বৃষ্টি নামানোর প্রকল্পের কিছু অংশ ব্যবহার করে টর্নেডো প্রবণ এলাকায় টর্নেডো সৃষ্টি বন্ধ করা যাবে। সাধারনত প্রচন্ড গরমের কারনে টর্নেডো সৃষ্টি হয়। যখন পরিবেশ খুব গরম হয় তখন বায়ুর চাপ কমে গিয়ে বায়ু হালকা হয়ে দ্রুত উপরে উঠতে থাকলে নিচে শূন্যতা সৃষ্টি হয়। তখন চারপাশ থেকে ঠান্ডা বাতাস ছুটে আসতে থাকে শূন্যতা পূরণ করার জন্য। সেই বাতাস গরম হয়ে আবার উপরে উঠে যায়। এভাবে অরো কয়েকটি পর্যায় অতিক্রম করে টর্নেডো সৃষ্টি হয়। এখন আলোচনা করা যাক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে, প্রচন্ড গরম হলেই টর্নেডো সৃষ্টি হবে তা কিন্তু নয়। কারন টর্নেডো যদি প্রচন্ড গরমের কারনেই সৃষ্টি হয় তাহলে টর্নেডো যে এলাকায় হয় তার চেয়ে অনেক বেশি গরম বা তার চেয়ে কম বা তার সমান গরমও বিভিন্ন এলাকায় হয়ে থাকে কিন্তু ঐ সব এলাকায়তু টর্নেডো সৃষ্টি হয় না কেন? সেই সব এলাকায় কি শুধু গরম বাতাস থাকে? না কখনো না ঠান্ডা বাতাসও থাকে। টর্নেডো সৃষ্টি নির্ভর করে বায়ু হালকা হয়ে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয় তা কত দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং এর আশেপাশের আবহাওয়ার উপরে। সাধারনত জলীয় বাষ্প পূর্ণ ভারী বাতাস থাকে ভূ-পৃষ্টের কাছাকাছি আর হালকা বাতাস থাকে উপরে। যখন প্রচন্ড গরম হয় তখন হালকা বাতাস আরো হালকা হয়ে যায় এবং ঠান্ডা বাতাস তা পূরন করতে ছুটে আসে। ঠান্ডা বাতাস প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেই সেই এলাকার বাতাসে স্বাভাবিক ভারসাম্য ফিরে আসেনা ফলে ভারসাম্য যত নষ্ট হয় শূন্যস্থানও তত বড় হয়। তখনই টর্নেডো সৃষ্টি হবার সম্ভবনা দেখা দেয়। শূন্যস্থান যখন বড় হতে শুরু করে তখন আশেপাশের বাতাসও দ্রুতগতিতে সেখানে আসতে থাকে এবং ঠান্ডা ও গরম বাতাস মিলে বড় ধরণের ঘূর্ননের সৃষ্টি করে। তারপর টর্নেডো সৃষ্টি হয়ে বাতাসে ভারসাম্য নিয়ে আসে।
পৃথিবীতে নির্দিষ্ট কিছু টর্নেডো প্রবন এলাকা আছে যেখানে প্রতি বছরই টর্নেডো সৃষ্টি হয় এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির ঘটনা ঘঠে। আর টর্নোডো তখনই জন্ম নেয় যখন ঠান্ডা ও গরম উভয় প্রকার বাতাসই খুব বেশি পরিমানে থাকে। এদের মধ্যে যে কোন একটি কে খুব বেশি দুর্বল ও অন্যটিকে বেশি শক্তিশালী করে দিলে এদের মধ্যে ঘূর্নন সৃষ্টি করার মত ক্ষমতা থাকবে না। এক্ষেত্রে আমরা কৃত্রিম জলীয়বাষ্প ব্যবহার করতে পারি। আবহাওয়ায় জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি হলে ভ্যাপসা গরমের সৃষ্টি হয় এবং তার কয়েক ঘন্টা পরেই সাধারণত বৃষ্টি হয়। এই ধরণের ভ্যাপসা গরম পরিবেশে টর্নোডো সৃষ্টি হয় না। আবার জলবাষ্প আরও একটি কাজ করবে যেমন আমরা যদি ঐ সব এলাকায় কৃত্রিম জলীয় বাষ্প বাতাসে ছেড়ে দেই তাহলে টর্নেডো সৃষ্টি হবার সম্ভবনা কমানো যাবে। কারন বাতাসে জলীয় বাষ্পের বেশি উপস্থিতির ফলে আমরা যে সুবিধাটি পাব তাহল, প্রচন্ড গরমে বায়ু হালকা হয়ে আরো উপরে উঠে গেলে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয় তা পূরন করে বাতাসে স্বাভাবিক ভারসাম্য রাকতে কৃত্রিম জলীয় বাষ্প সাহায্য করবে।এই কৃত্রিম জলীয় বাষ্প বাতাসে শূন্যতা সৃষ্টিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে যেমনটা প্রকৃতি তার নিজেস্ব প্রক্রিয়ায় করে থাকে তার জন্যই ভারসাম্য ফিরে আসে আর এই জন্যেই প্রচন্ড গরম হলেই সব জায়গায় টর্নোডো সৃষ্টি হয় না। বাতাস যতই হালকা হয়ে উপরে উঠে যাক না কেন কৃত্রিম জলীয় বাষ্প তত দ্রুতই উপরে উঠে বাতাসে সমতা আনতে পারবে। ঐ সব এলাকায় পানি ¯েপ্র করে বা অন্য কোন প্রক্রিয়ায় জলীয় বাষ্প বাতাসে ছাড়া যাবে। তাছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে বাতাসের জলীয় বাষ্পের ধারন ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
সাধারণত টর্নেডো বিকেলের দিকে হয় তার কারণ হল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্য্যরে আলোর তাপে ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি ও তার উপরে অঞ্চলে সমস্ত জলীয়বাষ্প বায়ু মন্ডলে চলে যায়, এর ফলে ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি অঞ্চলে শূন্যতা সৃষ্টি হয়। এই শূন্যতা থেকেই এক সময় টর্নেডোর সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই শূণ্যতা পূরণ করা সম্ভব কৃত্রিম জলীয় বাষ্প দ্বারা। আর এটি করা হলে টর্নেডো সৃষ্টি হবে না। আমরা দুপুরের আগে এই প্রক্রিয়া শুরু করব এবং সন্ধ্যা হওয়ার আগে বন্ধ করে দিব।
আবার অন্য একটি পদ্ধতিও ব্যবহার করা যেতে পারে। টর্নেডো প্রবন এলাকা গুলোতে যখন প্রেচন্ড গরম অনুভব হবে তখন স্তম্ভ দ্ধারা বাতাস থেকে জলীয় বাষ্পের পরিমান কমাতে হবে। ফলে বাতাস হালকা থেকে আরো হালকা হয়ে শূন্যস্থান সৃষ্টি করলেও বাতাস অস্বাভাবিক আচরন করবেনা। কারন বাতাসে অস্বাভাবিক অচরন তৈরী হয় শূন্যস্থান পূরন করার সময় যা ঠান্ডা ও গরম বাতাসের কারনে হয়ে থাকে। কিন্তু যখন আবহাওয়ায় তুলনামূলক কম জলীয় বাষ্পপূর্ন বাতাসের উপস্থিতি থাকবে তখন উপর ও নিচের এবং আশেপাশের বাতাসের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য থাকবে না। এর ফলে বাতাসের মধ্যে স্থান পরির্বতনের কোন প্রয়োজনীয়তা দেখা দিবে না। তখন দ্রুত গতির বাতাস সৃষ্টি হবে না। কিছুটা মরুভূমির এলাকার পরিবেশের মত। এর ফলে টর্নেডো সৃষ্টি হওয়ার মত প্রয়োজনীয় উপাদান থাকবে না। এ পদ্ধতি দ্বারা পৃথিবীবাসিকে টর্নেডো থেকে রক্ষা করা যাবে।
বিশ্বনাথ আর্চায্য
ফান্দাউক, নাসিরনগর, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, বাংলাদেশ।
মোবাইল : ০১৭২১৪৯০২২২
আমি পায়েল দেব। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 4 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।