জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস)কি? কেন?

কয়েকদিন ধরে ভাবছিলাম জিআইএস এর উপর একটি সিরিজ টিউটোরিয়াল এর ব্যবস্থা করলে কেমন হয়। এই বিষয়ে টিউটোরিয়াল লেখার আগে এটি কি কাজ করে সেটা জানতে হবে।এর ব্যবহার না জানলে তো এটি শিখে কোন লাভ নেই। সুতরাং আগে জেনে নেই জিআইএস কি বস্তু !

বর্তমান সময়ে বহুল ব্যবহৃত একটি সফটওয়ার। অনেকে আবার একটিকে ম্যাপিং এর ( ম্যাপ তৈরির সফটওয়ার মনে করেন। তবে এটি শুধু ম্যাপ তৈরি করার সফটওয়ার নয়। এর মাধ্যমে ভুপৃষ্টের ও ভূঅভ্যন্তরের সবকিছুর তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ, এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ম্যাপ কিংবা রিপোর্ট তৈরি করা যায় অতি সহজেই। সময়ের সাথে সাথে এই সফটওয়ারটিরব্যবহার ও বেড়েছে।

প্রত্যেটি মাস্টার প্লানের ( শহর পরিকল্পনা) কাজের ক্ষেত্রে জিআইএস একটি অপরিহার্য সফটওয়ার, যেমন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ব্যবহার করা তেমনি। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা একবার মূল তথ্যভান্ডার তৈরি হয়ে গেলে এটিকেই অল্পসময়ে আর অল্প খরচেই আপডেট করা যায়।

এর মধ্যে ভূপৃষ্টের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান, রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, আর্কিওলজি, পরিবেশগত ইম্প্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট, আরবান প্ল্যানিং, কার্টোগ্রাফি, ক্রিমিনোলজি, ভৌগোলিক ইতিহাস, মার্কেটিং, লজিস্টিকস, জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা, তথ্য ব্যবস্থাপনা, প্রতিরক্ষা  ইত্যাদি অন্যতম।

জিআইএস ব্যবহারের ক্ষেত্রঃ প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা,নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা,বনায়ন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা, কৃষি পরিকল্পনা ও উন্নয়ন,পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রাকৃতিক দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা,সেচ ব্যবস্থাপনা,সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং,প্রকল্পের স্থান নির্বাচন,ভূতাত্ত্বিক জরিপ,জনসংখ্যা জরিপ সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা,শিল্পায়ন, টেলিযোগাযোগ,ভূমি ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা,ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা,গ্রামীন উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা,প্রতিরক্ষা ও সামরিক ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রসারণ,স্বাস্থ্য ইত্যাদি।

১৯৬৪ সালে কানাডায় প্রথম গড়ে হয়েছিল জিআইএস এর সূচনা। এর পর প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, দক্ষ জনবল ইত্যাদির অভাবে এই প্রযুক্তির প্রসার অনেকদিন ধীর গতিতে ছিল। কিন্তু নব্বই দশকে উন্নতমানের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যারসহ অন্যান্য ডিভাইসের সহজ লভ্যতা, একাডেমিক পর্যায়ে এর  ব্যপক গবেষণা এসব কারনে জিআইএস এর বিস্তৃতি হয় সারা বিশ্ব  জুড়ে। বর্তমানে বাংলাদেশেও এর ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান জিআইএস নিয়মিত ব্যবহার করছে।

নতুন শতাব্দীতে বিজ্ঞান, মানবিক উন্নয়ন, প্রযুক্তির উৎকর্ষতা, প্রয়োগ, প্রসার ঘটে ব সর্বজনীন হারে, বিশ্বগ্রামে পরিণত হবে এ বিশ্ববলয়।  সে নিরিক্ষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা, প্রয়োগ ও  প্রসার এখন সময়ের দাবী।     সম্পদ আহরণ, উন্নয়ন ও সংরক্ষণে, পরিকল্পনার মূল ভিত্তি হওয়া দরকার সুদূর প্রসারী, সাশ্রয়ী ও টেকসই। সুদূর প্রসারী, সাশ্রয়ী ও টেকসই  উন্নয়নের পরিকল্পনা প্রণয়ণের ক্ষেত্রে জিআইএস হতে পারে একটি নির্ভরযোগ্য সফল হাতিয়ার ও কৌশল।   নগরায়ণ ও উন্নয়নের সাথে বৃদ্ধি পায় কিছু সমস্যা, যেমনঃ   ট্রাফিক জ্যাম, সন্ত্রাস,  দারিদ্র, পরিবেশ দূষণ ও পরিবেশ ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি। এসকল সমস্যা মোকাবেলায় জিআইএস বেশ কার্যকর।

জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিষ্টেম ১৯৬০ সালের শেষের দিকে পরিচিতি লাভ করলেও কম্পিউটারের উচ্চমূল্য, সফটওয়্যারের স্বল্পতার কারনে গুটি কয়েক দেশে এর বিস্তার সীমাবদ্ধ ছিল। ১৯৮০ সালের প্রথম থেকেই জিআইএস এর ব্যবহার নগর ও গ্রামীন পরিকল্পনা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারী পর্যায়ে অষ্ট্রেলিয়া, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় শুরু হয়।

বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে জিআইএস প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে দেশে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে বিভিন্ন  প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে বিশ্ব বিদ্যালয়,এলজিইডি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী শহর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ইত্যাদি এবং আধাসরকারী/বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের গুলোর মধ্যে সিইজিআইএস(CEGIS),আইডব্লউএম(IWM,জিএসআরসি (GSRC) বিভিন্ন দেশী বিদেশী এনজিও, দাতা সংস্থা, বহুজাতিক কোম্পানী ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

আরও বিস্তারিত জানতে

http://en.wikipedia.org/wiki/Geographic_information_system

http://www.gisuser.com/

http://www.esri.com/

Level 0

আমি রেজাউর রহমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 10 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Daron jinis janlam.daravahik tune soro koren

টিউটোরিয়াল শুরু করে দিন। আমি আছি….. 🙂

Level New

সফটওয়্যার টির ডাউনলোড লিংক চাই, যদি থাকেন ।

    যে কোন টরেন্ট সাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারেন।

    একটি লিংক দিচ্ছি, জানিনা ডাউনলোড করতে পারবেন কিনা। ArcGIS10 Size 3.65 GB
    http://filesonic.com/file/1046240161/arcgis.10.desktop.rar.html
    আমি Mipony অথবা যেকোন shared file downloaded দিয়ে এই লিংক থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন। রেপিডশেয়ার, হটফাইন, মিডিয়াফায়ার ইত্যাদি সব সাইটেই পাবেন এই সফটওয়্যরটি। আমার জানামতে এই সফটওয়্যারটি র ডিভিডি আইডিবি তেও কিনতে পাওয়া যায়। তবে বেশ দামি ( এক প্যাকেজ এর দাম প্রায় ডের লক্ষ টাকা) হওয়ায় এর ক্রাক করাও একটু কষ্ট। তবে ইন্টারনেটে ক্রাকও সহজলভ্য।

ভাল হচ্ছে। চালিয়ে যান।