আমার টিউন টি আমার বাবার লেখা আর্টিকেল থেকে নেয়া।আশাকরি ভালো লাগবে। 🙂
সূধী পাঠক,বির্তনের ধারায় মস্তিষ্কের ক্রমোন্নতিতে মানুষ জ্ঞান বিজ্ঞান সাধনার সুযোগ লাভ করেছে।এই সাধনার বলে সত্য ক্রম বিকশিত হয়ে উঠছে।জ্ঞান বিজ্ঞানের নতুন ধারায় মানুষের দৃষ্টি প্রখর থেকে প্রখরতর হয়ে উঠছে।বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এসে এই উন্নত মানুষের দৃষ্টি পড়েছে পবিত্র কোরআনের বৈজ্ঞানীক ভিত্তির দিকে।হয়তোবা অবাক হচ্ছেন!কোরআনের আবার বৈজ্ঞানীক ভিত্তি কি? এটিতো ধর্ম গ্রন্থ। সূধী পাঠক, অবাক হওয়ার কিছুই নেই।বিজ্ঞান সত্যের সাধক; অজানা সত্যগুলোকে তার উন্নত চোখ দিয়ে খুঁজে বের করে; অপরদিকে কোরআন সেই অজানা সত্যের ভাণ্ডার; ফলে একে অপরের পরিপুরক।কোন তথ্য যখন গাণিতিক আশ্রয়ে সত্যের মুখোমুখি এসে দাঁড়ায় তখন বিজ্ঞান তার পরীক্ষা পর্যবেক্ষন দ্বারা তাকে সত্যের সনদ দেয়,তখন তা হয়ে উঠে বৈজ্ঞানীক তথ্য।এমনিতর বহু তথ্যের এক অমিয় ভাণ্ডার হল পবিত্র কোরআন।সুধী পাঠক,পবিত্র কোরআনে তথ্যপূর্ণ যে কোন আয়াতের দিকেই তাকাননা কেন,দেখবেন তার গ্রুঢ় ভাব ধারাটি বিজ্ঞানের সমান্তরাল হয়ে দাড়িয়ে আছে।তখন কি বলবেন তাকে।অস্বীকার করতে চাইলে তা হবে নিতান্তই মনের খেয়াল।নিজের মনকেও বুঝাতে পারবেননা যে এই বাণী মানব রচিত!পবিত্র কোরআনের যে কোন তথ্য এমনিভাবে গাণিতিক উপায়ে সমন্বিত যে,দেখেই আপনিও অবাক বিষ্ময়ে বলে উঠবেন ‘প্রকৃতই এ সমন্বয় অলৌকিক।’ এমতর দুএকটি সমন্বয় দেখুন নীচের আলোচনায়; আর এমনিভাবেই আমরা খুঁজে দেখবো কোরআনের আলো বিজ্ঞানের কতটা অভ্যন্তরে প্রোথিত।
আদম ও যীশু শব্দের গাণিতিক সমন্বয়
সূরা আল ইমরানের ৫৯ নং আয়াতে আদম ও যীশুর মধ্যে সাদৃশ্যের কথা নির্দেশিত হয়েছে। কোরআনের আর কোন আয়াতে দুই নবীর মধ্যে তুলনার উল্লেখ ঘটেনি। পবিত্র কোরআনে এই দুই নবীর নাম একেবারে সমান সংখ্যক বার ব্যবহৃত হয়েছে আর তা হল প্রত্যেকটি ২৫ বার। সূরা ইমরানের ৫৯ নং আয়াতটি নীচে উদ্ধৃত করা হল,
إِنَّ مَثَلَ عِيسَى عِندَ اللّهِ كَمَثَلِ آدَمَ خَلَقَهُ مِن تُرَابٍ ثِمَّ قَالَ لَهُ كُن فَيَكُونُ
৩:৫৯ নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আদমেরই মতো। তাকে মাটি দিয়ে তৈরী করেছিলেন এবং তারপর তাকে বলেছিলেন হয়ে যাও, সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেলেন।
অনেকে বলে থাকেন যেহেতু যীশু পিতা বিহীন জন্মেছেন তাই তিনি স্রষ্টারই মানবরূপ;এই ধারনা প্রকৃতপক্ষে স্রষ্টার সর্বশক্তিমত্ত্বার প্রতি অবমাননা। মহান আল্লাহ্ আদমকে উদাহরণস্বরূপ তুলে ধরেছেন,কারণ তিনি পিতামাতা উভয়কে ছাড়াই সৃষ্ট হয়েছেন। এই রকম বর্ণনার মাধ্যামে মহান আল্লাহ বুঝাতে চেয়েছেন যে, ঐ কথা বলা অর্থাত যীশু খৃষ্টকে ঐশরীক প্রকৃতির বলে অভিহিত করা কতটা অযৌক্তিক।মহান আল্লাহ যেখানে যীশুখৃষ্টকে আদম (আঃ) এর সাথে তুলনা করেছে সেখানে গাণিতিক সমন্বয়ের মাধ্যামে সেই বাণীর ঐশরীকতা দান করেছেন।তাদের নাম দু’টি প্রত্যেকটিকেই ২৫ বার করে ব্যবহার করেছেন।শুধুমাত্র সূরা আল ইমরানের ৫৯ নং আয়াতেই শব্দ দুটি একত্রে ব্যবহৃত হয়েছে।এই ২৫ বার ব্যবহারের মধ্যে এমন কোন অলৌকিতা নেই; তবে চরম অলৌকিকতা দেখবেন দেখবেন শব্দগুলোর অবস্থানিক সজ্জার মধ্যে,দেখুন নীওচর ছকটি;
নীচের ছকে আদম ও য়ীশু শব্দের ব্যবহারের সূরা সংখ্যা ও আয়াত সংখ্যা দেখানো হল;
আদম যীশু
প্রথম থেকে | সূরা সংখ্যা | আয়াত সংখ্যা | সূরা সংখ্যা | আয়াত সংখ্যা | শেষের দিক থকে |
1 | 2 | 31 | 2 | 87 | 25 |
2 | 2 | 33 | 2 | 136 | 24 |
3 | 2 | 34 | 2 | 253 | 23 |
4 | 2 | 35 | 3 | 45 | 22 |
5 | 2 | 37 | 3 | 52 | 21 |
6 | 3 | 33 | 3 | 55 | 20 |
7 | 3 | 59 | 3 | 59 | 19 |
8 | 5 | 27 | 3 | 84 | 18 |
9 | 7 | 11 | 4 | 15 | 17 |
10 | 7 | 19 | 4 | 163 | 16 |
11 | 7 | 26 | 4 | 171 | 15 |
12 | 7 | 27 | 5 | 46 | 14 |
13 | 7 | 31 | 5 | 78 | 13 |
14 | 7 | 37 | 5 | 110 | 12 |
15 | 7 | 172 | 5 | 112 | 11 |
16 | 17 | 61 | 5 | 114 | 10 |
19 | 19 | 58 | 19 | 34 | 7 |
20 | 20 | 110 | 33 | 7 | 6 |
21 | 20 | 116 | 42 | 13 | 5 |
22 | 20 | 117 | 43 | 63 | 4 |
23 | 20 | 120 | 57 | 27 | 3 |
24 | 20 | 121 | 61 | 6 | 2 |
25 | 36 | 60 | 61 | 14 | 1 |
উপরের ছকে দেখা যাচ্ছে সূরা আল ইমরানের ৫৯ নং আয়াতটি ক্রমঅনুসারে সপ্তম স্থানে পড়েছে যে আয়াতে আদম ও যীশু শব্দ দু’টি একত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। আবার এই শব্দ ব্যাবহারের শেষ সূরা থেকে ক্রমান্বয়ে উপরে এলে দেখা যায় ৫৯ অয়াতটি ১৯ নং ক্রমে পড়ে।সূধী পাঠক একটি বিষ্ময়কর ব্যাপার লক্ষ্য করুন। আমরা ‘পবিত্র কোরআনের গাণিতিক সমন্বয়’ গ্রন্থের প্রথম পর্বে দেখেছি পবিত্র কোরআনের কোড সংখার মধে ৭ ও ১৯ অত্যান্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও বহুল ব্যবহৃত।এখানে লক্ষ্য করুন, ৫৯ নং আয়াতটি প্রথম দিক থেকে ৭ নং ক্রমে পড়েছে এবং শেষের দিক থেকে ১৯ নং ক্রমে পড়েছে। চোখ মেলে দেখুন মহান স্রষ্টার কত বড় বিষ্ময় লুকিয়ে রয়েছে এই আয়াতের বিন্যাসে।
আবার আশ্চর্য় জনক ভাবে প্রথম দিক থেকে ১৯ নং ক্রমে যে সূরাটি পড়েছে তা হল সূরা মরিয়ম। এবার আরও বড় বিষ্ময়টি দেখুন সূরাটি পবিত্র কোরআনে ১৯ নং সূরা।এখানেই শেষ নয়, শেষের দিক থেকে দেখুন এই সূরাটি ৭ ক্রমতে পড়েছে, যা পবিত্র কোরআনে কোড সংখ্যা। আবার লক্ষ্য করুণ, ৩ নং সূরার ৫৯ নং আয়াতের আদম ও যীশু শব্দ দু’টি উল্লিখিত হয়েছে। এবার দেখুন প্রথম থেকে ১৯ ক্রমে ১৯ নং সূরায় আদম ও যীশু শব্দ দু’টি ভিন্ন আয়াতে আলাদা ভাবে উল্লিখিত হয়েছে। অর্থাত একই সূরায় শব্দ দু’টি আলাদা আলাদা ভাবে ভিন্ন ভিন্ন আয়াতে ব্যাবহৃত হয়েছে; যেখানে ৩নং সূরার ৫৯ নং আয়াতে একই আয়াতে বসেছে। ৩ নং সূরার ৫৯নং আয়াতটি প্রথম দিক থেকে ৭ ক্রম সূরায় আর শেষের দিক থেকে ১৯ ক্রমতে পড়েছে। ১৯ নং সূরার ৩৪ নং আয়াতটি শেষের দিক থেকে ৭ ক্রম সূরায় অবস্থিত। আমরা দেখেছি ১৯ ক্রমে ১৯ নং সূরাটি সূরা মরিয়ম; এই সূরায় আদম শব্দটি ৫৮ তম আয়াতে বসেছে; আর যীশু শব্দটি ৩৪ নং আয়াতে বসেছে। এখনে যীশুর পাশাপাশি আর একটি বিষ্ময় লুকিয়ে রয়েছে; তা হল ‘মরিয়ম’ শব্দটি পবিত্র কোরআনে ঠিক ৩৪ বারই ব্যবহৃত হয়েছে। নীচে আয়াতটি উদ্ধৃত করা হল;
সূরা মারইয়াম,আয়াত ৩৪;
ذَلِكَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ قَوْلَ الْحَقِّ الَّذِي فِيهِ يَمْتَرُونَ
১৯:৩৪ এই মারইয়ামের পুত্র ঈসা। সত্যকথা, যে সম্পর্কে লোকেরা বিতর্ক করে।
এখানে আরও লক্ষ্যনীয় বিষয় হল ১৯ নং সূরার ৩৪ নং আয়াতে বসছে যীশু শব্দটি আর এই সূরায় ৫৮ নং আয়াতে বসেছে আদম শব্দটি।৩৪ নং থেকে ৫৮ নং অবদি আয়াত সংখ্যা ২৫ টি আবার আদম ও যীশু শব্দ দুইটি প্রত্যেকে ব্যাবহৃত হয়েছে ২৫ বার করে।
সূধী পাঠক চাঁদ আমাদের অতি পরিচিত একটি মহাকাশীয় বস্তু,আমরা পবিত্র কোরআনে এই চাঁদ শব্দটির শব্দটির কিছু গাণিতিক সমন্বয় দেখবো।
চাঁদ শব্দটির গাণিতিক সমন্বয়
চাঁদ ও তার জাতক শব্দ মিলে পবিত্র কোরআনে উল্লিখিত হয়েছে ২৭ বার, আর এই সংখ্যাটি পৃথিবীর চারিদিকে চাঁদ একবার ঘুরে আসতে ব্যায়িত দিন সংখ্যার সমান।
তাইতো মহান আল্লাহ সূরা আর রহমানের ৫ নং আয়াতে বলছেন,
الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ
৫৫:৫ সূর্য ও চন্দ্র হিসাবমত চলে।
এখানে কোরআন বলছে চাঁদ ও সুরুয প্রত্যেকেই সুনির্দিষ্ট সময়ে পরিক্রমন করছে। আর এই সময় সুনির্দারিত। চন্দ্র ও সূর্যের গানিতিক সঙ্গা খুবই চিত্তাকর্ষক! ‘চাঁদ’ শব্দটিও পবিত্র কোরআনে গাণিতিক ভাবে সুসংহত। আমরা উপরে দেখেছি চাঁদ শব্দটি কোরআনে ২৭ বার ব্যাবহৃত হয়েছে। আর পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরে আসতে চাঁদের সময় লাগে ঠিক ২৭ দিন। সূর্যের চারিদিকে পৃথিবী একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে ৩৬৫ দিন আর চাঁদকে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরে আসতে সময় লাগে ২৭ দিন; যেখানে চাদের ১২ টি চক্র সম্পন্ন করতে সময়লাগে ১২ চন্দ্র মাস।
মাস ১২ টি
36- ...twelve is the number of months with God...
আবার অন্য দিকে কোরআন বলছে বছরে রয়েছে ১২ টি মাস। শুদু তাই নয় এই ‘মাস’ (shehr) শব্দটি কোরআনে ১২ বার ব্যবহৃহ হয়েছে। মহান আল্লাহ্ সূরা তওবাহ্ র ৩৬ নং আয়াতে বলছেন,
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِندَ اللّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَات وَالأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلاَ تَظْلِمُواْ فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ وَقَاتِلُواْ الْمُشْرِكِينَ كَآفَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَآفَّةً وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
৯:৩৬ নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সাথে তোমরা যুদ্ধ কর সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকীনদের সাথে রয়েছেন।
মাস শব্দটি ১২ বার উল্লিখিত হয়েছে, আর চাঁদ এক চন্দ্র বছরে ১২ বার পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরে আসে।
-আবদুল আজিজ খন্দকার-
প্রবন্ধটি CANER TASLAMAN এর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘THE QURAN UNCHALLENGEABLE MIRACLE’ এর সহযোগিতায় প্রণীত।
other posts:
চাইলেআমারবাবারব্লগটিঘুরেআসতেপারেন।
http://sciencewithquran.wordpress.com
________________________________________
আমিফেসবুকএ ,
আমি হৃদয় খন্দকার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 35 টি টিউন ও 60 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
THANKS BROTHER