I LOVE YOU থেকে সাবধান! কারণ, এটি একটি ভয়ানক ভাইরাস!

প্রকাশিত
জোসস করেছেন
Level 3
১ম বর্ষ, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও

আসসালামুয়ালাইকুম টেকটিউনবাসী। আশাকরি সকলে ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সামনে কম্পিউটার ভাইরাসের ইতিহাসের একটি রোম্যান্টিক ভাইরাস নিয়ে হাজির হয়েছি। কেউ যদি আপনাদের I Love You বলে, তবে আপনাদের কপাল তো খুলে যাবে, তাই না? ইমেইলে যদি এরকম মেসেজ কেউ পাঠায়, তবে আপনারা তো রোমান্টিকতার জগতে চলে গিয়ে সেই মেসেজটি ওপেন করবেন, তাই না? কিন্তু এই রোমান্টিকতায় আপনাদের জীবনে নিয়ে আসবে এক ভয়ানক ক্ষতির বন্যা। আপনাদের প্রয়োজনীয় ফাইলগুলো সব ডিলেট হয়ে যাবে। শেষে শুধু সেই মেসেজের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আপনাদের আর কোনো উপায় থাকবে না। তো নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করছে, কী এই রোম্যান্টিক ভাইরাস? চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

১. I LOVE YOU Virus কী?

I LOVE YOU Virus কী?
নামটি শুনেই বুঝতে পারছেন প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য হয়তো এটিকে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু আসলে তা নয়। এটি একটি মারাত্মক ভাইরাস। নামটি অনেক রোম্যান্টিক, কিন্তু কাজ ভয়ানক। জানতে নিশ্চয় ইচ্ছা হচ্ছে, কে এই ভাইরাসটি তৈরি করেছিল। এই ভাইরাসের কারিগর কে তা এখনো প্রমাণিত হয় নি। তবে পুলিশ একজনকে আটক করেছিল। তার নাম ওনার দ্যা গজম্যান। কিন্তু পরবর্তীতে অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পরেও তিনি তা স্বীকার করেন নি। তাছাড়া পুলিশ কোনো ধরনের প্রমাণও পান নি। যার ফলে পরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

২. I Love You ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল কোথায়?

I Love You ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল কোথায়?

এবার আসি এটির উৎপত্তিস্থল কোথায়, তা নিয়ে। আপনারা তো দ্বীপরাষ্ট্র কাকে বলে তা নিশ্চয় জানেন। চারপাশে শুধু পানি, মাঝখানে যে ভূখণ্ড দেখা যায়, তাই হলো দ্বীপ। আবার কিছু দ্বীপ মিলে যখন একটি রাষ্ট্র গঠিত হয়, তখন তাকে দ্বীপরাষ্ট্র বলে। তো এশিয়া মহাদেশে তেমনই অনেক দ্বীপরাষ্ট্র রয়েছে। এসবের মধ্যে ফিলিপাইন একটি দ্বীপরাষ্ট্র। সমুদ্র পেরিয়ে এর আশেপাশের দেশগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম ইত্যাদি। সমুদ্র পেরিয়ে বলা হচ্ছে এই জন্য যে, এই যে দ্বীপরাষ্ট্র, এর ভৌগলিক অঞ্চলের চারপাশেই সমুদ্র দ্বারা পরিবেস্টিত। তো এই ফিলিপাইন থেকে ভাইরাসটিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

৩. এই ভাইরাস সর্বপ্রথম কখন ছড়িয়ে পড়ে?

এই ভাইরাস সর্বপ্রথম কখন ছড়িয়ে পড়ে?
এখন নিশ্চয়ই জানার ইচ্ছা হচ্ছে যে, এই ভাইরাস সর্বপ্রথম কখন ছড়িয়ে পড়ে? সালটি ছিল ২০০০ সাল। আর তারিখ ছিল ৫ই মে। এই কম্পিউটার ভাইরাসটি ইমেইলের মাধ্যমে সারা নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। আর রোমান্টিকতার সুযোগ নিয়ে গ্রাস করেছিল কম্পিউটার নামে বুদ্ধিহীন এক যন্ত্রকে।

৪. মানুষ কীভাবে এর ফাঁদে পড়ত?

মানুষ কীভাবে এর ফাঁদে পড়ত?
এখন আসি এই ভাইরাস কীভাবে ইমেইলের মাধ্যমে প্ররোচনা দিত, তা নিয়ে। আসলে প্রথমেই বলেছি এটি একটি রোম্যান্টিক ভাইরাস। এটি ইমেইলের মাধ্যমে নিজেকে পরিবহন করে। সবার প্রথমে এই ভাইরাসটি আপনার ইমেইলে আসবে রোমান্টিকতা নিয়ে। এই ভাইরাস যে মেইলের মাধ্যমে আসবে তার সাবজেক্টে লেখা থাকবে “I LOVE YOU”। ফলে যেকোনো মানুষই তা দেখে রোমান্টিকতার দুনিয়ায় চলে যাবে। আর স্বভাবতই সেই মেসেজটা ক্লিক করে ওপেন করতে চাইবে।

ওপেন করার সাথে সাথে একটা ডকুমেন্ট আসবে, যেটাতে লেখা থাকবে “Love-Letter-For-You.txt। তো প্রেমিকগণ এটা দেখা মাত্রই মনে করবে, তাদের প্রেমিকাগুলো তাদেরকে এই লাভ লেটার পাঠিয়েছে। ফলে তাদের হাতের সুন্দর আঙ্গুলটি দিয়ে তা ক্লিক করে ওপেন করবে। এইখানেই তারা সকলে ফাঁদে পড়ে যাবে। কেননা, এই ডকুমেন্টে ক্লিক করার সাথে সাথে ভাইরাসটি সেই ইমেইলের মধ্যে থাকা সকল ইমেইল এড্রেস কপি করবে। আর পরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রত্যেক ইমেইল এড্রেসে এই ডকুমেন্টি চলে যাবে। ফলে মুহূর্তের মধ্যেই লাখ লাখ কম্পিউটার এর স্বীকার হয়ে যাবে।

৫. ভাইরাসটি কোন প্রোগ্রামে এবং কীভাবে কাজ করত?

ভাইরাসটি কোন প্রোগ্রামে এবং কীভাবে কাজ করত?

ভাইরাসটি কাজ করত এক অদ্ভুত নিয়মে। আসলে এই ভাইরাসটি একটি VBS প্রোগ্রাম। অর্থাৎ, Visual Basic Scripts। এর ফলে কম্পিউটারগুলো নতুন ধরনের নির্দেশনা পায়। অর্থাৎ, ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয় ফাইল যেমনঃ ছবি, ভিডিও কিংবা এমপিথ্রি অডিওগুলোর এক্সটেনশন VBS প্রোগ্রাম নিজের দখলে করে নেয়। ফলে এই ফাইলগুলোর ব্যাক আপ ফাইল না থাকলে, সবকিছু ডিলেট হয়ে যায়।

৬. এই ভাইরাস আক্রমণের ফলে ক্ষতির পরিমাণ কত?

এই ভাইরাস আক্রমণের ফলে ক্ষতির পরিমাণ কত?

এই ভাইরাসের ফলে ক্ষতির পরিমাণ ছিল অনেক। মাত্র ২ দিনের মধ্যেই ৪৫ লাখ কম্পিউটার এতে আক্রান্ত হয়েছিল। আর প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি সাধিত হয়। ১০ বিলিয়ন ডলার মানে ১০০০ কোটি ডলার, একে টাকায় কনভার্ট করলে কত হবে তা আপনারাই ভেবে বলুন!
তাহলে এবার বলুন দেখি I Love You কতটা ভয়ানক?

আশাকরি, সকলের টিউনটি ভালো লেগেছে। তাহলে এখনই আপনার সুন্দর আঙ্গুলটি দিয়ে জোস দিন। আর এরকম নিত্য নতুন টিউন পেতে আমাকে ফলো করুন। ধন্যবাদ সকলকে।

Level 3

আমি মো মিরাজ ইসলাম। ১ম বর্ষ, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 26 টি টিউন ও 25 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 7 টিউনারকে ফলো করি।

আমি মোঃ মিরাজ ইসলাম। আমি আর্টিকেল লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। এছাড়া ইউটিউবে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরিও করি। আমি টেকটিউনসে টিউন লিখে আয় করার জন্য একাউন্ট ক্রিয়েট করেছি। ধন্যবাদ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস