আমার ভয়ংকর বিভীষিকার কাহিনী “সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন”
আমার ভয়ংকর বিভীষিকার কাহিনী “সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন” এর পরের কাহিনী:
এসইও রিলেটেড অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে করতে, আপনাদের মতামত পেয়ে কখন যে মনটা ভাল হয়ে গেল, বুঝতে ও পারলাম না। তবে আপনাদের কথা দিয়েছিলাম, এই টিউনে অফপেইজ অপটিমাইজেশন এর আর কিছু ধারনা আপনাদের কাছে তুলে ধরবো।
ভিজিটরদেরকে ওয়েবসাইট এ নিয়ে আসার জন্য নিত্য নতুন কৌশল এসইও এক্সপার্ট দের কাছে শিখতে বেশ ভালোই লাগে। কিন্তু টিপস গুলো কে বাস্তবে প্রয়োগ করে ভিজিটর নিয়ে আসা “ভয়ংকর” ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। আমার তো মাঝে মাঝে মনে হতো, এসইও না করে গুগল এ এড পোস্ট করলে ই তো হাজার হাজার ভিজিটর পাবো। এসইও করার কি দরকার? ওয়েবসাইট এ ভিজিটর নিয়ে আসার জন্য যদি এসইও করার প্রয়োজন হয়, তবে অফপেইজ অপটিমাইজেশন এর পরবর্তী ধাপ হল, ওয়েবসাইট এর জন্য টার্গেটএড ভিজিটর নিয়ে আসা।
আমি যখন এসইও নিয়ে পড়াশুনা করছিলাম, তখন যত এসইও এক্সপার্ট এর কাছে যেতাম, সবাই আমাকে বলত ডু-ফলো ব্যাকলিংক করো। আর এই ডু-ফলো ব্যাকলিংক যদি কী-ওয়ার্ড ভিত্তিক অ্যাংকর টেক্সট দিয়ে পাওয়া যায়, তবে গুগল, ইয়াহু এর সার্চ থেকে তোমার ভিজিটর আসবে ই। কথাটা ১০০% সত্যি কথা। কিন্তু আমার এসইও করার অভিজ্ঞতায় এর থেকে কঠিন নিয়ম আমি আর খুঁজে পাইনি। কারন প্রথম কথা হল, ডু-ফলো ব্যাকলিংক করার ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া সহজ কথা নয়। তাছাড়া হাই পেইজরেঙ্ক ডু-ফলো ব্যাকলিংক তো আজকাল স্বপ্নের বিষয়।
আমার কথা হল, “আমি সেই সব ভিজিটর কে আমার ওয়েবসাইট এ আনব, যারা সরাসরি আমার ওয়েবসাইট এর কনটেন্ট এর প্রতি আগ্রহী এবং আমার কাছে তারা গুগল এর সার্চ ভিজিটর এর মতোই ইম্পরট্যান্ট বা দরকারি।”
এই ধরনের টার্গেটএড ভিজিটর পাওয়ার জন্য বেশ কিছু বড় বড় “মার্কেট” রয়েছে। টার্গেটএড ভিজিটর পাওয়ার এই ধরনের মার্কেটপ্লেস হল সোশ্যাল মিডিয়া। যেমনঃ ফেইসবুক, টুঁইটার, ভিকে আরও অনেক অনেক ওয়েবসাইট। আজকাল অধিকাংশ মানুষ গুগল এর সাথে সাথে ফেইসবুক এ সার্চ করতে বেশি সাছন্দ্য বোধ করেন। তাই ফেইসবুক এর মাধ্যমে ভিজিটর নিয়ে আসতে পারলে, ওয়েবসাইট এর ভ্যালু অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন এর কাছে বেঁড়ে যায়। এ ধরনের এসইও স্ট্রেটেজিকে বলা হয়, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এসইও। অফপেইজ অপটিমাইজেশন এর পরবর্তী ধাপ হল “সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এসইও” যা ওয়েবসাইট এ টার্গেটএড ভিজিটর নিয়ে আসে।
সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ওয়েবসাইট গুলোতে প্রচুর গ্রুপ, পেইজ, অর্গানাইজেশন রয়েছে, যেগুলোতে কোনো নির্দিষ্ট বিষয় এর প্রতি আগ্রহী এমন প্রচুর ভিজিটর পাওয়া যায়। আপনার ওয়েবসাইট এর কনটেন্ট রিলেটেড বিষয় ভিত্তিক ওই সব পেইজগুলোতে আপনার একটা ব্যাকলিংক যদি তৈরি করা যায়, তবে দেখবেন, ভিজিটর এর বন্যা বয়ে গেছে। তবে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এসইও এমন ভাবে করা উচিত, যাতে ভিজিটররা ব্যাকলিংক এর প্রতি আগ্রহী হয়। সমসাময়িক প্রজুক্তি, টিপ্স-ট্রিক্স, নিউজ, গেইম এই সব পেইজ এর ভিজিটর এর সংখ্যা গনে শেষ করা যাবে না। এই সব গ্রুপ, পেইজ গুলোতে আকর্ষণীয় টাইটেল দিয়ে ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারলে আপনি হাজার হাজার পার্মানেন্ট ভিজিটর পাবেন।
“সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে ভিজিটর আনা বর কথা নয়। ইন-কামিং এই সব ভিজিটর কে ওয়েবসাইট এ ধরে রাখা ই হল আসল এসইও।“ আপনার ওয়েবসাইট এর কনটেন্ট এবং অনপেইজ অপটিমাইজেশন এমন হতে হবে, যেন ভিজিটর রা বার বার আপনার ওয়েবসাইট এ ভিজিট করতে আগ্রহী হন। এভাবেই আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য পার্মানেন্ট ভিজিটর পাবেন। আশা করি ফেইসবুক, টুঁইটার এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট গুল আপনাকে প্রচুর ভিজিটর দিবে।
ডু-ফলো ব্যাকলিংক তৈরির ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে অনলাইন ফোরাম ওয়েবসাইট গুলো। সার্চ ইঞ্জিন ও সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এর মত প্রচুর ভিজিটর আপনি ফোরাম থেকেও পেতে পারেন। তবে আমি মনে করি, অনলাইন ফোরাম গুলো হলো এসইও করার সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম। কিন্তু আপনাকে মেনে নিতে হবে, ফেইসবুক, টুঁইটার এর মতো সোশ্যাল সাইট গুলর পরেই ফোরাম এর অবস্থান(ভিজিটর এর আগ্রহের উপর ভিত্তি করে)। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ফোরামের ডু-ফলো ব্যাকলিংক সার্চ ইঞ্জিন গুলো বেশি গুরুত্ত্যের সাথে দেখে। আমি কেনো ফোরাম গুলকে বেশি প্রাধান্য দিই তার কয়েকটি কারন এখানে উল্লেখ করছিঃ
ফোরাম এ লিংক তৈরি করার সময় খুব যত্ন সহকারে লিংক পোস্ট করা উচিত। নির্দিষ্ট প্রাসঙ্গিক বিষয় বস্তুর বাহিরে লিংক পোস্ট করা একদম উচিত নয়। না হলে ভিজিটর রা আপনার ওয়েবসাইট এ আসবে আর যাবে। এ ধরনের ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য মূল্যহীন। আমার কাছে ফোরাম গুলো অনেকটা আলোচনা সভার মতো। যেখানে ভিজিটররা তাদের মতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারে। এই বিষয় বস্তু মাথায় রেখে যদি ফোরাম এ এসইও করা যায়, তবে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
অনলাইন এ এসইও করার জন্য বুকমারকিং সাইট গুলোর ভূমিকাও অপরিসীম। এ ধরনের ওয়েবসাইট গুলোতে ভিজিটর রা আসে এবং দরকারি লিংক গুলোকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখে। পরবর্তীতে প্রয়োজন মতো লিংক গুলোতে ভিজিট করে তথ্য যোগার করে। তবে বুকমারকিং সাইট গুলোতে লিংক শেয়ার এর যে সুবিধা রয়েছে, সেটাই মূলত ভিজিটর দের ওয়েবসাইট এ নিয়ে আসতে সাহায্য করে। এ ধরনের ওয়েবসাইট থেকে পার্মানেন্ট ভিজিটর কিছুতা কম পাওয়া যায়। তবে এক কালীন প্রচুর ভিজিটর পাওয়া যায়। বুকমারকিং সাইট গুলোতে সব সময় নিত্ত্য নতুন লিংক পোস্ট করলে, ভিজিটরও নিয়মিত পাওয়া যায়। ফোরামে লিংক পোস্ট করার সময় সব সময় আকর্ষণীয় শিরোনাম নির্বাচন করা উচিত। যাতে ভিজিটর রা ব্যাক লিংক অনুসরণ করে ওয়েবসাইট ভিজিট করতে আগ্রহী হয়। বেশ কিছু হাই পেইজ রাঙ্ক বুকমারকিং সাইট ডু-ফলো ব্যাকলিংক শেয়ার করার সুযোগ দেয়। এ ধরনের বুকমারকিং সাইট গুলো এসইও এর জন্য উপযুক্ত। সার্চ ইঞ্জিন গুলো এই ব্যাক লিংক গুলো অনুসরণ করতে পছন্দ করে।
আসলে এসইও এর অফপেইজ অপটিমাইজেশন অনেক ব্যাপক প্রক্রিয়া। এর ভেতরে ও বাহিরে নিত্য নতুন কতো কিছু যে শেখার আছে তা বলে শেষ করা যায় না। আমার এই টিপস গুলো শুনে মনে হবে, ডু-ফলো ব্যাক লিংক ই শুধুমাত্র অফপেইজ অপটিমাইজেশন এর জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আসলে তা সঠিক নয়। নো-ফলো ব্যাক লিংক ও প্রচুর ভিজিটর নিয়ে আসতে পারে। আসল কথা হল “ভিজিটর”। যা আমি পূর্ববর্তী টিউনে বলেছি। তবে ব্যাক লিংক তৈরির সময় আপনি যদি নো-ফলো ব্যাক লিংক গুলোকে অবজ্ঞা করেন, তাহলে কিন্তু এর খেশারত ও কিন্তু আপনাকে দিতে হবে মাঝে মাঝে। সার্চ ইঞ্জিন গুলো নো-ফলো লিংক ইনডেক্স করে না এতা যেমন সত্যি, তেমনি হঠাৎ করে অনেক গুলো ডু-ফলো লিংক সার্চ ইঞ্জিন পছন্দ করে না। পুরো ব্যাক লিংক তৈরির প্রক্রিয়া টি সামঞ্জস্য পূর্ণ হওয়া উচিত।
অফপেইজ অপটিমাইজেশন এর আরো আনেক গুলো ধাপ রয়ে গেল। খুব আফসোস লাগছে, আজকের এই টিউনে সবতুকু শেষ করতে পারছি না বলে। আমি পরবর্তী টিউনে অন্যান্য ধাপ গুলো আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। প্রথম টিউনে আপনাদের উৎসাহ আমাকে অত্যন্ত আনন্দ দিয়েছে। আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আশা করি আমার এই টিউন টা ও আপনাদের ভালো লাগবে। সুযোগ পেলে আমার এই " ওয়েবসাইট " থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
এসইও অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ প্রতিটি ওয়েবসাইট মালিক ও ওয়েব ডেভোলাপার এর জন্য। সঠিক ভাবে এসইও করতে পারলে এসইও জব করে প্রচুর টাকা কামান যায় ফ্রিলানস, ওডেক্স থেকে। নিজে এসইও করলে অনেক অনেক নিয়ম শিখা যায়। ওয়েবসাইট এর এসইও করে এডসেন্স ও চিতিকা থেকে ও প্রচুর উপার্জন করা যায়।
আমি ভাস্কর বনিক বনিক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 25 টি টিউন ও 121 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি বিগত পাঁচ বছর যাবত এসইও এবং ওয়েব ডেভোলাপমেন্ট এর বিভিন্ন কাজ করেছি। টেকটিউনস একটি অসাধারন প্লাটফরম নিত্য নতুন কিছু জানার ও শিখার। আমি টেকটিউনস অনেক ভালবাসি।
Nice.