সুধী পাঠক বৃন্দ আজকে টেকটিউনস এর মঞ্চে আমি আমার কলমে আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরব এক আলাদা ধরনের টেক কথা। বিজ্ঞান এবং বিশ্লেষণ এর সাথে আমাদের শ্রদ্ধেয় বিশ্বনবী হজরত মহঃ। মহান আল্লা তালা দ্বারা প্রদত্ত আসমানি কিতাব পবিত্র কুরান শরীফের কতগুলো আয়াতের উল্লেখ করে আপনাদের সামনে তুলে ধরব সেই সমস্ত টেক কথা।
পবিত্র কোরান শরীফে প্রাণী দেহের নির্মাণ নিয়ে বলা হয়েছে। প্রাণীদেহ জল দ্বারা নির্মিত হয়েছে। এর প্রমাণ তখন পাওয়া যায় যখন বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় খুঁজে পায় যে প্রাণী দেহের কোষ এর মধ্যে ৮০ % জল রয়েছে।
ভাবলে অবাক লাগে আরব দেশের মত শুষ্ক মরুভূমির দেশে। যেখানে জল সঙ্কট চরমে, সেই দেশের মানুষের মাথায় জীব দেহের নির্মাণ নিয়ে আরব দেশের মানুষের মধ্যে এই ধরনের চিন্তা আসে।
লোহা সাধারণ ভাবে খনি থেকে খনন কার্যের মাধ্যমে পাওয়া গেলেও। লোহা আসলে আমাদের পৃথিবী থেকে পাওয়া কোন নিজস্ব খনিজ সম্পদ নয়। আজ থেকে আরব বছর আগে পৃথিবী এবং উল্কা পিণ্ডের মধ্যে প্রবল সংঘর্ষের ফলে উল্কা পিণ্ড বিস্ফোরিত হয়। আর উল্কা পিণ্ডের এই টুকরো পৃথিবীতে এসে আছড়ে পড়লে তা মাটিতে মিশে যায়। আর আজকে আমরা সেই লোহাকে খনন কার্যের মাধ্যমে পরিশোধিত করে ব্যবহার করছি।
পবিত্র কোরানের ৫৭ঃ২৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে আমি লোহাকে পাঠিয়েছি সমগ্র মানব কল্যাণে ব্যবহারের জন্য।
আধুনিক বিজ্ঞানের দৌলতে আমরা আজকে সবাই জানি যে, সূর্য থেকে আগত অতি বেগুনি রশ্মি এবং প্রচণ্ড উত্তাপ জীব জগতের জন্য ক্ষতিকারক। পৃথিবীর উপরে থাকা বায়ুমণ্ডল এবং ওজন গ্যাসের লেয়ার এই বেগুনি রশ্মি এবং ক্ষতিকারক রেডিয়েশনের প্রকোপ থেকে আমাদিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এই ওজন লেয়ার না থাকলে সমস্ত প্রাণীকুল হয় ঠাণ্ডায় জমে কিংবা গরমে দাহ হয়ে পুড়ে যেত।
পবিত্র কোরানে আকাশ কে বোঝানোর জন্য আয়াত নং ২১ঃ৩২ এ বলেছেন। আমি আকাশের নির্মাণ করেছি তোমাদিকে রক্ষা করার জন্য।
পবিত্র কোরানের ৭৮ঃ৬৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে পাহাড় হল পৃথিবীর পিলার বা খুঁটি স্বরূপ। একটা খুঁটি বা পিলার আমাদের বাসাকে মজবুতি প্রদান করে। সেরকম পাহাড় ও আমাদের পৃথিবীর ব্যালেন্স কে বানিয়ে রাখে। আর পিলার স্বরূপ পাহাড় এর উপরি ভাগকে যতটা আমরা ভূমির উপরিভাগে দেখতে পায় ঠিক ততটা অংশ পাহাড়ের মাটির নিচেও থাকে।
বিখ্যাত জিওফিজিস্ট ফ্রাঙ্ক পরিশেষ তার লেখা বই The Earth এ বলেছেন। পাহাড়ের উপরের অংশ হিসাবে পাহাড় কে যতটা আমরা উপরে দেখতে পায়। ঠিক ততটা বা তার থেকে বেশি অংশ পাহাড়ের মাটির নিচে দাবানো থাকে। বিখ্যাত হিমালয় পর্বত মালা উচ্চতায় ৮, ৮৪৮ মিটার উঁচু হলেও, পৃথিবীর নিচে ভাসমান টেকটনিক প্লেটের আবিষ্কার হলে দেখা গেছে হিমালয়ের মাটির নিচে ১২৫ কি.মি. অবধি শিখর চলে গেছে।
যখন মহাকাশ বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়নি তার বহু বছর আগে। পবিত্র কোরান শরীফের ৫১ঃ৪৭ নং আয়াতে, আল্লা তালা বলেছেন। আমি আমার শ্রী জনাত্মক শক্তি দ্বারা এই ব্রহ্মাণ্ডের নির্মাণ করেছি। যা অনবরত নিরন্তর বেড়ে চলেছে।
বিখ্যাত বিজ্ঞানী Sthepen Hawking তার লেখা বিখ্যাত বই A Brief History Of Time এ লিখেছেন। মহা ব্রহ্মাণ্ডের নির্মাণ শূন্য থেকে হয়েছে। (আর মহান আল্লা তালা হল আমাদের নিরাকার সত্তা। ) যাকে বিগ ব্যাং থিওরি বলা হয়েও থাকে। আর এই থিওরি অনুযায়ী ব্রহ্মাণ্ড নিরন্তর প্রসারিত হয়ে চলেছে।
১৫১২ সালে বিজ্ঞানী নিকোলাস কোপারনিকাস সৌর মণ্ডল নিয়ে তার রিসার্চ সামনে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন সূর্য এক জায়গায় স্থির থাকে এবং আরও বিভিন্ন গ্রহ গুলো সূর্য কে তারা নিজে নিজেদের কক্ষপথে সূর্যকে ক্রমাগত প্রদিক্ষন করে।
কিন্তু গালিলিও দ্বারা দূরবীন যন্ত্রের আবিষ্কার হলে কোপারনিকাসের এই তত্ব ভুল বলে প্রমাণ হয়। প্রমাণ হয়ে যায় সূর্য স্থির নয়। সূর্য ও তার নিজের কক্ষপথে এক জায়গায় ঘুরতে থাকে।
পবিত্র কোরানের ২১ঃ৩৩ নং আয়াতে এই ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়। কোরানের এই আয়াতে আল্লা বলেছেন রাত, দিন, সূর্য, তারা আমি সৃষ্টি করেছি। কোরানের এই বানীকে শুরুতে বিজ্ঞানীরা ভুল ভাবত।
পবিত্র কোরানের ২৪ঃ৪৪ নং আয়াতে আল্লা তালা এক মহত্বপূর্ন তত্ব কে সামনে রেখেছেন। কোরানের এই আয়াতে বলা হয়েছে। সমুদ্রের গভীরতায় সবথেকে নিচে ঢেউ এর তরঙ্গ চলতে থাকে। তার উপর রয়েছে মেঘের ভেলা এবং তার উপর রয়েছে ঘন অন্ধকারের পরত। যেখানে মহান আল্লা তালার ইশারা ব্যাতিত আলো প্রবেশ করতে পারেনা।
কোরানের দেওয়া সমুদ্রের নিচে চলা তত্ব শুধু এই জন্যই প্রশংসিত নয়। আধুনিক বিজ্ঞানের দৌলতে এও প্রমাণিত যে, কোরানের এই তত্ব সত্যি যে সমুদ্র গর্ভে ১, ০০০ মিটার নিচে রয়েছে ঘন ঘোর অন্ধকার। যেখানে সূর্যের আলো পৌছাতে পারেনা। সূর্যের আলো শুধু সমুদ্র তলে ৭০ মিটার পর্যন্ত যেতে পারে, তার নিচে যেতে পারেনা।
হজরত মহঃ এর সময়ে আবু জাহিল নামের একজন নির্দয়ি অত্যাচারী শাসক ছিলেন। আল্লা তালা তাকে কোরানের ৯৬ঃ১৫ঃ১৬ নং আয়াতে বলেছেন। পাপী মানুষটি তার জাহিল ক্রিয়া কর্মে যদি লাগাম না টানে তাহলে তার মাথার অগ্রভাগ ধরে টেনে ঘঁশটিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
এখানে আল্লা মাথা বলতে আল্লা মানুষের মাথা কে বোঝায় নি। এখানে মাথা বলতে মাথার অগ্রভাগ মানে মানুষের ব্রেনের অগ্রভাগ কে বলা হয়েছে। মানুষের ব্রেনের অগ্রভাগে মানুষের চিন্তা এবং ভাবনা করার শক্তি বিকশিত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে ফ্রন্টাল লুবার বলা হয়ে থাকে।
এই ফ্রন্টাল লুব মানুষকে ভাল, মন্দ এবং চিন্তা ধারা করার জন্য প্রলুব্ধ করে। আর মানুষের দিমাগের এই ফ্রন্টাল লুব-ই মানুষ কে মিথ্যা বলার কাজকে কন্ট্রোল করে।
এখন বর্তমানে অনেক আধুনিক মেডিক্যাল যন্ত্রপাতির উন্নতি ঘটায় এই সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়েছে।
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে মানুষের ব্যাথা অনুভব কারী তন্তু বা কোষ মানুষের ব্রেনে থাকে। কিন্তু এখন প্রমাণিত হয়েছে ব্যাথা অনুভবকারী তন্তু মানুষের ব্রেনে নয়। মানুষের চামড়া/ত্বকে থাকে। আর এই চামড়াতে থাকা কোষ ছাড়া ব্যাথা অনুভব করা সম্ভব নয়।
এই সম্বন্ধে কোরানের ৪ঃ৫৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে। যে ব্যক্তি আমার দেওয়া কোরানের বানীকে অবমাননা করবে তাকে জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করে দেওয়া হবে। আগুনে তার চামড়া ঝলসে গেলে, নতুন করে তাকে চামড়া দেওয়া হবে নিরন্তর ব্যাথা অনুভব করার জন্য।
আমার কলমে আমি আপনাদিকে জানাতে চায়। যতই আমরা প্রযুক্তির দৌলতে এগিয়ে যায়। এটা ভুলে যেলে চলবে না আল্লা তালা হলে পরম শক্তিমান। তার ইশারা ব্যাতিত আমাদের প্রযুক্তির দৌরে যতই আগে যাওয়ার চেষ্টা করি। তার ইচ্ছে না থাকলে আমাদের শত চেষ্টা ব্যার্থ হবে। তাই বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির সাধনা অবশ্যই করুন। তবে আল্লা কে অবমাননা করে কখনোই নয়।
-
এরকম নানা রকম জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের আরও গল্প পড়ার জন্য অনুরোধ করবো আমার ওয়েবসাইটটিতে ভিসিট করার জন্য এখানে ক্লিক করে।
আমি কৃষ্ণ সাহু। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 4 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।