১৯৯৯ সালের কোনো একটা সময়, যখন প্রথম সাদাকালো টি.ভি.তে দেখি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় পাকিস্থানের বিপক্ষে। তত দিনে ক্রিকেট বুঝে গেছি, তার জন্য খুব খুশি। কিন্তু তার দুই বছর পর ‘হক আই প্রযুক্তি’ এলেও তা বুঝতে আমার সময় লাগে অনেকটা। গতকাল ‘হক আই প্রযুক্তি’র নির্মম ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশ যখন হেরে যেতে বসেছিলো তখনই মাথায় এল এই নিয়ে একটা টিউন করলে কেমন হয়? ফাঁদটা ছিলো নাইমের বলে রিভিউ থেকে একটা আউট না দেওয়া, যা কিনা ফিল্ড আম্পায়ারের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়।
‘হক আই’র শব্দগত মানে ‘বাজ পাখির চোখ’ হলেও ক্রিকেটের ভাষায় অন্যটা। অর্থাৎ বোলার যখন বল করেন তখন তার বলের যেই অতিক্রান্ত পথ ত্রিমাত্রিক কম্পিউরাইজড ছবিতে দেখি তাকে ‘হক আই প্রযুক্তি’ বলা হয়। আমারা সাধারণত এল বি ডাব্লিও ক্ষেত্রে ‘হক আই’ প্রযুক্তির ব্যবহার বেশি দেখতে পাই। তাছাড়া বলের মুভমেন্টও ‘হক আই’ ধরতে পারে। সম্প্রতি আই.সি.সি ওয়াল্ডকাপ-২০১১ তে থার্ড আম্পায়ার রিভিউ সিস্টেমে ‘হক আই’ এর ব্যপক ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে টেনিস এবং আরো কিছু খেলায় বর্তমানে ‘হক আই’র প্রচলন শুরু হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ২০০১ সালে ‘রক ম্যনর রিসার্চ লিমিটেড’ এর বিজ্ঞানীরা এই প্রযুক্তির উদ্ভাবন করে। ‘রক ম্যনর রিসার্চ লিমিটেড’ ইংল্যন্ডের হ্যমশায়ারে অবস্থিত। পরে এই প্রযুক্তিকে আলাদা ভাবে ‘হক আই ইনভেশন্স লিমিটেড’এ স্থানান্তর করা হয়। তবে এর সাথে একটি টেলিভিশন কোম্পানিও ছিলো।
‘হক আই’ প্রযুক্তিতে কাজ করাতে কমপক্ষে চারটা শক্তিশালী ক্যামেরা লাগবে। যেখানে খেলা হবে তার চার দিকে চারটি ক্যামেরা থাকবে। মজার ব্যপার হলো এই প্রযুক্তি কাজ করে চার ডাইমেনশনে। চতুর্থ ডাইমেনশন্টি হলো সময়। তবে আমি কয়েক জায়গায় এটিকে ত্রিমাত্রিক দেখেছি, আমি নিজেও লিখেছি। এর কারন হলো, জিনিসটা যখন আমরা দেখি তখন সময় ফ্যক্টরটা থাকে না, তার কাজ হয়ে যায়। সময়ের মাত্রা না থাকলে চার ক্যামেরার ছবি কখনই এক করা যেত না! যখন ৩০ সে.মি. পথ চার ক্যামেরা এক করে দেয় তখন পূর্বেই প্রোগ্রাম করা প্রোগ্রাম ডাটাবেজ থেকে বাকী পথটুকু ইন্ডিকেট করে দিতে পারে। মুলত এটিই ‘হক আই’র মূল শক্তি।
‘হক আই’ প্রযুক্তি দিয়ে সাধারণত দুটি কাজ করা হয়;
উদাহরন হিসেবে বলা য়ায় স্পিনাররা যখন গুগলি(স্ট্রেট বল) করে, আবার বলে ব্রেক দেয় তখন তার কৌনিক সরণ নির্ণয় করা হয় এই ‘হক আই’ দিয়ে।
এখন পর্যন্ত সব আবিষ্কৃত প্রযুক্তির কম বেশি ব্যর্থতা আছে। তবে মানুষ আবিষ্কৃত সব কিছু সবছেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো এরা নিজেদের কাজ বুঝে না, যা প্রোগ্রাম করা হয় তাই!
তেমনি ‘হক আই’ এর বেশ কিছু ব্যর্থতা আছে।
কিছু ব্যর্থতা থাকলেও ‘হক আই’ সারা বিশ্বে খেলা প্রিয় মানুষগুলুর কাছে ব্যপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাছাড়া এটি খুব ভালো ভাবে ‘রিভার্স সুইং’ ধরতে পারে। আই.সি.সি ‘হক আই’কে অনুমোদনই প্রমান করে এর কার্যকারিতা তথা সফলতা সবচেয়ে বড় প্রমান।
আজ কাল যদিও ক্রিকেট খেলার ছেয়েও ব্যবসায় বেশি পরিণত হয়েছে। কিন্তু তবুও সেই খেলার আনন্দকে নির্ভেজাল করতে প্রযুক্তি তথা আবিষ্কার থেমে থেমে নাই। ‘হক আই’ ছড়াও জনপ্রিয় আরো দুইতি প্রযুক্তি হলো;
এইগুলু নিয়ে হয়ত অন্য কোন দিন কথা হবে।
তবে যে প্রযুক্তিই আসুক না কেন, খেলাটাই মূখ্য। আমরা সেই খেলার নিরপক্ষতা দেখতে চাই প্রযুক্তির সহায়তায়।
সবশেষে বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দল ও ক্রিকেট পাগল মানুষগুলুর জন্য শুভ কামনা রইলো।
সবাই ভালো থাকবেন। নিজের যত্ন নিবেন।
আমি Rubel Oron। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 229 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
______''সুডো ব্লগ''_এ আপনাকে স্বাগতম!' ________'প্রোগ্রামারের পৃথিবী''_তে আপনাকে স্বাগতম! _______''Rubel Orion on Facebook! :D
অসাধারণ, ক্রিকেট নিয়ে মেতে থাকি সবসময় অথচ “হক আই” নিয়ে কখনো ভাবিনি… আপনার টিউনটি ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।