এক নজরে দেখে নিন বিশ্বের সবচেয়ে কালো বস্ত!

আমরা সবাই হয়তো অনেক ধরনের বস্তুর কথা জানি। কিন্ত বিশ্বের সবচেয়ে কালো বস্তু টি সম্পর্কে কিছু জানিনা বা চিনিনা। এই কালো বস্তু টি হলো ভেন্টাব্লাক (vantablack)। এখন আসা যাক এর পরিচিতি তে- ভেন্টাব্লাক(vantablack)  শব্দ টি শুনতে কিছুটা অলৌকিক লাগলেও এটি আসলে ভারটিকালি এলাইন্ড ন্যানো টিউবস এ্যরেইস-ব্লাক(vertically alighned nano tubes arrays-black)এর পুর্ন রুপ।

এটিকে ডেভেলপ করা হয় সারেয় ন্যানোসিস্টেম, যুক্তরাজ্য তে। এটিকেই বর্তমানে সবচেয়ে কালো বস্তু হিসেবে ধরা হয়। এটির উপরে পড়া প্রায় ৯৯.৯৬% আলো শোষন করে। আসলে রঙ পরিবেশ এর কোনো উপাদান নয় এটা আসলে আমাদের মানবিক ধারণা। এই রঙ এর প্রকারভেদ আমরা তখনই দেখি যখন তা আমাদের চোখের এক বিশেষ অংশে এসে পরে যাকে রড বলা হয়।

রঙ কে যদি কিরন ও শোষন দ্বারা বোঝানো হতো তাহলে সাদা ও কালো কে রঙ বলা যেতো না। একটি বস্তু কে তখনই কালো বলা হয় যখন তা তার উপরে পরা সব আলোকে শোষণ করে নেয়। আর একটা বস্তু কে ঠিক তখনই সাদা বলা হয় যখন তা তার উপর পরা সব আলোকেই প্রতিফলিত করে।

ভেন্টাব্লাক এতোটাই কালো যে এটি এর উপরে পড়া যে কোনো আলোকেই প্রতিফলিত হয়ে ফিরে যেতে দেয়না। টেডিংটন এর জাতীয় বিজ্ঞান অনুশদ এ তারা দেখেছেন যে এই ভেন্টাব্লাক প্রায় ৯৯.৯৬৫% এর উপর আপোতিতো আলো কে শোষোন করে নেয় এবং শুধু মাত্র ০.০৩৫% আলো কে প্রতিফলিত করে। যেটা সত্যিই অসাধারণ। এই ভেন্টাব্লাক কোন আলো কে তো প্রতিফলিত করেই না তার সাথে যদি এর উপর কোন অতি বেগুনি রশ্মি পড়ে তবে এটি সেটাকেও শোষণ করে নেয়। তাহলে মুল কথা হলো এটিকে এতো শক্তিশালী বানালো কি?
একটি ন্যানো-টিউব এর জংগল!
এই ভেন্টাব্লাক কে মুলত বানানো হয়েছে অজস্র ন্যানো-টিউব কে উলম্ভভাবে একের উপর এক সাজিয়ে। সরেয় ন্যানো-সিস্টেম এটাকে বর্ণনা করেছে  মিলিয়ন ঊর্ধমুখী গাছের দ্বারা ভর্তি জঙ্গল এর সাহায্যে। এই একেকটা ন্যানো-টিউব প্রস্থে ২০ ন্যানোমিটার এবং দৈর্ঘ্যে ১৪-২০ ন্যানোমিটার। এটি একটি মানুষের চুলের চেয়ে প্রায় ৩৫০০ গুন ছোট। একটি ১×১ বর্গসেন্টিমিটার  জায়গার মধ্যেই প্রায় ১ বিলিয়ন টিউব রাখা যাবে। যখন এই ঘন জঙ্গল এর মধ্যে কোন আলো প্রবেশ করে তখন এই টিউবগুলো নিজেদের মধ্যেই তাকে প্রতিফলিত করে নেয়। কিন্ত এই আলো বাইরে প্রতিফলিত হয়ে আসেনা কারন এই টিউব গুলো এদের প্রস্থ এবং এদের মধ্যকার জায়গার চেয়ে বেশি লম্বা। যেমন বলা যায় ২-৩ কিলোমিটার লম্বা  জঙ্গল এর মধ্যে আলো পড়লে তা সব জায়গায় প্রতিফলিত হয়ে জঙ্গল এর নিচে পৌছানো প্রায় অসম্ভব। বস্তুগত ভাবেই এই ভেন্টাব্লাক আলো তে রাখলে বড়ো হয় এবং এটা ৪৩০° তাপমাত্রায় পুড়ে যায়।


ভেন্টাব্লাক বস্তু!
এর ভিন্ন শারীরিক গঠনের কারনে এর উপরে পড়া আলো তাপে রুপান্তর ঘটে। আগে বলাই হয়েছে যে এটি ৯৯.৯৬% আলো প্রতিফলিত করে, যে কারনে এর শক্তির মান প্রচুর। এই ভেন্টাব্লাক কে মুলত বানানো হয়েছিল স্যাটেলাইট এ ব্যবহার এর জন্য;যাতে এটি সুর্যের আলোর শেষ বিন্দু কেও শুষে নিতে পারে! পরে এই তাপ কে স্পেসক্রাফ্ট  এর শক্তি উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

Related: বিশ্বের সবচেয়ে সাদা বস্ত!

এর অতি উচ্চ মাত্রার আলোক শোষন ক্ষমতা স্যাটেলাইট এর উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরা, সেন্সর এবং ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি কেও অনাকাঙ্ক্ষিত আলোক শক্তি থেকে রক্ষা করে। একে সব পরিবেশে ভালোভাবে/  বেশি ব্যবহার যোগ্য করে তোলার জন্য বিজ্ঞানিরা একে নমনিয়, তাপ-প্রতিরোধক, এবং কম্পন প্রতিরোধক করার প্রচেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এর ডিজাইনার ও শিল্পীরা এর সম্মোহনী কালো রঙ দিয়েছেন এটির অন্য বস্তু কে মন্ডিত করার জন্য। যাতে এটি কোন বস্তু কে ঢেকে দিলে তার উপর অন্যের চোখের ভুল তৈরি করায়। এমনকি এটার ছায়ার অভাবের কারনে এর ত্রিমাত্রিক আবরন কেও দ্বিমাত্রিক দেখায়। এর গোলাকার চাদরের কারনে এর এক কোনার দিক ছোট গর্তের মতো দেখায়। আপনি যদি আপনার ঘরে ভেন্টাব্লাক কে দেয়ালচিত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনি পারিপার্শ্বিকতা ও সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলবেন। এই সম্মোহনী অন্ধকারে যখন আপনি তাকাবেন তখন এটি আপনাকে জোর করবে এর দিকে আপনার চাহনী রাখতে, ”আপনি এটির আলোকগুহাতে যতো চাহনী রাখবেন এটির আলোক গুহা ততোই আপনার দিকে চাহনি রাখবে”  

ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য আমি ও আমার B L O G কে সময় দেয়ার জন্য।

Level 1

আমি সামিউল শুভ। President, https://www.ascorjo.com বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 15 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।

সাফল্য শান্তিতে হয় না,কষ্টে হয় । আমি সেই কষ্টের পিছনেই ছুটি । মাঝে মাঝে ভালোবাসা গুলো টেক এন্ড গ্যাজেটস এর ওপরও হয়ে থাকে ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস