আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি খুব ছোট ও সহজ একটি ম্যাজিক । ম্যাজিকটি ছোট হলে কি হবে প্রকৃতিতে এর রয়েছে অসাধারণ প্রয়োগ। তবে চলুন আমরা মাজিকটি নিয়ে আলোচনা করি -
বিষয় : পানির ধারাকে বাঁকানো ।
সতর্কতা : পরীক্ষাটি অবশ্যই শুষ্ক আবহাওয়ায় করতে হবে । আর্দ্র আবহাওয়ায় পরীক্ষাটি ভালভাবে নাও হতে পারে ।
এক কথায় এ পরীক্ষায় যা ঘটে তা হল স্থির বিদ্যুৎ এর কাজ । যখন চিরুনী দিয়ে চুল আচঁড়ানো হয় তখন ঘর্ষণের ফলে এই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় । চলুন এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া যাক -
প্রত্যেকটি বস্তুটি অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরমানু নিয়ে গঠিত । আবার পরমানুর মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কনিকা । এসব কনিকার মধ্যে রয়েছে - ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন ইত্যাদি । ইলেকট্রন ঋনাত্মক চার্জ ও প্রোটন ধনাত্মক চার্জ বিশিষ্ট এবং নিউট্রন চার্জবিহীন । একটি পরমানুতে সমান সংখ্যক ইলেকট্রন ও প্রোটন থাকায় পরমানুটি সামগ্রিকভাবে চার্জ নিরপেক্ষ হয় । কিন্তু যখন এক পরমানু থেকে আরেক পরমানুতে ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয় তখন তা চার্জিত হয়। যে পরমানু ইলেকট্রন গ্রহণ করে সে হয় ঋণাত্মক চার্জ বিশিষ্ট আর যে পরমানু থেকে ইলেকট্রন যায় তা ধনাত্মক চার্জ বিশিষ্ট হয় । এই যে ইলেকট্রনের স্থানান্তর এর ফলেই বিদ্যুতের উৎপত্তি ।
যথন চিরুনী দিয়ে শুকনা চুল আচড়ানো হয় তখন ঘর্ষণের ফলে মাথার চুল থেকে ইলেকট্রন চিরুনীতে যায় ফলে চিরুনী ঋণাত্মক চার্জ বিশিষ্ট হয় এবং মাথার চুল ধনাত্মক চার্জবিশিষ্ট হয়। সমধর্মী চার্জ পরস্পরকে বিকর্ষণ করে এবং বিপরীতধর্মী চার্জ পরস্পরকে আকর্ষণ করে।
অপরদিকে পানির ধারার মধ্যে পানির যে অণু থাকে তা চার্জ নিরপেক্ষ । এর মধ্যে ধনাত্মক চার্জ ও ঋণাত্মক চার্জ ইভয়ই থাকে । যখন ঋণাত্মক চার্জ বিশিষ্ট চিরুনীকে পানির ধারার নিকটে ধরা হয় তখন চিরুনীর কাছের পানিতে অবস্থিত ঋণাত্মক চার্জ বিশিষ্ট ইলেকট্রনগুলো বিকর্ষিত হয়ে দূরে চলে যায় এবং ধনাত্মক চার্জ চিরুনীর ঋণাত্মক চার্জ দ্বারা আকর্ষিত হয় । ফলে পানির ধারা চিরুনীর দিকে বেঁকে আসে ।
চিরুনী দিয়ে যখন চুল আচড়ানো হয় তখন ইলেকট্রন জাম্প করে চুল থেকে চিরুনীতে আসে । এইসময় এক ধরনের আলোর ঝলকানি দেখা যায় । একে বলা হয় স্পার্ক । ইলেকট্রনের জাম্প দেয়ার কারনে স্পার্ক হয় । অন্ধকার ঘরে আয়নার সামনে দাড়িয়ে প্লাস্টিকের চিরুনী দিয়ে শুকনা চুল আচড়ালে স্পার্ক দেখা যায় । আকাশে যখন মেঘ জমে তখন মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে স্থির বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় । তখন ইলেকট্রন মেঘের এক স্তর থেকে আরেক স্তরে জাম্প করার সময় স্পার্ক বা বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি হয় । আর এটাই হল বিদ্যুৎ চমকানো । এভাবে মেঘের স্তরের নীচে ঋণাত্মক চার্জ জমা হতে থাকে এবং যখন ভূপৃষ্ঠের ধনাত্মক চার্জ এবং মেঘের স্তরের ঋণাত্মক চার্জের মধ্যকার ব্যবধান অনেক বেড়ে যায় তখন প্রচন্ড আলোর ঝলকানি সহ ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে । এটাই হল বজ্রপাত ।
আশা করি এই ছোট্ট এবং সহজ একটি ম্যাজিকের মাধ্যমে প্রকৃতির একটি অসাধারণ ঘটানাকে বুঝতে পারছেন । ধন্যবাদ ।
আমি ছাত্র ও শিক্ষক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 54 টি টিউন ও 1010 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
তুমি যদি শিক্ষিত হও,অশিক্ষিতকে আলো দেবে। না পারলে তুমি অহংকার করবেনা,তুমি দূর্ব্যবহার করবেনা,বিনয়ের সঙ্গে কথা বলবে,তুমি শিক্ষিত বলেই এ তোমার অতিরিক্ত দায়।
জটিল হয়েছে স্যার ।