এসইও (SEO) এই তিন অক্ষরের শব্দটি বর্তমান অনলাইন জগতে একটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ। কোন ওয়েবসাইটকে প্রমোট করার জন্য বলেন আর লাইমলাইটে আনার জন্যই বলেন এসইও এর গুরুত্ব অপরিসীম। যদি আপনি একটা ওয়েবসাইট তৈরি করেন কিন্তু সেটির জন্য কোন এসইও এর কাজ করলেন না তাহলে আপনার ওয়েবসাইটটি এ অনলাইনের তথ্যের মহাসাগরে কোন এক অতল গহব্বরে পড়ে থাকবে। কেউ কোনদিন হয়তো সেটির খোঁজও পাবে না। একমাত্র সঠিকভাবে এসইও করলেই আপনার ওয়েবসাইটটি সাগরের জলে ভেসে উঠবে এবং সবাই এটির সম্পর্কে জানতে পারবে। সুতরাং এসইও করার গুরুত্ব নিশ্চয় বুঝতে পারছেন। এসইও দুই ভাবে করা যায়। একটি হচ্ছে অন পেজ এসইও এবং অপরটি হচ্ছে অফ পেজ এসিইউ। এসইও এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ টার্মস নিয়ে নিচে আলোচনা করা হল-
হোয়াইট হ্যাট এসইও (White Hat SEO):
SEO বা সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন করার জন্য কিছু নীতিমালা রয়েছে। এসব নীতিমালা বা নিয়মকানুন সঠিকভাবে অনুসরণ করে এসইও করাকেই বলে হোয়াইট হ্যাট এসইও। কিছু উল্লেখযোগ্য নিয়মকানুন আমরা দেখে নিতে পারি।
যেমনঃ প্রথমত ওয়েবসাইট এমনভাবে তৈরী করতে হবে সেটি যেন মানুষের জন্য হয় শুধুমাত্র সার্চ ইন্জিনের জন্য নয়। যেমন আপনি যদি ভাল এসইও করার আশায় একটা আর্টিকেল লিখলেন। সার্চ র্যাংকিংয়ে উপরে থাকার জন্য অসংখ্য বা অতিরিক্ত কীওয়ার্ড ব্যবহার করলেন। কিন্তু তাতে তেমন কোন তথ্য দিলেন না। ফলশ্রুতিতে, আপনার আর্টিকেল কারো কোন কাজে লাগল না। অপরদিকে অতিরিক্ত কীওয়ার্ড ব্যবহারের ফলে এটি সার্চ ইন্জিনের কাছেও তেমন গুরুত্ব পেল না। তাহলে ব্যাপারটা কী দাড়ালো “গুড় বেশি হলে পায়েস তিতা হয়ে যায়।” এজন্যই সবকিছু নিয়ম মেনে স্বাভাবিকভাবে করতে হবে। হোয়াইট হ্যাট এসইও কে ইথিক্যাল এসইও (Ethical SEO) বলা হয়।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের নীয়মনীতি না মেনে সার্চ রাঙ্ককে উপরে আসার জন্য যে এসইও করা হয় তাকে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও বলে। কীওয়ার্ড স্টাফিং, ডোরওয়ে পেজেস, অদৃশ্য টেক্সট, স্প্যামিং ব্যাকলিংক ইত্যাদি ব্ল্যাকহ্যাট এসইও (Black Hat SEO) এর অন্তর্ভূক্ত। এধরণের এসইও আনইথিক্যাল এসইও (Unethical SEO) নামেও পরিচিত। ব্ল্যাক হ্যাট এসইও করলে আপনার সাইট সার্চ ইঞ্জিন থেকে বাতিল হয়ে যেতে পারে। সুতরাং সবসময় এটি এড়িয়ে চলুন।
আপনার ওয়েবসাইটের রাঙ্ক বৃদ্ধির জন্য ব্যাকলিংক খুবই কার্যকরী। আপনার ওয়েবসাইটের লিংক যদি অন্য কোন ওয়েবসাইটে থাকে তাহলে সেটি হবে ব্যাকলিংক। ব্যাকলিংক করা যায় দুটি উপায়ে। একটি অ্যাংকর টেক্সটের মাধ্যমে এবং অপরটি বিবি কোডের মাধ্যমে। ব্যাকলিংক আরও দুটি নামে পরিচিত। সে নাম দুটি হচ্ছে যথাক্রমে ইনকামিং লিংক এবং ইনবাউন্ড লিংক।
এটি হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন কোন ওয়েবসাইটের মান যাচাই করে থাকে এবং সার্চ রেজাল্টে ঐ ওয়েবসাইটের অবস্থান কততম পেজে হবে সেটি নির্ধারণ করে থাকে। লিংক পপুলারিটি আপনার ওয়েবসাইটের কোয়ালিটি ব্যাকলিংকের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়ে থাকে। ব্যাকলিংক এবং কোয়ালিটি ব্যাকলিংকের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। আপনি আপনার ওয়েবসাইটের লিংক যদি এমন একটি ওয়েবসাইটে দেন যেটির সাথে আপনার ওয়েবসাইটের মিল আছে তাহলে সেটি হবে কোয়ালিটি ব্যাকলিংক। যেমন আপনার যদি ক্রিকেট নিয়ে একটি ওয়েবসাইট থাকে এবং আপনি যদি YahooCricket ওয়েবসাইটে লিংক দেন সেটি হবে কোয়ালিটি ব্যাকলিংক। অপরদিকে আপনি যদি Google Plus এ লিংক দেন তাহলে সেটি হবে শুধু ব্যাকলিংক। কারণ গুগল প্লাসের বিষয়বস্তুর সঙ্গে আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তুর মিল নেই।
অন্যকোন ওয়েবসাইটের লিংক আপনার ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকলে সেটি হবে আউটবাউন্ড লিংক। এটি ব্যাকলিংকের সম্পূর্ণ বিপরীত। আউটবাউন্ড লিংক আউটগোয়িং লিংক নামেও পরিচিত।
ইয়াহু অ্যান্সার ব্যাকলিংক (Yahoo Answer Backlink):
দ্রুত সময়ের মধ্যে ভিজিটর পাওয়ার জন্য Yahoo Answer ব্যাকলিংক খুবই কার্যকরী। এক্ষেত্রে আপনাকে উক্ত সাইটে প্রশ্নের সুন্দর উত্তর দেওয়ার মাধ্যমে লেভেল ২ অথবা ৩ করতে হবে।
লিংক ফার্ম ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর অন্তভুক্ত। ধরুণ আপনি ১০ টি ওয়েবসাইট ওপেন করলেন এবং ব্যাকলিংক বৃদ্ধির জন্য প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের লিংক প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটে দিলেন। এবং এ কাজটিই হচ্চে লিংক ফার্ম। সার্চ ইঞ্জিন যখনই বুজতে পারবে আপনি লিংক ফার্ম করছেন তখনই আপনার সাইট থেকে এটির ইনডেক্স লিস্ট থেকে বাতিল করে দেবে। কারণ সার্চ ইন্জিন লিংক ফার্মকে স্প্যাম বা একটি অবৈধ কাজ হিসাবে গণ্য করে।
ফোরাম পোস্টিং এসইও এর একটি অন্যতম কার্যকরী টার্মস। ফোরাম পোস্টিংয়ের মাধ্যমে আপনি নানামুখী সুবিধা পেতে পারেন। এটি একইসঙ্গে লিঙ্ক বিল্ডিং, কীওয়ার্ড মার্কেটিং এবং ভিজিটর আনয়নের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। সুতরাং আপনার ওয়েবসাইটকে প্রমোট করার জন্য ফোরাম পোস্টিংয়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
বিভিন্ন ব্লগে কমেন্ট করার মাধ্যমে আপনি ব্যাকলিংক তৈরী করতে পারেন। আপনি যত বেশি ব্যাকলিংক তৈরী করবেন আপনার ওয়েবসাইটের পেজ রাঙ্ক বৃদ্ধিতে সেটি তত বেশি সহায়ক হবে। উচ্চ পেজ রাঙ্ক বিশিষ্ট সাইটে ব্যাকলিংক দিলে সার্চ ইঞ্জিনে আপনার সাইটটি অধিক রকম গুরুত্ব পাবে।
এটি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর অন্তর্ভূক্ত। আপনি যদি কোন আর্টিকেল লিখেন এবং শুধুমাত্র সেখানে শুধুমাত্র কীওয়ার্ডের গাদি ছাড়া আর কিছু না থাকে তাহলে সেটি হবে কীওয়ার্ড স্টাফিং। দেখা গেল আপনি গুগল আ্যডওয়ার্ড থেকে খুজে খুজে শুধুমাত্র হাই সার্চ কীওয়ার্ডগুলি ব্যবহার করলেন। কিন্তু আর্টিকেলে তেমন কোন তথ্য থাকল না। তাহলে এটি কীওয়ার্ড স্টাফিং হিসাবে চিহ্নিত হবে। এছাড়া অনেকে সার্চ রাঙ্কিং এ উপরে থাকার জন্য ইনভিসিবল বা অদৃশ্য কীওয়ার্ড ব্যবহার করে। সার্চ ইন্জিনের কাছে এসব কাজ অবৈধ। তাই বুঝতে পারলেই আপনার সাইট তাদের ইনডেক্স লিস্ট থেকে বাদ দিয়ে দিবে।সুতরাং একাজ করা থেকে সর্বদাই বিরত থাকুন।
লিঙ্ক এক্সচেঞ্জ (Link Exchange):
আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের লিংক কোন একটি ওয়েবসাইটে দেন এবং সেই ওয়েবসাইটটির লিংকও আপনার সাইটে দেন তাহলে এই পুরো প্রক্রিয়াটাই হবে লিঙ্ক এক্সচেঞ্জ।
সার্চ রাঙ্কিং বৃদ্ধির জন্য কোন ওয়েবসাইটে যদি এমন কোন পেজ তৈরী করা হয় যেখানে অল্প দু-এক লাইন লেখা থাকে কিন্তু সে লেখাগুলি শুধুমাত্র কীওয়ার্ড দিয়ে ভরা থাকে তাহলে সে পেজটিই ডোরওয়ে পেজ। এটি এসইও নীতিমালা বহির্ভূত একটি কাজ। তাই এটি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর অন্তর্ভূক্ত। এসব পেজে সাধারণত অন্য কোন পেজের লিংক দেওয়া থাকে। তাই কোন ভিজিটর এ পেজে গেলে তাকে রিডাইরেক্ট করে অন্য পেজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ক্লকিং হচ্ছে খুবই ধুরন্ধর একটি প্রক্রিয়া। এটি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এর অন্তর্ভূক্ত কারণ এটি সার্চ ইঞ্জিন নীতিমালা বহির্ভূত। এটির মাধ্যমে সার্চ ইন্জিনকে এক জিনিস দেখানো যায় আবার মানুষকে আর এক জিনিস দেখানো যায়। যখন এ পেজের জন্য সার্ভার থেকে রিকোয়েস্ট যায় তখন এটি আইপি আড্রেস দেখে বুঝি ফেলে যে এটি সার্চ ইঞ্জিন নাকি মানুষ। যদি মানুষ হয় তাহলে পেজে একরকম কনটেন্ট প্রদর্শন করে এবং সার্চ ইন্জিনকে আরেক রকম কনটেন্ট প্রদর্শন করে।
কীওয়ার্ড ডেনসিটি হচ্ছে কীওয়ার্ডের ঘনত্ব যাচাই করার একটি পদ্ধতি। এটির মাধ্যমে জানা যায়্ একটি পেজে কোন একটি নির্দিষ্ট কীওয়ার্ড কতবার আছে। কোন একটি কীওয়ার্ড বিশ্লেষণ করে তার উপস্থিতির যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে সেটিই ঐ কীওয়ার্ডের ডেনসিটি।
বাংলা এসএমএস,বাংলা জোকস,ভালবাসার এসএমএস - পেতে আমার সাইটে ঘুরে আসতে পারেন
আমি মামুন সাগর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
nice tune