প্রফেশনাল নেটওয়ার্কের সব চেয়ে বড় ওয়েব সাইট হলো ‘লিঙ্কড ইন’। বর্তমানে এর ইউজার সংখ্যা প্রায় ২৫৯ মিলিয়ন। লিংকড ইন নেটওয়ার্কে প্রতি সেকেন্ডে ৮জন করে নতুন যোগ হচ্ছে। তার মানে ভাবুন তো কী পরিমাণ মানুষ এটিকে ব্যবহার করছে কেবল মাত্র তাদের প্রফেশনের বিস্তার ও প্রচারের জন্য। আর এটা তো সবারই জানা যে ,উন্নত দেশের মতো এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও চাকরি দেবার পূর্বে অথবা পরে প্রার্থীর লিংকড ইন তথ্যকে মূল্যায়ন করা হয়।
তবে এটি আজকাল শুধু মাত্র প্রফেশনাল কাজেই না, সামাজিক যোগাযোগ , বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান ও সুচিন্তিত চিন্তা ভাবনা বিনিময়ের মাধ্যম হয়ে ঊঠেছে।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে নেটওয়ার্ক তৈরি এবং পেশাগত ক্ষেত্রে লিঙ্কডইন প্রোফাইল কতটা গুরুত্ব বহন করছে আপনার জন্য। তাই এখানে প্রোফাইল তৈরি’র’ ক্ষেত্রেও আপনাকে খুব সচেতনতার সাথেই এগিয়ে যেতে হবে।
যেহেতু এটি অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ভিন্ন এবং প্রফেশনাল, তাই এখানকার প্রোফাইলে এমন ইমেজ ব্যবহার করুন, যাতে আপনার ব্যাক্তিত্ব ফুটে উঠে এবং আপনার সম্পর্কে কোন বাজে ধারনা যেন না হয় অন্যদের মনে। বন্ধুদের সাথে সমুদ্রস্নানে গেছেন, এমন ইমেজ ফেইসবুকে দেয়া যায়, কিন্তু লিঙ্কডইনে ভুল করেও সেই ইমেজ ব্যবহার করবেন না যেন কখনো। unprofessional image ব্যাবহার করা মানেই হল আপনার reputation হারানো।
আপনার প্রোফাইল পিকটি ঠিক এরকমই হওয়া উচিত, মার্জিত ও রুচিসম্পন্ন।
আপনার লিঙ্কডিন প্রোফাইলের হেডলাইনটি অত্যন্ত জরুরী, কারণ হেডলাইন দেখেই কিন্তু আপনাকে অন্যরা খুঁজে নেবে। তাই এমন হেডলাইন লিখুন, যা আপনার পেশা রিলেটেড অন্যদের কে আকৃষ্ট করবে। হেডলাইনটি হবে সংক্ষিপ্ত, বর্ণনামূলক, প্রভাব বিস্তারকারী এবং অবশ্যই স্মার্ট।
আপনার হেডলাইন দেখে অন্যরা আপনার প্রোফাইলে এসে প্রথমেই দেখতে চাইবে আপনি বর্তমানে আপনি আপনার পেশার কোন পদে বা পজিশনে আছেন এবিং অতীতে কোথায় ছিলেন। হেড লাইনে বর্ননামূলক কি অওার্ড দিয়ে প্রতিটা পজিশনের আপানি কী দায়িত্ব পালন করেছেন,ত আ উল্লেখ করুন সুন্দর ও স্পষ্ট ভাবে । তবে কখনোই প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন তথ্য উল্লেখ করবেন না।
এই সেকশনে আপনি আপনার সম্পর্কে লিখুন, কীভাবে আপনি অন্যদেরকে সাহায্য করতে পারবেন, তা উল্লেখ করুন। কারণ ভিসিটররা হেডিং এবং আপনার পজিশন দেখে এই অংশে এসে দেখবে আপনি কি জানেন বা বা তাদের কে কিভাবে সাহায্য করতে পারবেন। সুতরাং তাদের কথা মাথায় রেখে আপনি আপনার পারদর্শিতা এখানে উল্লেখ করুন। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই কোন মিথ্যা তথ্য এখানে দেবেন না।
আপনার টার্গেটেড মার্কেটে গ্রাহক শ্রেনী কি ধরনের ধরনের কীওওার্ড সার্চ দিয়ে থাকে, সেগুলো র উপর বেশী ফোকাস করুন। এগুলো সার্চ দিয়েই গ্রাহক রা আপনার অভিজ্ঞতা যাচাই-বাছাই করবে, দেখবে আপনি কী ধরণের সার্ভিস প্রদান করবেন তাদের কে।
প্রোফাইলে recommendations থাকলে , তা আপনাকে অনেক বেশী গ্রহনযোগ্য করে তোলে অন্যদের কাছে। তাই আপনার কর্মস্থল থেকে বা অন্যান্যদের আকছ থেকে recommendations নিয়ে তা প্রোফাইলে প্রকাশ করুন। এতী পাওয়ার সব থেকে সহজতম উপায় হল আপনি অন্যদের কে আগে দিন, তারপর তাদের কে অনুরোধ করুন আপনাকে recommendation দেয়ার জন্য।
স্বীকৃতি দেবে আপনার পরিচিতজনরা। কোন বিষয়ে আপনি বেশী দক্ষ, তা এই Endorsements দেখেই ভিজিতরতা বুঝতে পারবে, তাই এর গুরুত্ব কোন অংশেই কম নয়। সুতরাং এই ব্যাপারটির দিকে নজর দিন এবং তা কীভাবে বাড়ানো যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। অন্যদের কে দিন এবং তাদের কে অনুরোধ করুন আপনাকে Endorsements দেয়ার জন্য।
এই সেকশনের গ্রুপ্স এবং এসোসিয়েশন গুলো খুঁজে বের করুন এবং সেগুলোতে জয়েন করুন। তবে খেয়াল রাখবেন সেই গ্রুপ বা এসোসিয়েশন গুলো যেন আপনার পেশার সাথে রিলেটেড থাকে।
নেটওয়ার্ক থেকে কন্টাঙ্কস এ গিয়ে এই পদ্ধতিতে তাদের খুঁজে বের করুন।
ইনভাইটেশন পাঠান নিয়মিত, তবে যখনই আপনি কাওকে ইনভাইটেশন পাঠাবেন, অবশ্যই তার সাথে আপনার ব্যপারে ছোট করে হলেও একটি নোট পাঠাতে ভুলবেন না যেন।
এখানে প্রতিদিন বিভিন্ন পেশা’র এক্সপার্ট রা তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে বিভিন্ন আর্টিকেল পোষ্ট করে থাকেন, সেগুলো পড়বেন, অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করবেন।
খেয়াল করলে দেখবেন যে আপনি যখনই লিঙ্কড ইনে লগ ইন করবেন, দেখবেন তাদের কেই হোম ফিড এ দেখা যাচ্ছে, যারা নিয়মিত স্ট্যাটাস আপডেট করছেন। যারাই এক্টিভ থাকছেন, তাদের কেই হোম ফিডে দেখানো হয়। আর এটিই হচ্ছে সূক্ষ্ম কিন্তু শক্তিশালী উপায় সবার সাথে কানেক্টেড থাকার।
রেগুলার LinkedIn Group Discussions এ অংশ গ্রহন করুন, বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিন।
আপনার লিঙ্কডিন প্রোফাইল্টি publicly visible রাখুন, তাহলে অন্যদের সুবিধা হবে আপনাকে খুঁজে পেতে।
চোখ রাখুন ‘review whom you may know’ এবং People You May Know এর দিকে, এবং ইনভাইটেশন পাঠান সেই কানেকশনে গুলোতে।
আপানার কানেকশন এর সদস্যরা কোন কোন গ্রুপ এর মেম্বার, সেই গ্রুপ গুলোতে আপ্নিও যোগ দিন এবং এক্টিভ থাকুন group discussions এ অংশ নিয়ে, এতে করে আপনার দিকে অন্যদের দৃষ্টি পড়বে। শুধু তাই-ই নয় নিত্য নতুন লোকজনদের সাথে আপনি কানেক্টেড হতে পারবেন।
আরো একটি কাজ আপনাকে লাভবান করবে, তা হল আপনার নেটওার্কের মধ্যে এমন যারা আছেন, যারা কেও কাউকে চেনে না, কিন্তু তাদের মধ্যে যোগাযোগ হলে তারা লাভবান হবে। এমন লোকজন দের কে আপনি পরিচিত করিয়ে দেবেন, এতে করে আপনার প্রতি তাদের আস্থা এবং শ্রদ্ধাবোধ বেড়ে যাবে। আর এতে করে আপানার সুনাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে ধীরে ধীরে।
সুতরাং আজ থেকেই আপনার লিঙ্কড ইন এর প্রোফাইলটি নিয়মিত আপডেট করুন এবং আপনার ক্যারিয়ারের পথটি নতুন করে উন্মুক্ত করে দিন ভবিষ্যত সম্ভাবনার দিকে।
প্রথম প্রকাশঃ জেনেসিসব্লগ (এ ব্লগে আরো অনেক ভাল ভাল লেখা পড়তে পারবেন, নিজেরা লিখতেও পারবেন।)
আমি মোঃ ইকরাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 102 টি টিউন ও 130 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
নিজেকে অনলাইন ব্রান্ড এক্সপার্ট হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করলেও গ্রাফিকস, ওয়েবডিজাইন এবং অ্যানিমেশন বিষয়েও প্রচুর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ব্লগিংটা নেশার কারনে করি। নিজের ব্লগের লিংকঃ http://genesisblogs.com/
ভাই কেমন আছেন? আমি আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রশিক্ষণ নিতে চাই, আমাকে কি করতে হবে বলবেন। তাছাড়া আমি freelancing করার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে চাই। আসলে আমি কি পারবো গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে? কত দিন লাগবে শিখতে? আমার বাসা নরসিংদী আমাকে কোথায় গিয়ে ক্লাস করতে হবে? কেমন টাকা খরচ হবে বলবেন?
আমার ই মেইল [email protected] বিস্তারিত আমাকে মেইল করে জানাবেন। প্লিজ
ধন্যবাদ আপনাকে
আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি আপনার টিউনটা অনেক সুন্দর হয়েছে। আশা করি সকলেই উপকৃত হবে।