UIS (UNESCO's Institute for Statistic)অনুযায়ী এশিয়াতে রিসার্চারদের মধ্যে মাত্র ২৩% মেয়ে এবং কেবল মাত্র ৩৫% ছাত্রী STEM(Science, Technology, Engineering, Mathematics) বিষয়ক পড়াশুনা করা থাকে। এশিয়ান নারীরাই যখন টেকনোলজিতে এতটা পিছানো তাহলে বলাই বাহুল্য যে এশিয়ার একটা উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশে মেয়েরা টেকনোলোজিতে আরো বেশি পিছিয়ে আছে। ব্যাপারটা ঠিক তাই। বিভিন্ন বিজ্ঞান বিষয়ক আয়োজনে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের অংশগ্রহণ এ দেশে চোখে পড়ার মত কম। এবার এই পিছিয়ে পড়ার কারন আর বর্তমান। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা যাক।
বিভিন্ন পর্যবেক্ষনে দেখা যায় যে আমাদের দেশে ছোটকাল থেকেই মেয়েদের আত্মবিশ্বাসকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাবা মা শিক্ষক মেয়েদের STEM এর বিষয়গুলোতে তাদের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য উৎসাহিত না করে তারা চান যে মেয়েরা এমন কোন ক্যারিয়ার বেছে নিক যেখানে তারা খুবি সহজে ঘরের কাজে বেশি সময় দিতে পারে। এদেশে একটা বুটিকসের দোকান অথবা শিক্ষকতায় নারীদের যে অংশগ্রহণ দেখা যা সে পরিমান অংশগ্রহন কখনই STEM এর বিষয়ক ক্যারিয়ারে দেখা যায় না।
STEM বিষয়ক ক্যারিয়ার বেছে না নেয়ার আরো একটি অন্যতম কারন হল চাকরি ক্ষেত্রে অবহেলা। যেকনো চাকরির ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে একজন নারী প্রার্থীর চেয়ে একজন পুরুষ প্রার্থিকেই বেশি যোগ্য মনে করা হয় সচরাচর। কারন আমাদের সামাজিক অবস্থা ও কুসংস্কারের জন্য সকলে ধরেই রাখে মেয়েরা হয়তো রাতে কাজ করতে পারবে না, তারা বেশি পরিশ্রম করতে সক্ষম না ইত্যাদি। এমনকি বিভিন্ন আইটি সেক্টরে এমনও দেখা যায় যে একটা মেয়েকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার চেয়ে প্রশাসনিক কাজে নিয়োগ দিতে বেশি আগ্রহী থাকে প্রশাসন। এছাড়াও আমার মতে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার্থে মেয়েরা টেকনোলোজি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেয়েরা ভাবে টেকনোলজির ব্যবহার হয়ত মেয়েদের জন্য না অথবা তাদের পরিবারের মানুষজন বিশেষ করে স্বামীরা পছন্দ করে না মেয়েদের টেকনোলজির ব্যবহার। কিন্তু আমার মতে প্রতিটি নারীর উচিত টেকনোলজির সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে অবগত হওয়া। এতে কর তারা যেমন তাদের সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে অবগত হবে ঠিক তেমনি তাদের আশেপাশের মানুষজন এর সঠিক ব্যবহার করছে কিনা বুঝতে পারবে।
তবে বর্তমানে এই চিত্র পাল্টাচ্ছে। গুগল মাইক্রোসফটের মত অনেক প্রতিষ্ঠান অর্গানাইজেশন এখন এশিয়ান তথা বাংলাদেশি মেয়েদের টেকনোলোজিতে কাজ করার জন্য উৎসাহিত করছে। যেসকল মেয়ে নিজেদের পড়াশুনা সম্পূর্ণ করতে পারেনি মাইক্রোসফট তাদের আবার পড়াশুনা শুরু করতে সাহায্য করছে। এছাড়াও গত নারী দিবসে #MakeWhatNext ক্যাম্পেইন করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় মাইক্রোসফট মাইক্রো ফিল্ম তৈরী করে যেখানে ৫টি এমন এশিয়ান নারীর কথা বলা হয়েছে যারা পৃথিবী পরিবর্তনের জন্য STEM ব্যবহার করে প্রমাণিত করেছে নিজের প্রতিভা।
আরেকটি বড় প্রতিষ্ঠান গুগল মেয়েদের টেকনোলজিতে আগ্রহী করতে বিভিন্ন টেকমেকার প্রোগ্রামের সাথে মিলিত হয়ে মেয়েদের এই সেক্টরে ভিবিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিষ্ঠান যখন এশিয়ান তথা বাংলাদেশি মেয়েদের নিয়ে এত কিছু করছে তখন বাংলাদেশি সরকারই বা কি করে পিছিয়ে থাকতে পারে। ২০২১ সালের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বর্তমানে সরকার এই বিষয়গুলোতে অনেকবেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
আমি তানজিম তাহারাত অর্পা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।