ক্রিকেট এবং টেনিস এ দারুন জনপ্রিয়তা পেয়েছে হক আই প্রযুক্তি। বিজ্ঞানের এই অসাধারন প্রজুক্তি সর্বস্ত্ররের মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রিকেট খেলাকে করেছে আরও মজাদার আকর্ষনীয়, প্রাণবন্ত , নিরপেক্ষ ও নিঁখুত। এমনি এক আধুনিক প্রযুক্তির নাম হক আই। এই টিউনের আধারে নির্মিত আমার এই টিউন তবে সংশোধিত।
বোলার যখন বল করেন তখন তার বলের যেই অতিক্রান্ত পথ ত্রিমাত্রিক(3D Position) কম্পিউরাইজড ছবিতে দেখি তাকে ‘হক আই প্রযুক্তি’ বলা হয়। আমারা সাধারণত LBW ক্ষেত্রে ‘হক আই’ প্রযুক্তির ব্যবহার বেশি দেখতে পাই। তাছাড়া বলের মুভমেন্টও ‘হক আই’ ধরতে পারে। সম্প্রতি আই.সি.সি ওয়াল্ডকাপ-২০১১ তে থার্ড আম্পায়ার রিভিউ সিস্টেমে ‘হক আই’ এর সফল ভাবে ব্যবহার হয়েছে। তবে টেনিস এবং আরো কিছু খেলায় বর্তমানে ‘হক আই’র প্রচলন শুরু হয়েছে। ১০ বছরের ও বেশি সময় ধরে এই প্রযুক্তি সার্ভিস দিয়ে আসছে।
যখন ৩০ সে.মি. পথ ছয় ক্যামেরা এক করে দেয় তখন পূর্বেই প্রোগ্রাম করা প্রোগ্রাম ডাটাবেজ থেকে বাকী পথটুকু ইন্ডিকেট করে দিতে পারে। মুলত এটিই ‘হক আই’র মূল শক্তি।
১ জন টিভি ডাইরেক্টর সম্পুর্ন কাজ টি করে, আরও দুই জন মেম্বার Tracking এর কাজ করে এবং কৌনিক সরণ ঠিক মত কাজ করে কিনা চেক করে। ছয়টি ক্যামেরা খুব দ্রুত প্রত্যেকটা ফ্রেম কে একত্রিত করে বলের গত নির্ধারনে। সম্পুর্ন কাজটি সম্পন্ন করতে ১৫-২০ সেকেন্ড সময় নেয়।
এটি খুব ভালো ভাবে ‘রিভার্স সুইং’ "ইন-আউট সুইং" ধরতে পারে। আই.সি.সি ‘হক আই’কে অনুমোদনই প্রমান করে এর কার্যকারিতা তথা সফলতা সবচেয়ে বড় প্রমান।
এখন পর্যন্ত সব আবিষ্কৃত প্রযুক্তির কম বেশি ব্যর্থতা আছে। তবে মানুষ আবিষ্কৃত সব কিছু সবছেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো এরা নিজেদের কাজ বুঝে না, যা প্রোগ্রাম করা হয় তাই!
তেমনি ‘হক আই’ এর বেশ কিছু ব্যর্থতা আছে।
১. ধরুন, কেউ লেগ স্পিন বল করছে। সেই বলটা গুগলি বা আর্ম বল নয়, অরজিনাল লেগ স্পিন। আর বলটা সোজা গিয়ে পড়লো লেগ স্ট্যম্পের সামনে থাকা ব্যটসম্যনের পায়ে। এতে বলটা ব্রেক করার সুযোগ পেল না। কিন্তু সুযোগ পেলে করতো। কিন্তু ‘হক আই’ এ ক্ষেত্রে বলের ব্রেক ধরতে পারবে না। ‘হক আই’ দেখাবে বলটা লেগ স্টাম্পের সামনে পড়ে ব্রেক করে লেগ স্টাম্পের এক/দুই ইঞ্চি বাহির দিয়ে বেরিয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে বলটা ব্রেক করে অফ বা মিডেল স্ট্যাম্পে লাগার কথা। এতে ব্যটসম্যন বেচে গেলো, বোলার উইকেট পেল না!
২. ‘হক আই’ ঘাস বুঝে না। অনেকক্ষেত্রে বল ঘাসে পড়ে ব্রেক করে। ‘হক আই’ সেটা ধরতে পারে না।
৩. ‘হক আই’ পিচের ফাটল ধরতে পারে না। ফলে বলের ব্রেক তথা পরিবর্তন ধরতে পারে না।
8.যদিও হক আইয়ে সবসময় বলের সম্ভাব্য দিক ও গতি নির্ণয় হয় তবুও এল.বি.ডাবলিউ এর সিদ্ধান্তে বলের ভবিষ্যত দিক নির্ণয়ে পিচের কারনে তা সবসময় যে সঠিক হবে তা বলা কঠিন। এটা কখনোই দৃঢ় ভাবে বলা যাবে না যে পিচের বৈরী আচরণের কারনে জন্য বলটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী উঁচু বা নিচু হবে না।
গ্রাফিক্স এর মাধ্যমে শব্দ এবং ভিডিও কে যাচাই করা হয়। Slow Motion ভিডিও রিপ্লেকে কাজে লাগায় এটি। ব্যাটে বল লেগেছে কিনা যাচায় করা হয় শব্দের মাধ্যমে।
খুব ব্যয়বহুল।চার চারটি ক্যামেরার জন্য প্রতিদিনে এটির খরচ পরে ১০ হাজার ডলার । ক্যামেরা গুলো হল ইনফ্রারেড (INFRA-RED) ইমেজিং সিস্টেম। এশিয়া তে এখনো আসেনি কারন এটি খুব ব্যয়বহুল এবং একটি হট স্পট ক্যামেরা তৈরি করতে চার থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগে। আর সারা বিশ্বের এমন ক্যামেরা তৈরি করতে জানে মাত্র চার-পাঁচটি কম্পানি।
হট স্পট ক্যামেরা নিয়ে আরো সমস্যা আছে। এ ধরনের একটি ক্যামেরা কেনার আগে কঠোর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হয়। কেননা হট স্পট ক্যামেরা সমরাস্ত্র হিসেবে স্বীকৃত। তাই একটি হট স্পট ক্যামেরার জন্য হাজারো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় ওয়ার্নার ব্রেনানকে, 'অনুমোদনের আগে জানতে চাওয়া হয়, ভালো মানুষ কি না; বিশ্বাস করা যায় কি না; তারা আগের ক্যামেরাগুলো আল-কায়েদার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে কি না। সত্যি বলতে কি, ব্যাপারটি এমন নয় যে আপনি দিনের যেকোনো সময় গিয়ে টাকা দিয়ে একটা হট স্পট ক্যামেরা কিনে ফেলবেন।' এত ঝক্কির সঙ্গে এ ক্যামেরা ব্যবহারের জন্যও গুনতে হয় বিপুল অর্থ।
অদূর ভবিষ্যতে হয়তো সব খেলাতেও এই পদ্ধতি অফিসিয়ালি সিদ্ধান্ত দিতে ব্যবহৃত হবে।বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্বে খেলাধুলাতে ও লেগেছে প্রযুক্তির বাতাস। আর তাই তো নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন খেলায়। যা কিনা খেলাধুলাকে করছে আরো সহজ, প্রাণবন্ত ও আকর্ষনীয়।
আমি ЯOBAYETH। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 19 টি টিউন ও 805 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ব্যক্তিগত অপশন লেখার সময় ভিজ্যুয়াল এডিটর ব্যবহার করুন। :-| প্রোফাইলে আপনার জীবনবৃত্তান্ত সংক্রান্ত কিছু তথ্য দিন ; যা জনসমকাষে প্রদর্শিত হবে।
আসলেই টেকটিউন হয়েছে। যদিও ক্রিকেট নিয়ে লিখা টার্মগুলা বুঝিনি, তবুও ক্যামেরা, ফ্রেম ইত্যাদি জেনে ভালো লাগলো।
(হিমায়িত দিহান ভাইয়ের টিউন পড়ার পর থেকে কারো প্রশংসা করতে লজ্জা লাগছে) 🙄