কচ্ছপ গতির কম্পিউটারকে আগের গতির চেয়েও শত গুণ বেশি গতি সম্পন্ন করতে এস.এস.ডি ‘র বিকল্প নেই। দীর্ঘদিন কম্পিউটার চলতে চলতে অনেক স্লো হয়ে যায়। ল্যাপটপ স্লো হওয়ার পিছনে এই প্রচলিত হার্ডডিস্ক দায়ী। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য, আমরা সচরাচর RAM বৃদ্ধি করে থাকি। এতে খুব একটা উপকার হয় না বলেই চলে। তো চলুন দেখা যাক, কিভাবে যে কোন কম্পিউটার বা ল্যাপটপকে বর্তমানের তুলনায় শত গুণ বেশি ফাস্ট করা যায়।
কচ্ছপ গতির কম্পিউটার ও ল্যাপটপ কে করে ফেলুন সুপার ফাস্ট এস.এস.ডি দিয়ে
What is SSD? | Why use SSD? | The difference between SSD and hard disk
এস.এস.ডি কি?
প্রথমত আমরা জানব এস.এস.ডি কি? এটা কি হোল এক প্রকার স্টোরেজ ডিভাইস বা হার্ড ডিস্ক। তবে হার্ড ডিস্ক এ স্পিনিং ডিস্ক থাকে কিন্তু SSD তে কোন ধরনের স্পিনিং ডিস্ক থাকে না, এতে থাকে মেমোরি চিপ। মেমোরি চিপ বলতে আমরা বুঝি যে, বর্তমানে স্মার্ট ফোন গুলোতে, যে ইনটারনাল ও এক্সটারনাল মেমোরি কার্ড দেখি এগুলোই মুলত মেমোরি চিপ। তবে মেমোরি কার্ড থেকে SSD আরও অনেক বেশি উন্নত প্রযুক্তি। এর রিড-রাইট করার ক্ষমতা প্রচলিত হার্ডডিস্ক এর তুলনায় অনেক বেশি ও পাওয়ারফুল।
এবার আসুন জেনে নাই নরমাল Hard Disk কিভাবে কাজ করে এবং SSD কিভাবে কাজ করে।
হার্ডডিস্ক এর ভেতরে একটি অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় এর চাকতি থাকে যেখানে সকল ডাটা ম্যাগনেটিক হেড এর মাধ্যমে রাইট করা হয়ে থাকে। সমস্যা হলো, যেহেতু ডিভাইসটি মেকানিক্যাল, তাই সময়ের সাথে সাথে এর পারফর্মেন্স কমতে থাকে। ম্যাগনেটিক প্লেটে প্রচুর পরিমাণ ধুলাবালি জমে যায় এর ফলে স্পিড কমতে থাকে।
এদিকে SSD তে কোন মেকানিক্যাল পার্ট নেই, পুরোটাই ইলেক্ট্রনিক। এর ভেতরে Nand Flash মেমোরি থাকে। এই টেকনোলজি র্যামেও ব্যবহার করা হয়, তবে র্যামে যেটা ব্যবহার হয়, তাকে বলা হয়
Volatile Memory । মানে অস্থায়ী মেমোরি, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সাথে সাথেই সমস্ত ডাটা মুছে যায়। কিন্তু এস এস ডি’র ক্ষেত্রে তা হয় না। কারন এতে ব্যবহার করা হয়েছে নন – ভলাটাইল মেমরী। এর ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ চলে গেলেও ডাটা যেভাবে আছে সেভাবেই থেকে যায়।
Non Volatile Memory এর বাস্তব উদাহরন হোল স্মার্ট ফোন গুলোর মেমোরি কার্ড।
SSD যেহেতু, ফ্ল্যাশ বেজড মেমোরি তাই ম্যাগনেটিক হেড এর বার বার মুভ করার ঝামেলায় যেতে হয়না। ফলে হার্ডডিস্ক এর তুলনায় SSD অনেক বেশি দ্রুতগতির হয়ে থারুন
আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে ভাই, আপনি তো HDD- Hard Disk Drive ব্যবহার করছেন, তাহলে আবার SSD- Solid State Drive কেন দরকার? এক্ষেত্রে আমি বলব, যদি আপনি ভিডিও এডিটিং এর কাজ করেন তাহলে আপনার অনেক গতি সম্পন্ন স্টোরেজ ড্রাইভ দরকার হবে কারন, আপনি যখন ভিডিও রেন্ডারিং করবেন তখন হার্ডডিস্ক গতি ভাল থাকলে খুব দ্রুত ভিডিও রেন্ডারিং হবে। আবার, আমরা যারা ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর পাশাপাশি গেম খেলে থাকি সেক্ষেত্রে যদি আমাদের স্টোরেজ ড্রাইভ যদি বেশি গতিসম্পন্ন হয়, তাহলে গেম প্লে হবে আরও স্মুথ কোন ফেমডোপ হবে না। আর আপনার ওয়েব পেজ ও সফত্লটওয়্যার গুলো তারাতারি লোড নিবে।
HDD এর সমস্যা অনেক, সুবিধাও অনেক। অল্প টাকায় অনেক বেশি Storage Drive পাওয়া যায়। হার্ডডিস্ক অনেক দিন ব্যবহারের পরে যদি সঠিক ভাবে মেইনট্যানেন্স না করা হয়, এক্ষেত্রে হার্ডড্রাইভ এর ভিতর ধুলাবালি জমে জমে স্লো হয়ে যায়। ডিফ্রাগমেন্ট বা অপটিমাইজ করতে হয়। কম্পিউটার স্লো হয়ে গেলে অপারেটিং সিষ্টেম বুট হতে সময় নিয়ে থাকে, জার ফলে Windows সহ সফটওয়্যার গুলো run হতে অনেক বেশি সময় নেয়। কখুন কখুন মনে হয়, যদি HDD এর ভালো অল্টারনেটিভ থাকতো? হা অবশই রয়েছে, আর সেটা হল SSD। এটা মুলত ডাটা স্টোরেজ এর নতুন জেনারেশন। তবে এস এস ডি’র দাম তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। আমার মতামত হল আপনি শুধু উইন্ডোজ ও সফটওয়্যার রান করার জনই SSD 120GB Storage ব্যবহার করতে পারেন। আর ডাটা সংরক্ষণের জন্য HDD ব্যবহার করুন। এতে বর্বেতমানের তুলনায় শত গুণ বেশি গতি পাবেন আপনার কম্পিউটারে।
SSD – Storage Collections
SSD আর HDD এর মধ্যে পার্থক্য, পূর্বের আলোচনা থেকে অনেকটাই বুঝতে পেরেছেন। তারপর তুলনা করে বুঝানর চেষ্টা করছি।
1. Speed
প্রচলিত সাধারন Hard Disk এর তুলনায় SSD বহু গুণ বেশি ফাস্ট।
2. Bandwith Speed Test
Laptop HDD — 125 GBite/Secend
Desktop HDD — 200 GB/S
আর SSD — 500 GB/S
3. Input/Output Parformance
Laptop HDD — 100
Desktop HDD — 300
আর SSD — 1 Lakh
প্রতি সেকেন্ড কি পরিমান Input/ Output নিয়ে কাজ করে Storage Drive। তার উপর নির্ভর করে, কতটা ফাস্ট হবে কম্পিউটার।
4. Response Time
Laptop HDD — 12 mili-scecand
Desktop HDD — 6 mili-scecand
আর ( SSD) — 0.5 mili-scecand
প্রতিটা Input/Output এর জন্য Device Controlar Response Time -এ কতো সময় লাগে। মনে রাখবেন, Response Time যতো কম হবে, ততো ভালো।
এস এস ডি ‘র আরও কিছু ভালো দিক হলঃ
SSD সেটাপ
SSD সেটআপ করা খুবি সহজ। দোকান থেকে বা অনলাইন থেকে একটি এস এস ডি কিনে এনে হার্ডডিস্ক এর পাওয়ার কেবল লাগিয়ে দিন এবং মাদার বোর্ড এর সাটা কেবল লাগিয়ে দিন ব্যাস কাজ শেষ। আরও সহজ করে যদি বলি, হার্ডড্রাইভে যে দুইটা কেবল লাগানো আছে, সেই ভাবেই এস এস ডি তে লাগিয়ে দিন। ব্যাস খেল খতম।
হার্ডডিস্ক এ যে দুটি ক্যাবল লাগান আছে Same আরও একটি ক্যাবল আছে সেটা লাগিয়ে দিবেন। আর অতিরিক্ত একটা সাটা ক্যাবল কিনে নিবেন। যদি HDD ও SSD একসাথে ব্যবহার করতে চান। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যে, SSD’র সাটা কেব্ল যেন মাদার বোর্ড এর প্রথম পোটে লাগান হয়। আর HDD এর সাটা কেব্ল দ্বিতীয় পোটে লাগান হয়। এক্ষেত্রে কম্পিউটার রান হবে SSD থেকে আর চেষ্টা করবেন SSD তে (উইন্ডোজ বা লিনাক্স বা উবান্ত), ইন্সটল করার সময় আপনার HDD থেকে উইন্ডোস ডিলিট করে দিবেন এর পর HDD এর সাটা কেবল খুলে রাখুন। উইন্ডোজ ইন্সটল কমপ্লিট হলে এবার HDD এর সাটা কেবল লাগিয়ে রাখুন। ব্যাস, কাজ শেষ, এর ফলে আপনার কম্পিউটার রকেট গতিতে চলবে।
এই আর্টিকেল লেখা কালীন সময় পর্যন্ত সর্বোচ্চ্য মার্কেটে এস এস ডি’র সাইজ ১.২ টেরাবাইট পর্যন্ত অ্যাভেইলেবল আছে। তবে শুধু উইন্ডোজ, সফটওয়্যার ও গেম ইন্সটল এর জন্য এবং ভাল পারফরমেন্স এর জন্য ১২৮ গিগাবাইট কিংবা ২৫৬ গিগাবাইট এর এস এস ডি কেনে পারেন।
কম দামের মধ্যে ১২৮ ও ২৫৬ গিগাবাইট এর এস এস ডি’র কিছু Callection দেওয়া হল।
আপনার কম্পিউটার কে সুপার ফাস্ট করতে হলে RAM এর পাশাপাশি ভাল SSD লাগাতে হবে। SSD সব ধরনের কম্পিউটার, ল্যাপটপ এ ব্যবহার করতে পারেন। SSD লাগানর আগের পারফরমেন্স ও পরের পারফরমেন্স আনালাইসিস কলেই বুঝতে পারবেন। সাধারন কাজ গুলো HDD ও SSD সাথে তুলনা করলে দেখতে পাবেন যে হার্ডডিস্ক এর তুলনায় এস এস ডি ১৬০% বেশি কাজ করছে। নিচের ভিডিও তে লাইভ দেখান হল।
আশা করি এস এস ডি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিতে পেরেছি। সবাই ভালো থাকবেন এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
সৌজন্যঃ Apon Academy
আমি ইঞ্জিনিয়ার জসিম উদ্দিন। Head Of Operation, Apon Academy, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সিনিয়ার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার প্রিমিয়াম গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রি এবং আপন একাডেমীর সহ প্রতিষ্ঠাতা। আমি আইটি বিষয়ে পড়া শোনা করেছি (MSc in IT ) জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে । আমার আইটি বিষয়ে লেখা লেখি করতে ভাল লাগে, তাই টেকটিউনে এর পাশাপাশি AponAcademy.Com তে নিয়মিত আইটি ও সম-সাময়িক বিষয় নিয়ে লিখে থাকি। ধন্যবাদ...