্যাল এসইওঃ
পেইড লিঙ্ক বিল্ডিং দিন দিন বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে। টোটাল SEO এখন ন্যাচারাল দিকে মোড় নিচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন হাতে ধরে লিঙ্ক বিল্ডিং করে দিলেই সাইট প্রথমে চলে আসত, কিন্তু এটা এখন নেই। এখন বিষয় গুলো আরও বেশি ন্যাচারাল হয়ে উঠেছে। এখন আপনাকে অবশ্যই অবশ্যই ডিপলি চিন্তা করতে হবে। সত্যিকার অর্থেই লিঙ্ক শেয়ার করতে হবে। এই ক্ষেত্রে web 2.0 সাইট গুলো ভাল হেল্প করবে। কিন্তু প্রথম পেইজে আসতে গেলে প্রয়োজন হবে সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যাকলিঙ্ক এবং নিয়মিত সাইটের জন্য কাজ করা। এই ক্ষেত্রে রয়েছে ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট এবং URL এর সঠিক রিডাইরেকশন। একটি ওয়েবসাইটের টেকনিক্যাল SEO আরও বেশি ইম্প্রুভ হতে হবে। HTML Structure এ সঠিকভাবে SEO এর অপটিমাইজেশন করতে হবে।
এই গুলো ছিল মূলত সংক্ষিপ্ত ধারনা। স্পস্ট বোঝা যাচ্ছে, গুগল অনেক বেশি সতর্ক হয়ে যাচ্ছে কন্টেন্ট এর কোয়ালিটি এবং ওয়েবসাইটের Structure এর উপরে। আরও একটা কথা বোঝা যাচ্ছে, আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের মার্কেটিং এবং শেয়ার এর পেছনে নিয়মিত সময় দেন তাহলে ওয়েবসাইট অটোমেটিক উপরে আসতে থাকবে। এই ক্ষেত্রে সবচাইতে বেশি ফর্ম এ থাকবে প্রোফেশনাল ব্লগার-রা। ভবিষ্যৎ লিঙ্ক বিল্ডিং শুধুমাত্র তাদের হাতেই থাকবে। কারণ, ন্যাচারাল ভাবে লিঙ্ক বিল্ড না করলে এখন আর এসইও তে সুবিধা পাওয়া সম্ভব নয়। এবং এই ধরনের ন্যাচারাল লিঙ্ক বিল্ড আপ শুধু মাত্র প্রোফেশনাল ব্লগার দের দিয়েই সম্ভব। যাই হোক, এই ছিল কথা। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন। আগামী পর্বে ইনশাআল্লাহ্ আপনাদের সামনে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হওয়ার চেস্টা করব।
আমি আব্দুল কাদের। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 48 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি মোঃ আব্দুল কাদের। পড়ালেখার পাশাপাশি একটু আধটু ফ্রীল্যান্সিং করি। চেস্টা করি সবসময় আপনাদের ভাল কিছু দিতে। সময় পেলে লেখা লেখি করি আর কি!
ভাই আইটি বাড়ির কোনো টিউরিয়াল আছে যাতে শেখা যায় । টাকা আয় করা যায় না । 🙂