জীববিজ্ঞানকে সমৃদ্ধকারী কয়েকজন স্মরণীয় বিজ্ঞানীর পরিচিতি ও অবদান

Level 7
২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা

হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটির সদস্যরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সৃষ্টিকর্তা আপনাদের সবাইকে ভালোই রেখেছে। আজ আপনাদের মাঝে টিউনের মাধ্যমে বিতরণ করতে চলেছি অধমের সংগ্রহ করা কিছু জ্ঞানী ব্যক্তির অবদানের কথা। যা আপনাদের ভালো লাগার কারণ হতে পারে। তাই আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করছি আজকের টিউন।

মানুষকে সুখ সাচ্ছন্দ দান করেছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান অর্থ বিষেশ জ্ঞান যা মানুষের প্রতিটি অসুবিধার সমাধান নিয়ে আসে। আর বয়ে নিয়ে আসে মানুষের জন্য বিলাসী জীবন। আর এই বিজ্ঞানের রয়েছে নানা শাখা। আর প্রতিটি শাখায় কিছু উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞানী অবাদান রেখেছে। জীববিজ্ঞান ও এর ব্যাতিক্রম নয়।

জীব বিজ্ঞানে অবদান রেখেছে এমন কয়েজন বিজ্ঞানীর সামান্য পরিচিতি ও অবদান নিয়েই আজকের টিউন।

জীববিজ্ঞানের কয়েকজন স্মরণীয় পথিকৃতঃ

অ্যারিস্টটলঃ

একজন গ্রীক বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীর নাম অ্যারিস্টটল। যিনি একজন দার্শনিক ও ছিলেন বটে। প্রানীবিজ্ঞানের জনক হিসেবে স্মরনীয়। যার জন্ম খ্রীস্টপূর্ব ৩৮৪ এর ৭ই মার্চ। ইনি প্রাচীন দর্শন যুগের পশ্চিমা দর্শনের লোক। যিনি এরিস্টটলবাদ এর জন্ম দেন। তার মৃত্যু খ্রীস্টপূর্ব ৩২২ অব্দে।

উল্লেখযোগ্য অবদানঃ

  • রক্তের বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে শ্রেনিবিন্যাসে করেন।
  • আনুমানিক ৫২০ টি প্রজাতির বর্ণনা দেন।
    প্রাণিদের জনক্রুম, অঙ্গসংস্থান ও জীবন ইতিহাসের বর্ণনা দেন।
  • Historia Animalium, Parts of Animals ও On the Genaration of Animals ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য বই লিখেন তিনি।

অ্যানড্রেস ভেসেলিয়াসঃ

জীববিজ্ঞানের গবেষণায় যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটিয়েছেন এমন একজন বিজ্ঞানী হলেন বিজ্ঞানী অ্যানড্রেস ভেসেলিয়াস। তিনি বেলজিয়ামের একজন বিজ্ঞানী। অর্থাৎ প্রাচীন ব্রাসেলস, হাবসবার্গ, নেদারল্যান্ডস (আধুনিক বেলজিয়াম) এ ১৫১৪ সালে জন্ম গ্রহন কারী এক বিজ্ঞানী। তিনি বিখ্যাত হয়েছেন একটি গ্রন্থ লিখে। তার মৃত্যু ১৫৬৪ সালে হয়। ইনি একজন চিকিৎসক ও ছিলেন।

উল্লেখযোগ্য অবদানঃ

  • বিখ্যাত গ্রন্থ Fabrics of Humanbody এর রচয়িতা। ১৫৪৩ সালে গ্রন্থটি প্রকাশ পায়।
  • মানবদেহে ব্যাবচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত হয় তারপর্যবেক্ষণ এর মাধ্যমে।
  • অস্থি, স্নায়ুতন্ত্রের ও পেশির প্রথম নিখুঁত বর্ণনা দানকারী।

মার্সেলো মালপিজিঃ

জীবনবিজ্ঞান এ অবদান রেখেছে এমন আরেকজন বিজ্ঞানীর নাম মার্সেলো মালপিজি। ইনি একজন ইতালীয় বিজ্ঞানে এবং সেই সাথে একজন চিকিৎসক। ইনি ১৬২৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং মারা যান ১৬৯৪ সালে। তিনি ভ্রুন তত্ত্বের জনক হিসেবে স্মরনীয়।

উল্লেখযোগ্য অবদানঃ

  • অপটিক স্নায়ু ও মস্তিষ্কের সুক্ষ গঠন দেখাতে সক্ষ্ম হন।
  • ফুসফুসের রক্তজালিকার বর্ণনা ও শনাক্ত করতে সক্ষম হন।
  • বৃক্কের গ্লোমেরুলি ও রেচন নালিকা আবিষ্কার করেন।
  • স্বাদকঁরি, যকৃত ও প্লীহার গ্রন্থিময়তা আবিষ্কার করেন।

অ্যান্টনি ভ্যান লিউয়েনহুকঃ

জীববিজ্ঞানের সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এমন আরেকজন বিজ্ঞানীর অ্যান্টনি ভ্যান লিউয়েনহুক। ইনি একজন ওলন্দাজ বিজ্ঞানী। তার জন্ম ১৬৩২ সালের ২৪ শে অক্টোবর। তিনি সাধারণত অনুজীববিজ্ঞানের জনক হিসেবে পরিচিত লাভ করেন। তার মৃত্যু ১৭২৩ সালের ৩০ শে আগস্ট।

উল্লেখযোগ্য অবদানঃ

  • অণুবীক্ষণযন্ত্রের উন্নতিতে লেন্সের বিবর্ধন ক্ষমতা অনেকগুন বাড়িয়েছেন।
  • এককোষী প্রােটিস্টা অর্থাৎ প্রােটোজোয়া, শৈবাল, রক্তকণিকা, শুক্রাণু ও ব্যাকটেরিয়া প্রভৃতি আবিষ্কার করেন।
  • কৈশিক জালিকার ভিতর রক্ত সংবহন হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
  • কীটপতঙ্গের জীবনচক্রের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

রবার্ট হুকঃ

জীববিজ্ঞানের সমৃদ্ধিতে বহু বিজ্ঞানীর অবদান থাকলেও তার মধ্যে রবার্ট হুক ও উল্লেখযোগ্য। তিনি একজন ইংরেজি দার্শনিক, স্থপতি ও বহুশাস্ত্রবিদ বলে পরিচিত। ইনার জন্ম ১৬৩৫ সালের জুলাই মাসের ২৮ তারিখে। এই বিজ্ঞানীর বিশেষ অবদান Cell শব্দের প্রবর্তক। এই বিজ্ঞানী ১৭০৩ সালের মার্চ মাসের ৩ তারিখে।

উল্লেখযোগ্য অবদানঃ

  • ছিপির আণুবীক্ষণিক প্রকোষ্ঠময় গঠন দেখে তিনি এগুলােকে cell নাম দেন যা আজো প্রচলিত।
  • মৌমাছির হুল, মলাস্কের র‍্যাডুলা, মাছির পদ, মাছের আইশের বৃদ্ধি রেখা ও পালক ইত্যাদির বর্ণনা দেন।
  • ১৬৬৫ সালে প্রকাশিত Micrographia নামক বিখ্যাত গ্রন্থের রচয়িতা।

উইলিয়াম হার্ভেঃ

 

জীববিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে উইলিয়াম হার্ভের অবদান ও কম নয়। ইনি ছিলেন মুলত এক ইংরেজ চিকিৎসক। যিনি শরীরবিদ্যার জনক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ইনি ১৫৭৮ সালের ১লা এপ্রিল লন্ডনের ফোকস্টন শহরে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ৩রা জুন ১৬৫৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

উল্লেখযোগ্য অবদানঃ

  • মানবদেহে রক্ত সঞ্চালন সম্পর্কে তার গবেষণায় আধুনিক শারীর বিদ্যার ভিত্তি স্থাপিত হয়।
  • ভ্রূণবিদ্যায় মৌলিক গবেষণায় তিনি বিশ্ববিখ্যাত হয়েছেন।
  • মানুষসহ পতঙ্গ, কেচো, সরিসৃপ, পাখি ও স্তন্যপায়ীর প্রায় ৪০ প্রজাতির প্রাণীর তুলনামূলক শারীরবিদ্যা নিয়ে লিখেছেন।
    On the motion of heart & blood in animal বইগুলো ইনিই লেখেন।

ক্যারোলাস লিনিয়াসঃ

বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস জীববিজ্ঞানে শ্রেনিবদ্ধবিদ্যার জনক হিসেবে পরিচিত লাভ করেন। ইনি একজন সুইডিশ বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক। তার জন্ম ১৩ ই মে ১৭০৭ সালে। ইনি একজন প্রানিবিজ্ঞানীও বটে। তার মৃত্যু ১৭৭৮ সালের ১০ ই জানুয়ারি।

উল্লেখযোগ্য অবদানঃ

  • পুংজননাঙ্গের উপর নির্ভর করে উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস করেন।
  • উদ্ভিদ ও প্রাণীর দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতির আবিষ্কারক।
  • সাত হাজারেরও অনেক বেশি উদ্ভিদ শনাক্ত করেন। Systema Naturae, Genera Plantarum, Species Plantarum প্রভৃতি তার বিখ্যাত পুস্তক।

তো বন্ধুরা কেমন লাগলো আজকের টিউন তা আমকে টিউমেন্ট করে জানাতে পারেন। ভালো লাগলে অবশ্যই জোসস দিবেন। আজকের টিউন এখানেই শেষ। আমি শীঘ্রই এই টিউনের দ্বীতিয় পর্ব নিয়ে আসব। দেখা হচ্ছে পরবর্তী টিউনে। সে পর্যন্ত সুস্থ থাকুন। আল্লহ হাফেজ।

Level 7

আমি মো তানজিন প্রধান। ২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 91 টি টিউন ও 65 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।

কখনো কখনো হারিয়ে যাই চিন্তার আসরে, কখনোবা ভালোবাসি শিখতে, কখনোবা ভালোবাসি শিখাতে, হয়তো চিন্তাগুলো একদিন হারিয়ে যাবে ব্যাস্ততার ভীরে। তারপর ব্যাস্ততার ঘোর নিয়েই একদিন চলে যাব কবরে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস