গতি গতি গতি..
সবাই চায় গতি, এটা গতির যুগ, গতি না থাকলে পিছিয়ে পড়বেন! আপনি বুঝতে পারলেন, কেন আমি গতি নিয়ে কথা বলছি? আমি পৃথিবীর দ্রুততম পরিবহন ব্যবস্থা- Hyperloop নিয়ে কথা বলছি। এই ব্যবস্থা পরিবহন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এটা নাকি বিমানের থেকে বেশি গতি কারণ ট্রাফিক নেই। এছাড়াও পারবে আপনাকে কম খরচে, কম সময়ের মধ্যে গন্ত্যবে পৌঁছে দিতে। এটাই তো চান। তাই নয় কি! এখনকার ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির এটাই চাহিদা। কিন্তু বেশিরভাগের কাছে এটা সাইন্স ফিক্শন ছাড়া কিছুই না! যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটার বাস্তবায়ন হয়েছে। তথাপি সবাইকে ভুল প্রমান করতে এখনো অনেক পথ পেরোতে হবে।
পারবে কি Hyperloop? এটাই বিলিয়ন ডলার প্রশ্ন।
আসুন তাহলে দেখেই নিন না যদি এই বাধাগুলো পেরোতে পারে তাহলে কি হবে! একটু দেখে নিতে ক্ষতি কি!
আসল ঘটনায় আসার আগে Hyperloop সম্পর্কে একটু জানাতে চাই।
কেনই বা এটাকে পঞ্চম পরিবহন ব্যবস্থা বলা হয়? এবং এটা কিভাবে কাজ করে?
Hyperloop (হাইপারলুপ) এক ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা। পরিবহন ব্যবস্থার কথা বলতে গেলে - এখন পর্যন্ত ৪ ধরনের আছে।
আর এটি -পঞ্চম পরিবহন ব্যবস্থা। অনেকে এটাকে ট্রেন ও বলে।
সর্বাধিক গতি ৭৬০ মাইল প্রতি ঘন্টা। বাণ্যিজিক বিমান এবং বুলেট ট্রেন থেকেও বেশি।
এই ব্যবস্থায় কতগুলি টিউব নিজেদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে একটি লম্বা ট্র্যাক তৈরি করে। এই ট্র্যাকের ভেতর দিয়ে পড /ক্যাপসুল চলাচল করে। এই পড চলে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক মোটর দ্বারা। এই পডটিকে ম্যাগনেটের দ্বারা ওঠানো হয়, যাতে কোনো ঘর্ষণ না হয়। এর ফলে পডটি গতি পায়। যখন পডটি চলে, তখন নিম্ন বায়ুচাপ তৈরি হয় এবং পডটি যত আগে যাবে তত বায়ু সংকোচন হতে থাকবে। তার কারণে পডটির গতি আস্তে আস্তে কমে যায়।
তো বায়ুকে বাইরে বের করে দেওয়ার জন্য কম্প্রেসর ফ্যান পডের সম্মুখে লাগানো থাকে এবং এই ফ্যানের দ্বারা বায়ূ পডের পিছনের দিকে এয়ার বিয়ারিং দিয়ে বেরিয়ে যায়।
টিউবগুলো দাঁড়িয়ে থাকে কতগুলো স্তম্বের উপর, সেখানে কতগুলো ফুটপ্রিন্ট আছে। বিশেষ করে এই ফুটপ্রিন্টগুলোর নমনীয়তা থাকার কারণে যত বড় ভূমিকম্পই হোক না কেন স্তম্ব ভেঙে পড়বে না।
আর পাওয়ারের সংকট থেকে বাঁচার জন্য, টিউবের উপরে থাকা সোলার প্যানেল পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে থাকে মোটরকে।
শুধু এটাই না
টিউব থাকার জন্য বন্যা এবং তুষারপাতের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
সমালোচকরা বলেছে, গতি বেশি থাকার ফলে যখন যাত্রীরা ভ্রমণ করবে তখন G - ফোর্সের জন্য অসুবিধা বোধ করতে পারে - বমি বমি ভাব আসতে পারে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়াররা বলছে, হাইপারলুপকে আধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা বানানো হয়েছে। এই প্রযুক্তিটি Boeing -747 ব্যবহার করা হয়, যেখানে G -ফোর্সকে সহ্য করার ক্ষমতা আছে। তাছাড়া, এখানে চড়ার অভিজ্ঞতা কোনো লিফটে/যাত্রীবাহী বিমানে চড়ার মতো।
এবং ট্রেনটিতে কোনো ড্রাইভার থাকবে না, এটি নিজেই চলবে। মানুষের দ্বারা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
পডটি যখন চলবে তখন টিউবের বাইরে ট্রাক চলার মতো শব্দ শোনা যাবে।
এমন কি আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সচরাচর চলা বুলেট ট্রেনগুলোর পাওয়ারের দরকার পুরো ট্রাকে থাকে, কিন্তু এখানে কিছু নির্দিষ্ট অংশে পাওয়ারের দরকার আছে।
এটাকে বানানো হয়েছে শুধুমাত্র গতির কথা মাথায় রেখে এবং সাথে বাকি ৪ টি পরিবহন ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে গিয়েছে।
উপরে যা যা বলেছি সেগুলো শুধু খাতায় কলমে হয়েছে, হাইপারলুপের বাস্তবায়নে আরো কিছু চ্যালেঞ্জ আছে।
➡ ১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম যাত্রা শুরু হবে, ট্র্যাক হবে ৬০০ কিলোমিটার সাথে ডায়ামিটার ২ মিটার এবং সারফেস এরিয়া ৪ মিলিয়ন মিটার স্কোয়ার। এই সারফেস এরিয়ার ওয়ান স্কোয়ার মিটারের উপর যদি ১০, ০০০ কিলোগ্রামের ফোর্স পরে, তাহলে সমগ্র ট্র্যাককে ৪০ বিলিয়ন কিলোগ্রামের ফোর্স সহ্য করতে হবে। এর কারণে টিউবগুলি বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ফেটে যেতে পারে।
যদি টিউবের গঠনে একটু ছোটোখাটো আপস করা হয়, তাহলেও বড় ধরনের সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে।
যদি টিউবে কোনো কারণে ছিদ্র হয়ে যায়, তখন বাইরের বাতাস টিউবের ভেতরে ঢুকে টিউবের শুন্যস্থান পূরণ করবে। এর ফলে টিউবের ক্ষতি হবে।
➡ ২. থার্মাল এক্সপানশনের কারণে টিউব ফেটে যেতে পারে। এখন আপনি হয়তো জানতে চাইবেন, থার্মাল এক্সপানশন কি? সাধারণত থার্মাল এক্সপানশন বলতে বুঝায়, ধরুন যদি টিউবের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, তো সেই সাথে টিউবের আয়তন, উচ্চতা এবং দৈর্ঘ্য বেড়ে যাবে।
তাছাড়া, বছরে সবসময় টেম্পারেচার বদল হতে থাকে, তার জন্য হিট পরিবর্তন হতে থাকে। এর প্রভাবে ব্রিজ সম্প্রসারণ এবং সংকুচিত হয়। এই সম্প্রসারণের হাত থেকে ব্রিজকে বাঁচাবার জন্য ইঞ্জিনিয়াররা নিয়ে আসলো থার্মাল এক্সপানশন জয়েন্ট যার ফলে ব্রিজের কাঠামোগত পরিবর্তন কিছুটা হলেও আটকানো যাবে।
আর তাছাড়া, থার্মাল এক্সপানশন জয়েন্টে স্টিল ব্যবহার করা হয়। স্টিল কেন ব্যবহার করা হয়? ভ্যাকুম তৈরি করার ক্ষেত্রে অন্য সব উপাদান থেকে স্টিল বেশি কার্যকর।
স্টিলের থার্মাল এক্সপানশন রেট -১৩ পার্টস পার মিলিয়ন পার ডিগ্রী সেলসিয়াস।
যেমন ধরুন, একটি জায়গার টেম্পারেচার ওঠানামা করে ০ থেকে ৪০ ডিগ্রীর মধ্যে। আর যদি, টেম্পারেচার সর্বাধিক ৪০ ডিগ্রী হয়, সেই ক্ষেত্রে থার্মাল এক্সপানশনের প্রভাবে ব্রিজের সম্প্রসারণ হবে ৩০০ মিটার।
এই সম্প্রসারণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য জয়েন্টগুলি ব্রিজের প্রত্যেক ১০০ মিটার পর পর লাগানো থাকবে আর এর ফলে ৬০০০ ভ্যাকুম সিলের প্রয়োজন পরবে। আর এতসব ব্যবস্থা নিয়েও হয়তো ব্যর্থ হতে পারে।
বায়ুমণ্ডলীয় চাপ এবং থার্মাল এক্সপানশন দুটোই ক্ষতি করতে পারে যথাক্রমে টিউব এবং ব্রিজের।
নিচে দেওয়া পরিবর্তন থেকে আন্দাজ করতে পারবেন, কতটুকু কার্যকর এই ব্যবস্থা!
➡ ১. হাইপারলুপের লক্ষ্য হচ্ছে দুটি দূরবর্তী সিটিকে সংযোগ করা, এর ফলে একটি মেগাসিটি নির্মাণ করার কাজ সহজ হয়ে যাবে। শুধুমাত্র এটাই না, একটি মেট্রোসিটির সাথে আরেকটি মেট্রোসিটির সংযোগ স্থাপন করতে এর অবদান থাকবে।
➡ ২. সাপ্লাই -চেন ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা আরো বৃদ্ধি পাবে।
➡ ৩. পণ্য পরিবহন ক্ষেত্রে, ভৌগোলিকগত দিক দিয়ে কয়েকটি গ্রুপ বানিয়ে পণ্য পৌঁছে দেওয়া যাবে। এর প্রভাব অনেক কিছুতে পড়বে যেমন ধরুন ইনভেন্টরি কস্ট কমে যাবে, সঠিক ব্যবহার হবে জাস্ট -ইন -টাইম স্ট্র্যাটেজির এবং অনেক জায়গাকে একই দিনে ডেলিভারি করার আওতায় নিয়ে আসা যাবে।
➡ ৪. সিটি এরিয়া বৃদ্ধি পেলে, বিভিন্ন সংস্থাগুলো তাড়াতড়ি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব এবং রিটেল স্টোরের সাথে।
➡ ৫. অর্থনীতিবিদরা ভাবছেন, কয়েকটি সংস্থা এবং কনসিউমারদেড় নিয়ে গ্রুপ বানিয়ে যদি সাপ্লাই-চেন প্লেয়ারদেড় মধ্যে সামঞ্জস্য মেলাতে পারা যায়, তাহলে নুতুন নুতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে পারবে সংস্থাগুলো, এই ক্ষেত্রে ভালো মুনাফা হতে পারে। এটাকে বলে এগলোমেরেশন পদ্ধতি। বিশেস্বগতা এবং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগলোমেরেশনর দ্বারা উপকার হতে পারে আঞ্চলিক অর্থনীতিতে এবং বৃদ্ধি পাবে শ্রমিকদের উৎপাদন ক্ষমতা। এটাকে সঠিকভাবে কার্যকর করতে গেলে গতির প্রয়োজনীতা আছে।
➡ ৬.
ইউরোপ এবং আমেরিকার মধ্যে পণ্যের দাম ভ্রমণের সময়ের উপর নির্ভর করে, এছাড়াও পণ্যর ধরন, সরবরাহকারীর জায়গা এবং কত সময় পর পর ডেলিভারি হচ্ছে এগুলোও পণ্যের দামের উপর প্রভাব ফেলে। সম্প্রতি, পণ্যের দাম ওঠানামা করার উপর কয়েকটি অধ্যয়ন হয়েছিল, তার মধ্যে ৫টি অধ্যয়নে পাওয়া গেছে, পণ্যের দাম গিয়ে ঠেকছে ৫ ডলার প্রতি ঘন্টা এবং ৩টি অধ্যয়নে পাওয়া গেছে পণ্যের দাম গিয়ে ঠেকছে ৫০ ডলার প্রতি ঘন্টা। এখানে গতি পণ্যের দামের ওঠানামা কমিয়ে আনতে পারবে।
➡ ৭. প্রথমে হাইপারলুপে ইনভেস্টমেন্ট বেশি লাগবে, কিন্তু পরে একটি বুলেট ট্রেনের অপারেটিং মূল্যের ২/৩ ভাগ কম পড়বে।
➡ ৮. চলুন তুলনা করি। টিকিটের দামের উপর।
Investopedia রিপোর্ট অনুযায়ী, ইলন মাস্ক এর হিসেবে হাইপারলুপ বানাতে ৬ -৭.৫ বিলিয়ন ডলার খরচা পড়বে। লস এঞ্জেলেস থেকে সান ফ্রান্সিকো পর্যন্ত ৩৫০ মাইল ভ্রমণ করবে ৩৫ মিনিটে এবং প্রত্যেক ৩০ সেকেন্ড পর পর একটি টিউব ২৮ টি যাত্রী নিয়ে যেতে পারবে। তাহলে বছরে ৭.৪ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম হবে। টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ২০ ডলার প্রতি যাত্রী। আর রাজস্ব আয় হবে ৩০০ মিলিয়ন ডলার।
এবার আসি বুলেট ট্রেনের কথা।
যদি বুলেট ট্রেন লস এঞ্জেলেস থেকে সান ফ্রান্সিকো যায়। তাহলে সময় লাগবে ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট। এই প্রকল্পে খরচ হবে ৭৭ বিলিয়ন ডলার। টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ৮০ ডলার প্রতি যাত্রী।
আর বিমান যদি ধরি ১০৫ ডলার প্রতি যাত্রী।
➡ ৯. একবার তুলনা করা যাক। এনার্জি খরচ প্রতি যাত্রী
মাস্কের হিসেব অনুযায়ী, হাইপারলুপ - এনার্জি খরচ ৫০ MJ প্রতি যাত্রী (লস এঞ্জেলেস - সান ফ্রান্সিকো), বুলেট ট্রেন - ৮০০ MJ র একটু বেশি এবং বিমান - ১০০০ MJ র একটু বেশি পড়বে।
এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি, হাইপারলুপ বিমান থেকে ৫-৬ গুণ বেশি খরচ বাঁচাতে সক্ষম। আর রেল থেকে ২-৩ গুণ বেশি.
আবার ও তুলনা করছি.বিরক্ত হচ্ছেন কি?
➡ ১. লন্ডন থেকে এডিনবার্গ নেবে ২৯ মিনিট, সময় বাঁচবে ২৩১ মিনিট। রাজধানীতে কম সময়ে পৌঁছে দিতে পারলে, বৃদ্ধি পাবে চাকরির সুযোগ এবং আশাবাদী প্রভাব পড়বে ট্যুরিজমে।
➡ ২. শুধু তাই না, সবাই সমানভাবে শিক্ষার সুযোগ - সুবিধা নিতে পারবে। দেশের সব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কম। অনেকে চাইলেও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে না, কারণ অনেকে দূরে যেতে চায় না অথবা খরচ বেশি পড়বে।
তো যাত্রার সময় কম লাগার ফলে, অনেকে নিজের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে।
➡ ৩. সাথে হাউসিং ক্রাইসিস এর সমাধান হবে। রাজধানীতে বাড়ি ভাড়া এবং থাকা -খাওয়ার খরচ বেশি, কিন্তু নিজের শহরে কম.
➡ ৪.
বিজনেস ইনসাইডার পত্রিকায় লিখেছে, এমন কি! হাইপারলুপ বন্দরের টার্মিনালগুলোর ভূমিকা নিয়ে নিতে পারে, এর ফলে সমুদ্রের তীরবর্তী জায়গাগুলির ক্ষতি হবে না। এটি জলের ভিতর দিয়ে দুটি বন্দরের সংযোগ স্থাপন করবে।
➡ ৫. সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সরকার হিসেব কষেছে, লন্ডন থেকে এডিনবার্গ যেতে বিমান কার্বন নিঃসরণ করে ২৬ কেজি প্রতি যাত্রী এবং রেল কার্বন নিঃসরণ করে ১৪ কেজি। এই পরিসংখ্যানের উপর নির্ভর করে ভবিষ্যৎদ্বাণী করা হচ্ছে, হাইপারলুপ কার্বন নিঃসরণ করবে ৪-৭ কেজি।
ভবিষ্যতে কার্বন নিঃসরণের প্রভাব কমবে।
কারণ পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ কার্বন নিঃসরণ।
নিচে দেওয়া হয়েছে পরীক্ষাগুলো, বুঝতে পারবেন প্রস্তুতি কতদূর.
প্রথম পরীক্ষা :- ২০১৭, মে মাসের এক বুধবারে নেভাদা ট্র্যাকে ইঞ্জিনিয়াররা প্রথম পরীক্ষা করলো, দেখা গেলো কেমন করে পডটি টিউবের মধ্যে দিয়ে ৫ সেকেন্ডে ৭০ মাইল প্রতি ঘন্টা গতিতে পৌছালো।
দ্বিতীয় পরীক্ষা :- জুলাই মাসে, Hyperloop One কোম্পানি পরীক্ষা করলো ৫০০ মিটার নেভাদা ট্র্যাকে, প্রোটোটাইপ পডটির শেষ গতি ১৯২ মাইল প্রতি ঘন্টা।
তৃতীয় পরীক্ষা :- এক রবিবার, জার্মানির ৩০ জনের একটি টিম জিতে নিলো SpaceX Hyperloop Pod প্রতিযোগিতা, তাদের পডটি ২০১ মাইল প্রতি ঘন্টায় পৌছালো। টিমটির নাম WARR Hyperloop.
চতুর্থ পরীক্ষা :- মাস্কের পডটি জার্মানির টিমের ২০১ মাইল প্রতি ঘন্টার রেকর্ডটি ভেঙে ২২০ মাইল প্রতি ঘন্টার রেকর্ড গড়ল।
পঞ্চম পরীক্ষা :- লস এঞ্জেলেসের ট্র্যাকে, Hyperloop One এর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বারের পরীক্ষাতে পডটির গতি পৌঁছালো ক্রমে ২৪০ এবং ২৫০ মাইল প্রতি ঘন্টা।
ষষ্ঠ পরীক্ষা :- গত বছর ক্যালিফোর্নিয়ায়, SpaceX প্রতিযোগিতায় জার্মানির থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকদের একটি টীম ১.২ কিলোমিটার ট্র্যাকে পডটির গতি ২৯০ মাইল প্রতি ঘন্টায় পৌঁছে দিলো।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৬০০ খানি প্রস্তাব জমা পড়েছে প্রস্তাবিত রুটের জন্য, তার থেকে শুধুমাত্র ১০ টি রুটকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
রুটগুলি হলো :-
প্রস্তাবিত রুট ঠিক হয়ে গেছে, এখন শুধু বাকি ৭৬০ মাইল প্রতি ঘন্টাতে পৌঁছানো।
প্রথম হাইপারলুপ যাত্রী নিয়ে ট্র্যাকে নামবে ২০২১ সালে।
এই ভ্যাকুম টিউবের আইডিয়া আসে রবার্ট গোড্ডারদেড় ড্রইং থেকে। রবার্ট বিংশ শতাব্দীর একজন মার্কিন ইঞ্জিনিয়ার। এই আইডিয়াকে আরো উন্নত করেন ইলন মাস্ক আর ২০১২ সালে হাইপারলুপ নামে প্রকাশ্যে উল্লেখ করেন এবং আগস্টের ২০১৩ সালে, Hyperloop Alpha নামে একটি পেপার প্রকাশ করেন যেখানে প্রস্তাব করা হয় লস এঞ্জেলেস থেকে সান ফ্রান্সিকো মাত্র ৩৫মিনিটে পৌঁছানো যাবে।
মাস্ক এর নাম আশাকরি শুনেছেন! তাও একবার বলে দিই, ইনি হচ্ছেন এই শতাব্দীর ভিশনারি এন্ট্রেপ্রেনিউর যিনি মঙ্গলকে বাসস্থানের জন্য বেছে নিয়েছেন। সেখানে মানুষের উপনিবেশ স্থাপন করার চেস্টা চালাচ্ছেন। এই ধনকুবের The Boring Company, Neuralink, OpenAI, Paypal এবং SpaceX র প্রতিষ্ঠাতা এবং সাথে চিফ এক্সেকিউটিভ অফিসার Tesla Motors এবং SolarCity কোম্পানির।
আগামীদিনে যখন হাইপারলুপ ট্র্যাকে নামবে তখন এক শহর থেকে অন্য শহরে যাওয়াটা খুব একটা বড়ো ব্যাপার হবে না। আর এর জন্য টাকা -পয়সা নিয়েও এতো ভাবতে হবে না। এর ফলে মানুষের জীবনধারার মান উন্নত হবে। সমাজে শিক্ষার প্রসার বৃদ্ধি পাবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দেশের অগ্রগতি হবে।
শুধুমাত্র একটাই বাঁধা, তাহলো উপরে উল্লেখ করা চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে পারলে এর বাস্তবায়ন হতে বেশি দেরি নেই।
এবং আশাকরি এই ট্রেন একদিন নিজের টপ স্পিড ধরে নিতে পারবে।
আপনার কি মনে হয়! হাইপারলুপ আপনার জীবনে কি কি পরিবর্তন আনবে?
আমি অভিজিত চৌধুরী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 30 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 9 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 6 টিউনারকে ফলো করি।
লিখতে চাই ,নিজেকে প্রকাশ করতে চাই।লেখার মাধ্যমে অন্যকে জানাতে চাই।