আশাকরি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি বিজ্ঞানভিত্তিক যথাযথ একটা টিউন। আশাকরি আপনাদের ভাল লাগবে। চলুন শুরু করা যাক।
আপনারা কি জানেন বর্ণালি কি?হাইড্রোজেনের পারমানবিক বর্ণালি কি?সিরিজ কি?
সূর্য থেকে আগত রশ্নি একটি সরু ছিদ্র পথে কাচের প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় রংধনুর মত সাত বর্ণের সমাবেশ সৃষ্টি করে। বর্ণের এ সমাবেশকে বর্ণালী বলে।
স্পেকট্রোমিটার নামক যন্ত্রের সাহায্যে বর্ণালী পরিমাপ করা হয়।
সূর্যের আলো কোন পরমাণুর গ্যাসের মধ্যে দিয়ে চলার সময় কতগুলো বিকিরিত রেখার একক লাইন উৎপন্ন করে একে পারমাণবিক বর্ণালী বলে।
একটি কাচ নলের ভিতরে কম চাপে রাখা হাইড্রোজেন গ্যাসের ভিতরে উচ্চশক্তির বিদ্যুৎ চালনা করলে ঐ গ্যাসের ভিতর থেকে বিভিন্ন বর্ণের আলোর বিকিরণ সৃষ্টি হয়। এ বিকিরিত আলোকরেখা গুলোকে হাইড্রোজেনের পারমাণবিক বর্ণালী বলে।
পরমাণুর ইলেকট্রন বাহিরে থেকে শক্তি শোষণ করে উচ্চ শক্তি স্তরে গমন করে। সাধারণত উচ্চতর শক্তিস্তর থেকে নিম্নতর শক্তিস্তরে ইলেকট্রন আগমনের সময় আমরা বর্ণালী দেখতে পাই।
পরমাণুর ইলেকট্রন যখন উচ্চতর শক্তিস্তর থেকে নিম্নতর শক্তিস্তরে আসে তখন বিভিন্ন ধরনের সিরিজের আবির্ভাব হয়।
যখন পরমাণুর ইলেকট্রন উচ্চতর শক্তিস্তর থেকে নিম্নতর শক্তিস্তরে আসে তখন নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তির বিকিরণ হয়। পরমাণুর ইলেকট্রন উচ্চতর যে কোন শক্তি স্তর থেকে নিম্নতর যেকোনো শক্তিস্তরে আসতে পারে। যেমন পরমাণুর ইলেকট্রন অসীম থেকে ১ম, ২য়, ৩য় ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ যেকোনো শক্তিস্তরে আসতে পারে অথবা পরমাণুর ইলেকট্রন ৬ষ্ঠ শক্তিস্তর ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম শক্তিস্তরে আসতে পারে।
অসীম বা উচ্চতর কোন শক্তিস্তর থেকে ইলেকট্রন নিচের কোন শক্তিস্তরে আসছে এর উপর ভিত্তি করে সিরিজের শ্রেণিবিভাগ করা হয়।
অসীম বা উচ্চতর যে কোন শক্তিস্তর থেকে ইলেকট্রন ১ম শক্তিস্তর বা ১ম লাইনে আসলে তাকে লাইমেন সিরিজ বলে। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে লাইমেন হাইড্রোজেনের পারমানবিক বর্ণালিতে অতিবেগুনী রশ্মি এলাকায় কয়েকটি লাইন আবিষ্কার করেন। এই লাইন গুলো লাইমেন সিরিজ হিসেবে খ্যাত।
১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী বামার এই সিরিজ আবিষ্কার করেন। এক্ষেত্রে ইলেকট্রন হাইড্রোজেন পরমাণুর উত্তেজিত অবস্থায় ২য় শক্তিস্তর ব্যতীত উচ্চতর যেকোন শক্তিস্তর থেকে দ্বিতীয় শক্তিস্তরে বা ২য় লাইনে আগমন করে। হাইড্রোজেন বর্ণালী দৃশ্যমান এলাকায় এ সিরিজের উদ্ভব হয়।
১৯০৮খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী প্যাশ্চেন এটি আবিষ্কার করে। এক্ষেত্রে ইলেকট্রন হাইড্রোজেন পরমাণুর উত্তেজিত অবস্থায় তার তৃতীয় শক্তি স্তর ব্যতীত উচ্চতর যেকোনো শক্তিস্তর থেকে তৃতীয় শক্তিস্তরে আগমন করে।
হাইড্রোজেন বর্ণালী অবলোহিত এলাকায় এই সিরিজের রেখাগুলো পরিলক্ষিত হয়।
বিজ্ঞানী ব্র্যাকেটে এ সিরিজ আবিষ্কার করেন। এক্ষেত্রে ইলেকট্রন হাইড্রোজেন পরমাণুর উত্তেজিত অবস্থায় তার চতুর্থ শক্তিস্তর ব্যতীত যেকোনো উচ্চতার শক্তিস্তর হতে চতুর্থ শক্তিস্তরে আগমন করে। এই সিরিজটিও হাইড্রোজেন পরমাণুর অতি অবলোহিত এলাকাতেই পরিলক্ষিত হয়।
১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ফান্ড এ সিরিজ আবিষ্কার করেন। এক্ষেত্রে ইলেকট্রন হাইড্রোজেন পরমাণুর উত্তেজিত অবস্থায় তার পঞ্চম শক্তিস্তর ব্যতীত যেকোনো উচ্চতর শক্তিস্থর হতে পঞ্চম শক্তিস্তর এ আগমন করে। হাইড্রোজেন বর্ণালীর অতি অবলোহিত এলাকায় রেখাগুলো পরিলক্ষিত হয়।
বিজ্ঞানী কলিন হামফ্রেস এ সিরিজ আবিষ্কার করেন। এক্ষেত্রে উচ্চতর যে কোন শক্তি স্তর থেকে ইলেকট্রন ষষ্ঠ শক্তিস্তরে আগমন করে। এখানেও অদৃশ্য অতি অবলোহিত বর্ণালি সৃষ্টি হয়।
টিউন টি যারা বুঝতে পারছেন তারা জোসস দিবেন অবশ্যই। আর বুঝতে অসুবিধা হলে টিউমেন্ট করতে ভুলবেন না। এতক্ষণ আমার টিউন টি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমি মো তানজিন প্রধান। ২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 91 টি টিউন ও 65 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো হারিয়ে যাই চিন্তার আসরে, কখনোবা ভালোবাসি শিখতে, কখনোবা ভালোবাসি শিখাতে, হয়তো চিন্তাগুলো একদিন হারিয়ে যাবে ব্যাস্ততার ভীরে। তারপর ব্যাস্ততার ঘোর নিয়েই একদিন চলে যাব কবরে।