“সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন” বা সংক্ষেপে এস ই ও শব্দটি অনেক ওয়েবসাইট মালিকদের কাছে বিভীষিকার মত। এই সহজ শব্দটির সঠিক ব্যবহার আপনার ওয়েবসাইটকে বিশ্বের দরবারে এমন ভাবে তুলে ধরতে পারে যাতে আপনি ও আপনার ওয়েবসাইট উভয় একজন ক্রিকেট প্লেয়ার এর মত পপুলার হয়ে যাবেন। অন্যদিকে এই সহজ শব্দটির ভুল ব্যবহারে আপনি যোগ্যতা থাকা শর্তেও নিজের ওয়েবসাইট কে ওয়ার্ল্ড এর কাছে সঠিক মুল্লায়িত করতে পারবেন না।
এসইও এক্সপার্টদের কাছে এসইও শব্দের অর্থ বুঝানোর কোন প্রয়োজন নেই। উপরের লাইনগুলোতে শুধু মাত্র এসইও এর উপর নতুন দের আগ্রহী দের লোভ দেখানোর জন্য বলেছি।
বিশ্বের যে কয়টি সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে, তাদের সার্চ রেজাল্ট এ আপনার ওয়েবসাইটকে রেঙ্কিং এ প্রথম স্থানে এনে ভিজিটরকে আপনার ওয়েবসাইট এ নিয়ে আসার কৌশল হল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। অত্যন্ত কঠিন এই কাজটি করার জন্য যে সব জিনিসগুলো প্রয়োজন তার প্রথমটাই হল ধৈর্য এবং দ্বিতীয়টা হল পরিস্রম। এ দুইটা জিনিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো না থাকলে এসইও এর কাজ না করাই ভালো।
“সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন” একটি দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়া। এতে কন শর্টকাট রাস্তা নেই। তবে চাহিদা ও ভিজিটর টার্গেট অনুযায়ী এসইও করতে করতে ছোট খাটো অনেক রাস্তা পাওয়া যায় ভিজিটরদের কে নিজের ওয়েবসাইট এ নিয়ে আসার জন্য। মনে রাখবেন,
সার্চ ইঞ্জিন বলতে আমরা অনেকেই শুধুমাত্র গুগল বা ইয়াহু কে বুঝি। আসলে ইন্টারনেট এ অনেক গুলো সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে। তবে গুগল ও ইয়াহু কে বেশির ভাগ ভিজিটররা পছন্দ করেন সার্চ করার জন্য। অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন এ ভিজিটর এর পরিমান কোন অংশে খারাপ নয়। অনেক ভিজিটর আছেন পিডিএফ সার্চ ইঞ্জিন ব্যাবহার করেন পিডিএফ সার্চ করার জন্য। অনেকে “ফিড(Feed) সার্চ ইঞ্জিন” ব্যাবহার করেন। ভিজিটর কোন সার্চ ইঞ্জিন ব্যাবহার করবেন টা নির্ভর করে ভিজিটর এর চাহিদা , রুচি, তথ্য-সামঞ্জস্যতার উপর। তাহলে আপনার ওয়েবসাইট এর ধরণের উপর নির্ভর করে আপনি যদি এসইও করেন, তবে দেখবেন আপনি কমন সার্চ ইঞ্জিন গুলো থেকেও অন্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে বেশি ভিজিটর পাচ্ছেন।
সার্চ ইঞ্জিন এ আপনার ওয়েবসাইট এ অপটিমাইজ করার জন্য অনপেইজ অপটিমাইজেশন ও অফপেইজ অপটিমাইজেশন উভয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। নতুন ওয়েবসাইট এর জন্য অনপেইজ অপটিমাইজেশন এ প্রচুর কাজ করতে হয় শুরুতেই। এর পর করতে হয় অফপেইজ অপটিমাইজেশন। এই দুইটি ভিন্ন ধারার এসইও করার ভিন্ন ভিন্ন কৌশল রয়েছে। যার উপর ভিত্তি করে ওয়েবসাইট এর সাফল্য ও বার্থতা নির্ভর করে। অনপেইজ অপটিমাইজেশন আপনার ওয়েবসাইট কে তথ্য সম্রিধ্য করে তোলে। আর অফপেইজ অপটিমাইজেশন তথ্য সম্রিধ্য ওয়েবসাইট কে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্টের প্রথমে নিয়ে আসে যা আপনার ওয়েবসাইট এ একদিনে হাজার হাজার ভজিতর এনে দিতে পারে।
অনপেইজ অপটিমাইজেশন একটি ব্যাপক প্রক্রিয়া। এতে কেমন হবে তা নির্ভর করে ওয়েবসাইট এর মালিক ও ওয়েবসাইট এর বিষয় বস্তুর উপর। এতা নিয়ে আজকের টিউন এ বেশি আলোচনা করলাম না। তবে অফপেইজ অপটিমাইজেশন সম্পর্কে সামান্য আলোচনা করছি।
একটা নতুন ওয়েবসাইট তৈরীর পর অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিন সবগুলোতে তা ইনডেক্স করানো সব চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে অন্তত পক্ষে সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারবে আপনার ওয়েবসাইট এ রিলেটেড কনটেনড রয়েছে। আর এর জন্য সবচেয়ে নির্ভর যোগ্য রাস্তা হল ওয়েবসাইট কে PING করা। নতুন একটি ওয়েবসাইট কে PING করা হলে, সার্চ ইঞ্জিন ওই ওয়েবসাইট এ আসবে এবং নতুন নতুন পেইজ, পোস্ট, লিংক গুলোকে ইনডেক্স করে ওয়েবসাইট থেকে তথ্য যোগাড় করবে। এর পরবর্তী ধাপ হল ওয়েবসাইট কে সরাসরি টার্গেটএড সার্চ ইঞ্জিন এ সাবমিট করা।
আমি আগেও বলেছি, টার্গেটএড সার্চ ইঞ্জিন আপনাকে প্রচুর ভিজিটর এনে দিতে পারে। তাই নির্দিষ্ট কিছু সার্চ ইঞ্জিন টার্গেট করে তাতে ওয়েবসাইট সাবমিট করলে ধ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়। সার্চ ইঞ্জিন এ সাইট ম্যাপ সাবমিট করা এই প্রক্রিয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গুগল, ইয়াহু, বিং এর মত জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন এ সাইট ম্যাপ সাবমিট করে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।
ব্যাকলিংক শব্দটির সাথে এসইও শিক্ষানবিশ ও এসইও এক্সপার্টরা কম-বেশি পরিচিত। কিন্তু এই ব্যাকলিংক আপনাকে কোন জায়গা থেকে কিভাবে নিতে হবে তা অনেকে বুঝেন না। তবে এটুকু বলতে পারি অফপেইজ অপটিমাইজেশন এর পরবর্তী ধাপ হল ব্যাকলিংক তৈরী করা। ক্রমবর্ধমান ব্যাকলিংক আপনার ওয়েবসাইট কে সার্চ ইঞ্জিন এর কাছে জনপ্রিয় করে তোলে। আর হুট-হাট ভাবে কয়েকশ বা কয়েক হাজার ব্যাকলিংক তৈরী করলে তা আপনার ওয়েবসাইট কে সার্চ ইঞ্জিন গুলো তে স্প্রার্ম হিসেবে চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। যে কোন সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্টে প্রথম রেঙ্কিং আসার জন্য গুগল এর ব্যাকলিংক তৈরীর নীতি মালা অনুসরণ করলে মোটামুটি ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ইন্টারনেটে ব্যাকলিংক তৈরী করার অনেক টিপস রয়েছে। তবে আগুছাল নয় একটা নিয়ম মেনে ব্যাকলিংক তৈরী করা উচিত। আমি একে একে প্রায় সবগুলো নিয়ম আপনাদের কাছে তুলে ধরতে চাই।
বছর খানেক আগেও ওয়েবসাইট ডিরেক্টরী গুলো সার্চ ইঞ্জিন থেকে বেশি ভিজিটর নিয়ে আসতো। এই সব ভিজিটর গুলোর বেশির ভাগই পার্মানেন্ট বা স্থায়ী ভিজিটর। আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য স্থায়ী ভিজিটর এর গুরুত্ব আমি বলে শেষ করতে পারব না। ভিজিটরা এখনও কিছু পপুলার ওয়েবসাইট ডিরেক্টরী কে প্রাধান্য দেন, রিলেটেড কনটেনড খুঁজে বের করার জন্য। তাই এদেরকে ডিরেক্টরী সার্চ ইঞ্জিনও বলা হয়। তবে আজকাল ডিরেক্টরী সার্চ ইঞ্জিন এর চাহিদা কিছু কমে গেছে। কিন্তু হাই পেজ-রেঙ্ক ডিরেক্টরী গুলো তে যদি আপনার ওয়েবসাইট এর একটা ব্যাকলিংক থাকে, তবে তা আপনার সাইট কে অনেক জনপ্রিয় করে ফেলতে পারে। আমি একবার পরীক্ষা করার জন্য শুধুমাত্র ডিরেক্টরী সার্চ ইঞ্জিন এ আমার ওয়েবসাইট সাবমিট করে ব্যাকলিংক তৈরী করেছিলাম। এটা আমার ওয়েবসাইট কে আলেক্সা রেঙ্ক এর লাখ এর ভেতর নিয়ে এসেছিল। Dmoz ডিরেক্টরী সার্চ ইঞ্জিন এর আলেক্সা রেঙ্ক দেখলে বুঝতে পারবেন দৈনিক কত ভিজিটর ওদের ওয়েবসাইট এ আসে। তাই ডিরেক্টরী সার্চ ইঞ্জিন এর রিলেটেড ক্যাটাগরি তে ওয়েবসাইট কে সাবমিট করে ব্যাকলিংক তৈরী করলে ভালো ভিজিটর পাওয়া যায়।
আজকের টিউনটা অনেক লম্বা হয়ে গেলো। তাই আর বেশি এগুলাম না। তবে পরবর্তী টিউন এ আমি অবশ্যই অফপেইজ অপটিমাইজেশন এর পরবর্তী ধাপ সমূহ আপনাদের কাছে তুলে ধরব। আজকের টিউন সম্পরকে যে কন মতামতের আপেক্ষায় থাকলাম। আমার আজকের টিউন তা যদি ভাল লাগে তবে আমার এই ওয়েবসাইট থেকে ও ঘুরে আসতে পারেন। আশা করি ভাল লাগবে।
আমি ভাস্কর বনিক বনিক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 25 টি টিউন ও 121 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি বিগত পাঁচ বছর যাবত এসইও এবং ওয়েব ডেভোলাপমেন্ট এর বিভিন্ন কাজ করেছি। টেকটিউনস একটি অসাধারন প্লাটফরম নিত্য নতুন কিছু জানার ও শিখার। আমি টেকটিউনস অনেক ভালবাসি।
ধন্যবাদ ! 😮