প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে খুবই সহজ এবং আমাদের দীর্ঘ সময়ের কাজকে করেছে স্বল্প সাময়ীক। আগেকার সময়ের অনেক কঠিন কাজ এখন আমাদের কাছে খুবই সহজ হয়ে গেছে এই প্রযুক্তির কারণে। তবে এটি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে ঠিক তেমনি এর অনেক ভয়ঙ্কর প্রভাব ও আমাদের মানব জীবনে পরেছে। আর আজকে আমি আপনাকে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ৫ টি ভয়ঙ্কর প্রভাব সম্পর্কে জানাবো। তো চলুন জেনে নেওয়া যায় প্রযুক্তি ব্যবহারের ৫ টি ভয়ঙ্কর প্রভাব গুলো কী কী তা।

১. শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব

প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর অনেক ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। ঠিক আজ থেকে কয়েক বছর আগের কথায় চিন্তা করুন তখন মানুষের শারীরিক স্বাস্থ্য কেমন ছিল আর আজ কেমন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সকল কিছুই আমাদের শরীরের উপর প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রভাব। অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার আমাদেরকে অলস, রোগী বানাচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এখন মানুষ আর নিজে থেকে কোন কাজ না করায় আমাদের শারীরিকভাবে শরীর ও দিন দিন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

প্রযুক্তি ব্যবহারের কিছু কমন সমস্যা হল অতিরিক্ত স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকায় চোখের ও ঘাড়ের সমস্যা সহ ঘুম না হওয়া অনিদ্রা ইত্যাদি সমস্যা। অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের ফলে ডায়াবেটিস হৃদরোগ ইত্যাদি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা সহ শরীরের শারীরিক ক্ষতি হয়।

২. মানুসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব

প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানুষের শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানুসিক স্বাস্থ্যের উপরও অনেক বড় প্রভাব পড়েছে। প্রযুক্তি মানুষের সকল জটিল কাজকে সহজ করায় এখন মানুষ তার সকল কাজই প্রযুক্তি দিয়ে করায় যার ফলে মানুষের দক্ষতার বিঘ্নতি ঘটছে। এছাড়াও মানুষ খুব সহজেই এখন চাইলেই অশ্লীল জিনিসের অনুভূতি নিতে পারছে যার ফলে এটি তাদের ধার্মিক এবং সামাজিক সম্পর্কে দিক দিয়েও অনেক বড় প্রভাব ফেলছে। তাছাড়াও প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানুষের ভিতরে উদ্যোগ, ধৈর্যের কমতি ইত্যাদি এমন মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

৩. সামাজিক সম্পর্কের উপর প্রভাব

প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের সামাজিক সম্পর্কের উপর অনেক বড় খারাপ একটি প্রভাব এনেছে। নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে দেখেছেন বা নিজেও এমনটি করেছেন যে বাহিরে কোথাও সবাই একসাথে বসে থাকা সত্ত্বেও সবাই নিজেদের ফোন নিয়ে নিজের মতো করে ব্যস্ত। আর এই কারণে মানুষ সামাজিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকছে ও একাকিত্বের দিকে দিন দিন পা বাড়াচ্ছে। এবং বর্তমানে প্রায় সকল যোগাযোগই ভার্চুয়াল হয়ে গেছে যা সামাজিক সম্পর্কের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। এটি আমাদের সামাজিক সম্পর্কের উপর প্রভাবের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের উপর অনেক বড় খারাপ প্রভাব ফেলে।

৪. শিশুদের উপর প্রভাব

প্রযুক্তি ব্যবহার বর্তমানের শিশুদের উপর সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলেছে। যার ফলে অনেক প্রযুক্তিতেই অটোমেটিক শিশুদের জন্য আলাদা করে সিস্টেম তৈরি করা হয় তাদেরকে এর খারাপ প্রভাব থেকে বাঁচানোর জন্য। শিশুরা প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে তারা ছোট থেকে শিখার আগ্রহ হারাচ্ছে এর পাশাপাশি তাদের ছোট থেকেই শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হচ্ছে। বর্তমানে বেশিরভাগ শিশুরাই স্কুলের প্রতি অমনোযোগী হয়ে গেছে শুধুমাত্র এই প্রযুক্তি গুলোর কারণে। এবং সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো শিশুদের হাতের নাগালে এখন সবকিছু কিন্তু তারা সেটির সঠিক ব্যবহার করতে জানে না এবং সেটিকে ভালোভাবে বোঝে না।

যার ফলে তারা কিছু না বুঝেই কোন একটি কাজ করে ফেলতে পারে যার কারণে তারা অনেক বড় সাইবার বুলিং এর শিকার হতে পারে ও তারা তাদের পরিবারের অনেক গোপনীয়তা ভুলবশত প্রকাশ করে ফেলতে পারে। তাই বলা যায় যে শিশুদের জন্য প্রযুক্তি সবচেয়ে বড় একটি খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

৫. গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তার প্রভাব

বর্তমানে প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে সবকিছু খুবই সহজ হয়ে গিয়েছে যার ফলে এখন মানুষের গোপনীয়তা নিরাপত্তা অনেক ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে প্রযুক্তি এতটা এগিয়ে গিয়েছে যে শুধুমাত্র একটি ভুলের কারণেই আপনার সকল গোপন ডাটা চুরি হয়ে আরেকজনের কাছে চলে যেতে পারে যা অনেক বড় একটি বিপদজনক বিষয়। তাই এ বিষয়ে আমাদের আজই সতর্ক হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামত

নিঃসন্দেহে প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। তাই আমাদের এর পুরোপুরি সঠিক ব্যবহার করা উচিত। তবে এর পাশাপাশি আমাদের জীবনকে ঠিক রাখতে আমাদের এটিকে বুঝেশুনে ও হিসাব করে ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখবেন প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে উন্নত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে আমাদের জীবনকে ধ্বংস করার জন্য নই।