বিগ ব্যাং থেকে বর্তমান মানব সভ্যতা এক নজরে – প্রথম পর্ব

‘বিগ ব্যাং’, মহাবিশ্বের সূচনা, মহাবিশ্বের সব কিছুর উৎপত্তি। সকল পদার্থ ও শক্তির সৃষ্টি।
আজ থেকে প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে পরমানুর চেয়েও বহুগুন ক্ষুদ্র প্রায় শুন্য আয়তনে ঘটা একটি বিস্ফোরনের মধ্য দিয়ে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি।

‘বিগ ব্যাং’ এর পর সময়ের পরিক্রমায় ধাপে ধাপে এই মহাবিশ্ব বর্তমান অবস্থায় আসে। গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যলাক্সি সব কিছুর শুরু ‘বিগ ব্যাং’।

সল্প পরিসরে দেখা যাক ‘বিগ ব্যাং’ এর পর কি কি ধাপ পার হয়ে আমাদের পৃথিবী, পৃথিবীতে ‘প্রথম প্রান’ এবং প্রানের বিকাশের ধারায় বর্তমান মানব সভ্যতা।

প্রথম পর্বে ‘বিগ ব্যাং’ এর পর পর্যায়ক্রমে পৃথিবীর সৃষ্টি এবং পৃথিবীতে ‘প্রথম প্রান’ সৃষ্টির উপযুক্ত পরিবেশ গঠিত হবার সময় পর্যন্ত একটি ধারাবাহিকতা তুলে ধরা হল।

  • বর্তমান সময় হতে প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে বৃহৎ বিস্ফোরন সংগঠন। তাপমাত্রা প্রায় ১০^২৭ ডিগ্রী সেঃ।
  • বিগ ব্যাং এর পর ১ সেকেন্ড সময়ের মাঝে প্রায় শূন্য আয়তনের মহাবিশ্ব ছড়িয়ে পরে গ্যালাক্সির চেয়েও বড় এলাকায়। পদার্থ-প্রতিপদার্থ, কোয়ার্ক-প্রতিকোয়ার্ক একে অপরকে ধ্বংস করে শুধু শক্তি হয়ে বিরাজ করে। বাকিরা প্রোটন ও নিউট্রন সৃষ্টি করে। তাপমাত্রা কমে প্রায় ১০^১২ডিগ্রী সেঃ।
  • ইলেক্ট্রন পজিট্রন কে ধ্বংস করে। তাপমাত্রা আরো কমে প্রায় ৩০০ কোটি ডিগ্রী সেঃ হয় দশ সেকেন্ডের মধ্যে।
  • পরমানু গঠনের তিন মৌলিক কনা ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন প্রস্তুত হতে সময় নেয় বিগ ব্যং এর পর তিন মিনিট।
    এর পর এভাবে সময় বয়ে চলে। মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হতে থাকে। মহাশুন্যে ভেসে বেড়ায় ইলেক্ট্রন, প্রোটন আর নিউট্রনের দল বিচ্ছিন্ন ভাবে।
  • প্রোটনকে কেন্দ্র করে প্রথম ইলেক্ট্রন ঘুর্নন শুরু করে বিগ ব্যাং এর প্রায় ৩ লক্ষ বছর পর। তৈরী হয় মহাবিশ্বের প্রথম পরমানু, হাইড্রোজেন পরমানু। এভাবে তৈরী হয় অসংখ্য বিচ্ছিন্ন হাইড্রোজেন পরমানু। যা বর্তমান কালের সকল বস্তুর, সকল পরমানুর আদি অবস্থা।
  • এ সময় থেকেই শুরু হয় মহাবিশ্ব গঠনে মহাকর্ষের প্রধান ভূমিকা। হাইড্রোজেন পরমানু মহাবিশ্বের নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে মহাকর্ষের প্রভাবে কাছাকাছি আসা শুরু করে। গঠিত হয় গ্যালাক্সি। বিগ ব্যাং এর পর প্রায় ৩০ কোটি বছর থেকে ৫০ কোটি বছর পর্যন্ত চলতে থাকে বিভিন্ন স্থানে গ্যালাক্সির জন্ম ও পূর্নতা প্রাপ্তির পথে এগিয়ে যাবার সূচনা।
    এসব গ্যালক্সির অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে কাছাকাছি থাকা হাইড্রোজেন মহাকর্ষের প্রভাবে আরো কাছাকাছি এসে একটি কেন্দ্রের দিকে এগুতে শুরু করে। তাদের পারষ্পারিক ঘর্ষনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেই সাথে বাড়তে থাকে চাপ এবং বাড়ে সামগ্রিক মহাকর্ষ বল যা আশেপাশের হাইড্রোজেনকে আকর্ষন করে কাছ নিয়ে আসে আরো বেশি পরিমানে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ১ কোটি ৮০ লক্ষ ডিগ্রী ফারেনহাইট হলে হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াস মিলে গঠিত হতে থাকে ভারী মৌল হিলিয়াম। সেই সাথে ফিউশনের জন্য বিকিরিত হয় শক্তি। এভাবেই তৈরী হয় মহাবিশ্বের প্রথম নক্ষত্র। একই প্রক্রিয়ায় তৈরী হয় মহাবিশ্বের সকল নক্ষত্র। আমাদের সৌরজগতের সূর্যও এমনই একটি নক্ষত্র।
    এখানে তৈরী হল প্রাথমিক ও হাল্কা দুটি মৌল হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম। কিন্তু আমাদের পৃথিবীতেই আছে আরো শতাধিক তুলনামূলক ভারী মৌল। সেগুলোও তৈরী হয় নক্ষত্রেই। নক্ষত্রের আকারের উপর নির্ভর করে তুলনামুলক ভারী নক্ষত্র গুলোতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে আর সেই সাথে সকল হাইড্রোজেন ফিউশনিত হয় হিলিয়াম হবার পরেও ফিউশন প্রক্রিয়া চলতে থাকে। ভারী থেকে অতি-ভারী নক্ষত্রে একই ফিউশন প্রক্রিয়ায় তৈরী হয় হিলিয়াম থেকে যথাক্রমে, কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ম্যাগনেসিয়াম এবং সবশেষে লোহা। নক্ষত্রের সকল পরমানু লোহাতে পরিনত হবার পর আর ফিউশন চলতে পারে না। তখন মৃত্যু ঘটে একটি নক্ষত্রের। ছোট নক্ষত্রে এই মৃত্যু শান্ত হলেও মাঝারী ও বৃহদাকার নক্ষত্রে তারাদের ফিউশন শেষে এরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় বিশাল এক বিস্ফোরনের মধ্য দিয়ে। আর এই বিস্ফোরনের মাধ্যমেই তৈরী হয় কপার, সীসা এবং ইউরেনিয়ামের মত ভারী মৌল।
  • আজ থেকে প্রায় ১০০০ কোটি বছর পূর্বে সৃষ্টি হয় মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি। যার অধিবাসী আমরা। এই গ্যালাক্সিতে বারবার নক্ষত্রের জন্ম, মৃত্যু ও বিস্ফোরনের মাধ্যমে সৃষ্ট ভারী মৌল ও প্রয়োজনীয় হাল্কা হাইড্রোজেন একত্রীত হয় এই সর্পিলাকার গ্যালাক্সির পরিধির কাছাকাছি বর্তমান সৌরজগতের স্থানে।
  • বর্তমান সময় থেকে প্রায় ৪৫৬ কোটি বছর আগে এই একত্রীত ধুলোর মেঘ তার কেন্দ্রে তৈরী করে একটি নতুন নক্ষত্র। যাকে আমরা বলছি ‘সূর্য’। সৌরজগতের প্রান কেন্দ্র।
  • এই সৌরজগতের মোট পদার্থের ৯৯.৯% পদার্থ নিয়েই গঠিত হয় সূর্য। তারপরেও তার আশেপাশে থাকে গ্রহ উপগ্রহ তৈরীর জন্য পর্যাপ্ত পদার্থ। যেগুলো সময়ের সাথে মহাকর্ষের টানে কাছাকাছি এসে একত্রীত হয়ে গ্রহের আকার ধারন করে সূর্যের চারপাশে ঘুরতে থাকে এবং তৈরী করে সৌরজগত। এই গ্রহগুলোর একটি আমাদের পৃথিবী।
  • আজ থেকে ৪৫৪ কোটি বছর পূর্বে পৃথিবী গ্রহের আকার ধারন করে যার ভর ছিল বর্তমান ভরের ৮০%। এ অবস্থায় পৃথিবী ছিল সম্পূর্ন অর্ধ-তরল গলিত লাভার একটি গোলাকার খন্ড। তখন পৃথিবীর ঘুর্নন ছিল বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি। তখন পৃথিবীর নিজ অক্ষের উপর একবার ঘুরতে সময় লাগত মাত্র ৬ ঘন্টা।
    দিন অতিবাহিত হতে থাকল পৃথিবী সূর্যের চারদিকে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথ নির্ধারন করে নিল। গলিত পৃথিবী ঠান্ডা হতে থাকল। হালকা পদার্থ তরলের উপরে উঠে এসে ভূপৃষ্ঠের আবরনের তৈরী করতে থাকল আর ভারী পদার্থ ডুবে গিয়ে পৃথিবীর কেন্দ্রে ভারী লোহা ও নিকেলের মিশ্রিত একটি ‘কোর’ তৈরী করল। এই ধাতব কেন্দ্র থেকে একটি চৌম্বক ক্ষেত্রের সৃষ্টি হল যা সূর্য থেকে ধেয়ে আশা আয়নিত কনা থেকে পৃথিবীর জীবজগৎকে এখনো রক্ষা করে চলে প্রতিনিয়ত। তখনো পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ তৈরী হয়নি।
  • ৪৫৩ কোটি বছর পূর্বে প্রায় মঙ্গল গ্রহের সমান একটি বস্তুখন্ড ঘন্টায় প্রায় ২৫০০০ কিঃমিঃ বেগে এসে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে। এই সংঘর্ষের ফলে আগন্তুকের কিছু অংশ পৃথিবীতে থেকে যায় আর বাকি অংশ ছড়িয়ে পরে মহাকাশে। ছড়িয়ে পরা এই বস্তুর কিছু অংশ মহাকর্ষের টানে একত্রীত হয়ে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরতে শুরু করে। সৃষ্টি হয় পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ।
    চাঁদ সৃষ্টি হওয়া পৃথিবীর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। এই সংঘর্ষের ফলেই পৃথিবীর উলম্ব অক্ষ খানিকটা বেকে যায়। যার ফলে আজ আমরা পাচ্ছি ঋতুবৈচিত্র। যেটি প্রানের উদ্ভব ও জীবন ধারনের জন্য প্রয়োজনীয়। পৃথিবীর আহ্নিক গতি হ্রাস প্রাপ্ত হয়ে ৬ ঘন্টা থেকে ২৪ ঘন্টায় আসতে চাঁদের আকর্ষনের গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া বর্তমানেও পৃথিবীর জলবায়ুর উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে চাঁদ। তার চাক্ষুস উদাহরন জোয়ার-ভাটা।

  • ৪৫০ কোটি বছর পূর্ব থেকে ৩৮০ কোটি বছর পূর্ব পর্যন্ত পৃথিবী প্রানের উদ্ভব ঘটার জন্য পর্যাপ্ত স্থিতিশীল অবস্থায় আসে। পৃথিবীর কক্ষপথ সুনির্দিষ্ট হয়, পৃথিবীর আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি স্থিতিশীল হয়, পৃথিবীর চারদিকে চাঁদের গতি নির্দিষ্ট হারে এসে পৌছায়, চাঁদ অর্ধ-তরল লাভা থেকে ঠান্ডা হয়ে কঠিন অবস্থায় আসে।
  • ৪৫০ কোটি বছর পূর্বে, পৃথিবী কিছুটা শীতল হয়ে ভূপৃষ্ঠ কঠিন আকার ধারন করে। তবে তখনো ভূপৃষ্ঠে চলছে প্রচন্ড অগ্নুৎপাত। সেসময় পৃথিবীতে তাপমাত্রা এতই বেশি ছিল যে কোন তরল পানি ছিল না, ছিল ‘সুপারহিটেড স্টীম’।
    ধীরে ধীরে পৃথিবী ঠান্ডা হতে থাকে, জলীয়বাস্পের দরুন বৃষ্টিপাত হয়। প্রথমে খুবই অল্প পরিমানে ও পরে বেশি। ভুপৃষ্ঠ পানি তরল অবস্থায় থাকার মত তাপমাত্রায় আসে। বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্টি হয় জলাধার এবং সমূদ্র।
  • আজ থেকে ৩৮০ কোটি বছর পূর্বে পৃথিবীতে সৃষ্টি হয় প্রথমবারের মত স্থায়ী সমুদ্র, যা ছিল প্রথম প্রানের উৎপত্তিস্থল ও আবাস।

প্রথম পর্বে মহাবিশ্বের উৎপত্তি থেকে পৃথিবীতে প্রান সঞ্চারের উপযুক্ত পরিবেশ গঠন পর্যন্ত সময়কে ক্ষুদ্র পরিসরে তুলে ধরা হল।
পরবর্তী দ্বিতীয় ও শেষ পর্বে পৃথিবীতে প্রথম প্রানের উদ্ভব, ক্রমবিকাশ ও বিবর্তনের ধারায় বর্তমান মানব সভ্যতা গঠন পর্যন্ত অতিক্রান্ত সময়ের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ন অংশ থাকবে।

তথ্যসূত্রঃ-
১. মহাকাশে কী ঘটছে – আবদুল্লাহ আল-মুতী
২. http://www.history.com

সবাইকে ধন্যবাদ।


বিঃদ্রঃ - টিউনের প্রতিটি অংশ উল্লেখিত সূত্র থেকে সংগৃহীত। টিউনের কোন অংশে কোন প্রকার তথ্যগত ত্রুটি, অনিচ্ছাকৃত ভুল বা অন্য যেকোন বৈজ্ঞানিক বিষয়ের ভুল অবতারনা থাকলে সেটিকে যথাযথ বৈজ্ঞানিক প্রমান, প্রামাণ্য দলিল বা নির্ভরযোগ্য সূত্রের সাপেক্ষে ধরিয়ে দিলে তা সানন্দে সংশোধন করা হবে।

বিজ্ঞান তত্ত্ব, তথ্য, যুক্তি, প্রমান ও পর্যবেক্ষন গত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়।
তাই কারও কোন ব্যক্তিগত, জাতিগত বা সামষ্টিক "বিশ্বাসের" পরিপন্থি কিছু থাকার জন্য সেটিকে ভুল বলে আখ্যায়িত করা হলে তা গ্রহনযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। এধরনের কারনে একে ভুল বলে কোন টিউমেন্ট করা হলে তার কোন উত্তর না দিয়েই তা অপসারন করা হবে।

Level 0

আমি এস এ খান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 24 টি টিউন ও 268 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

চাঁদ সৃষ্টির এই ব্যাখ্যা কুরআনের সাথে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ ?

    @তানজামিন খান:
    আমি কোন ধর্মীয় গবেষনামুলক টিউন করিনি। আপনার প্রশ্নটি ধর্মীয় প্রশ্ন।
    বিজ্ঞান ধর্মীয় অনুশাষন মেনে চলে না। বিজ্ঞানের দায় পরেনি ধর্মের পা ধরে চলার। সে তার নিজস্ব গতিতে চলবে, কোন ধর্মীয় গ্রন্থ বা অনুশাসনের জালে বিজ্ঞান আবদ্ধ নয়। বিজ্ঞান তার আবিষ্কার বা ভাবনা কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে প্রমান করে এগিয়ে চলে।

    তাই এই প্রশ্নের কোন প্রকার উত্তর জানার বা দেবার প্রয়োজনীয়তা আদৌ আছে বলে আমি মনে করি না। অন্তত পক্ষে টেকটিউনসে। কুরআন বা অন্য কোন ধর্মীয় গ্রন্থ কার সাথে কোনটা মিলল কোনটা মিলল না সেটা দেখার প্রয়োজনীয়তা বিজ্ঞানের নেই।

    আপনার এই প্রশ্ন আপনি কোন ইসলামিক ব্লগে (যেহেতু কুরআনের নাম নিয়েছেন) রাখলে ভাল হয়। আর যদি ধর্মের উর্ধে উঠে বিজ্ঞানকে নিতে না পারেন তবে আমার মনে হয় আমার কয়েকপর্বের এই টিউন আপনার না পড়াই উত্তম হবে। পরবর্তী পর্বের টিউন গুলোতে বিজ্ঞানের আলোকে তবে কুরআনের সাথে অসামঞ্জস্য পূর্ন তথ্য থাকতে পারে।

    আমি বিজ্ঞানভিত্তিক টিউন করছি। সেটা একমাত্র বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানের বই ও অন্যান্য বৈজ্ঞানিক সূত্র দ্বারা ভেরিফাইড হবে। কোন ধর্ম গ্রন্থ দ্বারা নয়।

    @তানজামিন খান:
    আমি টেকটিউনসে লেখালেখির ক্ষেত্রে টেকটিউনস নীতিমালার ১.২৬ ধারার প্রতি অন্যান্য ধারার মতই শ্রদ্ধাশীল।
    তাই আমি বিজ্ঞান বিষয়ক টিউনে অনাকাঙ্ক্ষিত ধর্মের অনুপ্রবেশ ঘটানোর বিরোধিতা করছি। গোজামিল দেয়া না হলে বিজ্ঞান ও ধর্ম অনেকাংশেই সাংঘর্ষিক।

    আমার মনে হয় ধর্মকে এই টিউনে অন্তর্ভুক্ত না করলে উভয়ের জন্যই ১.২৬ ধারার নীতিটি মেনে চলা সহজ হবে।

এই টিউনের ভেরিফিকেশনে কোন ধর্মের কোন ধর্মীয় গ্রন্থের রেফারেন্স গ্রহনযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।

টিউনে তথ্যগত বা যেকোন ভুল-ত্রুটি থাকলে, বিজ্ঞানের ভিত্তিতে এবং যথাযথ রেফারেন্স ও তথ্যসূত্র সম্বলিতভাবে উপস্থাপন করা হলে সাদরে সেটিকে গ্রহন করা হবে এবং ত্রুটি সংশোধন করা হবে।

Level 2

চমত্কার বিষয়ের চমত্কার বর্ণনা ! আগামী পর্বগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম। আর হ্যা, বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা ই জানতে চাই, হোক সেটা অন্য কিছুর সাথে সাংঘর্ষিক। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

    @Polash:
    অনুপ্রাণিত হলাম। মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
    যত দ্রুত সম্ভব পরবর্তী পর্ব টিউন করা হবে।

বরাবরের মতই অসাধারণ টিউন। আপনি চালিয়ে যান, আছি আপনার সাথে। সমালোচকদের কথায় তেমন কান না দিলেও চলবে।

আসাধারণ 🙂 অপেক্ষাই রইলাম ………………।

Level 0

বিজ্ঞান বিজ্ঞানের জায়গায়। ধর্ম ধর্মের জায়গায় ঠিক আছে কিন্তু ধর্মের হাত পা, কার পা কে ধরে টানবে এসব ল্য্য‍ং ইউজ না করলেই পারেন। গত সপ্তাহে ক্লাস করছিলাম স্যার লেকচার দেওয়ার ফাকে বললো মানুষ যখন কিছু শিখে বা পন্ডিত হয় তখন সে সর্বপ্রথম তার এই পান্ডিত্য চালায় ধর্মের উপরে।

    “পা ধরে টানা” কিভাবে স্ল্যাং হয় সেটা বোধগম্য নয়। টেকটিউনসে আমার টিউনারশিপ আপনার পরে। কমেন্টে সরাসরি আক্রমনে গালাগালিও আমি দেখেছি, আপনার তো দেখারই কথা।
    হ্যাঁ এটা স্বীকার করতে আমার আপত্তি নেই যে কিছুটা কঠোর ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক একটা টিউনে শুরুতেই ধর্মীয় কচকচানিমুলক একটা টিউমেন্ট মোটেও কাম্য নয়।

    “মানুষ যখন কিছু শিখে বা পন্ডিত হয় তখন সে সর্বপ্রথম তার এই পান্ডিত্য চালায় ধর্মের উপরে।” – আপনার কথাটার প্রতিবাদ করছি।
    @Md Arif: আমার পুরো টিউনের কোন যায়গায় একটা শব্দ দেখান তো যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ‘ধর্মের উপর পান্ডিত্য’ চালানো হয়েছে।

    কেউ যদি বৈজ্ঞানিক টিউনে ধর্মীয় পান্ডিত্য জাহির করতে আসে তবে তার উপরে উল্টোদিক থেকে কিছুটা পান্ডিত্য বর্ষিত হওয়াই কি স্বাভবিক নয়?

আমার জীবনের একটা ঘটনা বলি। আমার এলাকার নদীর নাম সুরমা নদী। একবার এমন একটি এলাকায় আমাকে বিশেষ প্রয়োজনে যেতে হবে যা কিনা নদীর অপর পারে অবস্থিত। নদীর পারে আসলাম কিন্তু কোন নৌকা পেলাম না। এখন কি ভাবে যে নদী পার হব তা ভেবে পাচ্ছি না। এমন সময় দেখতে পেলাম নদীর পারের একটি গাছ বিকঠ শব্দে নদীতে পড়েগেল। তারপর গাছহতে সুদৃশ্য কিছু কাঠ তৈরী হল ইতি মধ্যে কাঠগুলি পরস্পর গুর্ণয়মান হতে হতে সুন্দর একটি নৌকা তৈরী হয়ে গেল। এমনকির একটি বৈটাও তৈরী হয়েগেল। আমি এই নৌকা দিয়ে নদী পার হলাম।
.
.
প্রিয় পাঠক আপনার যদি সামান্নতম যুক্তি থাকে তাহলে বলবেন আমার উক্ত ঘটনাটি গাজাখুরী। তাইনা। টিউনারকে বলবঃ আচ্ছা ভাই আপনি বলেছেন এখানে ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই। আমি বলিঃ মেনে নিলাম ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই বা বিজ্ঞান সাধীন। কিন্তু বিজ্ঞান কি শুধু মানুষকে আমার ঘটনার মত গাজাখুরীই শিক্ষাদেয় না যুক্তিও শিক্ষাদেয়? যদি বলেন যুক্তির সাথেই বিজ্ঞান চলে তাহলে বিগব্যং এর যতগুলি সুসজ্জিত বিস্পোরণ আছে সবগুলোকি এমনি এমনি সংঘটিত হয়েছে না এর পিছনে একজন সৃষ্টকারী অবশ্যই আছে। যে গুলো তার শক্তিতেই হয়েছে। বিজ্ঞান কিন্তু সৃষ্টকর্তাকে অস্বিকার করতে শেখায় না বরং বিজ্ঞানের মাধ্যমে তার পরিচয় পাওয়া যায়। আর এই সৃষ্টকর্তা পাওয়াই হল ধর্ম।

    @মনীরুল আমীন আল-মুশতাক: প্রথম কথা, এখানে সৃষ্টিকর্তার কথা, ধর্মের কথা তুলে আনা সম্পুর্ন অপ্রাসঙ্গিক নয় কি?
    দ্বিতীয় কথা এই টিউনে বারবার সৃষ্টিকর্তা, ধর্ম এগুলো কেন আসবে। টিউনে এগুলো নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি।

    কোন কিছুই যদি এমনি এমনি সৃষ্টি না হয় তবে সৃষ্টিকর্তার ক্ষেত্রে এ যুক্তি কেন গ্রহন করা হয় না। যাই হোক এই অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে আলোচনা করতে আমি ইচ্ছুক নই।
    যদি আপনার মনে হয় টিউন ধর্মীয় মতবাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে তাহলে আপনি যেকোন একদিকে যান। হয় ধর্মীয় মতবাদে অন্ধ বিশ্বাস করুন এই টিউনে ফিরে তাকানোরও প্রয়োজন নেই। আর যদি বিজ্ঞানের দিকে যান তাহলে ধর্মীয় মতবাদের উর্ধে উঠে বিজ্ঞানকে দেখুন।

      @শিহাব খান: আমাদের মত একজন রক্তে মাংশে গড়া মানুষের ধারণা ও গবেষনায় তৈরী বিগব্যং তিউরী (যা কিনা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অবশ্যই রাখে) মানার জন্য আমি ধর্মিয় মতবাদের উর্ধেও উটতে পারবনা আবার এই টিটির টিউন পড়াও বাদ দিতে পারব না। বরং যারা এখানে টিউন করবে তাদেরকে অবশ্যই ১। টিটির আইন, ২। দেশের আইন, ৩। যে কোন ধর্মিও বিশ্বাসের বিপক্ষে যায় এমন কথা (এটাও টিটির একটা নীতি) বা কোন গাজাখুরী টিউন এখানে করতে পারবে না। তাছাড়া ইসলাম ধর্ম কখনো অন্ধ নয়। ইসলাম ধর্ম জ্ঞান বিজ্ঞানে ভরপূর। যারা সামান্য কয়েকটা ধারণাপ্রসূত তৈরী তিউরী পেয়ে লাফালাফি শুরু করে তাদের চোখই অন্ধ হয়ে যায়।
      .
      .
      ****দেখুন আমি কিন্তু এই টিউনটাকে সরাসরি সাংঘর্সিক বলিনি। যখন মানা হবে এগুলো এমনি এমনিতেই হয়েছে তখন এটা সাংঘর্সিক হবে। আর যদি আমার উপরে দেয়া নৌকার উদাহরণের মত বলা হয় যে, একটা সু সজ্জিত নৌকা যেমন কোন মিস্ত্রী ছাড়া হঠাৎ করে তৈরী হয়ে যাওয়া মানা যায়না তেমনি আমাদের এই সু সজ্জিত পৃথিবী গ্রহ নক্ষত্র একটা শুধু শুধু বিস্পোরণের মাধ্যমেই হয়েনি বরং বিস্পোরণ গুলো একজন সৃষ্টকারীর ইশারা ইঙ্গিতেই হয়েছে। তখন হয়তো যুক্তির সার্থে উপস্থিত মেনে নেয়া যায়।

      **** সৃষ্টকর্তা সম্পর্কে যদি উল্লেখিত যুক্তি দেখাতে চান তাহলে আমি বলব এখানে কোন যুক্তিই চলবে না বা যুক্তিটিই অনর্থক। কারণঃ যদি উপস্থিত মেনেই নেয়া হয় (মাআযাল্লাহ) যে আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তাকে আরেকজন সৃষ্টি করেছে, তখন আবার প্রশ্ন জাগবে তাকে কে সৃষ্টি করেছে, তাকে কে….তাকে কে…এভাবে যেতেই থাকবে কোন সমাধান বা মুক্তি পাওয়া যাবে না। তাই এখানে এই যুক্তিও চলবে না। বরং ০–৯–৮–৭–৬–৫–৪–৩–২–১ এর আগে যেমন কোন সংখ্যা নাই তেমনি এক আল্লাহর আগে আর কেহ নাই।

      ***আল্লাহ তালা আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন।

        @মনীরুল আমীন আল-মুশতাক: আপনি ব্যাক্তিগতভাবে কি ধারনা পোষন করবেন সেটা একান্তই আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। সেখানে অন্য কারো হস্তক্ষেপ কখনোই কাম্য নয়।

        এখানে টিউন করার জন্য
        টিটির আইন মানতে হবে – সহমত
        দেশের আইন মানতে হবে – সহমত
        গাজাখুরী টিউন করা যাবে না – সহমত

        তবে // যে কোন ধর্মীও বিশ্বাসের বিপক্ষে যায় এমন // টিউন করা যাবে না এটা মানতে পারলাম না। আপনি বলেছেন এটা নীতিমালায় আছে। আমি আপনাকে আরেকবার নীতিমালা পড়তে অনুরোধ করছি।

        নীতিমালায় আছে “//ধর্ম, ধর্মগ্রন্থের বাণী ও সামাজিক প্রক্ষাপটকে আঘাত করে এমন কোন বিষয় নিয়ে টিউন করা যাবে না”//
        সরাসরি শুধু ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থের বানী বা সামাজিক প্রেক্ষাপটকে আক্রমন করে এমন বিষয় নিয়ে টিউন করা যাবে না সেটা বলা আছে।
        বিজ্ঞান সম্মত কোন বিষয় নিয়ে কোন টিউনের কথা যদি এগুলোর বিরুদ্ধেও যায় সেটা করা যাবে না তা কোথাও বলা নেই। “বিষয়বস্তুই আক্রমন করা” এমন হওয়া যাবে না।
        যেটা এই টিউনে ঘটেও নি। টিউনে সরাসরি কোন নির্দিষ্ট ধর্ম বা কোন ধর্মের নাম উল্লেখ করা হয়নি বলা হয়নি, এই বিজ্ঞান এই ধর্মের বিপরীত। বরং বারবার টিউমেন্টে নির্দিষ্ট ধর্ম টেনে আনা হচ্ছে। সেটাই আমি অনুচিৎ মনে করছি।
        আমি আগেই বলেছি বিজ্ঞান কোন ধর্ম গ্রন্থের বানীকে অমোঘ ধরে এগোয় না। তাই বিজ্ঞানের কথা ধর্মগ্রন্থের বানীর বিপক্ষে যেতেই পারে এবং যায়ও।
        সুতরাং বিজ্ঞানের টিউনে ধর্ম না টেনে আনাই উত্তম সেই সঠিক বুঝ যেন আপনার আল্লাহ তালা আপনাকে দান করেন।

        @মনীরুল আমীন আল-মুশতাক: আপনার স্রস্টা সম্পর্কিত টিউমেন্টের উত্তর আমি দিতে পারি, তবে তাতে আপনার ‘বাক্তিগত আবেগ’ এর প্রতিউত্তরে খানিকটা aggressive ভাবে টিউমেন্ট করতে হবে। তাতে টেকটিউনের পরিবেশ নষ্ট হবার এবং ক্ষেত্র বিশেষে নীতিমালা ভঙ্গের আশংকায় দিচ্ছি না।
        তবে এরপর টিউমেন্টে স্রষ্টা নিয়ে করা যেকোন টিউমেন্ট ‘অপ্রাসঙ্গিকতার’ দায়ে মুছে দেয়া হবে।

        আপনার যদি টিউনটি ‘গাজাখুরি’ মনে হয় তবে বিজ্ঞানের আলোকে তা দেখিয়ে দিলে খুশি হব।
        আবারো বলছি ধর্ম দিয়ে বিজ্ঞান বিচার করে কোন টিউমেন্ট গ্রহনযোগ্য হবে না।
        রক্ত মাংসের মানুষের আবিষ্কারে যদি ভুল থাকতে পারে তবে বিশ্বাসমালায় কেন নয়?

        আপনি যেমন ব্যক্তিগত চিন্তায় বিজ্ঞানের জন্য (যা ভুল হতে পারে) ধর্মীয় বিশ্বাসের উর্ধ্বে উঠতে পারবেন না, তেমনি আমিও অপ্রমানিত, বিশ্বাসনির্ভর, কল্পিত, অযৌক্তিক বিশ্বাসমালাকে প্রমানিত, যুক্তিনির্ভর, দালিলিক ও পর্যবেক্ষননির্ভর বিজ্ঞানের উপরে স্থান দিতে মোটেও ইচ্ছুক বা বাধ্য কোনটিই নই।
        আশাকরি এরপর ধর্মীয় কোন টিউমেন্ট করবেন না যাতে আমাকে সেটা মুছতে বাধ্য না হতে হয়।

কোন বিষয় লিখলে অনেক কিছুই খেয়াল রাখা উচিত ….

    @আহসান হাবীব: আপনার সাথে খানিকটা সহমত। ‘অনেক কিছুই খেয়াল রাখা উচিত’ ; তবে সেটা প্রাসঙ্গিক হতে হবে। অপ্রাসঙ্গিক কোন কিছুর প্রতি খেয়াল রাখার কোন প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না।

    টিউমেন্টে এই বিষয়ের উপর যেকোন বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ, গবেষনামুলক আর্টিকেল, ডকুমেন্টরি ইত্যাদির মতামত অথবা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে জাগ্রত যেকোন প্রশ্ন বা তথ্যকে যথাযথ মুল্যায়ন করা হবে। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন কোন টিউমেন্ট নয়।

thanks . দারুন লিখেছেন ।