" International Space Station (ISS) " আমাদের মধ্যে অনেকেই এটা সম্পর্কে জানি আবার অনেকে এটাকে শুধু নামে মাত্র চিনি। আসলে আমরা যারা এটা সম্পর্কে তেমন বেশি কিছু জানি না তাদের জন্যই এই টিউন। 🙂
এটা আসলে একটা বৃহৎ মহাকাশযান। এটা আসলে সেই জায়গা যেখানে পৃথিবীর বেশ কয়েকজন মহাকাশচারী বাস করে (অস্থায়ীভাবে) :-P। এটাকে একটা সায়েন্স ল্যাবও বলা যায়। পৃথিবীর অনেকগুলো দেশ সম্মিলিতভাবে এটা তৈরিতে কাজ করেছে। এটা অনেকগুল অংশ নিয়ে তৈরি। এটা পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ২২০ মাইল উপরে অবস্থিত। আসলে এটা অনেক কাজেই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটা মুলত কি কাজে ব্যবহার করা হয় সেটা সম্পর্কে নাসা যা বলে তা হল, " NASA uses the station to learn about living and working in space " অর্থাৎ এটা নাসার দরকার হয় স্পেস বা মহাকাশ সম্পর্কে জানতে এবং মহাকাশে বসবাস করা বা কাজ করা সম্পর্কে গবেষণা করতে। স্পেস স্টেশন সারাক্ষনই পৃথিবীকে বিভিন্ন দিক থেকে প্রদক্ষিন করতে থাকে।
জেনে অবাক হবেন যে, স্পেস স্টেশন এর প্রথম অংশ বা যন্ত্রাংশটা লঞ্চ করা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে 8-O। একটা রাশিয়ান রকেটের সাহায্যে যন্ত্রাংশটা স্পেসে পাঠানো হয়। এরপরে আরো অসংখ্য যন্ত্রাংশ নিয়ে যাওয়া হয়। স্পেস স্টেশন এর প্রত্যেকটা পার্টকে মডিউল বলা হয়। এটার কয়েকটা মডিউল আছে যেগুলো বিশেষভাবে সায়েন্স ল্যাব এর জন্য তৈরি, আবার কোনটা মহাকাশচারীদের থাকার জন্য। ২০০০ সালেই এটা মোটামোটি ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত হয়ে যায়। সর্বপ্রথম নভেম্বার ২, ২০০০ তারিখে প্রথম মহাকাশচারীদের দল এটা ব্যবহার করা শুরু করে। ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অনেক মহাকাশচারী স্পেস স্টেশনে কাজে নিযুক্ত আছেন। এরপর নাসার তত্ত্বাবধায়নে ২০১১ সালের মধ্যেই এটার কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ করা হয়।
এটা স্পেসে মানুষের একটা বাসার মত ;-)। কি নেই এতে, ল্যাব, লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম এবং গৃহস্থালির খুঁটিনাটি সব আছে এতে। ২০০০ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত কেউ না কেউ সেখানে বসবাস করছে। এখানে অনেক ইম্পরট্যান্ট পার্ট হল সায়েন্স ল্যাব, যেখানে দলের লোকজন গবেষণা করেন 8-)। আসলে সেখানে ওই গবেষণাগুল করা হয় যেটা এই পৃথিবীর মাটি তে বসে করা সম্ভব না। এছাড়া তাদের অন্যতম একটা কাজ হল এটা দেখা যে, মানুষের কি অবস্থা হবে যখন তারা স্পেসে বসবাস করবে। এছাড়া তারা অনেক উপর থেকে পৃথিবীকেও পর্যবেক্ষণ করে।
এখানে সাধারনত বিশেষ প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত মহাকাশচারীরাই কাজ করে। তাদেরকে যেহেতু সেখানে থাকতে হয়, তাই কাজের পাশাপাশি তাদের দৈনন্দিন জীবনও পরিচালনা করতে হয় বিশেষ রুটিনের মাধ্যমে। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত প্রত্যেকটি কাজই তাদেরকে সতরকতার সাথে করতে হয়। তাদের খাবার, টুথ ব্রাশ, গোসল করার পানি, শ্যাম্পু, সাবান সবকিছুই তাদের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়। সেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকায় তাদের চলাফেরা করাটা একটু কষ্টকর হলেও বেশ রোমাঞ্চকর এবং আনন্দদায়ক। তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যে বিনোদনও বাদ পড়ে না। জেনে অবাক হবেন যে, তাদের প্রতিদিনের একটা ভাল পরিমান সময় কাটে ভিডিও গেমস খেলে, সহকর্মীদের সাথে আড্ডা দিয়ে, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করে এবং পরিবার পরিজনদের সাথে স্কাইপ চ্যাট করে। 😛
এবার আসি আসল বিষয়ে :-P। স্পেস স্টেশন পৃথিবীকে প্রতিদিন প্রদক্ষিন করে, ঠিক চাঁদ এর মত। এটার পৃথিবীকে আবর্তন করার গতি কিন্তু অনেক বেশি, প্রায় ২৮০০০ কিলোমিটার/ঘণ্টা 8-)। তাই এটা অসম্ভব না যে কিছুক্ষন আগে আপনার মাথার উপর থেকে এটা উড়ে গেছে কিন্তু আপনি বোঝেন নি বা দেখেন নি। কিন্তু এটা ঠিক কখন আপনার মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাবে সেটা যদি আপনি জানতে পারতেন তাহলে হয়ত আপনি দেখতে পেতেন। এইজন্যই NASA র একটা সার্ভিস আছে যার নাম Spot The Station। এখানে আপনাকে আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া হবে যে, ঠিক কখন ISS আপনার শহরের উপর থেকে উড়ে যাবে। এখানে আপনাকে এটাও বলে দেয়া হবে যে, কতক্ষন ধরে স্পেস স্টেশনকে আপনি আকাশে দেখতে পারবেন এবং ঠিক কন অ্যাঙ্গেলে দাঁড়ালে আপনি এটা ভালভাবে দেখতে পাবেন। হুম, ঠিক ধরছেন। এটা আপনি খালি চোখেই ভালভাবে দেখতে পারবেন, কোন দূরবীন বা টেলিস্কোপ দরকার নেই। এটা দিনের আলোতে ভালভাবে দেখা না গেলেও রাতের আকাশে বেশ ভালভাবেই দেখা যাবে। এটা দেখতে অনেকটা খুব দ্রুতগতিতে চলা এরোপ্লেন বা স্টার এর মত। ঠিক কখন এটা আপনার শহরের উপরে আসবে এটা জানতে এখানে দেখতে পারেন। তবে আমার জানামতে, এটা এখন ঢাকা এবং চট্টগ্রাম এবং এই দুই শহরের ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে দেখা যায়, যদিও আমি এখনও দেখতে পাই নি। কারন, আমি খুলনায় থাকি। :-p
আমি আসলে নিজেও জানি না যে এটা আসলেই ISS উড়ে যাওয়ার এনিমেশন কি না, সম্ভবত এটাই 😛
ধন্যবাদ, আমার টিউনটা পড়ার জন্য। কোন ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই টিউনমেন্টে জানাবেন।
আমি সিয়াম একান্ত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 40 টি টিউন ও 82 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমার নাম সিয়াম রউফ একান্ত। অনেকে সিয়াম নামে চেনে আবার অনেক একান্ত নামে। যাইহোক, পড়াশুনা একেবারেই ভাল লাগেনা আমার। ভাল লাগার মধ্যে দুইটা জিনিস , ফটোগ্রাফি আর প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির প্রতি ভাললাগা থেকেই টেকটিউন্স চেনা এবং টেকটিউন্সে আইডি খোলা। দেখা যাক কতদূর কি করা যায়......
এর গতি ২৭৬০০ কিলোমিটার/সেকেন্ড। এর উচ্চতা অনুযায়ী এর গতি আরও কম হলে এটা পৃথিবীতে আছড়ে পরবে। আর বেশি হলে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে। আর আমি নিজেও দেখেছি। সবচেয়ে ভালো হয় মোবাইলে প্লেস্টোর থেকে ISS Detector ইন্সটল করে নিলে। অ্যাপটি দিয়ে গতি, উচ্চতা, বর্তমান অবস্থানসহ আরও অনেক তথ্য জানতে পারবে, আমি এটা ব্যবহার করেছি। সুবিধার্থে লিংকটি যুক্ত করলাম।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.runar.issdetector